সুন্দর ত্বক চাই?
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ১১ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৮:৩১:৫৮ রাত
আমাদের উপমহাদেশে ত্বকের বর্ণ আর সৌন্দর্য নিয়ে স্পর্শকাতর নয় এমন তরুণ তরুণী খুব কমই আছে! এমন কি বয়স্যগণও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই! ত্বক হচ্ছে মানব শরীরের- সর্ব বৃহত্তম অঙ্গ – ওয়ান পিস! সৌন্দর্যের প্রথম সোপান হিসেবে শরীরের গঠনের সাথে বিবেচিত হয় ত্বক। আধুনিক স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা নূতন নূতন তথ্য দিচ্ছে। তেমনই কিছু তথ্য নিয়ে আজকের আলোচনা।
ফর্সা, সুন্দর, উজ্জল, কান্তিময়, চমৎকার, পরিছন্ন এমন শব্দগুলো আমাদের ত্বক সম্বন্ধীয় মন্তব্যের ক্ষেত্রে কানে এলে কার না ভাল লাগবে? মতান্তরে, শুষ্ক, রুক্ষ, বা আফগানিস্তানের রিলিফ ম্যাপ বা অতি তৈলাক্ত ত্বকের ভুক্তভোগীরাই কেবল জানে সুন্দর ত্বকের মূল্য কতটুকু!
ভিটামিন এ, সি, ডি, ওমেগা ৩ এবং জিংক সমৃদ্ধ খাবার সুন্দর ত্বকের জন্য অপরিহার্য। আমাদের দৈনিক খাবার তালিকায় অনেক খাবার রয়েছে যা সীমার বাইরে গেলে, ব্রন বের হয়; ত্বকে লোমকূপের তৈল গ্রন্থির নিঃসরন বাধা গ্রস্থ হলে এর সূচনা হয়, এরপর ক্রমাগত সেখানে নখের ব্যবহার- মাইক্রো অরগ্যানিজম বা ব্যাক্টেরিয়ার ক্রিয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। এছাড়া রয়েছে কোলাজেন গঠন বাধা গ্রস্থ হওয়া, ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পাওয়া। তবে এর মূল ঘটনার শুরু হয় পাকস্থলীতে। ত্বক ঠিক রাখতে হলে, সুষম মাত্রায় খাদ্য গ্রহণ যে কত জরুরী, তা যে কোন চর্ম চিকিৎসক এর কাছে গেলে তিনি প্রথমেই তা ব্যখ্যা করবেন!
যারা চামড়া বা ত্বকের সমস্যায় ভুগছেন, যদি আপনি ও তাদের দলে পড়েন বলে নিজেকে মনে করেন, তবে নিম্নোক্ত খাদ্য বস্তুগুলো সীমিত করলে সুফল পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
১। চিনি জাতীয় শর্করাঃ গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত সুগার ( গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ) সমৃদ্ধ খাবার, ‘স্কিন কোলাজেন ক্রসলিঙ্কিং’ কে প্রভাবিত করে। শুনতে জটিল শুনালেও, কোলাজেন মুলতঃ ত্বকের সাবল্য ও স্থিতিস্থাপকতার জন্য দায়ী। অতিরিক্ত সুগার, কোলাজেন সহ শরীরের প্রোটিনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। এর ফলে ত্বক শক্ত হয়ে যায়, ত্বকে ভাঁজ পড়া বা বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে।
২। উচ্চ মাত্রার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ খাবারঃ সাদা ভাত, রুটি- নুডুলস, আলু বা আলুর চিপস, কোল্ড ড্রিঙ্কস এগুলো এর আওতায়। গবেষণায় দেখা গেছে এর অনেক গুলো ব্রন সমস্যার সাথে জড়িত। এই জাতীয় খাবার গ্রহণ মাত্রা ছাড়ালে, শরীর অতিরিক্ত মাত্রায় ইনসুলিন তৈরী করে। আর এর একটা সাইড ইফেক্ট হল ব্রন বা একনি! আর অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরী করতে করতে এক সময়ে ইনসুলিন প্রবাহ ক্র্যাশ করবে, শুধু ত্বক নয়, ডায়াবেটিস ও আক্রমণ করবে এক সাথে!
৩। লবণঃ এক অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান, যা না হলে সমস্ত খাবারই বিস্বাদ। তবে এর অতিরীক্ত ব্যবহারও বিপদ জনক। আজকাল মানুষ ঘড়ে তৈরী খাবারের চাইতে বাইরের খাবারে আকৃষ্ট হচ্ছে। আলুর চিপস বা এই জাতীয় স্ন্যাক্সে অতিরিক্ত লবণ দেয়া থাকে। এতে একবার অভ্যস্ত হলে কম লবন দেয়া খাবার আর মুখে রুচবে না। অতিরিক্ত সোডিয়াম ত্বকের ‘জীবনী শক্তি’ নষ্ট করে দেয়, ত্বকের তরতাজা ভাব আর থাকে না। প্রথমতঃ বেশী লবণ শরীরের পানি টেনে নিয়ে শরীরকে শুস্ক ( ডিহাইড্রেট) করে ফেলে; ত্বকের অতি প্রয়োজনীয় ‘ময়েশ্চার’ শুষে নেয় । অন্য দিকে, অতিরিক্ত লবণ, অপ্রয়োজনীয় এলাকায় পানি ধরে রাখে, যেমন চোখের নীচে থলির মত ঝুলে যাওয়া লক্ষনীয়।
৪। দুগ্ধ জাতীয় খাদ্যঃ দুধের অতিরিক্ত তেল ত্বকের জন্য সমস্যা করতে পারে। ব্রন, এলারজি সমস্যা সহ, অতিরিক্ত তেল হজম করতে বাড়তি পানির প্রয়োজন পরে। অতিরিক্ত পানির যোগান না থাকলে এ পানি শরীর বা ত্বক থেকেই শোষিত হয়। ত্বকে প্রয়োজনীয় পানি হ্রাস পায়, যা ত্বকের সৌন্দর্যের অন্তরায়। পশ্চিমা দেশ গুলোতে মরার উপর খাঁড়ার ঘা এর মত, দুধে রয়েছে প্রচুর গ্রোথ হরমোন !
৫। চর্বিঃ গরু খাসির মাংস, ঘি –চর্বি বা হাইড্রোজিনেটেড তেল - সম্পৃক্ত তেল বা চর্বির উৎস। এগুলো শরীরের জন্য প্রয়োজন, তবে তা সীমার বাইরে গেলেই সমস্যা। প্রায় সমস্ত সম্পৃক্ত চর্বি অতিরিক্ত ‘ইনসুলিন গ্রোথ ফ্যাক্টর’ এর সাথে সংশ্লিষ্ট। এই বস্তু আবার অধিক সেক্স হরমোন তৈরিকে উদ্দীপিত করে করে, যা আবার ব্রন বা একনি গঠনে প্রভাব বিস্তার করে।
সেই তুলনায়, ভেষজ, সব্জি জাতীয় বা আঁশ সমৃদ্ধ নিরামিষ খাবার রক্তে ইনসুলিন বা গ্রোথ হরমোনের আধিক্য হ্রাস করত সহায়তা করে।
তাহলে কি আমরা উপরোক্ত খাবার গুলো খাওয়া একবারে বন্ধ করে দেব?
উত্তর হচ্ছে, না। প্রতিটি মানুষের শরীরের গঠন আলাদা, এর দৈর্ঘ প্রস্থ বা ডাইমেনশণ যেমন আলাদা, তেমনি এর হজম ক্ষমতা, উপচিতি – অপচিতি প্রক্রিয়াও আলাদা। নিজের শরীরে যেমনটা খাপ খায়, এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজের খাদ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। সুষম মাত্রায় খেলে তা কোন সমস্যা নয়, বরং তা সুস্থ শরীর বা সুস্থ ত্বকের জন্য অতি জরুরী।
সীমার বাইরে গেলে, শুধু পানি পানও বিপদ জনক, এটা মনে রাখা দরকার।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আনফেয়ার এন্ড আগলি ব্যবহার করাই আমাদের নিয়ম!!
ওবামা লাগিয়েছেন এটা
Fair & Handsome - কিউকি - মার্দ কো চাহিয়ে য্যায়াদা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন