প্রসঙ্গ সুন্নতী পোশাক: দ্য স্লেভ এর সমর্থনে
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ১৩ আগস্ট, ২০১৫, ০৫:১২:০৬ সকাল
দ্য স্লেভ এর লেখা পড়ছিলাম!
আলোচনা ছিল সুন্নতী পোশাক নিয়ে! জাকির নায়েক নিয়ে নয়! লেখক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন- যে, সুন্নতি পোশাক বলতে ‘সুনির্দিষ্ট কোন পোশাক নেই, কতিপয় ‘মূল নীতির মধ্যে থাকলেই - সেটাই সুন্নতি পোশাক! সুন্দর লেখা – লেখক ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য!
আর ‘এন্টি- জাকির নায়েক গ্রুপ সুযোগ পেয়ে সাথে সাথে ‘এটাক !!
১। ভাইরে, ‘পাঞ্জাবী – এই পোশাকের নাম শুনলে আমি ’৭১ এর হানাদারদের গন্ধ পাই! সব পাঞ্জাবী খারাপ তা বলছি না, তবে তারা ব্রান্ডেড হয়ে গেছে! এরপরে, এই পাঞ্জাবী পোশাক সুন্নতি হোক বা বাঙ্গালীর জাতীয় পোশাক হোক- তা নিয়ে বিতর্কে যাওয়ার ইচ্ছা বা মানসিকতা আমার নাই! আর পাজামা তো ‘ঘুমের পোশাক!
২। রাসূল (সাঃ) লুঙ্গি, চাদর ব্যবহার করেছেন! বাংলাদেশের তথাকথিত- ‘এন্টি- জাকির নায়েক গ্রুপ - লুঙ্গি চাদর পরে অফিসে বা স্কুল কলেজে যান কি? রাসূল (সাঃ) তো ‘পাঞ্জাবী পরেন নাই! পাঞ্জাবের লোকের পোশাক পাঞ্জাবী; ধরা যাক, আরবী পোশাক তাহলে সুন্নতি পোশাক! আরবের অমুসলিমরা ও সেই একই পোশাক পড়ে, তারা কি সুন্নত মেনে তা পড়ছে?
৩। আমার বন্ধু আবদুল্লাহ ‘জন; ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত মুসলিম! জন্মের পর থেকে কোট টাই হচ্ছে তাদের অফিসিয়াল ড্রেস! বিয়ে শাদি, পালা পার্বণ এমনকি ঈদে ‘সুন্নত মেনে সবচেয়ে সুন্দর পোশাক বলতে – সে বোঝে কোট টাই ( স্যুট ) । তাকে যদি আপনি বলেন সে ‘ বিজাতীয় পোশাক পড়েছে! সে তা মানবে কি? ইসলাম তো বিশ্ব মানবতার জন্য, কেবল আরব- বা আফ্রিকান বা বেদুঈনদের জন্য নয়! যদি তা হত, তবে আমরা বাঙ্গালীরা মুসলিম হতাম না! বিশেষ কোন ‘পোশাকে ইসলামকে বেঁধে ফেলে আপনারা ‘কূপ মণ্ডূকের মত ইসলামের আন্তর্জাতিক ‘অ্যাপিল কে খর্ব করার ‘অপচেষ্টা করছেন। দৃষ্টিভঙ্গী উদার করতে শিখুন, দয়া করে ‘ পাজামা আর ‘পাঞ্জাবীর ইসলাম শিখাতে যাবেন না সব্বাইকে! ইসলাম তার চাইতে অনেক বড়!
৪। যারা জাকির নায়েক এর ‘নোংরা সমালোচনা করেন – আশা করছি ইসলামের দাওয়া, ইসলামের প্রচার ও প্রসারে সেসব ‘ভাইজান বা তাদের দলের ‘অবদান জাকির নায়েকের চাইতে বেশী! যদি হয়, কোন কথা নেই, যদি না হয়? হিসেব করুন, জাকির নায়েকের হাতে যত অমুসলিম- ইসলাম গ্রহণ করেছে- আমাদের অবস্থা কি তাকে ছাড়িয়ে যায়? ইসলামের জন্য আমার বা আমার দলের অবদান কতটুকু! আসুন একজন জাকির নায়েকের সাথে তা তুলনা করে দেখি! তারপর তাঁর সমালোচনা করতে যাই~! বৃক্ষ – ফলেন পরিচয়তে!
৫। কে টাখনু ছাড়িয়ে দুই ইঞ্চি লম্বা প্যান্ট পড়ল-আর কে গলায় বাহারী টাই পড়ল, এই প্রশ্নের জবাব সেই লোককেই দিতে দিন! সেই সাথে আমাদের যার যার জবাবও আসুন তৈরী করে রাখি- মৃত্যু তো বলে কয়ে আসবে না! যদিও মুনকির নকির তো প্রশ্ন করবে না – পাজামা পাঞ্জাবী পড়েছি নাকি স্যুইট টাই পড়েছি! কেয়ামতের দিন তো আবার কোন পোশাকই নেই- একবারে নাঙ্গাবাবা!
কাজেই আসুন – এই ‘পোশাকি বিতর্ক বন্ধ করে – ইসলামের প্রকৃত আখলাক আচরণ – ঈমান আর ‘আমল এর উপরে গুরুত্ব দেই! লেবেল নয়, ভেতরের মাল মশলা – The content of the character- That matters !
পোশাকএর গুরুত্ব অস্বীকার করছি না; ‘দ্য স্লেভ’ – যে হাদিস গুলো তুলে ধরেছেন – নানা জাতির নানা দেশের নানা রকম পোশাক তার আওতায় পড়বে! যে কোন এক জাতির বিশেষ করে ‘পাঞ্জাবী লেবেল মেরে – এই নোংরা ‘আঞ্চলিকতা চাপিয়ে দিয়ে – ইসলামের আন্তর্জাতিক বৈশিষ্ট খর্ব করার চেষ্টা আমরা যেন না করি! ইসলাম কোন আঞ্চলিক বা প্রাদেশিক ধর্ম নয় – ইসলাম বিশ্ব মানবতার জন্য!
বিষয়: বিবিধ
২৯৫৩ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
-পীরসাহেব মন খারাপ করলে সমস্যা আছে। আমরা পীরসাহেব হক্কানী পীর। কোন সমস্যা নেই। সব জায়েজ।
(একদল জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে লেগেছে, অন্যদল নিজেকে হক জাহির করতে চর্মোনাই হুজুরের বিরুদ্ধে লেগেছে। আমার মানসিকতা হল কারো বিরোধিতা না করে আগে নিজেরা সঠিক পথে আসি।)
যারা ইসলামটাকে নিজেদের মতো করে সাজাতে চায় তারা নিশ্চয় বাতিল
‘পাঞ্জাবী লেবেল মেরে – এই নোংরা ‘আঞ্চলিকতা
কথাটি কি আপনি ভালো বলেছেন? আমি জানি কোট টাই সুন্নতী পোষাকের বিপরীত না হতে পারে, কিন্তু পাঞ্জাবী কি সুন্নতী পোষাকের বিরোধী? এই মর্মে কোন প্রমাণ আছে কি?
মুনকির নাকির যেমন দাড়ি টুপি পাঞ্জাবী বা কোট টাই এর কথা জিজ্ঞেস করবে না, তেমনি জাকির নায়েক হক কি না হক, তাও জিজ্ঞেস করবে না।
সূতরাং সুন্নাতের আলোচনা হবে পুরো মুসলিম জাহানের স্বার্থে, কোন ব্যক্তি কেন্দ্রিক নয়। ধন্যবাদ
লেখাটির মূল কারণ- “আক্কিদা ঠিক রেখে- এবং রাসুল ( সাঃ) এর হাদিস মেনে অর্থাৎ এর আওতায় থাকলে এবং হাদিসের পরিপন্থী না হলে - তা সুন্নতী পোশাক হিসেবেই বিবেচিত হবে!
ইসলামের শ্রেষ্টত্ব এটাই- যে, ‘আরব অনারবদের উপর শ্রেষ্ট নয়, শ্বেতাঙ্গ মানুষ কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের উপর শ্রেষ্ট নয়” এটা কার কথা – আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে!
আর সমালোচনার যে রিতি দেখলাম সেটা মুসলিমদেরকে ধ্বংস করবে। সমালোচনা করতে হবে তথ্য দিয়ে,যুক্তিপূর্ণ উপায়ে। কিন্তু মানুষ আঘাত করে। মুস্তাহাব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমরা অহরহ হারামে লিপ্ত হই।
আমার শেষ কথা ছিলঃ আসুন – এই ‘পোশাকি বিতর্ক বন্ধ করে – ইসলামের প্রকৃত আখলাক আচরণ – ঈমান আর ‘আমল এর উপরে গুরুত্ব দেই! লেবেল নয়, ভেতরের মাল মশলা – The content of the character- That matters!
কাকে বিজাতীয় বলবেন? এক সময় ইংরেজ বিজাতি- ছিল, ফরাসী বিজাতি ছিল, প্রচুর ইংরেজ, ফরাসী মুসলিম হয়েছে এবং হচ্ছে! মূর্তিপূজা ছেড়ে মুসলিম হয়েছে অনেক এবং এখনও হচ্ছে, সে সংখ্যাও তো কম নয়! তুরস্ক সহ আলবেনিয়া, বসনিয়া – অস্ট্রিয়া জার্মানী -অ্যামেরিকা কানাডায় অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডে প্রচুর মুসলিম বাস করে; ইমিগ্রান্ট শুধু নয়, তাদের সন্তানগণ ‘জন্মগত ভাবে একাধারে সে দেশের অধিবাসী এবং মুসলিম! ইংরেজ বা ফ্রেঞ্চ বা জার্মান বা কানাডিয়ান আমেরিকান বা অস্ট্রেলিয়ান জাতীয় পোশাক তো তাদেরও পোশাক! এদের পোশাক ‘বিজাতীয় হবে কিভাবে! ভৌগলিক জাতীয়তাবাদকে আর ইসলামী জাতীয়তাবাদ এর সংঘর্ষ কোন ক্রমেই কাম্য হতে পারে না! এর আগেও উল্লেখ করেছি-ভারত থেকে মুসলিমদেরকে অমুসলিম বানানোর পরিকল্পনাকারী – মুসলিম হন্তা - ইসলামের দুশমন “নরেন্দ্র মোদী” পাজামা পাঞ্জাবী পড়ে, – কাজেই সে হিসেবে, তার পোশাক তো সুন্নতী পোশাক হতে পারে না! কি জবাব দেবেন এই যুক্তির! যেমন পোপের পোশাক আপনি উল্লেখ করেছেন- মুসলিমদের জন্য পড়া উচিত হবে না! আমাদের ‘মুফতি সাহেবরা হয়তো এর ব্যাপারে সঠিক ‘ফতোয়া’ দিতে পারবেন!
কাজেই ‘পোশাক দিয়ে ইসলামকে ‘আবদ্ধ না করে, পাজামা পাঞ্জাবীর বিতর্ক বন্ধ করে, ইসলামের “আখলাক ও আমল” এর গুরুত্ব দেয়া দরকার সবাইকে – এই হোক আমাদের কামনা!
মন্তব্য করতে লগইন করুন