ভারতের ধুতি বা পাকিস্তানী শিরওয়ানি নয় – চাই বাঙ্গালী ফতুয়া !!

লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ১২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৫:২২:৩৯ সকাল



একটা দেশ বা জাতি বড় হতে হলে তার একটা আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠিত হওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। একটা জাতি গঠিত হতে পারে বিভিন্ন ভাবে- এটা হতে পারে ভাষা ভিত্তিক, অঞ্চল বা – ভূখন্ড ভিত্তিক বা ধর্ম ভিত্তিক। যুগে যুগে যে সকল সফল নেতার উত্থান ঘটেছে – তারা ঐ বিষয়গুলো ব্যবহার করেছেন মানুষকে একতাবদ্ধ করতে। রাজনৈতিক বা সমরনৈতিক হোক, যেকোন নেতারই – প্রয়োজন হয়, একই উদ্দেশ্যে, ঐক্যবদ্ধ একদল মানুষকে ( রাজনৈতিক ভাষায় জনগণ!)। একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে এই জনমত বা দলবদ্ধ মানুষ তৈরী করাটাই একটা জাতি গঠনের প্রথম সোপাণ।

গ্রীক নেতা যাকে আমরা বলি, মহামতি আলেকজান্ডার, –তাঁর দিগ্বিজয়ের পথে গ্রীক বাহিনী নিয়ে ভারত পর্যন্ত এসেছিলেন । সংঘবদ্ধ এক বাহিনী তারে সাথে ছিল- তিনি সফল ভাবে তাদের উদ্দীপিত করতে পেরেছিলেন – নিজের উদ্দেশ্যের একাত্ম করতে পরেছিলেনে সাথের ঐ মানুষদের, নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে গ্রীক যোদ্ধাদের চিন্তাচেতনাকে কেন্দ্রীভুত করতে পেরেছিলেন- তা নাহলে তার বিশ্ব বিজয়ের স্বপ্ন – স্বপ্নই থেকে যেত। হোক সেটা সম্পদ – বা মর্যাদার লোভ কিম্বা জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিষ্ঠা – যে মন্ত্রেই তিনি তাদের উদ্দীপিত করে থাকুন, মানুষগুলো ঠিক তার কথায় এবং নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বস্ত আর অনূগত থেকেছে, তাকে মেনে চলেছে আর তিনিও তাদের নিয়ে বিশ্বজয় করেছেন! তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে, তার vision বাস্তবতা পেয়েছে।

মাইকেল হার্ট এর লেখা বই- the hundreds উল্লেখিত প্রথম মহামানব হলেন মুহাম্মদ ( তার আত্মার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক)। এক বর্বর, উচ্ছৃঙ্খল জাতিকে তিনি ঐক্যবদ্ধ করেছেন কুরআনের মন্ত্রে- ঐশী বানী তাঁর পথ প্রদর্শন করেছে- তবে এর সেক্যুলার ব্যখ্যাও করেছেন অনেক পাশ্চাত্য জ্ঞানীগুণীরা । তাদের ভাষায় - গোত্রে গোত্রে যে হানাহানি তা তিনি সাফল্যের সাথে বন্ধ করতে পেরেছিলেন, মানুষকে সফল ভাবে এক ইসলামের পতাকা তলে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন । এই ‘উম্মি নবী তাদেরকে এমন শৃঙ্খলা আর মূল্যবোধ শেখালেন যে তার ফলে মরুচারী, নাংগা পায়ের বেদুঈন বাহিনী সে সময়ের দুই সুপার পাওয়ার – পারস্য আর রোমান সেনাবাহিনীকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়ে, এক বিশাল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাঁর মৃত্যুর পরেও এই অগ্রযাত্রা স্তব্ধ হয় নি । মদিনার খন্দক খনন করার সময়ে, –খাদ্যাভাবে পেটে পাথর বেঁধে – এই মহামানব যখন বিশালকায় পাথর ভেঙ্গে ফেলার জন্য নিজের হাতে শক্ত আঘাত করছিলেন, পাথর ঠিকরে আলো বের হল। এই আলোতে তিনি দেখলেন- কাইজার (ইংরেজীতে- সিজার, রোমান সম্রাটের উপাধি) আর কিসরা (ফারসিতে- খসরু –তৎকালীন পারস্যের সম্রাট) এর প্রাসাদ ! তাঁর এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় তাঁর ওফাতের অনেক বছর পরে । দুটো রাষ্ট্রই বিজিত হয়, তাদের প্রাসাদসমূহ ও রাষ্ট্র মুসলমানদের অধিকারে আসে। ন্যায়ের ভিত্তিতে, সাম্যের ভিত্তিতে এই ইসলামিক রাষ্ট্র ছিল পৃথিবীর জন্য আদর্শ! যার জন্য এক খ্যাতিমান ব্রিটিশ কবি বলেছেন, যদি গোটা পৃথিবীকে একটা মাত্র শাসন ব্যবস্থায় – প্রগতির দিকে নিয়ে আসতে হয়, তবে সেটা কেবল একজন মাত্র ব্যক্তির দ্বারাই সম্ভব – তিনি হলেন মুহাম্মদ (সাঃ)।

তাঁর অনূসারীগণ এভাবেই এগিয়েছে, পরবর্তী কয়েকশ বছর! কি করে তাঁর অনূসারীগণ (আমরা বলি সাহাবা) এটা করতে পেরেছে? শত্রুদের মুখ থেকে শুনা যাক- (আমরা বাড়িয়েও বলতে পারি!)।

এক যুদ্ধে রোমান বাহিনী, খালেদ বিন ওয়ালিদের বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছে। এক রোমান জেনারেল কুবুকলার, গুপ্তচর পাঠালেন আরব শিবিরের অবস্থা বুঝে আসার জন্য। গুপ্তচর নিজে আরব বিধায় ( সে সময়ে ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইয়েমেন এর কিছু অংশ পর্যন্ত রোমান সম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল-এসব অঞ্চলে বাসকারী আরবগণ রোমান রাজের অধীনস্থ ছিল, অনেকেই খৃষ্ট ধর্মের অনুসারী ছিল), সে রাতের বেলা খুব সহজেই মুসলিম আরব বাহিনীর মধ্যে মিশে গেল এবং সমস্ত খবর নিয়ে ফিরল। রোমান জেনারেলের প্রশ্নের জবাবে গুপ্তচর – জানালোঃ “তারা দিনে যোদ্ধা, রাত্রে দরবেশ (saint), তাদের আমীরের ছেলে চুরি করলেও তারা তার হাত কাটবে আর সে যদি জেনা করে তবে তাকেও পাথর ছুঁড়ে মারা হবে- এভাবেই তাঁরা তাঁদের মধ্যে ন্যয্যতা কায়েম করেছে। - অর্থাৎ বিচারের ক্ষেত্রে কোন বিভেদ নেই, আমজনতা - সাধারন মানুষ আর খলিফার সন্তানকে একই ভাবে সাজা পেতে হবে ।

রোমান সেনাপতি হতাশ হয়ে মন্তব্য করলঃ যদি তোমার কথা সত্যি হয় তবে ভূপৃষ্টের উপরে ঐ জাতির মোকাবিলা করার চাইতে ভূগর্ভের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেয়াই বেহতর’।

নেপলিয়ান বোনাপার্ট, হিটলার, হালাকু খান, তাইমুর লং এর মত দিগবিজয়ী গণ তাঁদের জাতির উপরে শ্রেস্টত্ব আরোপ করেছিলেন । এর এমন শক্তি যে, সমস্ত জাতি ঐ সব নেতাদের পেছনে ঐক্য বদ্ধ হয়েছিল আর তারাও তাঁদের উদ্দেশ্য অর্জন করেছিলেন। হতে পারে তাঁদের অনেক খারাপ দিক ছিল, কিন্তু যা তাঁরা করতে পেরেছিলেন তা ‘জাতিকে বিভক্ত করে নয়, বরং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়েছেন। ৪৩ বছর ধরে বাংলা স্বাধীন হয়েছে। আমাদের বাঙ্গালী/ বাংলাদেশীদের ঐক্য সাধন করতে সে রকম কোন নেতার আবির্ভাব কবে হবে?

বাংলাদেশের স্বাধীনতা গোটা জাতিকে বরং দ্বিধা বিভক্ত করেছে- দুই পক্ষের ‘বিগ ব্রাদার’ ( নাকি সিস্টার?) দের চিন্তা আর চেতনার দূরত্ব উত্তরমেরু - দক্ষিণমেরু থেকেও বেশী। বিশেষ করে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলেই এই মেরুকরনের বিষয়টা বড় তীব্র ভাবে প্রতিভাত হয়। একটা দেশ স্বাধীন হওয়া মানে অন্যের অধীনতা থেকে মুক্তি পাওয়াই নয়, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করাও বুঝায়। ৪৩ বছর পরে বাংলাদেশ কি এখনও স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে? সিঙ্গাপুর – যাদের পানি কিনে খেতে হয়, তারা আমাদের তুলনায় আকাশের মত উঁচুতে! থাইল্যান্ড – মালয়েশিয়া এমন কি ভিয়েতনাম- আমাদের চেয়ে ভাল অবস্থায়! আমাদের দেশ এখনও একাত্তরের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে – তুই রাজাকার- তুই পাক পন্থী – (আমি ভারত পন্থী!), – তুই পচা –তোর দাড়ি আছে, আমি ভাল- আমি ক্লিন শেভড! এর মধ্যেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য বৃত্তবন্দী হয়ে আছে। আওয়ামী পন্থীদের ভারত পুজা দেখলে মনে হয় আমরা স্বাধীন হয়েছি আমাদের দেশকে ভারতের কাছে বর্গা দেয়ার জন্য! ভারত প্রীতি বুঝাতে ভারতের বা পশ্চিম বঙ্গের হিন্দু সংস্কৃতিকে জাতীয়করন করার চেষ্টা দেখলে ভাবতে ইচ্ছে করে – কিসের জন্য এই স্বাধীনতা! পাকিদের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে আবার দাদাদের ধুতির নীচে আত্মবলীদান করার জন্যই কি আমাদের পূর্বসুরীরা বুকের রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে? আজ তথাকথিত আওয়ামী প্রজন্মের বাচ্চারা হিন্দি প্রোগ্রাম দেখছে, হিন্দি বলতে গর্ব বোধ করছে, মুসলিম মেয়েরা সিঁথিতে সিঁদুর দিচ্ছে- (যখন খোদ হিন্দুরা ধাবিত হয়েছে ইংরেজীর দিকে- বহু ভাষাভাষী ভারতে –পাঞ্জাবীরা, গুজরাতির ভাষা বোঝে না, মারাঠি- বোঝে না বাংলা; আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে –যেহেতু ইংরেজী শিখতেই হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় ভাষা হিন্দির চাইতে – তাই ইংরেজী বলতে তারা বেশী পছন্দ করছে; তারা মাথা থেকে সিঁদুর তুলে ফেলেছে, কালে ভদ্রে হিন্দু সধবা- হয় সখ করে নয়তো শ্বশুর শাশুড়িকে খুশী করার জন্য কপাল বা সীমন্তদেশ রঞ্জিত করে- একটু ফোঁটা দিয়ে । মনে হয় আওয়ামীলীগ আমাদের নূতন প্রজন্মকে, অন্যের বর্জ্য- ব্যবহার করাটুকু - ভাল ভাবেই শেখাতে পেরেছে। হাসিনা ওয়াজেদের ‘মা দুর্গা প্রচুর ফসল নিয়ে এসেছে - এটা শূনে কি মনে হয় এটা মুসলিম প্রধান দেশের একজন প্রধান মন্ত্রীর ভাষ্য ?

অনেকের মতে - পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করাই ছিল ভারতের উদ্দেশ্য, মুসলিম শক্তিকে দুর্বল করাই ছিল ভারতের উদ্দেশ্য, মানবতার সাহায্য বা নিপীড়িত জনতার সেবা করার মহান ব্রত তাদের কক্ষনো ছিল না। এর পেছনে যুক্তিও আছে! পাকিস্থানের সেনাপতি আত্ম সমর্পণ করেছে ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কের কাছে, ওসমানীর কাছে নয়! একবার ভাবুন- বাংলাদেশ আর পাকিস্থান- দুদিক থেকে একযোগে পারমানবিক মিশাইল আকাশে উঠলে কোনদিকে ঠেকাবে ভারত? বাংলাদেশকে পাকিস্থান থেকে আলাদা করে ফেলে ভারত কৌশলগত ভাবে নিজের সুরক্ষা আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে! মাথায় মাছির সমান বুদ্ধি থাকলেও তা না বুঝার কথা নয়। কাজেই আমরা স্বাধীন হয়ে, বাঘের লেজ থেকে বিড়ালের মাথা হয়েছি এটা সত্য কিন্তু– সে মাথাও প্রতি মুহূর্তে ভূ- লুণ্ঠিত হচ্ছে দাদাদের পদ তলে! এই কি স্বাধীনতার অর্জন।

যারা সক্রিয় ভাবে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন –অখন্ড ভারতে সংখ্যা লঘু মুসলিমদের দূরবস্থা প্রত্যক্ষ করেছিলেন ( এখন আমরাও করছি বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা, গুজরাটি দাঙ্গা) এবং ভারত ভেঙ্গে পাকিস্থান বানিয়েছিলেন, সেই পাকিস্থানকে ভেঙ্গে ফেলতে দেখলে স্বভাবতই তাদের বুক ভেঙ্গে যাওয়ারই কথা! আপনি যে বস্তুর জন্য শ্রম দেবেন, বুকের রক্ত পানি করবেন, তার দরদ আপনিই বুঝবেন। কাজেই রাজনৈতিক ভাবে জামায়াতে ইসলাম অখন্ড পাকিস্থানের পক্ষে ছিল । খোদ মুজিব নিজেও কে পাকিস্তান ভাঙ্গার পক্ষে ছিলেন? ৭ মার্চের মুজিবের ভাষণে মুজিবের শেষ বাক্য কি ছিল? অবশ্য বাঙ্গালী সব সময়েই ‘শর্ট টার্ম মেমোরি লস’ এর শিকার! গোলাম আজম বা কোন জামায়াত নেতা কি কক্ষনো বাংলাদেশে ৭১ এর পাকিস্থানীদের ‘জুলুমের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন নাকি তাদের সাথে সেই জুলুমে সরাসরি অংশ নিয়েছেন? তার প্রমাণ কই? যদি তাই হত- তবে আওয়ামীলীগকে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করতে হত না। বাঙ্গালী তো ঘাস খায় না, কাজেই সবাই জানে তারা কি করছে। স্কাইপ সংলাপ তো আর মুছে যায়নি আমাদের স্মৃতি থেকে! সাঈদি তো তখন জামাতের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না! তাহলে এদেরকে এক দড়িতে বেঁধে ফাঁসিতে ঝুলানোর যে অপচেষ্টা আওয়ামীলীগ তার দলীয় মেনিফেস্টো বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে করে যাচ্ছে এতে কি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি কোন একজন বাংগালীর আস্থা বাড়বে নাকি গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের বিচারের মানদণ্ড – ক্যাঙ্গারু কোর্ট এর চেয়ে একটু উপরে উঠবে? এখনকার এ বিচারকে ‘আদালতি খূন’ এর বাইরে কিছু বলা যাবে না! এর জন্যই যদি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে থাকে তবে আর কিছু বলার নেই। একটি দেশের বা জাতির সমুন্নত বিচার ব্যবস্থা সে জাতির সভ্যতার সূচক ও বটে। যে কোন বাংলাদেশীকে জিজ্ঞেস করুনঃ আপনাকে যদি চয়েস দেয়া হয়- কোন দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আপনার বেশী আস্থা- ইউরোপিয়ান/ আমেরিকান নাকি আপনার দেশের ? আমরা অনেকেই আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির কারনে ক্ষুব্ধ – তারপরেও ঐ প্রশ্নের উপরে প্রকৃত জরিপ করলে ফলাফল কি হবে তা সহজেই অনুমেয়। অন্ধ আওয়ামী লিগারদের কারো উলটো বলার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু যদি বর্তমান বিচারকদের বদলী বা বরখাস্ত করে সে স্থলে অন্য বিচারক বসিয়ে দেন –সেই আওয়ামি চিড়িয়ার জবাবও সাথে সাথে উল্টে যাবে! এই বিচার ব্যবস্থা নিয়ে কি জাতি হিসেবে আমাদের গর্ব হওয়ার মত পরিস্থিতি রয়েছে? এর নাম ন্যায় বিচার?

সমস্ত জাতীয়তাবাদী, অ-জাতীয়তাবাদী, প্যান ইসলামাবাদী, আওয়ামি- বাম – ডান - মধ্য - সবাই নিজের বিবেক খাটিয়ে একটু ভাবুন, জাতি হিসেবে কি নিয়ে আমাদের গর্ব করার আছে?

আমাদের দেশে এপর্যন্ত একজন মাত্র নোবেল বিজয়ী। তার যে দশা আওয়ামী লীগ করে ফেলেছে- তিনি অন্য দেশে মাইগ্রেট করে জাতীয়তা পরিবর্তন করলেও তাঁকে দোষ দেয়া যাবে না! ভাল কোন মেধাবী বিজ্ঞানী- গবেষক- আবিস্কারক- দেশে তাঁদের যোগ্য সম্মান পাবে কি যদি না তার দলীয় এফিলিয়েশন না থাকে? কিম্বা ভাল একজন খেলোয়াড়? অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, দেশের একজন নোবেল বিজয়ীর চেয়ে বিদেশী এমনকি ভারতের একজন সিকিউরিটি গার্ডের মর্যাদাও অনেক বেশী! এই আত্মমর্যাদা বোধ নিয়ে পৃথিবীতে কোন জাতিই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। নিজেই আমরা নিজেকে সম্মান করতে জানিনা, অন্যরা আমাদেরকে সম্মান করবে কেন?

এখনও কি সময় হবে না জাতি হিসেবে আমাদের আত্ম-উপলব্ধির? মানুষ কি একবার ও ভাবছে? আওয়ালী লীগের স্বর্ণ সময় একদিন শেষ হবে! এরপর কি হবে? বি এন পির স্বর্ণ সময় শুরু হবে ? এতদিন আওয়ালী লীগ যা করেছে তা বি এন পির লোকজন করতে থাকবে? আর আমরা যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই থেকে যাব?

উন্নত জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হলে আমাদের নিজেদের পথ আমাদের নিজেদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। স্বাবলম্বী – স্বনির্ভর হতে হলে নিজের চিন্তা চেতনাকে শানিত করতে হবে সর্বাগ্রে । অন্যরা আমাদের উন্নয়নের, আমাদের স্বনির্ভরতার চিন্তা করে দেবে না। ভারত বা পাকিস্তানের অন্ধ অনুকরণ করে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব না। ভারতীয় বা পাকিস্তানী রাজনীতির অন্ধ অনুসরণ করে আমাদের রাজনীতিকরা সঠিক দিক নির্দেশনা পাবেন না। তাই আমাদের জন্য চাই নূতন পথ – নব্য চেতনার- নূতন ধারা। ভারতের ধুতি বা পাকিস্তানী শিরওয়ানি নয়, চাই বাঙ্গালী ফতুয়া।

পাকিস্তানী

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

283476
১২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:০৬
মামুন লিখেছেন : খুব সুন্দর লিখেছেন! অসাধারণ অনুভূতি! ভালো লাগা রেখে যাচ্ছি।

আবু সাঈদ স্যার এজন্যই একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, " আমাকে অন্তত একটা নেঙ্গটি হলেও দাও"। আমাদের নিজেদের একটি জাতীয় পোশাক থাকা দরকার। Thumbs Up Rose Rose Good Luck Good Luck
১৩ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২৬
226870
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন :
ভাল লেগেছে জন্য খুশী হলাম । অনেক ধন্যবাদ!
283488
১২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:৩৬
শেখের পোলা লিখেছেন : পাপ ক্ষয় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে৷ তবে হয়তো ফতুয়া জুটবে৷ ধন্যবাদ সঠিক উপলব্ধির জন্য৷
১৩ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২৫
226869
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন : আমি হতাশাবাদী নই – আশাবাদী!। ধন্যবাদ!
283495
১২ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:১২
আলমাস লিখেছেন : বাঙ্গালী পেলেন কোথায়? কোন দেশের বাঙ্গালী? সিয়েরলিওনে ও মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা চালু আছে।
নিজের স্বত্তাটা আগে ঠিক করেন। তাহলে উন্নতি হবে।
বাংলাদেশী বাংলাদেশী।
১৩ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২৩
226867
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন : আমি বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশী! আমার কোন সমস্যা নেই জাতিসত্ত্বা নিয়ে । বরং আমাদের জাতীয় সমস্যা রয়েছে – এনিয়ে! কেউ কেউ ভাবেন তারা বাঙ্গালী, বাংলাদেশী নন; কেউ ভাবেন তা ঠিক নয়, ভৌগলিক অথবা রাজনৈতিক ভাবে এটা সঠিক নয়। আমরা যদি বাঙ্গালী হই, পশ্চিম বাংলার বাঙ্গালী কি হবে? কাজেই 'বাংলাদেশী' জাতীয়তা রাজনৈতিক ভাবে আরও সঠিক। আমারও তাতে দ্বিমত নেই, তবে আমি আমার বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বাকে গায়ের জোরে অস্বীকার করি না। আমি বাংলাদেশী বাঙ্গালী ! তবে শুধু বাংলাদেশে বাস করলেই সবাই বাঙ্গালী হবে না! তা হতেই পারে! এক উপজাতি নেতাকে (– সম্ভবত সন্তু লারমা) শেখ মুজিব বলেছিলেন ‘বাঙ্গালী হইয়া যা’! রাজনৈতিক ভাবে একটা ভুল বক্তব্য ( কোন বাপের ব্যাটা এই ভুল ধরিয়ে দেবে!)!
উপজাতি নেতার সমস্যা, সে তো বাঙ্গালী নয়, সে বাঙ্গালী হবে কি করে? বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বা তো আর উপজাতিদের প্রতি বা অন্য আবাঙ্গালীদের আরোপ করা যাবে না!
বাংলাদেশী হওয়া সহজ, কারন এ জাতীয়তা ভৌগলিক, বর্তমান বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী সবার জন্য। যেমন ভাবে এক সময় আমরা অর্থাৎ আমাদের পূর্ব পুরুষ পাকিস্তানী বা ভারতীয় ছিলেন; যেমনটা হয়ে থাকে আমেরিকায়- যে কোন ভাষাভাষীই হোক, আমেরিকায় জন্ম গ্রহণকারী হবে আমেরিকান; কিন্তু একজন আমেরিকায় জন্ম নিয়ে তো ‘রেড ইন্ডিয়ান’ হবে না! এ জাতিসত্ত্বা ভিন্ন ধরণের জাতিসত্ত্বা !
আমাদের বর্তমান পরিচয় বাংলাদেশী, কোন সন্দেহ নেই। কাজেই আমি বাংলাদেশী এবং বাঙ্গালী। ভারতের বাঙ্গালি হবেন ভারতীয় এবং বাঙ্গালী! কিম্বা সিয়েরা লিয়নের বাংলাভাষীগণ বাঙ্গালী হতে পারেন, আবার হতে পারেন অন্য কোন জাতিসত্বার। বিশেষ কোন জাতির ভাষায় কথা বলতে পারলেই তো সে জাতির জাতীয়তা অর্জন করা যায় না! তবে ভৌগলিক জাতীয়তার বিষয় আলাদা। আপনি ৫০ বছর জাপানে বা সউদী আরবে বাস করলেও- জাপানিজ বা আরবী তাঁদের মতই ফ্লুয়েন্ট বলতে পারলেও আপনি তাদের জাতীয়তা পাবেন না! কিন্তু অ্যামেরিকা বা কানাডা বা ব্রিটিশ জাতীয়তার (Nationality ) বিষয়টি পাসপোর্ট বিষয়ক জাতীয়তা! সে অর্থে আমরা বাংলাদেশী! আশা করি বিষয়টা পরিষ্কার !

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File