কোক এর বহুবিধ ব্যবহার (পাণ ব্যাতীত) !
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:০৯:৪৪ সকাল
হ্যালো’র পরে সারা পৃথিবীতে মানুষের বোধগম্য ২য় শব্দ হল ‘কোক। পানীয় হিসেবে প্রচার মাধ্যমে বিশ্বজোড়া প্রচার চালিয়ে সর্বাধিক বিক্রীত হলেও এ বস্তু সেরা পাণীয়- ‘পানির আশেপাশেই নেই; পানির pH ৭ আর কোকের pH 2.5 । ব্যাটারীর pH হচ্ছে ১।
কাজেই এসিডিটির মাত্রায় এটা ব্যাটারীর খুব কাছে, মানুষের মুখের দাঁতকে এর মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে তা গলে যায়, এটা অনেক ক্লিনিং লিকুইড থেকে ভাল ভাবে নোংরা পরিষ্কার করতে পারে। টয়লেট বা এ জাতীয় জিনিষে কঠিন ধরনের ময়লা হলে, এক ক্যান কোক ঢেলে রাখুন – ময়লা দ্রবীভূত হয়ে যাবে, ভীমের চেয়ে সস্তায় কাজ হয়ে যাবে। প্রকৃত পক্ষে মানব শরীরের জন্য এ এক বিষাক্ত আবিস্কার।
এটা অনেক দেশে পানির চেয়েও সস্তা, এর জন সংযোগ প্রচারনা এত শক্তিশালী যে, এর পরিচিতি হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে আর এর ভোক্তা হচ্ছে পুরো জাতি যদিও এ এক অন্যতম পরিবেশ দূষক, শরীরে পানি ঘাটতি আর রোগের উৎস।
যারা এর নিয়মিত গ্রাহক, তাদের হৃদ রোগের ঝুকি, যারা এগুলো খায়না তাদের তুলনায় ৪৮% বেড়ে যায়। Respirology journal এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এই ‘কোমল পানীয় সেবন হাঁপানি আর শ্বাস রোগের সাথে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পান না করে আর কি কি ভাবে কোক থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে?
১। জামা কাপড় থেকে দাগ ময়লা বা আঠা দূর করা
২। মরিচা দূর করে – কাপড় এমন কি এলূমিনিয়াম ফয়েল কোকে ভিজিয়ে ধাতুর উপর ঘষলেই হবে।
৩। বাগানে শামূক বা SLUG এর সমস্যা হলে, তা মেরে ফেলতে, এসিডের কাজ করবে কোক।
৪। হাড়ী পাতিল রাণ্ণার সময় হঠাৎ পূড়ে গেলে, তা পরিষ্কার করা যাবে কোক দিয়ে!
৫। কেতলির দীর্ঘস্থায়ী ময়লা- পরিষ্কার!
৬। ইঞ্জিনএর আঠালো ময়লা!
৭। ব্যাটারির টার্মিনাল - নেগেটিভ পজিটিভ প্রান্তের ময়লা।
৮। নোঙরা হয়ে যাওয়া খুচরো পয়সা, কোক দিয়ে ভিজিয়ে রাখলেই !
৯। রাণ্ণা ঘড়ের তেলচীটকে ময়লা
১০। চীণেমাটির বাসন কোষণের ময়লা দাগ
১১। নোংরা পূলে ২ লিটার কোক ঢেলে রাখুন, নোংরা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
১২। রং করতে গিয়ে চুলের রং বেশি গাঢ় হয়েছে, হালকা করতে চাইলে ডায়েট কোক ঢালুন!( সাবধান, চোখ বাঁচিয়ে !)।
১৩। কার্পেটে ‘মার্কার এর দাগ পরে গেছে হঠাৎ করে ! কোক ঢেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, এর পর সাবান পানি দিয়ে ঘষলে ‘মার্কার এর দাগ উঠে যাবে।
১৪। ‘ক্রোম কে চকচকে করতে কোক লাগিয়ে এলূমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে ঘষুন, এর জূড়ি নেই।
১৫। ধাতব ফার্নিচার এর পেইন্ট বা রং তূলে ফেলতে কোক দারুন কাজ দেবে।
১৬। অপরিষ্কার নোংরা দাঁত – মুখে কিছুক্ষণ কোক রেখে কুলকুচা করুন, হাত দিয়ে পরখ করে দেখুন- দাঁত কড়কড় করবে।
১৭। টয়লেট পরিষ্কার করতে ‘BOWL এর চতুর্দিকে ঘুরিয়ে কোক ঢেলে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে, ফ্লাশ করলেই – ইজি ক্লীণ!
এবার চিন্তা করুন – এই বস্তু আপনার পাকস্থলী বা গলদেশের লাইনিং এর উপর কেমণ ‘আদরের পরশ দিতে পারে!
আমাদের শরীরে কোক যে সমস্যা ‘সমস্যা তৈরী করতে পারে:
যেমন, কোক হাড়ের ক্যালসিয়াম ঘাটতির কারন হয়ঃ
১। এই কারবনেটেড পানীয় পাকস্থলীতে ‘সমস্যা তৈরী করে, এসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়
২। এই সমস্যা নিরসনে পাকস্থলী,শরীরের রক্ত থেকে একমাত্র ‘এন্টাসিড – ক্যালসিয়াম নিয়ে সাময়িক সমাধান করে।
৩। রক্ত এই ক্যালসিয়াম হারিয়ে, সেই ঘাটতি পূরণের জন্য, তখন ক্যালসিয়াম নেবে হাড্ডি বা মজ্জা থেকে, ফলতঃ হাড় তখন দুর্বল হতে থাকে। শরীর যদি এটা না করত, তাহলে ব্রেন ও পেশীর কার্যকারিতা দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হত।
এখানেই সমস্যার শেষ নয়। এতে আছে প্রচুর ফসফরিক এসিড । এর ফসফরিক এসিড শরীরে পানিশুন্যতা সৃষ্টি করবে (এক ক্যান কোকে যে পরিমাণ ফসফরিক এসিড থাকে – তা হজম বা দ্রবীভূত করতে প্রায় ৮ ক্যান পানি লাগে! কোক খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে গলা শুকিয়ে যায়, পিপাসা লাগে, পানি শূন্যতাই এর কারণ । ) আর এটা শরীরের ক্যালসিয়াম ভাণ্ডার হ্রাস করে।
গলদেশের ক্যান্সার আগে খুব দেখা যেত না, এখন তা খুব সাধারন ঘটনা। নিচের কৌশল টি লক্ষনীয়।
১। কোষ সমূহের কার্যকারিতার ক্ষতি ( mechanical damage) ক্যান্সারের জন্য এক বিরাট রিস্ক। এসবেস্টস কনা এ ভাবে ফুসফুসের ক্ষতি করে।
২। সমস্ত ‘কোমল পানীয় ‘এসিড মাত্রা বাড়িয়ে দেয় (পাকস্থলী থেকে গলদেশের বা esophagus এর ভাল্ভ পর্যন্ত এর ব্যাপ্তি)। মানুষ যখন শুয়ে থাকে তখন এটা আরও স্বাভাবিক ভাবে ঘটে। বিশেষ করে যারা নিয়মিত এর সেবা করছে, তাদের অবস্থা সহজেই অনূমেয়।
৩। এটা এসিড টিস্যুকে গলিয়ে দেয়, পাকস্থলী শক্ত বিধায় এটা দীর্ঘদিন যুঝতে পারে, তবে esophagus তা নয়। তাই কোমল পানীয় সেবী মানুষের esophagus বা গলদেশ – যারা এটা খায় না তাদের থেকে নিয়মিত ও দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে সেল মিউটেশন ( CELL MUTATION) মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়, এর সাথে অতিমাত্রায় বাড়ে – ফ্রি রেডিকেলস ! যার সাথে ক্যান্সার এর সম্পর্ক মাখামাখি পর্যায়ের ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এসব নিয়ে এড বানিয়ে তা প্রচার করা শুরু করে দিন ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন