হযরত আলী (রাঃ) ও শিয়াদের ভ্রান্ত আক্কিদা
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ২৩ আগস্ট, ২০১৪, ০৫:৪০:৫৯ সকাল
নিজেকে প্রতিক্রিয়াশীল বলে মনে করি না বিধায়- কারো লেখার প্রতিক্রিয়ায় লেখা এড়িয়ে চলি, সাধারণত। তবে আজ ‘শিয়ানে আলী’ নামে এক লেখকের লেখা পড়লাম- এই ব্লগে - বেশ সময় নিয়ে- দীর্ঘ এক লেখা ! প্রতিক্রিয়া হিসেবেই- এই লেখার প্রতিবাদে, আজ লিখতেই হল।
হযরত আলী (রাঃ) খুলাফায়ে রাশেদা'র একজন খলিফা, পুরুষদের মধ্যে প্রথম মুসলিম, অন্যতম বীর যোদ্ধা, কবি, বাগ্মী,হযরত মুহম্মদ (সা এর হাতে গড়া, ইসলামের এক প্রবাদ পুরুষ- A Philosopher warrior! বদরের যুদ্ধ - যে যুদ্ধে জয়ী না হলে ‘ ইসলামের অস্তিত্ব বিপন্ন হত, মুসলিম জাতির এমন সঙ্কট লগ্নে যার তরবারি বীর বিক্রমে ঝলসে উঠেছিল ইসলামের খেদমতে, যে কয়জন সাহাবা দুনিয়াতে তাদের জীবদ্দশায় ‘জান্নাতের খোশ খবর পেয়েছেন, তিনি তাঁদের অন্যতম। হযরত মুহম্মদ (সা পুত্রবৎ যাকে লালন পালন করেছেন, নিজের প্রানপ্রিয় কন্যার সাথে বিয়ে দিয়েছেন - তাঁর প্রতি আমরা চরম শ্রদ্ধাশীল ।
তাঁকে “ আলাইহে ওয়া সালাম’ বলে এই লেখক, মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা এর ‘খতমে নবুয়াত কে অস্বীকার করেছেন। “ আলাইহে ওয়া সালাম’ কেবল নবী বা রাসূলদের জন্য সংরক্ষিত , মর্যাদা জ্ঞাপক বাক্য। নবী রাসূল ছাড়া কাউকে আলাইহে ওয়া সালাম’ বলা ইসলামী আক্কীদার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ‘খতমে নবুয়াত কে অস্বীকারকারীকে মুসলিম বলে আমরা স্বীকার করি না। কাদিয়ানী বা এমন তরীকার সবাই এর অন্তর্ভুক্ত, তাঁরা যে ধর্মের অনুসারীই হন না কেন, মুসলিম নন।
বাকী কাহিনীতে কিছু ‘খণ্ডিত’ সত্যতা থাকলেও- এ লেখা কোন ক্রমেই গ্রহণ যোগ্য নয়। হযরত আলী ( রাঃ) নিজে কক্ষনো ‘নবী’ দাবী করেন নাই বা এমন কোন ইঙ্গিত ও দেন নাই। যে কুফাবাসিরা তাকে মুয়াবিয়ার (রাঃ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুরো সমর্থন যোগাতে ব্যর্থ হয়েছিল, তারাই বা তাদের বংশধরদের একাংশ, তাঁর শাহাদত এর পরে তাঁকে নবী বানিয়ে ‘আলাইহে সালাম’ বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, শিয়াত আলী বা ‘আলীর দল’ হিসেবে এক দল গঠন করেছে এবং পরে- ইসলামের ‘মূল ধারা বা আক্কীদা থেকেই বের হয়ে গেছে, এখন যারা ‘শিয়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাদের ‘আলী- প্রীতি' – রাসূল (সাঃ) এর মহব্বতের উপরে স্থান পেয়েছে । হ্যাঁ, রাসূল ( সাঃ) এর ওফাতের পরে কিছুটা ‘সমস্যা হয়েছিল, কিন্তু ঐ সময়ের ঘটে যাওয়া অতীত ঘটনার চুল চেরা বিশ্লেষণ এখন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি- রাসূল ( সা এর ‘প্রিয় মানুষদের ‘দোষ বা ক্রুটি অনুসন্ধান করার ‘ক্ষমতাই বা আমাদেরকে কে দিয়েছে! আবু বকর ( রা, উমর (রাঃ) রাসুলের খুব কাছের মানুষ ছিলেন- বৈবাহিক সম্পর্ক না ধরলেও;- অনেক কাহিনী দিয়ে তা প্রমাণিত । ‘লেখক যেভাবে বলতে চেষ্টা করেছেন –ইতিহাস তার সামগ্রিক সমর্থন করে না। ফাতেমা (রাঃ) তাঁর নিজের জানাজায় ‘কারো কারো ‘উপস্থিতি এড়াতে চেয়েছেন – এমন অসীয়তের কারনে- তাঁকে রাতের আঁধারে হযরত আলী দাফন করেছিলেন – খুব ঘনিস্ট মানুষদের নিয়ে, এটা সত্য। আল তাবারীর বর্ণনায় আরও কিছু ঘটনা রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে এই ‘মনোমালিন্য তিরোহিত হয়, হযরত আলী (রাঃ), ২য় খলিফা উমর (রাঃ) অন্যতম প্রধান পরামর্শ দাতা হয়েছিলেন, উমর ( রাঃ) অনুপস্থিতিতে ‘খলিফার দায়িত্ব পালন করেছেনই- নিজের মেয়ে কুলসুমকে উমর ( রাঃ) এর সাথে বিয়ে দিয়েছেন, এগুলো স্বেচ্ছায় , কেউ তাঁকে বাধ্য করেন নাই। ( after the prophet, Al tabari –লিখিত ‘ইতিহাস দ্রষ্টব্য) । কিছু শিয়া মতাবলম্বী যেভাবে ইসলামের প্রথম দুই খলিফার ‘ লানত বা অভিসম্পাত করে সেটাও ইসলামী আক্কিদার পরিপন্থী ।
শেষ পর্যন্ত - খেলাফত তো হযরত আলী ( রাঃ) তাঁর পুত্র হাসান ( রাঃ) – রাসূল (সাঃ) বংশধরদের হাতে এসেছিল, হযরত হাসান (রাঃ) ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে ‘ মুয়াবিয়া (রাঃ)’র অনূকূলে তা ছেড়ে দিয়েছেন । মুয়াবিয়া (রাঃ)’ থেকে পরবর্তীতে, রাসুল (সঃ) পরিবারের উপরে ইসলামের ইতিহাসের যে ট্রাজেডি ঘটে গেছে- তা কোন মুসলিমেরই ‘বরদাশত করার কথা নয়। আমরা ব্যাথিত হই- শিয়াদের মতই, তবে এখন সে সব ‘মৃত মানুষদের দোষ ক্রুটি অনুসন্ধান করে এই মুহূর্তে আমরা কতটুকু লাভবান হব? আমরা কি ইতিহাসের গতিকে পরিবর্তন করতে পারব? হয়তো সেটাই ঘটেছে- আল্লাহ্ যে ভাবে নির্ধারিত করে রেখেছেন!
এ ধরণের লেখার ক্ষেত্রে মডারেটরদের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন অনূভূত হচ্ছে ।
এ ধরণের লেখার ক্ষেত্রে মডারেটরদের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন অনূভূত হচ্ছে । ।
বিষয়: রাজনীতি
১৭২৩ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার মনে হয় এ ধরনের ভালো বিষয়ের আলোচনায় আপনাদের মতো অনেকে ইতিহাস দিয়ে প্রমাণ করে দিলে, সেটা সবার জন্য আরও বেশী উপকারী হবে, আমার জন্যতো অবশ্যই!
ধনবাদ আপনাকে।
তাহলে জীবরাইল, মীকাইল,ইস্রাফীল,আজরাইল উনাদের নামের শেষে কি লিখি?
হযরত হাওয়া র নামের শেষে কি লিখি?
হজরত মরিয়াম র নামের শেষে কি লিখি?
হজরত খিজির র নামের শেষে কি লিখি?
দয়া করে বিষয়টা পরিষ্কার করবেন।
সূতরাং আমি বলবো ঐ ভদ্রলোককে আরো লিখতে দিন এবং আস্তে আস্তে তাদের সকলে গোমরাহী ফাস হয়ে পড়ুক। আর যাহাই হোক কোন দল বা গ্রুপের যখনই হযরত আবুবকর-ওমর-ওসমান (রা)সম্পর্কে ঘৃনা পোষণের ঘটনাটি ফাস হয়ে যাবে তখনই তারা মার খেয়ে যাবে। ধন্যবাদ।
ওভার অল আমি লোকমান ভাইয়ের কথার সাথে একমত হয়ে বলতে চাই কোন মুসলিমকে শিয়া বানানো সম্ভব তো হবেই না বরং আলোচনায় শিয়াদের গোমরাহীর বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে ধরা দেবে। আসলেই সঠিক কথা বলেছেন। ইতিমধ্যেই তার আলোচনার ফাকে ফুকে তথ্য বিব্রাটের মাধ্যমে গোজামিলের আশ্রয় নিয়ে ইতিহাস বিকৃত করার প্রয়াস চালিয়েছেন। আমিও তার লেখাটি মনোযোগ সহকারে পাঠ করেছি। তার লেখার মধ্যে বেশ চাতুর্যপনা লক্ষনীয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন