পানির ন্যায্য হিস্যা ও বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুয রহমান ২৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৪:২০:৪৭ রাত
সরকার ও ভারতের তথ্য প্রতারণায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দিশেহারা। লংমার্চের কারনে মরুপ্রায় তিস্তায় ৩০০০ কিউসেক পানি দিয়েছে ভারত; লংমার্চের প্রথম দিনে এমনটাই দাবি করেছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; কিন্তু পরদিন সেই হিসেব আর মিলাতে পারেনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), হিসেব মিলাতে পারেনি সরকারী প্রতিষ্ঠান ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড। হিসেব মিলবে কি করে? ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে সঠিক কোন পরিসংখ্যান, তথ্য ও উপাত্তই নাই। অথচ ওনাদের কাজ হচ্ছে তিস্তায় পানি প্রবাহ ও বিতরন, সেচের পানির তথ্য ও উপাত্ত রাখা।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সাথে পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে ভারতের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। দ্বন্দ্বের মূল ছিল নদীতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। কিন্তু ক্ষমতাধর প্রতিবেশী পানির প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখেননি। আন্তর্জাতিক নদী আইনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে প্রায় সব নদীতে বাঁধ দিয়ে ফেলেছেন আর আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছেন মরুভূমির দ্বারপ্রান্তে। যতদুর মনে পড়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এখন পর্যন্ত মাত্র দুই জন লোক পার্শ্ববর্তী দেশের পানি অগ্রাসন নিয়ে কথা বলেছেন, ঘটনাক্রমে তারা একই দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং তারা সম্পর্কে স্বামী – স্ত্রী; তাঁরা হলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
সৌদিআরবের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রী আর বাংলাদেশের তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রী। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা গত ৫৪ বছরের মধ্যে গতকাল ছিল সর্বোচ্চ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি আবহাওয়াবিদরা এল-নিনো’র আশংকাও করছেন। যদি এল-নিনো’র প্রভাব সত্যি আমাদের উপর পড়ে তাহলে ০৭ থেকে ০৮ মাস দেশ থাকবে অনাবৃষ্টিতে ও প্রচন্ড খরায়। আর এজন্য চরম মাশুল গুন্তে হবে আমাদের। ভারতের ক্রমাগত পানি অগ্রাসন আমাদের নিয়ে যাচ্ছে মরুভূমির দিকে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল পরিনত হবে সম্পূর্ণ মরুভুমিতে। গতকাল দেখলাম নীলফামারীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী’রা “তিস্তায় পানির দকার নাই” এই শ্লোগান তুলে মিছিল সমাবেশ করেছে; আমাদের জন্য এটা রীতিমত হতাশাজনক। নদীতে পানি না থাকলে বৃষ্টি হবে না এবং বৃষ্টির যোগানদাতা মেঘ তৈরী হবে না। আর বৃষ্টি না হলে দেশ ধেয়ে যাবে মরুভূমির দিকে, যার প্রভাবটা সবচেয়ে বেশী পড়বে উত্তরাঞ্চলে। উত্তরাঞ্চল মরুভুমিতে পরিনত হলে দেশে খাদ্য শস্য উৎপাদন ব্যাপক রকমের হ্রাস পাবে। আর বাড়তি ঘাটতি মিটাতে হবে আমদানীর মাধ্যমে। অধিক আমদানীর ফলে ভেঙ্গে পড়বে মুদ্রা ব্যাবস্থা, কমে যাবে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ, বাড়বে বেকারত্ব আর ভেঙ্গে পড়তে পারে সামাজিক শৃঙ্খল।
ক্ষমতাসীন সরকার যেই থাকুক না কেন? প্রত্যেক সরকারেরই উচিত পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে ভারতের সাথে দেনদরবার করে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করা এবং দেশকে নিশ্চিত মরুভুমির হাত থেকে রক্ষা করা। নতুবা ভোগ করতে হবে ভয়াবহ পরিণতি। যা মোটেও আমাদের কাম্য নয়।
লেখকঃ
মাহফুয রহমান
গবেষক ও শিক্ষানবীশ সাংবাদিক
বিষয়: রাজনীতি
১৭৬৯ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিষয়টির সাথে একমত নই ; আমদের ইসলাম ধর্মে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজের বিধান রাখা হয়েছে। ঐ নামাজ পড়লেই ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হবে। চিন্তা কি?
গতকাল দেখলাম নীলফামারীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী’রা “তিস্তায় পানির দকার নাই” এই শ্লোগান তুলে মিছিল সমাবেশ করেছে
কোথায় দেখলেন? দৈনিক আমার দেশ??
না ভাই, দৈনিক অনলাইন আমার দেশ পত্রিকায় দেখি নাই। দেখেছি আওয়ামীলীগ সরকারের পা চাটা অনলাইন পত্রিকা বাংলা নিউজে। লিংকটা হলঃ-
http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/285095.html
তিস্তা পূর্ব তীর রক্ষা কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সারওয়ার হায়াত খান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এবার তিস্তার পানি না আসায় লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ২৬টি ইউনিয়নের ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টাসহ বিভিন্ন চাষাবাদ হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশ ধাবিত হচ্ছে মরুভূমির দিকে আর আপনি ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টাসহ বিভিন্ন চাষাবাদ হয়েছে এই ধুঁয়া তুলছেন। ভালোই.।
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
বাইদ্যা ওয়ে, প্রতিমন্তব্য ১ ; ধর্মকে পৈত্রিক সম্পত্তি বানানোর কোন মানে নাই।
ভাইজান, ধর্মতো আজন্মই পৈত্রিক সম্পুত্যি। তা না হলে হেফাজতীরা এমনি এমনি নাস্তিক কতল করার হাত পাঁকায়?
হেফাজতীরা নাস্তিক কতল করেছে এমনটা শুনি নি; শুনেছি হেফাজত বিরোধী জোট ও গণজাগরণ মঞ্চের কোটি টাকা লোপাটের খবর, দেখেছি ২৮ মানুষ মেরে লাশের উপর নৃত্য, পড়েছি আজানের সাথে বাইজির নৃত্যের তুলনা এবং ধর্ষণের শতক পুরনের খবর।
হুমম, আপনার কথায় সারমর্ম(গোবর)সার)আছে বৈকি! শুধু মরুভূমি হলে তো বেঁচেই যেতাম। এক সময়ের প্রমত্তা বুড়িগঙ্গা, শীতল্যাক্ষা, ধলেশ্বরী.... এখন কোলকাতার বর্জবিষে মরা খাল মাত্র। বৃহৎত্তর ঢাকা জেলার খাল-বিল-পুকুর-জলাশয় সব দখল,ভরাট করে ভারতের মারওয়াড়ি ভূমি দস্যুরা ইন্ডিয়ান সুপার মার্কেট বানিয়ে ফেলেছে। তো? অন্য দিকে, টিপাইমূখ বাঁধ বির্নিমানের আগেই দূর্গাদেবীর অভিশাপে? সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা শুকিয়ে চৌচির মরুভূমি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে দৈনিক নয়া দিগন্ত(জান্নাতের ভার্জিন পত্রিকা)'এর ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪'র রিপোর্ট দেখুন।
চর জেগে সুরমা এখন মৃতপ্রায়, খবর নয়া দিগন্ত,
মো: আফতাব উদ্দিন সিলেট ব্যুরো
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, মঙ্গলবার, ৮:৪০
সূত্র : Click this link
এবার দেখুন দক্ষিনের অবস্থা- আকাশ থেকে নেমে আসা আল্লার গজব আইলা-সিডোরের আঘাতে ভেংগে যাওয়া বাঁধগুলো রিপেয়ার না করার কারনে ভারত(আবার ভারত) মহাসাগরের পানি বঙ্গপোসাগর বেয়ে বাংলাদেশের দক্ষিন জেলা বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, খুলনার বিস্তৃণ অঞ্চল ধীরে ধীরে লোনা পানিতে ডুবে যাছ্ছে।
পরিশেষে বলছি : তওবা করে নিজের অপকর্ম আল্লার উপর ঠেলে দিয়ে খালাস হওয়া যায় বটে। কিন্তু বাংলাদেশের অপকর্ম অন্যের ঘাড়ে ঠেলে খালাস পাওয়া এত সহজ না, যতবড় রাজনৈতিক টাউটবাজ পাতি সাংবাদিক আপনি হোন্না কেন??
যুক্তি ১ - সাহারা মাতৃভূমি কর্পোরেশন পুরোদমে কাজ শুরু না করতেই বুড়িগঙ্গা, শীতল্যাক্ষা, ধলেশ্বরী.... এখন কোলকাতার বর্জবিষে মরা খাল হয়ে গেল...??? সাহারা মাতৃভূমি কর্পোরেশনকে বাংলাদেশে জায়গা দিয়েছে কে? ভুলে গেলেন না কি মহাশয়...!!! সিলেটে শুধু সুরমা – কুশিয়ারা নদী না, আরোও আছে। ক্ষমতাসীন সরকারের নীরব সহযোগিতায় ভারত আসামের অভিন্ন ৭টি নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ কৃষি কাজের জন্য পানি প্রত্যাহার করে চলছে ও আর ক্ষমতাসীন সরকার এখন পর্যন্ত তার কোন প্রতিবাদতো দুরের কথা এই বিষয় নিয়ে মুখ পর্যন্ত খুলেনি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সিলেটবাসী সহ আমাদের।
যুক্তি ২ – আকাশ থেকে নেমে আশা গজব ও বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, খুলনার বিস্তৃণ অঞ্চল ধীরে ধীরে লোনা পানিতে ডুবে যাবার জন্য আমরা যতটুকু দায়ী তার থেকে বহুলাংশে দায়ী পার্শ্ববর্তী ভারতসহ উন্নত বিশ্ব। তাদের পুঁজিবাদী শিল্পায়ন ও প্রতিযোগিতামূলক কার্বন নিঃসরণে তলিয়ে যাচ্ছি আমরা এবং এটা নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়...!!!
আমরা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা বাংলাদেশের অপকর্ম অন্যের ঘাড়ে চাপাই না (আপনি চাপান নাকি...???), শুধু মাত্র অন্যায়, অসঙ্গতির প্রতিবাদ জানাই। আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি, কারো সম্পর্কে না জেনে মন্তব্য করার মত বাজে অভ্যাসটুকূ পরিবর্তন করুন। সবাইকে নিজের মত রাজনৈতিক টাউটবাজ না ভেবে রাজনৈতিক টাউটবাজ আর খাঁটি বাংলাদেশীর মাঝে পার্থক্য’টা বুঝুন। কাজে দিবে...
হুমমমমমম!! আল্লার সৈনিরা জেগে উঠলে কি হয় তা দেখতে বাকি নেই।
১। বসুন্ধরা, ইষ্টার্ন হাউজিং, মুধুমতি, পূর্বাচল....এর মত বাঘাবাঘা বাটপার মুমিনের বাজারে "সাহারা কর্পোরেশন" এর ওহি আবার কবে নাজিল হল ভাইজান?
২। এই তো, আয়ানা দিয়ে নিজের কুৎসিত চেহাড়া দেখতে শুরু করেছে, ধন্যবাদ।
তেমন কিছুনা, যাষ্ট জান্তে চাই....।
১। আপনি লিখেছেন, ‘এক সময়ের প্রমত্তা বুড়িগঙ্গা, শীতল্যাক্ষা, ধলেশ্বরী.... এখন কোলকাতার বর্জবিষে মরা খাল মাত্র।“ বসুন্ধরা, ইষ্টার্ন হাউজিং, মুধুমতি, পূর্বাচল....এর মত বাঘাবাঘা বাটপার থাকতে কোলকাতার বর্জবিষে বুড়িগঙ্গা, শীতল্যাক্ষা, ধলেশ্বরী মরে কিভাবে...??? বসুন্ধরা, ইষ্টার্ন হাউজিং, মুধুমতি, পূর্বাচল; এরা কি কোলকাতার...!!! জনাব, দেশ’টাকে লেন্দুপ দর্জির মত বেচে দেন নি তো...!!!
২। তা জনাব, বাংলাদেশীদের চেহারা কুৎসিত? আর আপনি কোন দেশী...??? বাংলাদেশে বসে বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধাচরণ...!!! বাংলাদেশীদের ও বাংলাদেশের চেহারা ভালো না লাগলে দরজা খোলা আছে...!!! আপনাদের দাদা বাবুরা অপেক্ষা করছে’তো...।
৩। হেরা পর্বতের গুহার আলোতেই সারা দুনিয়া আলোকিত হয়েছে। অবশ্য এইটা বিধর্মী’রা স্বীকার করলেও কিছু কিছু নির্বোধ নাস্তিক স্বীকার করে না। কেউ স্বীকার করুক আর না করুক; সত্য কোন দিনই চাপা থাকবে না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন