পরিবর্তিত জীবনবোধ
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:২২:১২ রাত
একটা গ্লাসে অর্ধেক পানি রয়েছে, হতাশাবাদীরা বলবে গ্লাসটা অর্ধেক খালি, প্রত্যাশাবাদীরা বলবে- গ্লাসটা অর্ধেক ভর্তি। বস্তু অপরিবর্তিত, শুধু দৃষ্টি ভঙ্গীর পরিবর্তন পুরো ঘটনাকে উল্টো ভাবে প্রতিবিম্বিত করছে। পছন্দটা নেহায়েত আপনার, আপনি কি ভাবে ঘটনাকে দেখতে চান- সেটাই বিবেচ্য।
আমাদের চারপাশে যে জগত – আমরা প্রকৃতগত ভাবেই এর অংশ হয়ে যাই – এর দ্বারা প্রভাবিত হই । কারো কারো – চারপাশের পরিবেশকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা থাকে বেশী, এরা মহামানব না হলেও – প্রভাবশালী মানব তো বটেই। এরা দু ধরণের হতে পারে – উপরে উল্লেখিত দুই শ্রেণীর- হতাশাবাদী বা প্রত্যাশাবাদী। এই দুই শ্রেণীর ‘অতি মানবদেরই প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা রয়েছে- তাদের আশেপাশের পরিবেশকে তারা প্রভাবিত করেন। আতরের দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যেমন – সুগন্ধ নাকে আসবেই, ড্রেনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধ তেমনি নাকে ধাক্কা মারবেই। রুমীর ভাষায় “আতরওয়ালার বন্ধুত্বের সাথে সুগন্ধটা ‘ফাও কিন্তু কয়লা ওয়ালার সাথে বন্ধুত্ব হলে’ ময়লাটা ‘বাড়তি হিসেবে আসবেই।
অবশ্য পছন্দটা আপনার নিজস্ব, আপনি কার সাথে বন্ধুত্ব করবেন এটা নেহায়েত আপনার ‘ব্যক্তিগত বিষয়, কারো নাক গলানো নৈব নৈবচ!
একটা উদাহরন দেয় যাক। একজন গৃহ কর্তা খুব চিৎকার করে কথা বলেন, তার বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যে এটা সংক্রমিত হতে বেশী সময় নেবে না, তার বাড়ির কাজের লোকটাও অল্প কিছুদিনের মধ্যে চিৎকার করে কথা বলতে শুরু করবে!
একজন দ্বীনদার মানুষের বাড়িতে কাজ করে এমন কাজের লোককে লক্ষ্য করুন - কাজে যোগদানের পূর্বে সে নামায না পড়লেও – অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দেখা যাবে- সে নিয়মিত নামাজ পড়া শুরু করছে। দুটো ক্ষেত্রেই ‘প্রভাব লক্ষ্যনীয়!
যদি সমাজে এই ‘আতরওয়ালা ‘মানবদের অনুপাতটা ‘সাধারন’ এর তুলনায় খুব কম হয়ে যায় – তখন ‘সাধারন মানুষের সামনে কোন ‘আদর্শ থাকে না- দিক নির্দেশনার জন্য তারা নিজের ‘বুদ্ধিবৃত্তিকে অনুসরণ করে। আর সমাজে যদি ‘কয়লা ওয়ালার সংখ্যা বেড়ে যায় আর যদি তাদের প্রতিপক্ষ ‘আতরওয়ালার সংখ্যা খুবই অপ্রতুল হয়, সে ক্ষেত্রেও ‘গণতন্ত্র জয়ী হয় অর্থাৎ ‘মেজরিটি রুলস!!
!
আমাদের চারপাশে এখন ‘কয়লাওয়ালার সংখ্যা বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গেছে, আরে এদের ‘গণতন্ত্র জয়ী হয়ে গেছে । সাধারণ মানুষ ‘অসাধারন ভাবে এই ‘কয়লাওয়ালা’ দেরকে অনুসরণ করছে- এতে যা হওয়ার তাই হচ্ছে!
আমি সহজেই আমার চারপাশের পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারব না; কিন্তু – আমার দৃষ্টিভঙ্গিতো পরিবর্তন করতে পারব! এখান থেকেই শুরু হতে পারে ‘ভালর দিকে প্রত্যাবর্তন!
বিষয়: বিবিধ
১০২৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রকৃতিগত ভাবে প্রায় সবাই 'আতরওয়ালা' হিসেবে জনম নিয়েও পারিপার্শ্বিকতা ও সময় সভ্যতার প্রভাবে 'ময়লাওয়ালা'শ্রেণীর প্রকাশ ঘটে।এক সময় 'ময়লাওয়ালা'কেই স্বকীয় মনে করে বসে পরিবর্তিত শ্রেণীরা।ফলশ্রতিতে সমাজ সয়লাব হচ্ছে অনাচার-পংকিলতায়।
অসাধারণ উপমায় বিশ্লেষণধর্মী সুন্দর উপস্হাপনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ জানাই আপনাকে।
আপনি সংক্ষেপে মূল জিনিসটা গুছিয়ে লিখতে পারেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো লাগলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন