ক্রুসেড এবং জঙ্গিবাদ: তোমার সত্য- আমার সত্য- এবং প্রকৃত সত্য
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ২৭ আগস্ট, ২০১৬, ০৮:৩২:০৭ রাত
ইতিহাস সত্যাশ্রয়ী হতেই পারে, সেটাই স্বাভাবিক! তবে তা যে পুরো সত্য, এমন নিশ্চিত করে বলা যাবে না! সত্যের লেশ থাকবে, আবার তার সাথে এমন অলঙ্করণ মিশে যাবে যে তা সত্য নাকি অসত্য তা ঠাহর করা জ্ঞানীদের জন্যও মুশকিল হয়ে যাবে! পক্ষপাতিত্ব করাটা যেন ইতিহাসের অঙ্গ!
এ প্রসংগে এক চাইনিজ প্রবাদ বাক্য মনে পড়ে গেলঃ সত্য তিন কিসিমের-। তোমার সত্য, আমার সত্য এবং প্রকৃত সত্য! বর্তমান পৃথিবীর জ্ঞান বিজ্ঞান ইতিহাস রাজনীতিতে আধিপত্য এখন পাশ্চাত্যের হাতে। তারা সাহস, মেধা আর শ্রম আর চাতুর্য দিয়েই তা অর্জন করেছে, সন্দেহ নেই। সমস্যা হয়েছে, বিজ্ঞানে আব সাহিত্যে যে অন্যান্য জাতিরও অবদান রয়েছে, এটা যে একদিনে পশ্চিমাদের হাতে আকাশ থেকে পতিত হয় নাই,তা তো নয়! কিম্বা ইতিহাস লিখতে গিয়ে পশ্চিমাদের বীরত্ব আর মহানূভবতা, উদারতা আর সাহসিকতার আবরণে তাদের সমস্ত অপকর্ম আর লোভ, নির্বিচার হত্যা আর ধ্বংসের দিকটা চাপা পড়ে গেছে, যেন এদের কোন নেতিবাচক দিকে নেই, সেটা তো সত্যি হতে পারে না। তবে কেন একপেশে কাহিনী? কারন কেউই, নিজের খারাপ দিকটা অন্যদের কাছে বর্ণনা করতে চায় না, নিজের হীন স্বভাবের দিকটা প্রকাশ করতে চায় না, এটা স্বভাবজাত। এমনই হয়ে থাকে।
ক্রুসেডের ইতিহাস লিখতে গিয়ে পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকগণ জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে পাশ্চাত্যবাসীদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেছেন । নিজেদের অংশকে রং চং মিশিয়ে উজ্জল করতে চেষ্টা করেছেন, আর বিরোধীপক্ষকে দানব হিসেবে চিহ্নিত করতে চেষ্টা করেছেন। এটা আবার পাশ্চাত্যের লেখকগণই স্বীকার করেছেন। একপক্ষের বিজয়কে উৎসব আর অন্য পক্ষের বিজয়কে ‘দুর্যোগ দুর্বিপাক বলে বর্ণনা করছেন; বিষয়টাকে কে কোন আঙ্গিকে দেখেছেন এটাই বড় কথা। মুসলিম পক্ষের ঐতিহাসিকরা দীর্ঘদিন আর মৌলিক রচনা লেখেন না, বা সেরকম মেধা বা পরিশ্রম এর যোগ্য নন, তারা পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকদের অনুবাদ করতে গিয়ে পুরো ঘটনাকে পাশ্চাত্য আঙ্গিকে বর্ণনা করেছেন। এর ফলে, মুসলিমদের পরবর্তী প্রজন্ম, নিজেদেরকে হীনমন্যতা বোধের শিকার হিসেবে দেখেছে। পাশ্চাত্য ঐতিহাসিকদের চোখ দিয়ে পুরো ঘটনার চিত্র দেখতে দিয়ে একটা প্রজন্মের চিন্তা চেতনাকে আমরা আচ্ছন্ন করতে দিয়েছি! এটা চরম অন্যায়-। প্রতিটি জাতির অধিকার রয়েছে নিজেদের অবস্থানে থেকে সত্য যাচাই করার! এখন নিজেদের স্বার্থে আমরা সেটাই করতে যাচ্ছি – যা মুসলিম মানসকে একটা পরিষ্কার ধারনা দেবে – সেসময়ে প্রকৃত কি ঘটেছিল। সত্য জানার আকাঙ্ক্ষা থেকেই আমাদের এ ছোট্ট প্রচেষ্টা~!
কথা থেকে এর শুরু – কে এমন একটা ঘটনা শুরু করল – তা জানা আজকের প্রেক্ষিতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ~! আমরা পাশ্চাত্যের সত্যকে ধ্রুব সত্য ভাবতে শিখেছি – কিন্তু আমাদের সত্যটা জানতে পারিনি। ধ্রুব সত্য তো অনেক পরের কথা!
১০৯৫ সাল। দক্ষিন ফ্রান্স এর এক শহর ক্লেয়ারমন্ট। নভেম্বরের শেষ দিকের এক সকাল। পোপ ২য় আরবান এর জ্বালাময়ী বক্তৃতা ইউরোপের ইতিহাস এর এক নূতন অধ্যায় সূচনা করল। সমবেত জনতা পোপের উত্তেজিত বক্তৃতার স্রোতে ভেসে গেল। এবং এ জ্বালাময়ী কথামালার বন্যা গোটা ইউরোপে দাবানলের মতই ছড়িয়ে পড়ল । আর তা এমন আগুন জ্বালিয়ে দিল যা আগামী শতাব্দী গুলোতেও সমান তেজে জ্বলতে থাকবে।
আরবান ঘোষণা করলেনঃ বহিঃশত্রুর আক্রমণ আর চরম জুলুম আর হুমকির মুখে খ্রিস্টবাদ আজ ধ্বংসের দোরগোড়ায়। পবিত্র জেরুসালেম নগর মুসলিমদের হস্তগত-‘যারা ---আল্লাহ থেকে বহু দূরে, যারা ধর্মের নামে আচার সর্বস্ব নির্যাতন আর অবর্ণনীয় অপবিত্রতার সূচনাকারী একটা জাতি। তিনি ল্যাতিন ইউরোপকে এই ‘সম্ভাব্য বর্বর শত্রুদের বিরুদ্ধে, খৃষ্টের পবিত্র ভূমি পূনঃ দখল, পূর্বদেশী খৃষ্টানদেরকে মুসলিমদের দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য ‘খৃষ্টের সৈনিক’ হিসেবে গর্জে উঠার আহবান জানালেন। বললেন, ‘সত্য ও ন্যায়ের পথে এই সংগ্রাম তাদের আত্মাকে পাপমূক্ত করবে।
এ আহ্বানই হল প্রথম ক্রুসেডের আহ্বান, যা প্রাচ্যের মুসলিমদের থেকে শুরু হয় নি। পোপ আরবান এর আহবানে সাড়া দিয়ে হাজারো নারী পুরুষ পাশ্চাত্য থেকে প্রাচ্য অভিমুখে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্রুসেডে যোগদান করতে বেরিয়ে এল। শুরু হল প্রথম ক্রুসেড!
যখন প্রথম ক্রুসেডের আগুন উস্কে দিলেন, পোপ আরবান এর বয়স তখন সম্ভবতঃ ৬০ এর কোঠায়। উত্তর ফ্রান্স এর অভিজাত পরিবারের সন্তান, পাদ্রী, ও বেনেডিকটিয়ান সন্ন্যাসী। ১০৮৮ তে পোপের দায়িত্ব পান।
পশ্চিমা লেখক বা ঐতিহাসিকরা তথাকথিত পশ্চিমা খৃষ্টান ‘জিহাদীদেরকে বীর হিসেবে, তাদের নিষ্ঠুরতাকে বীরত্ব হিসেবে দেখিয়েছেন । তাদের ছোট খাট বিষয়কে অতিরঞ্জিত করা, তিলকে তাল করা- তাদের দোষকে গুণ হিসেবে বর্ণনা করা- এমন অসংখ্য কাজ তারা জেনেই করেছেন, যদিও অনেক পশ্চিমা লেখক এগুলোকে আড়াল দিতে বা নিজের ভাইয়ের কর্মকে একটু ‘প্রশ্রয় দিতে ‘জেনে বা না জেনে বা অজ্ঞাতসারে- শব্দটি যোগ করেছেন। এটাকে দোষ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না, আমি আমার ভাইয়ের সমর্থন করব, এটা বোধ হয় মানুষের সহজাত! সমস্যা একটাই- এ যুগে আর ওমর খৈয়াম- আল জাবির, আল তাবারী- ইবনে খালদূন – ইবনে সিনার মত মুসলিম জ্ঞানী বিজ্ঞানী নেই- নেই ঐতিহাসিক! আমরা যারা পশ্চিমে পড়তে আসি, আর পশ্চিমা লেখক বিজ্ঞানী ঐতিহাসিকদের লেখা গিলে ‘বড় হই, আর তাদের অনুকরণ করে- লিখতে বসি, কিম্বা আমাদের স্বদেশীদের কেউ কেউ (এখন বোধ হয় বেশির ভাগই) সেই চর্বিত চর্বণ ‘নিজের ভাষায় লেখেন বা সরাসরি অনূবাদ করেন, মূল বক্তব্য হুবহু ঠিক রেখে। সেটাই বর্তমান প্রজন্ম তার ‘নিজের ভাষায় পড়ছে এবং তা ‘চিরসত্য’ বলে গ্রহণ করছে! তাদের মেধা ও মননে সেই ‘আপাতঃ সত্যটাই এমন প্রগাঢ় ছাপ মেরে দিয়েছে যে, উল্টোদিকেও যে ‘সত্য আছে সেটা তারা মানতেই চাইবে না। বরং তারা আপনাকে আক্রমণ করবে পশ্চিমা ‘কলমধারী ভন্ড’দের মতই। পার্থক্য কেবল এটাই- পশ্চিমাদের অধিকাংশই প্রকৃত সত্যটা জানে, নিজেদের ঐতিহ্য আর আত্মমর্যাদা সম্বন্ধে সচেতন, আর নিজেদের স্বার্থ সম্বন্ধে আরও বেশী সচেতন; কাজেই ‘প্রকৃত সত্য জানলেও সেটা প্রকাশ করা তাদের ‘স্বার্থ বিরুদ্ধ, বা ‘নীতি বিরুদ্ধ জন্য প্রকাশ করতে চায় না ! সমস্যা আমাদের, কারন আমার জাতির নব –প্রজন্মের মধ্যে, নকল সত্য গিলে খেতে খেতে, প্রকৃত সত্য জানার প্রবণতাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, বা গেছে!
যেমন ধরুন- জঙ্গিবাদ বা টেররিজম! এই শব্দটি একটা উচ্চ মাত্রার politically charged - শব্দ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠিত- শব্দ। পশ্চিমাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায় এমন মানুষদের তারা শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করবে এবং তাদেরকে ‘ধ্বংস করতে যা করা দরকার তার সবই করবে এটাই স্বাভাবিক! ( Give dog a bad name and kill it- এটা এক বহুল প্রচলিত পশ্চিমা প্রবাদ)।
আমাদের সমাজের ‘মাথারা, যারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান কিম্বা পত্র পত্রিকায় লেখেন – খবর ছাপেন- বা কিম্বা রাজনীতি করেন, তারা পশ্চিমাদের ভাষা- বা শব্দ হুবহু কপি করে আমাদের দর্শক -পাঠক / ছাত্রদের বা জনগণের সামনে সরাসরি ‘পরিবেশন করেন! আমরা তা গিলে খাই এবং আমাদের মেধা আর ‘বোধ বুদ্ধির উপরে সে ধারনা ‘সিন্দবাদের ভূতের মত চেপে বসে যায়!
এখনকার নব প্রজন্ম শুধু নয়, বয়স্কদের জিজ্ঞেস করুন, জঙ্গিবাদের প্রতি ঘৃণায় তাদের সর্বাঙ্গ শিউরে উঠবে! অথচ এদেরই একাংশ ‘অনেক ‘সন্ত্রাসী ( এখনকার সন্ত্রাসের সংজ্ঞা অনুযায়ী) র বন্দনায় জীবনপণ করেছে! তিতুমীর কি ছিলেন? ব্রিটিশদের ভাষায় ? মুজিবকে কি বলা যাবে –পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ভাষায়? কিম্বা জেনারেল জিয়াকে? কেউ যখন ‘ক্ষমতাসীনদের অত্যাচার আর জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে উঠে, আর নিজেদের অক্ষমতা আর অসমর্থতার কারনে ঘরে বসে আঙ্গুল না কামড়িয়ে – যার যা আছে তাই নিয়ে ‘জালিমের বিরুদ্ধে নিজেদের জীবন বাজি রেখে লেগে পড়ে, ক্ষমতাসীনদের কলজে কাপিয়ে দেয়, ক্ষমতাসীনরা তাদেরকে চুমু খাবে না- সেটাই স্বাভাবিক! তাদের শুধু সন্ত্রাসী কেন – দানব বানিয়ে ছাড়বে – যেন সাধারন মানুষ তাদের থেকে শত হাত দূরে থাকে, এদের প্রতি সমর্থন না দিয়ে ‘শাসক বা ক্ষমতাসীন এলিটদের গদিতে আগুন না ধরায়! অবশ্য সমাজের একটা বড় অংশ ‘নিঃশব্দে সেটাই করে।
শুধু ভাবুন, পাক শক্তি যদি ’৭১ এ জয়ী হত তাহলে কি হত? ফাঁসির দড়িতে তথাকথিত ‘জাতির পিতা লাশ ঝুলত আর আমাদের বাবা চাচাদের একাংশ তাতেও হাত তালি দিতেন, অবশ্য একাংশ হয়তো কিছুদিন মন খারাপ করে থাকতেন এবং সেভাবেই মানিয়ে নিতেন; ততদিন পর্যন্ত, যতদিন না আবার কোন এক বা একদল প্রতিবাদী ‘সন্ত্রাসীর জন্ম হচ্ছে!
বর্তমান সন্ত্রাসবাদের হোতা কে বা কারা? কেনই বা এর জন্ম! ফিলিস্তিনীদের রক্ত না ঝরালে আর তাদের বাস্তুচ্যুত না করলে আজ এ সন্ত্রাসবাদের জন্ম হত না! অতি দ্রুত পূর্ব তিমুরকে বা দক্ষিন সুদানকে স্বাধীন করে দেয়া হয়, কাশ্মীরী আর ফিলিস্তিনীদের দুর্দশায় পশু পাখীও কাঁদে! কাশ্মীর বা বা ফিলিস্তিন এক সূত্রে গাঁথা! রাশিয়ার সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলে তা জিহাদ- এবং সে জিহাদের অনুপ্রেরণা ছড়িয়েছে কে? লাখো আফগান সহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে হাজারো মুজাহিদকে যারা ট্রেনিং আর অস্ত্র দিল -তারা এখনো ফেরেশতা- আর সে হতভাগারা হয়ে গেল সন্ত্রাসী জঙ্গি! এই জঙ্গিবাদের বা সন্ত্রাসের সংজ্ঞা কি বূঝা গেল?
ইরাক এক নায়ক তন্ত্রের বা স্বৈরাচার এর অধীনে ছিল! সত্যই। কেবল এক ইরাক? মধ্য প্রাচ্যে এক ইরাক নয়, আরও অনেক সাদ্দাম এখনো বহাল তবীয়তে রাজার আসনে বসে -বেশ আছে! ইরাক এর শিক্ষার হার আশির দশকে ছিল ৮৩%- ৯৩%! যা মধ্য প্রাচ্যে শুধু নয়, এশিয়ার মধ্যে অগ্রগামী! তাদের চিকিৎসা সেবা- রাস্তাঘাট পয়ঃপ্রণালী – আর যা যা উন্নয়নের ধারক বা কল্যাণ রাষ্ট্রের সূচক ভাবা হয় – তা তাদের ছিল, বরং বেশীই ছিল! এই বেশী থাকাটা তাদের জন্য কাল হয়েছে- স্বৈরাচার নয়! আপণা মাংসে হরিণা বৈরী!। সে কারণে সাদ্দামকে উচ্ছেদ করা হল, ইরাকে শীয়া সুন্নীর ভারসাম্য বিনষ্ট হল, শিয়ারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ট পোষকতায় সুন্নিদের বিরুদ্ধে এতদিনের জমে থাকা বিষ উগরাতে শুরু করল । সুন্নিরা ঘরে বাইরে মার খেয়ে – আর কোন রাস্তা না থাকার কারণে – যার যা আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে! এ শব্দগূলো বা বাক্যটা পরিচিত মনে হয়? এ লোক ও ‘সন্ত্রাসী খেতাবের দাবিদার হতে পারত! না – হয়নি, সে জাতির পিতা খেতাব পেয়েছে – বিতর্কিত হলেও! এখনো ইরাকের সে ‘মধু শেষ হয়নি! তার নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখতে যুদ্ধবিমান ওয়ালারা থামবে না; কাজেই সন্ত্রাসবাদ- ইসলামিক টেররিজম- একদলকে দমনের জন্য অন্য দলকে ট্রেনিং আর অস্ত্র দেবে, ভাই তার ভাইয়ের গলা কাটতে থাকবে- আজ তুমি আমার কাল ওরা দুশমন, আজ সে আমার তারা দুশমন -ইত্যাকার দমনের অজু হাতে -এই মামার দল মধ্যপ্রাচ্যে ওদের সামরিক উপস্থিতি কমবে না, যতদিন না সস্তা তেল শেষ হয়!
কাজেই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হল, নিজের ভাষায় প্রকৃত সত্য জানিয়ে দেয়া কিম্বা নূতন প্রজন্মকে ‘সংযোগ বা লিঙ্ক গুলো জানিয়ে দেয়া যাতে তাদের অতীত ‘খুঁড়ে দেখার আগ্রহ জন্মায়! তাদের আগ্রহ জন্মায় নিজেদের অতীত জানার, কেনই বা সন্ত্রাসবাদ বা জিহাদ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যদিও তা আমাদের সৃষ্ট নয়, আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া। যেমনটা ১০৯৫ সালে পোপ ২য় আরবান ক্রুসেড এর নামে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছিলেন – ইউরোপের মানুষকে উসকে দিয়ে! এরপর তারা জানবে ‘নিজের মাংস কিভাবে হরিণে’র শত্রু হয়ে উঠে ! জানবে আড়াইশো বছর এমনি এমনি বাংলাদেশের তৎকালীন রাজধানী কোলকাতায় ব্রিটিশরা ঘাঁটি গেড়ে ছিল না! জানবে নিজের মাংস রক্ষা করার ক্ষমতা অর্জন করতে না পারলে হায়েনার হামলা হবেই! প্রকৃতির নিয়ম এটা, এর বাইরে আমরা কেউ নই~। জাতি সংঘের জন্ম হয়েছিল এসকল অপদখল যেন না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য। কিন্তু সে জাতিসংঘ হায়েনাদের হাত থেকে ইরাককে বাঁচাতে পারেনি! নূতন প্রজন্ম জানবে এর থেকে কি শিক্ষা নিতে হয়! কাজেই অতীতে সংঘটিত ঘটনার প্রকৃত সত্য জানিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে, যা জোরেশোরে বিশাল কলেবরে প্রকাশিত হয়, তার সবটা যে প্রকৃত সত্য নয়, বরং প্রকৃত সত্যকে তা আড়াল করবার জন্যই, এসব আপাতঃ গোপন সত্যগুলো প্রকাশ করার জন্য একটা স্বাধীন জাতির প্রচেষ্টা থাকা দরকার!
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
“To Destroy a People You Must First Sever Their Roots.”
Our roots are our history.
This writing is a good reminder of how muslims are being deceived as we forgot our own history and led to believe the western narrative.
Thanks brother. It is a very good writing, alhamdulillah.
মন্তব্য করতে লগইন করুন