কারা বেশি মেধাবীঃ সাদা ইউরোপিয়ান, কাল আফ্রিকান না এশিয়ান?
লিখেছেন লিখেছেন তিমির মুস্তাফা ১৪ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:০৫:৩৫ রাত
ব্রেন এর আকৃতি এবং জাতিসত্তার বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণার এক প্রবাদ পুরুষ সমাজবিজ্ঞানী জে ফীলীপ রাশটন সমস্ত বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে চলে গেলেন এমণ এক জগতে যেখানে সাদা, কালো আর বাদামী চামড়ার মধ্যে কারা বেশী প্রতিভাবান এনিয়ে কোন বিতর্ক হবে না!
সমাজবিজ্ঞানী রাশটন* অনেক গুলো ‘প্রকাশিত জার্নাল এর তুলনামূলক ডাটা থেকে সিদ্ধান্তে আসেন যে – গড়ে নারী পুরুষ মিলিয়ে – এশিয়ানদের মেধা সাদা (ককেশিয়াণ) বা কালো ( আফ্রিকান ) দের থেকে বেশি। এটা প্রমাণ করার জন্য শব ব্যাবচ্ছেদ এর বহুবিদ ডাটা তিনি ব্যাবহার করেছেন। ব্রেন এর ক্রেনিয়াল ক্যাপাসিটি, মাথার খুলির ভেতরের দিকের মাপে, এশিয়ানদের (মঙ্গলয়েড ) গড় মাপ- ১৪৪৮, ইউরোপিয়ানদের ১৪০৮, এবং নিগ্রোদের ক্ষেত্রে তা ১৩৩৪ সেমি। এবং ব্রেন এর ওজণ (অটোপসী বা ব্যবচ্ছেদ থেকে) এর হিসেবে তা নারী পুরুষ এর গড় হিসেবে - এশিয়ানদের গড় মাপ- ১৩৫১, ইউরোপিয়ানদের ১৩৩৬, এবং নিগ্রোদের ক্ষেত্রে তা ১২৮৬ গ্রাম ।
ক্রেনিয়াল ক্যাপাসিটি থেকে ব্রেন এর পরিমাপক এক ফর্মুলা ( বিজ্ঞানী বেকার, ১৯৭৪, পাতা ৪২৯) অনুসারে এশিয়ান ব্রেন ১৪৪৮ সেমি ৩, হবে ১৩৪৭ গ্রাম, ককেশয়েড ব্রেন এর পরিমাণ ১৪০৮ সেমি ৩ হয়ে যাবে ১৩০৫ গ্রাম, এবং নিগ্রোয়েড এর ক্ষেত্রে ১৩৩৪ সেমি ৩ হবে ১২২৬ গ্রাম। এটা সরাসরি ওজন করা মাপের প্রায় আনুপাতিক ।
এই গবেষণার ডাটা থেকে এটা প্রমাণ হয়, এশিয়ান ব্রেন এর পরিমাণ (বুদ্ধিমত্তার সরাসরি আনুপাতিক) শ্বেতাঙ্গ দের চাইতে বেশি এবং শ্বেতাঙ্গ দের ব্রেন এর পরিমাণ নিগ্রোদের চাইতে বেশি ।
ডঃ রাশটণ এরএই গবেষণা পত্র চরম ভাবে সমালোচিত হয়েছিল। বিশেষ করে গর্বিত শ্বেতাঙ্গ সমাজ- বিজ্ঞান, সামরিক এবং অর্থনীতি সহ বিশ্ব জোড়া তাদের আধিপত্যের এই স্বর্ণযুগে কিভাবে অন্যদের শ্রেষ্টত্বকে স্বীকার করে নেবে ! পুরোটা না মানলেও – অর্ধেকটা অনেকেই মেণে নিয়েছেন এভাবে যে- তারা কালোদের থেকে উত্তম মেধার অধিকারী – প্রমাণ হিসেবে পৃথিবীর জ্ঞানী গুনী দের মধ্যে কালোদের সংখ্যা, শাদা -কালোদের মধ্যে শিক্ষিতের হারে – বৈষম্য, জেল খানায় কালোদের মাত্রাতিরীক্ত সংখ্যাধিক্য ( যদিও এ বিষয়ের জন্য দায়ী কারণ ভিন্ন, পুলিশ/ জাজ দের বর্ণ একটা বড় ফ্যাক্টর ) এই সব বিষয় কে তারা তুলে ধরেছেন এবং তারা বেশ জোরেশোরেই ডঃ রাশটণ এর এই গবেষণাকে এ ক্ষেত্রে মেনে নিয়েছেন । তবে মেধায় এশিয়ানদের শ্রেষ্টত্ব স্বীকার করা তাদের কাছে আরামদায়ক মনে হয়নি । ডঃ রাশটণ এর এই গবেষণাকে অংশত মেনে নিয়ে তারা একদিকে এটাকে যেমন বৈধতা দিয়েছেন – অপরদিকে এশিয়ান দের শ্রেষ্টত্বকে স্বীকার করতে অনীহা দেখিয়ে তারা যে হীপোক্রেটিক, এটা প্রমাণ করেছেন।
ডানপন্থী গ্রেগ জণসণ তার ‘নর্থ আমেরিকান নিউ রাইট ( উত্তর আমেরিকার নব্য ডান ) ওয়েবসাইটে লিখেছেন – এই সমাজবিজ্ঞানী তার গবেষণা কর্মের জন্য দীর্ঘদিন সামাজিক ভাবে হেয় হয়েছেন, বৈষম্যের স্বীকার হয়েছেন, কলঙ্কিত হয়েছেন, চাকুরী থেকে বহিস্কার এর হুমকী সহ্য করেছেন, এমনকি কানাডিয়ান ইগ্যালিটারিয়ান সমাজ এর হাতে শারীরিক ভাবেও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। এমন না যে গ্রেগ তাঁর প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক সত্যের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন, তবে এই মন্তব্যের দ্বারা কানাডার একজন সমাজ বিজ্ঞানীর প্রকাশিত গবেষণার ফলাফল তাঁর স্বজাতির বিরুদ্ধে যাওয়ায় তিনি কি ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তা এখানে পরিষ্কার ফুটে উঠেছে। যদি একজন বিজাতীয় বিজ্ঞানী এই ধরণের গবেষণা প্রকাশ করতো তাহলে কি ঘটতো তা সহজেই অনুমেয়!
এটা ২০১২ সাল, বর্ণ বৈষম্যের ভূত সাদাদের ঘাড় থেকে নেমে গেছে এটা ভাবলে বিরাট ভুল করা হবে। এটা অতিমাত্রায় বিদ্যমান ! ইউরোপ এর রাজনীতিতে ডানপন্থীদের উত্থান, আমেরিকার বূশের আট বৎসর এর ক্রুসেড সহ রেড-নেক দের উন্মুক্ত ভাবে বর্ণবাদী কর্মকাণ্ড, ক্যানাডার বা ব্রিটেনের কনজারভেটিভ গভঃমেণ্ট এর ক্ষমতা দখল এগুলো সেই বর্ণবাদী ভূতেরই বহিঃ প্রকাশ । তবে এদের মাঝেও অনেক সুবোধ মানুষ রয়েছেন, যারা সারা পৃথিবীর মানুষের মঙ্গলের জন্য চিন্তা করেন এবং এই ডানপন্থী উগ্রবাদীদের দখলদারী মানসীকতার বিরুদ্ধে কথা বলেন । শান্তিপ্রিয় বুদ্ধিমান এবং প্রগতিশীল মানুষদের উচিত হল এই সুবোধ মানুষদের কে সমর্থন দেয়া।
বিষয়: রাজনীতি
১৬২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন