কোক পাণের এক ঘণ্টা
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ০৮ আগস্ট, ২০১৫, ০৪:৪৮:২৬ রাত
এক ক্যান কোক গলাধঃকরন করলে পরের এক ঘণ্টায় কি ঘটে? আসুন দেখা যাক:
১) প্রথম ১০ মিনিটঃ
১০ চা চামচ চিনি ( এক ক্যান কোকে দ্রবীভূত থাকে, যা একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের সারা দিনের গ্রহণযোগ্য মাত্রা! ), এক যোগে আপনার সিস্টেমে ধাক্কা মারবে! আপনি সাথে সাথে বমি করছেন না এইজন্য যে, ফসফরিক এসিড সেই ফ্লেভারটা নষ্ট করে দেয়, তাই আপনাকে তা অস্থির করে না!
২। ২০ মিনিট
আপনার ব্লাড সুগার লাফিয়ে উঠবে; ইনসুলিন ঝাঁপিয়ে পড়বে তা নিয়ন্ত্রন করতে। আপনার লিভার, শরীরে এই ‘হঠাৎ পরিবর্তনে চমকে উঠে হাতের কাছে যত সুগার পাবে, সব গুলোকে চর্বিতে পরিণত করতে লেগে যাবে! এই মুহূর্তে আপনার সিস্টেমে আসলে সুগার রয়েছে যথেষ্ট বা তার চাইতে বেশী! আমেরিকায় কোকের তৈরী ‘ওবেসিটি বিপর্যয়ের একটা ব্যখ্যা এখানে পাওয়া গেল!
৩। ৪০ মিনিটঃ
ক্যাফেইন শোষণ সম্পন্ন হয়েছে; চোখের মনি ডাইলেট করেছে! রক্ত চাপ বেড়ে গেছে,এতে সাড়া দিয়ে লিভার রক্তে আরও বেশী করে ব্লাড সুগার সরবরাহ করতে থাকবে! ব্রেনের ‘এডিনোসিন রিসেপ্টর মাথা ঘুরানো বন্ধ করার ( রক্ত চাপ বেড়ে গেলে সাধারণত মাথা ঘুরায়!) প্রক্রিয়া ব্লক করে ফেলবে!
৪। ৪৫ মিনিট
আপনার শরীর ডোপামিন তৈরীর মাত্রা বাড়িয়ে দেবে –যা আপনার শরীরের তথা ব্রেনের ‘আনন্দ অনুভূতির কেন্দ্রে ‘কৃত্তিম আনন্দের সঞ্চার করবে। হিরোইন সেবন করে মানুষ এই ধরণের প্রক্রিয়াতেই আনন্দ অনুভব করে।
৫। ৬০ মিনিট
ফসফরিক এসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ককে তলপেটে বন্ডিং করে ফেলে, বিপাক প্রক্রিয়ায় আরও বড় ধরণের আলোড়ন তোলে! এটা, অতিরিক্ত সুগার ও কৃত্তিম সুইটেনার সহযোগে কার্যকর ভাবে মুত্রনালি দিয়ে শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম নিষ্ক্রমণে সহায়তা করে!
৬। এক ঘণ্টা পরে---
ক্যাফেইনের – মূত্র বর্ধক ক্ষমতা প্রদর্শিত হয়! আপনাকে এখন পেশাব করতেই হবে ! এবং এই সময়ে আপনি ক্যালসিয়াম, আবদ্ধ ( বণ্ডেড) ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ককে তলপেট খালি করে বের করে দেবেন – যা কিনা আপনার হাড়ের গঠনে কাজে লাগত; অবশ্য সোডিয়াম, ইলেক্ট্রোলাইট এবং পানিও সঙ্গে যাবে- এটা বলাই বাহুল্য!
সব শেষেঃ আপনার শরীরের রণাঙ্গন এখন শান্ত! আপনি ‘সুগার ক্রাশ অনুভব করবেন! আপনি বিরক্তি কিম্বা জড়তাও অনুভব করতে পারেন! আপনি আক্ষরিক অর্থেই ‘সর্বশান্ত হয়ে গেছেন! কোক নামের এই ‘পানীয়ের মধ্যে থাকা সকল জল তো আপনি ‘বিয়োগ করেছেনই, এর সাথে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গেছে মুল্যবান খনিজ উপাদান ; কোক না খেলে- তা হয়তো আপনার হাড্ডি ও দাঁতের গঠন মজবুত করত, এমনকি শরীর স্বয়ংক্রিয় ভাবে পানিশুন্যতা রোধে সচেষ্ট হত ।
বিষয়: বিবিধ
১২০৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
আমার পর্যবেক্ষণে যা পাই-
মানুষ সজ্ঞানেই এসব খাচ্ছেন, এমন কোন অনুষ্ঠান খুঁজে পাওয়া কঠিন যেখানে এসবের ব্যবহার নেই
ঠিক যেন "ধূমপানে বিষপান"-এর মতই
মন্তব্য করতে লগইন করুন