গোলওয়ালকর এর ক্যান্সার- চিন্তাগুচ্ছ এবং ভারতে বিজেপি’র সাম্প্রদায়িকতার বিষঃ
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ১৯ জানুয়ারি, ২০২০, ০৮:২৬:২৫ সকাল
(Golwalkar’s cancerous ‘Thoughts’ and poison of appertheid in India)
গোলওয়ালকর এর ক্যান্সার- চিন্তাগুচ্ছ এবং ভারতে বিজেপি’র সাম্প্রদায়িকতার বিষঃ
মাধব সদাশিব গোলওয়ালকর!
বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির প্রাণিবিদ্যার গ্র্যাজুয়েট, পরবর্তীতে বিবেকানন্দের আশ্রম থেকে দিক্ষা নিয়ে ‘সেবক ! গনমানুষের নয়, রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের ! অবশ্য গুরুজী বলেই তাকে উল্লেখ করে রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ (আর এস এস RSS) ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ(BJP) এর মত উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন! তার ‘চিন্তাগুচ্ছ (Bunch of thoughts ) প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে, হিন্দু উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর মেনিফেস্টো হয়ে ওঠে এই লেখা। সাম্প্রদায়িক চেতনার বিষবাস্প ভরা এর ছত্রে ছত্রে। ভারতে হিন্দু ছাড়া আর কোন জাতির অস্তিত্ব স্বীকার করতে নারাজ সেই মাধবজি। ভারতের আদিতে হিন্দুইজমের কি অবস্থা ছিল – নৃতত্ব বা প্রত্নতত্ব বিষয়ে আলোকপাত করেনি এই লোক, তার মূল প্রতিপাদ্য হল – ‘ভারত হিন্দুদের দেশ-! অন্য জাতিগোষ্টি- যেমন শিখ জৈন বৌদ্ধ কিম্বা আদিবাসী নিয়ে তার সমস্যা নেই, তার দৃষ্টিতে ভারতের সমস্যার মূলে হচ্ছে মুসলিম আর খৃষ্টান ! তারাই তার টার্গেটেড দুশমন। ভারতে হাজারো জাতিগোষ্টীর বাস! অন্য জাতিগোষ্ঠীগুলোকে ছাড় দিলেও, মুসলিম আর খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে তার এ যুদ্ধ, ক্ষমাহীন!
মূলতঃ ’৪৭ এর দেশ বিভাজন এর ক্ষেত্রে, গোলওয়ালকর এর মানসীকতা ছিল দ্বিজাতিতত্বের বিরুদ্ধে; পাকিস্তান (পূর্ব/পশ্চিম) বাংলাদেশ এর সৃষ্টি তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তৎকালীন আর এস এস পাঞ্জাবে প্রচুর মুসলিমের রক্তপাত এর জন্য দায়ী – তাতে সন্দেহ নেই, যদিও তারা তা স্বীকার করেনি, কেবল হিন্দুদের প্রতিরক্ষার কথাই জোরগলায় বলেছে । অবশ্য গান্ধী নিজেও গোলওয়ালকর এর সে ‘বাণীতে আস্থা প্রকাশ করেননি, জহর লাল নেহেরুর এক চিঠিতে সে বিষয়টি উঠে এসেছে। গান্ধীজির খুনের জন্য দায়ী যে ‘আর এস এস’ সদস্য- নাথুরাম গডসে, এটা কায়দা করে অস্বীকার করেছে তারা, বলেছে – সে খুন করার আগে দল ত্যাগ করেছিল! প্রমান? নেই!
আর এস এস যে সাম্প্রদায়িক, সে ব্যাপারে গোলওয়ালকর নিজেও সচেতন ছিলেন। যারা তাদের মত নয়, এমন হিন্দুদের (কংগ্রেসী) বিষয়ে তিনি লিখেছেনঃ ‘এরপরও আমরা দেখব, কিছু লোক আমাদেরকে ‘সাম্প্রদায়িক বলবে, কিন্তু তারপরেও তাদের বিশ্বাস আর আমাদের বিশ্বাস এক, অভিন্ন। কেবল আমাদের সাহস আছে সত্য বলার, আর তারা অনেকটা ভয়ে ত্রাসে- বড় মানসিকতার আর ধর্ম-নিরপেক্ষতাবাদী হিসেবে নিজেদেরকে দেখতে চাইছে। এটুকুই। এর বেশি পার্থক্য নেই, আমরা যে সিদ্ধান্তে পৌছেছি- যারা এ ভূমিতে বাস করে অথচ ‘নিমকহারাম, তারা এ সংস্কৃতিতে মিশতে পারেনি।, শতশত বর্ষ ধরে যা এদেশে চলে আসছে সে জীবন ধারায় জীবন চালাতে শেখেনি, এ দর্শনে তারা বিশ্বাস করেনা, এদেশের জাতীয় বীর বা এ দেশ যার উপর দাঁড়িয়ে –সংক্ষেপে- তারা আমাদের জাতীয় সত্ত্বার বাইরে! এবং এ পবিত্র ভারত ভূমিতে একমাত্র – আদি, প্রকৃত অনুসারী এবং গর্বিত জাতীয় জীবন হচ্ছে কেবল হিন্দুদের।
সোমনাথের মন্দির পূনঃনির্মানের সময়ে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ এর উদ্ধৃতি দিয়েছে- গোলওয়ালকার। ‘আমরা বারোশো বৎসরের গোলামীর কলঙ্ক মুছে ফেলছি” বলেছেন তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। কিসের গোলামীর ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি? এখান থেকে গোলওয়ালকার তার ঘৃণার মাল মসলা সংগ্রহ করেছে। রাজন্দ্রপ্রসাদ মুসলিম দাসত্বের কথাই বলেছেন, নিশ্চিত হয়েছে সে। তার মতে, রাজন্দ্র প্রসাদ নিজেও হিন্দুজাতীয়তাবাদের পক্ষেই তবে তিনি তা উচ্চারন করতে পারেন নি। গোলওয়ালকার তা উন্মুক্তভাবে বলেছেন, এইযা।
ভারত ভাগের দায় গোলওয়ালকার বৃটিশদের (তার ভাষায় ব্রিটিশার (?)) ঘাড়ে চাপিয়েছে-, সেক্যুলার ভারতীয় জাতিসত্তাকে কংগ্রেসীয় চক্রান্ত –হিসেবে দেখেছে সে।- ‘হিন্দু মুসলিম ঐক্য ছাড়া কোন স্বরাজ নয়’- একথা যারা বলেছে- তারা দেশদ্রোহিতার অপরাধ করেছে, বলেছে গোলওয়ালকার। হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই – এ ভুল প্রতিপাদ্য হিন্দু ঐক্যের অন্তরায়- দাবী করেছে সে। মুসলিম আর খৃষ্টানদের বিরুদ্ধে তার চরম ঘৃণা উৎসারিত হয়েছে তার লেখার ছত্রে ছত্রে। আর তার সবচাইতে অপছন্দের বিষয় হল – হিন্দু মুসলিম ঐক্য। হিন্দু ভারতে সমতার বা সম- অধিকারের ভিত্তিতে মুসলিমদের অধিকার দিতে সে নারাজ, মুসলিমরা নিজেদের মত উপাসনা করতে পারবে (!), তবে হিন্দুদের সাংস্কৃতিক শ্রেষ্ঠত্বের কাছে মাথা নত করলে – তবেই তারা ভারতে থাকার অধিকার পাবে! এর আগে নয়।
তার দৃষ্টিতে রানা প্রতাপ, শিবাজি আর গুরু গোবিন্দ সিং হল প্রকৃত ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক বাহক, হিরো। বাঁকিরা নয়। হয়তো তার এ মুসলিম বিরোধী আগ্রাসনে শিখদের সাথে হিন্দুদের স্ট্রাটেজিক একতা দরকার, একারনেই গুরুগোবিন্দের নাম উল্লেখ করেছে সে । যখন প্রয়োজন মিটে যাবে তখন- প্রকৃত হিন্দুর পবিত্রতা নষ্ট করার কারনে তারাও হয়তো পতিত হবে এক সময়! বিভাজনের খেলা কিভাবে খেলতে হয়, জানে সে।
স্বরাজের সময়ে, পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু মুসলিমদের লিখিত নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, তারা গরু কুরবানী করতে পারবে স্বরাজ পেলে, এ বিষয়কে হিন্দুদের দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সে। যদিও জহরলাল নেহেরুর বিরুদ্ধে সরাসরি কিছু বলা এড়িয়ে গেছে সে, তবে যারা মুসলিমদের সাথে ঐক্য গড়েছে, ভ্রাতৃত্ব গড়তে কনসেশান দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে গোলওয়ালকার এর কলম ক্ষমাহীন। মুসলিমদের সাথে কেন ঐক্য গড়তে হবে? কেন কনসেশান দিতে হবে? হিন্দুদের কি ‘শক্তি নেই ?
হিন্দুমনস্তত্বকে আঘাত করেছে সে, ‘ অন্য কথায়, এ যেন হিন্দুকে বলা হচ্ছে- তারা নপুংসক, যেন তাদের কোন স্পিরিট নেই, যেন তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে অক্ষম এবং মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য তারা যুদ্ধ করতে সক্ষম নয়, মুসলিমদেরকে রক্ত হিসেবে তাদের দেহে ইঞ্জেক্ট করতে হবে? “কি দারুন লজ্জা, কি দুর্ভাগ্য আমাদের জাতির যে, আমাদের নেতারা আমাদের আদিম, অদম্য আত্মবিশ্বাসকে ধ্বংস করতে এসেছে- যা ছিল আমাদের দেশবাসীর নিঃশ্বাসে, প্রতিটি রক্ত কনায়। স্বাধীনতাকামী হিন্দুরা সেটা বিশ্বাস করেছে এবং নিজেদের হিন্দুত্ব বিসর্জন দিতে প্রস্তুত হয়েছে, তাদের সকল আদর্শ, পরম্পরা ও আকাংখা- কারন তাদের বলা হয়েছিল হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ছাড়া স্বরাজ আসবে না!”
হিন্দুমানসে “অক্ষমতা”র বীজ বপনের জন্য সে সময়ের নেতৃবৃন্দকে দোষারোপ করতে দ্বিধা করেনি সে, যে জাতি শিবাজির মত ‘বীরকে জন্ম দিয়েছে- তাদেরকে অক্ষম (তার ভাষায় ইম্বেসাইল) বলে তাদের স্পিরিট ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, দাবি করেছে সে। ঐতিহাসিক (তার ভাষায়- গ্রেট!) যদুনাথ সরকারের উদ্ধৃতি দিয়েছে সেঃ “সাড়া দুনিয়ার কাছে প্রমানিত (শিবাজী) হয়েছে যে হিন্দুরা অমরত্বের ঝরনা থেকে পান করেছে মৃত সঞ্জীবনী!”
আবার আফসোস করেছে সে, হিন্দু জাতি হল দুনিয়ায় সবচেয়ে হতভাগ্য – কারন অন্য জাতির নেতারা তাদের জনগণের মধ্যে শ্রেষ্টত্ব আরোপ করতে প্রাণপণ চেষ্টা করে, অথচ ভারতের নেতৃবৃন্দ করেছে উল্টোটা, কারন তারা তাদের আত্মমর্যাদা আর ইগো বিসর্জন দিতে বলেছে”!
গত বারশো বছরে তারা যেটা হারায়নি, বিদেশীদের কাছে নিজেদের স্বাধীনতা বিসর্জন (?) দেয়নি, এখন শত্রু(?) দের কাছে নিজেদের গলা কেটে তাদের মান মর্যাদা হারিয়ে আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হল! অবাক হওয়ার কিছু নেই, শত্রুরা আত্মধ্বংসী নেতৃত্বের নামে তা দখল করল” বলেছে সে। হিটলারের মেনিফেস্টো এমন করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জার্মান নেতৃবৃন্দের প্রতি অনাস্থা আর আক্রোশ প্রকাশ করেছে, জার্মান জাতির মোরালকে ডিগ্রেড করার জন্য! ক্ষেপিয়ে তুলতে চেয়েছে জার্মান সমাজকে, কারন তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন হিটলারের জন্য দরকার! একারনেই মাত্র ১০-১২ বছরের মধ্যে হিটলার আবার জার্মানদেরকে সংগঠিত করে – ২য় বিশ্বযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছিল সে! এজন্যই পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেছে স্মরনাতীত কালের জঘন্য হানাহানি আর ধ্বংস! হয়তো হিটলার এর লেখা গুলো -গোলওয়ালকারকে উদ্দীপিত করেছে এমন কিছু লিখতে!
হিটলারের দুশমন ছিল – ইহুদীরা! আর ভারতে কারা তার শত্রু! অবশ্যই - গোয়ালাকার এর জন্মশত্রু! মুসলিমরা। কতখানি বিষ – ঝরিয়েছে সে মুসলিমদের বিরুদ্ধে, কতখানি ঘৃণা জমেছে তা পরের প্যারাগ্রাফে পরিষ্কার! ১৯৪৬ এ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্থাপিত হলে, স্বাধীন ভারতে মুসলিমদেরকে বর্ন হিন্দুর মর্যাদা দেয়া হয়েছে- যা তাকে আহত করেছে। তার কাছে মুসলিমরা হল অস্পৃশ্য, বহিরাগত লুটেরা। সে মুসলিমদেরকে হীন প্রমান করতে আরও এক ধাপ নেমে গেছে; “ভিনদেশী শত্রুদের বিরুদ্ধে যারা ( যে হিন্দুরা!) ঋজুতা দেখাতে ব্যার্থ হয়েছে, তাদের কাছে ‘সমর্পিত হয়েছে-আত্মরক্ষার্থে- নিজের জীবন বাঁচাতে কিম্বা স্বার্থলোভে ‘স্বধর্মচ্যুত’ হয়েছে- সেই দুর্বলচেতা ধর্মান্তরিত হিন্দুদের বংশধর বা পরবর্তী প্রজন্ম হচ্ছে এখনকার মুসলিম”; বলেছে সে! তাদের কাছে রাষ্ট্রীয় ভাবে কনসেশন দেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না- বিশেষ করে এত শত্রুতা আর ভিনদেশী অনুপ্রবেশকারীদের বিরোধিতা করেও যারা নিজেদের স্বধর্ম- হিন্দু ধর্ম বজায় রেখেছে- এখন তাদের বিজয়গর্বে গর্বিত হওয়ার কথা! তারা কেন শত্রু মুসলিমদের ছাড় দেবে? এই হল গোলওয়ালাকর! আর তার মুসলিম বিরোধী মেনিফেস্টো!
অথচ এক পাশ্চাত্য ঐতিহাসিক- শেলডন পোলক এই সেদিন ভারতে বসেই এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেনঃ গত হাজার বছরের শাসনকালে, মুসলিম শাসকরা ইচ্ছে করলে ভারতে একজন হিন্দুও আজ অবশিষ্ট থাকত না-‘ ! সংষ্কৃত চর্চায় সম্ভবতঃ মুসলিম হস্তক্ষেপ বাধার সৃষ্টি করেছিল-এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি। নবদ্বীপে সংস্কৃত – ন্যায় চর্চা হত, মুসলিম আমলেই; দারা শিকোহ নিজেও সংষ্কৃত শিখেছেন হিন্দু পন্ডিতের কাছেই! মুসলিমরা সংষ্কৃত চর্চায় বাধা দিল কিভাবে? তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে? যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা! গোলওয়ালকার ধারনা নেহায়েত ঘৃণাপ্রসূত! এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই ! গোলওয়ালকর এর এই কঠোর মুসলিমবিরোধী অবস্থানের পেছনে তার ব্যাক্তিগত কোন ঘটনা থাকাও অসম্ভব নয়। মুসলিমদেরকে আরও এক কাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত করেছে সে ! মুসলিমরা হিন্দুদের জাতিধর্ম লুন্ঠন করেছে, ধর্ষন করেছে – তাদের মেয়েদের, অমর্যাদা করেছে তাদের! সুযোগ পেলেই লুটেরা- বহিরাগত- অনুপ্রবেশকারী ধর্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছে সে মুসলিমদের। আর যা তখন করতে পারছে না- যেমন বর্তমান প্রজন্ম –যারা কয়েকশত বছর ধরে এ দেশে বাস করছে, “তারা অতীতের কাপুরুষ হিন্দুদের বংশধর”- দাবি করেছে সে। যারা মুসলিম শাসকদের কাছে আত্মসমর্পন করেছিল, বর্তমান কালের মুসলিমরা সেই সব নপুংসক হিন্দুদের বংশধর! নিজে অসুস্থ, মানসিক প্রতিবন্ধী নাহলে এতখানি ঘৃণা পোষণ করার কোন যৌক্তিক কারন নেই একজন সুস্থ মানুষের। এ কেবল তার হিস্টিরিয়া !
তার মতে মুঘলরা লূটেরা, আর মুঘল আওরংজীব হচ্ছেন কুখ্যাত এক হিন্দু-বিরোধী ফ্যানাটিক, আর তার জেনারেলদের অনেকেই হিন্দু, এদের গাদ্দার হিসেবে দেখেছে গোলওয়ালকার! মানসিংহ আকবরের হয়ে রানা প্রতাপকে ধাওয়া করেছে, তেমনি রাজা জায়সিং, যশোবন্তসিং আওরংজেব এর হয়ে শিবাজীকে তাড়া করেছে- তাদেরকে গাদ্দার হিসেবেই দেখেছে সে, তবে তাদের বীরত্বকে আবার হিন্দু বীরত্বের অংশ হিসেবে দেখেছে! গোলওয়ালকার ত্রিশঙ্কু অবস্থা!
বখতিয়ার খিলজি তার কাছে এক রক্তপিপাসু, হিন্দু ধর্মের বিভাজনের কারনেই নাকি মাত্র ১৮ জন সেনা নিয়ে বাঙ্গালায় অভিযান করে সে, পেছনে রেখে যায় রক্তের নদী, ম্যাসাকার – মাস কনভারশান, নারী অপহরণ, মন্দির ধ্বংস এবং রাজ্যের ধ্বংসআবশেষ! নালন্দা বিহারের হাজার হাজার ছাত্র এবং শিক্ষককে কসাইয়ের মত জবাই করার অপবাদও দিয়েছে গোলওয়ালকার। বখতিয়ার খিলজির ঘাড়ে! পুরো শহরের জনগণকে শিরচ্ছেদ করেছে – বখতিয়ার, এমন কথাও লিখেছে সে! আরেকটা অপবাদো যোগ করেছে, লাইব্রেরীতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করেছে সে- হাজার বছরের জ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রকে বনফায়ার বানিয়েছে ! (এমন বদনাম এখন পর্যন্ত কোন মুসলিম বিজেতার নামে শুনা যায়নি, এটা গোলওয়ালকার এর আবিষ্কার, সন্দেহ নেই! প্রমান ছাড়া এমন দাবী কেবল সাম্প্রদায়িক ঘৃণা থেকেই উৎসারিত হতে পারে ) এরপর সে বাংলায় রাজত্ব শুরু করেছে!
গীতার বাণী – ‘আমরাই আমাদের বন্ধু , আমরাই আমাদের শত্রু’ – উল্লেখ করেছে সে ! আবার সেই হাজার বছরের শত্রুদের টেনে এনেছে, ‘সাপ যখন কামড় দেয়- সেটা তার ধর্ম, তবে তার বিরুদ্ধে সতর্ক হতে হবে’ -আহ্বান জানিয়েছে সে! কারন তার মতে, গত এক হাজারের বছরে হিন্দুরা কিছুই শেখেনি, তারা নাকি তাদের ভুলের মাশুল দিচ্ছে। নিজেদের এ মারাত্মক দূর্বলতাকে দূর করতে না পারলে নাকি একটা জাতি হিসেবে তারা দাঁড়াতেই পারবেনা।
ভারতের বর্তমান সরকার গঠনকারী বিজেপি’র প্রতিটি পদক্ষেপ এই গোলওয়ালকার এর ফরমুলা অনুসরণ করে চলছে, তা আজ যে কোন নিরপেক্ষ মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। আর তার কেন্দ্রে আছে নাথুরাম গডসে’র মত আরও কিছু ‘আর এস এস সদস্য- মোদী, অমিত এবং তাদের দোসররা!
পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম নাকি হিন্দুদের সেই মারাত্মক দুর্বলতার ফল! বেদ এর জন্মস্থান নাকি পাঞ্জাব, আর বাংলা- যাকে গোলওয়ালকার সাধু, কবি আর বিপ্লবীদের জন্মস্থান হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং আফসোস করেছে- পাঞ্জাবের এবং বাংলার অর্ধেক অংশ ‘শত্রু (মুসলিম)দের হস্তগত হয়েছে- এ কারনেই।
বাংলাদেশ ভারতের অংশ হয়েছে সেই মুঘল আমলেই, (তার আগে বাংলাদেশ আলাদা ছিল, হয়তো গোলওয়ালকর এর সেটা অজানা বা সে তথ্য উহ্য রেখেছে!) গোলওয়ালকরের জানের দুশমদের হাতেই। মুঘলরা জানের দুশমন হলেও তাদের দখল করা ভূখণ্ডকে ভারতের অংশ হিসেবে উল্লেখ করতে দ্বিধা করেনি- এ সুবিধাবাদী হিন্দু উগ্রবাদী। সেক্ষেত্রে আর অতীতে যাওয়ার দরকার নেই, মুঘল যুগের কৃতিত্ব ভোগে সমস্যা হয় না, কিন্তু সে মুসলিমরা হিন্দুদের দুশমন, এটাই তার উপজীব্য। অবশ্য তার অনুসারীদের এমন চরিত্র আমাদের অজানা নয়। তাজমহল নিয়ে গর্ব করেনা এমন হিন্দু ভারতে দুর্লভ। তাদের মনোভাব এমন যে, ইসলামী স্থাপত্য ভারতের অংশ, ভারতীয় গর্বের প্রতীক, অথচ যাদের হাতে এগুলো প্রতিষ্ঠিত, সে ইসলামের অনুসারী- মুসলিমরা হাজার বছর ধরে এখানে বাস করলেও, তারা বহিরাগত। কি অদ্ভুত বৈপীরিত্য!
ম্যাকলে, -ভারতে বৃটিশ শিক্ষাপদ্ধতির প্রবর্তক এর উপরে গোলওয়ালকর এর ক্রোধ সীমাহীন, তার উদ্ধৃতিঃ "We must at present do our best to form a class who may be interpreters between us and millions whom we govern-a class of persons Indian in blood and colour, but English in tastes, in opinions, in morals and in intellect." And again, in 1836, he wrote to his father, "No Hindu who has received an English education ever remains sincerely attached to his religion….. If our plans of education are followed up there will not be a single idolater among the respectable classes in Bengal 30 years hence." ( ৩০ বছরের মধ্যে কোন মূর্তিপুজারী বাংলায় থাকত না- কথাটা যে মিথ্যে তা এখন সবাই জানে) হিন্দুত্বের গর্ব আর গৌরবগাথা ছেড়ে শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম অন্য খৃষ্টধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে – সেজন্য সে ইংলিশ এডুকেশানকে ঢালাও ভাবে দায়ী করেছে গোলওয়ালকর। এখনো খৃষ্টান কনভেন্ট এ এমন “মস্তক ধোলাইঃ হচ্ছে ভারতে- দাবি করেছে গোলোয়ালকর। ধর্ম পরিবর্তন যে হয়নি তা নয়, তবে তা জোর করে – শক্তিপ্রয়োগ এর ফলে, এটা সত্য নয়। যেটা হয়েছে – তা স্বেচ্ছায়, এখনো হচ্ছে, তার নানা আর্থ- সামাজিক কারন রয়েছে। কিন্তু সে যুক্তি মেনে নিলে – গোলওয়ালকর ঘৃণা ছড়াবে কি করে?
এখানেই থামেনি গোলওয়ালকর। বলেছে, ভারতের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। হিন্দুদের স্বর্ণযুগ (?) রামায়ন, মহাভারত এর সময়কাল উল্টে পালটে গেছে – দাবী করেছে সে। এগুলোকে “মাইথলজি- গল্পকাথা- আর অন্ধকার যুগ বলেছে ঐতিহাসিকরা” তার দাবি। আর্যরা এসেছে ভারতে, মহাভারতের যুদ্ধক্ষেত্র পাঞ্জাবে প্রথমে সেটল করেছে, এরপর গঙ্গা যমুনার দিকে এগিয়েছে এবং অয্যোধ্যায় স্থিত হয়েছে!! মহাভারতের যুদ্ধের কয়েকশ বছর পরে রামায়ন এর কাহিনী জন্ম নিয়েছে- এ ঘটনাকে পিতার ঔরষে জন্মেছে পিতামহ, এমন দাবি করেছে গোলওয়ালকর। হিন্দুদের পুরো ইতিহাস “সোনার অক্ষরে লিখা অথচ কিনা তাকে অন্ধকার যুগ বলেছে ঐতিহাসিকেরা” – এ তার চরম গাত্রদাহের কারন। তার মতে আর্য অনার্য বিভাজন-সত্য নয়, ঐতিহাসিক মিথ্যা। আর্যরা এদেশে এসে অনার্যদের সাথে সংঘাত এড়াতে, তাদের প্রতিমা- কালীকে গ্রহণ করেছিল রাজনৈতিক কারনে- এটাকে মেনে নিতে রাজী নয়। গোলওয়ালকর! অথচ নিজে বর্নহিন্দু -ব্রাহ্মণ হিসেবে বর্নবাদী সিস্টেমের অনুরক্ত সে ! তার বর্ণিত ভারতে ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিত শুদ্র আর বৈশ্য থাকবে শুধু! আদিম ভারতে হিন্দু যুগের পুর্বে বৌদ্ধযুগের কোন ইতিহাস নেই তার লেখায়, ভারতে হিন্দু ছাড়া আর কোন জাতির গৌরবগাথা থাকতে নেই, ভারতের আদিতেও হিন্দু- আর অন্তেও হিন্দু-এর মাঝামাঝি আর কিছু নেই, এই হল গোলওয়ালকর এর চিন্তাগুচ্ছ! তবে আশার কথা, ভারতের সবাই এমন বিজেপি আর এস এস এর উইপোকাগুলোর মত জন্মান্ধ নয়!
ইংরেজি শিক্ষিত হিন্দুদের উপর ক্ষিপ্ত সে, উল্লেখ করেছে এক কাহিনী। ইউরোপের এক হোটেলে তিন লোক ভিজিটার্স বুকে তাদের জাতীয়তা বিষয়ক মন্তব্য লিখেছে। এক আইরিশ লিখেছে, সে আয়ারল্যান্ডে জন্ম নিয়ে গর্বিত; আরেক স্কচ লিখেছে-স্কচ হিসেবে জন্ম নিয়ে সে গর্ববোধ করছে। কিন্তু একজন নেতৃস্থানীয় ভারতীয় লিখেছে- সে তার পূর্বজন্মের পাপ এর কারনে ভারতে ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছে’। এ সব ইংরেজি শিক্ষার কুফল- গোলওয়ালকর এই একটা ঘটনা দিয়ে পুরো বৃটিশ আমলকে দায়ী করেছে। কারন এর ফলে শিক্ষিত হিন্দুরা অতীতের হিন্দুযুগকে অজ্ঞতা আর অন্ধকারের যুগ বলে মনে করছে! গোলওয়ালকর এর ধারনা- হিন্দুযুগ – (সেটা রামায়ন নাকি মহাভারতের যুগ, নাকি তার আগে কিম্বা পরে-তা নিশ্চিত করেনি সে) ছিল ভারতের স্বর্ণযুগ (?)। আর বিজেপি / আর এস এস এর সদস্যরা সেটাই যেন ‘মুখস্ত করে – এজন্য ইতিহাস নূতন করে লিখা আর প্রচারের প্রচেষ্টা গোলওয়ালকর এর। এই চিন্তাগুচ্ছ তার প্রতিফলন।
গোলওয়ালকর এর ভাষায় – ‘ব্রিটিশার –আর মুসলিমরা হল বহিরাগত, অনুপ্রবেশকারী। যদিও ইহুদী আর পারসিকরাও সে দলের, তবে তাদের সংখ্যা কম জন্য, গোলওয়ালকর চিন্তিত নয় ;তাদের নিয়ে। তারা হয় অতিথি- যেমন ইহুদী , পারসিক; না হয় অনুপ্রবেশকারী- মুসলিম এবং খৃষ্টান। তাদের সন্তানদের এ মাটির সন্তান বলতে তার আপত্তি, তারা এ ভূমিতে বাস করেছে- এটা দুর্ঘটনা (ঘটনা নয়!), বলতে চেয়েছে সে। একজন মন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট যেমন বেড়াতে আসে, তেমন রাষ্ট্রীয় সফর এর সাথে তুলনা করেছে সে। তাদের যেমন রাষ্ট্রে কোন নাগরিক আধিকার নেই, হাজার বছর ধরে বাস করতে থাকা মুসলিম খৃষ্টানরাও তেমন, যুক্তি দিয়েছে সে। তবে পারসিকদের অর্থনৈতিক অবদানকে স্বীকার করেছে সে, দাদাভাই নওরোজি, ফিরোজশাহ মেহতা মাদাম শামা-এদেরকে ছাড় দিতে আপত্তি নেই তার। কারন তারা দেশকে খুব ভালবাসে, খুব পরিশ্রমী এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে সামনের কাতারে আরো এক জাতি ছিল, অনুপাত ভিত্তিতে সবচাইতে বেশি আত্নাহুতি দিয়েছে সেই মুসলিমরাই! কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে একই যুক্তি মেনে নিতে রাজী নয় গোলওয়ালকর। চরম মুসলিমবিরোধী মনোভাব তার যুক্তিকে অন্ধ করে দিয়েছে।
’৪৭ এর আগে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে দুটো অংশ ছিল, সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলে একটা গ্রুপ, আর ২য়টি প্যাসিভ – অসহযোগ আন্দোলন করেছে তারা; গোলওয়ালকর প্রথম গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞ, বাঙ্গালী সুভাষ বোস আর তার বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে সে! অথচ সে ভুলেই গেছে- সুভাষ বোস এর সেনাপতি ছিল জেনারেল শাহ নেওয়াজ! স্বাধীনতার জন্য প্রান দিয়েছে – এমন বড় বড় খ্যাতিমান যোদ্ধাদের মধ্যে মুসলিম সংখ্যা অগণিত! কিন্তু তাদের প্রতি চরম অকৃতজ্ঞ এই এক চোখা বক ধার্মিক! তার একপেশে বিচারবুদ্ধিকে আর এস এস বা বিজেপির কোন হিন্দু নেতাই প্রশ্ন করেনি, মুসলিম বিরোধী ঘৃণা তাদেরও অন্ধ করেছে! তারাও সব-একই গোয়ালের গরু, সন্দেহ নেই।
তবে স্বাধীনতাকামী মুসলিম যোদ্ধাদের কথা সে ভেবেছে, অন্য আঙ্গিকে! তাদের দয়া করে ভারতে থাকতে দেবে সে- যদি –তারা আত্মসমর্পিত হয়! যেমন তাদের মনে করিয়ে দিতে হবে তাদের পূর্বপুরুষ ছিল হিন্দু, যেমন তাদের উচিত আত্মসম্মান নিয়ে আবার হিন্দু সমাজে ফিরে আসা, যেন তারা মুঘল আমলের আগ্রাসী মনোভাব পরিত্যাগ করে এবং এই শতকে হিন্দুসমাজ ব্যাবস্থাকে আলিংগন করে- এমন দাবি তার। তবে এগুলো করতে গেলে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে – নেতৃস্থানীয় লোকজনকে, এমন চিন্তা করেছে, কারন সে জানে – শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত – আত্মমর্যাদাশীল কোন মুসলিম তার স্বকীয়তা বিসর্জন দেবে না। কাজেই সে আশু সংঘাতের জন্য তার দলবলকে প্রস্তুত করছে! আর সংখ্যাগরিষ্টের সমর্থন থাকবে তার পেছনে – এমন ধারনাও তার আছে!
এই কারনেই, মোদী এখন সেই সাহসী পদক্ষেপ নিতে –ক্যাব (CAB) এর মত নূতন বর্নবাদী আইন তৈরি করছে, রাষ্ট্রীয় সম- অধিকার থেকে মুসলিমদের বঞ্চিত করার আইন! তা সংবিধান এর ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা’ ক্লজ এর বিরোধিতা করে হলেও!
অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ- স্বাস্থ্য শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে – এই মুসলিম বিরোধী পদক্ষেপ মোদীর জন্য এখন কেন জরুরী? গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, তবে মোদীকে প্রশ্ন করার মত সাহস কার আছে? সংখ্যাগরিষ্টতার মত অস্ত্র তার পেছনে! অবশ্যই এটা এ মুহূর্তে জরুরী নয়, তবে অর্ধমুর্খ হিন্দুদের মধ্যে এ পদক্ষেপ জনপ্রিয়। জরুরী না হলেও ক্ষমতার গদিতে থাকতে হলে ভোট বাক্স ঠিক রাখতে হয়, আর এ ফরমূলায় ধর্মীয় উগ্রবাদীরা ‘পপুলার পদক্ষেপ এ অগ্রগামী। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নয়, কিন্তু জনপ্রিয় পদক্ষেপ! ৫১% এর সংখ্যা গরিষ্টতা – এই পদক্ষেপ নিতেই তাদের উৎসাহিত করে, তাদের ঘৃণা আর বর্ণবাদী মানসিকতার প্রতিফলন ঘটে এমন পদক্ষেপে! অহিংসা আর তাদের পরম ধর্ম নয়, হিংসার আগুন তাদের অধিকার করে বসেছে!
ক্যান্সারের প্রচণ্ড যন্ত্রনায় ভুগে মৃত্য হয়েছে মাধব গোলওয়ালকর এর । কিন্তু তার লিখে রেখে যাওয়া এ ক্যান্সারের জীবানূ আরও কত হাজার নিরীহ মানুষের জীবন যে ধ্বংস করে দেবে, আর তা কত যুগ ধরে ভারতে এ হানাহানি আর সংঘাতের বীজ বপন করতে থাকবে- তা অনুমান করা সম্ভব নয়। যতদিন সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ এই আর এস এস /বি জে পির উগ্রবাদী রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান না করে।
তবে আশার কথা – ঘৃণার উপরে ভালবাসা, কূপমণ্ডূকতার উপরে মুক্ত চিন্তা, অন্ধকারের উপরে আলোর বিজয় চিরন্তন! এখানেও তাই হবে – এটাই আমাদের প্রত্যাশা! সারাদেশ উত্তাল হয়েছে মোদী অমিত এর বর্নবাদী আইনের বিরুদ্ধে! ঝাড়খন্ডের নির্বাচনে এমন আলোর রশ্মিই দৃষ্টিগোচর হয়েছে। একটা কল্যান রাষ্ট্রে – একজন মানুষের নাগরিক অধিকার তার ধর্মীয় পরিচয় এর উপরে নির্ভর করেনা, স্থির হয় আইনের শাসন দিয়ে। আইনের দরজা সবার জন্য সমান হবে, উগ্রবাদী হিন্দুদের বর্নবাদী স্কিম ধ্বসে পড়বে, জয় হবে মানবতাবাদ এর –হিংসা নয়, অহিংসার জয় হবে, এটাই হোক মানবতাবাদী মানুষের প্রত্যাশা !
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১০৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন