১৬ ডিসেম্বরের জবানবন্দি
লিখেছেন লিখেছেন আবু ওবাইদা আরাফাত ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ১২:৪১:৩৫ দুপুর
আমি ১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের মানুষের অহঙ্কার ও গর্বের উজ্জ্বল প্রতীক। আমাকে নিয়ে মানুষের এত গর্বে সত্যি বলছি কি আমার বুকও ফুলে ওঠে। তাদের এত অহঙ্কারের ইতিহাসও ইতিহাসের সোনালি অধ্যায়। সে তো এক সাগর রক্তের স্রোতে সব শোষণ ও সাম্রাজ্যবাদের আনুষ্ঠানিক উচ্ছেদ। যা হোক আমি আর ওদিকে যাচ্ছি না। আমি (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশীদের বিজয়ের জ্বলন্ত সাক্ষী ও অংশীদার। তাই বিজয়ের দিন আমাকে ঘটা করে পালন করে। উত্সবে, সমাবেশে, র্যালিতে, ফুলের পর্বতে আর পতাকার ছড়াছড়িতে মাতিয়ে রাখে। শ্রদ্ধার বৃষ্টি নিবেদন করে দলে দলে। কিন্তু তাদের সম্বর্ধনা, সভা, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসাকে আমি প্রত্যাখ্যান করি, অনর্থক মনে করি। কেন তোদের এ আয়োজন? হায়রে বাংলাদেশী! তোমাদের বিবেক আজ কোথায়? বিজয়ের মিথ্যে ভানে মাতাল সবাই! শোন, বিজয়ের জন্য যুদ্ধ করেছ, রক্তের বন্যা ভাসিয়েছ, শত্রু নিধন করেছ এমনকি সাময়িক পরাধীনতা হতে স্বাধীনতা তথা বিজয় অর্জন করেছ বটে, তবে প্রকৃত বিজয়ের মুখ কি দেখেছ? শুধু যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করাকে প্রকৃত বিজয় বলা যাবে না। যতক্ষণ ক্ষুধা, দারিদ্র্য, দুর্নীতি, ইভটিজিং ও রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরুদ্ধে বিজয় হওয়া না যায়। তোমাদের এতসব অসঙ্গতি-অস্থিরতা ও অপূর্ণতার পালে বিজয়ের রক্তিম সূর্য আজ অস্তমিত।
অতএব দোহাই লাগে, বিজয়ের দিন আমাকে জড়িয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করবে না। এতে আমি খুবই অপমানিত ও লজ্জিত হই। কিন্তু হ্যাঁ! তোমাদের এই আয়োজন-উচ্ছ্বাসে ওইদিন আমার বুক গর্বে ফুলে উঠবে, যে দিন তোমরা মেধা ও মননের সমন্বয়ে নৈতিক বলে বলীয়ান হয়ে সমৃদ্ধ বাংলার সুদৃঢ় ভিত রচনা করে প্রকৃত বিজয়ের রক্তিম সূর্যের উদয় ঘটাবে। সেখানে থাকবে না হানাহানি, গৃহযুদ্ধ, প্রতিহিংসা, দুর্নীতি, দারিদ্র্য ও ইভটিজিং নামক ভয়াবহ মহামারী।
সাংগঠনিক সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর পাঠকমেলা
বিষয়: বিবিধ
১০০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন