মদ প্রসঙ্গঃ বিজ্ঞান না ধর্ম?

লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ২২ অক্টোবর, ২০১৪, ১২:১৭:৪৩ রাত



খবরে বেরিয়েছে – এতদিন যে বলা হচ্ছিল, লাল মদের উপকারিতা আছে, তা বেঠিক। মদ পাণ থেকে বিরত থাকলেই বরং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে !

এই খবর প্রকাশে অনেক মুসলমানের মত আমারও একটু যে ভাল লাগেনি তা নয়! তবে কাল যদি এর উল্টো খবর পরিবেশিত হয় তাহলে কি হবে? বৈজ্ঞানিক সত্য পরিবর্তনশীল ! স্থান, কাল ও পাত্র – ভেদে!

আর যদি তা না হয় তবে- কি 'বৈজ্ঞানিক সত্য' চির সত্য হয়ে যাবে? হাজারও বৈজ্ঞানিক মদের উপকারিতা প্রমাণ করে থাকলেও একজন মুসলমান কি স্বেচ্ছায় মদ পান করতে পারে?

আজকের দুনিয়ায় অনেক প্রভাবশালী কোম্পানী তাদের ‘গৃহ পালিত’ বিজ্ঞানীদের দিয়ে তাদের ‘প্রোডাক্ট এর উপকারীতা বা উপযোগ প্রমাণ করছে। এতে ‘বিক্রী বাড়ে – ঐ ‘বিজ্ঞাপনধর্মী গবেষণা অনেকে মেনে নেয়, আর অনুসরণ করে-ঐ বস্তু কেনে - এটা ‘মার্কেটিং কৌশল। অনেক বৈজ্ঞানিক, মদ কম্পানীর পয়সাতেই গবেষণা করেছে এবং মদের উপকারীতা প্রমাণ করেছেন ! এতে মদ কোম্পানির ফায়দা হয়েছে । তবে তারা ধর্ম বিশ্বাসীদেরকে মদপানে উৎসাহিত করতে পেরেছে কি? সব বৈজ্ঞানিক –কিন্তু শুধু সত্য অনুসন্ধানের জন্য গবেষনা করেন না। বড় বড় কোম্পানি গুলো তাদের নিজেদের স্বার্থে গবেষণার জন্য অনেক পয়সা বিনিয়োগ করে। আর গবেষণার পরিচালনার জন্য যে ‘পুঁজি দরকার – এ সত্য প্রতিটা বৈজ্ঞানিক খূব ভাল করে জানেন। কাজেই সে দিক থেকেও বৈজ্ঞানিক সত্য ‘পরিবর্তনশীল !

এক মুসলিম মনিষীর মতে, “বিজ্ঞানের সত্য” আর “ধর্মের সত্য”কে এক করে দেখার অবকাশ নেই! অনেকটা গরম চা আর করমচা যেমন এক জাতীয় নয়, তেমনি ও দুটো বিষয়ও এক ধারায় বিবেচিত হবে না!

ধর্ম হল বিশ্বাসের ব্যাপার, আর বিজ্ঞান হল প্রমাণ ভিত্তিক! আগুনে হাত পুড়ে যায় এটা প্রমাণ করা যায়। কিন্তু আগুন, ইব্রাহীম (সাঃ) কে পোড়াতে পারে নাই; এটা বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের ফলে বিজ্ঞান কিন্তু মিথ্যে হয়ে গেল না। বাবা মায়ের মিলন ছাড়া সন্তান হয় না, এটা বৈজ্ঞানিক সত্য! কিন্তু ঈসা (আঃ) সেভাবে জন্ম নেন নাই। এর ধর্মীয় ব্যখ্যা রয়েছে–- আল্লাহর কুদরত ! আল্লাহ্‌ যেমন করে চান তেমন করে জীবন সৃষ্টি করেন! আর ঈসা (আঃ) এর জন্মের বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা - ইহুদি বা কিছু ‘ধর্ম না মাণা’ বিজ্ঞানীদের জিজ্ঞেস করে দেখুন- (ণাঊজূবীল্লাহ! ) !

তবে অনেক সময় ‘বিশ্বাসীদের’ বিশ্বাস কোন কোন তথ্য প্রমানের কারনে আরও দৃঢ় হয়, এটা সত্য। কিন্তু অনেক- জ্ঞান লাভ করে, – অনেক জেনে শুনেও সকল নাস্তিক কি ধর্ম বিশ্বাসের দিকে ঝুকবে?

একটা প্রাইমারি স্কুলে পড়া ছোট বাচ্চাও জানে তার খেলনাটা, তার কাপড় জুতা কেউ না কেউ তৈরী করেছে । অথচ এই পৃথিবীতে হাজার হাজার মানুষ রয়েছে- যারা এখনও পর্যন্ত ‘সৃষ্টিকর্তা’ বিশ্বাস করে না, বরং বিশ্বাস করে – এই সুন্দর পৃথিবীর, এই সৌর জগতের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই! ‘বীগ ব্যাং’ থেকে এমনি এমনি সবকিছু তৈরি হয়ে গেছে! হাজারো বৈজ্ঞানিক সত্য জাণলেও এরা তাদের ‘অধর্ম ত্যাগ করবে কি? এরা না বিজ্ঞান বিশ্বাস করে, না ধর্ম !

(ধন্যবাদ, ব্লগার গাজী সাহেবকে, এ বিষয়ে তার প্রথম লেখার জন্য)

বিষয়: বিবিধ

১৪১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File