জাকারবাগ
লিখেছেন লিখেছেন ওবায়েদ উল্লাহ সোহেল ১৫ নভেম্বর, ২০১৫, ১০:২৮:৫৩ রাত
প্রিয় জাকারবার্গ, ফিলিস্তিন-
সিরিয়া-ইরাক- আফগানিস্তানের
ও পতাকা আছে!
===========================
বাটাক্লঁ কনসার্ট হলসহ ৬টি
স্থানে একযোগে হামলা
হওয়ায় ভীত সন্ত্রস্ত ফ্রান্সের
সাধারণ মানুষ। চিত্রকলা আর
শিল্প-সাহিত্যের নগরী
প্যারিসে হামলা হওয়ায়
উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব।
.
স্বাভাবিকভাবেই এই হামলার
বিপক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন
বিশ্ব নেতারা। সাধারণ
মানুষও ধিক্কার জানিয়েছে এই
ন্যাক্কারজনক ঘটনার। এমন ঘটনায়
ঘৃণা প্রকাশ করেছে
বাংলাদেশিরাও।
.
ফ্রান্সের ১২৯ জন নিহত হওয়ার
ঘটনায় বিশ্বের কোটি কোটি
মানুষের সমবেদনার ভাগী
হয়েছে মার্ক জাকারর্বাগ-এর
ফেসবুকও। প্রতিষ্ঠানটি
ফ্রান্সের জাতীয় পতাকায়
নিজেদের প্রোফাইল ছবি মুড়ে
দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন
ব্যবহারকারীদের। জানাতে
বলেছেন সমবেদনা। আমরা
ফ্রান্সের পতাকায় মুড়িয়ে
নিয়েছি নিজেদের। নিন্দা
জানিয়েছি প্যারিসের
.
ন্যাক্কারজনক ঘটনার। কিন্তু প্রশ্ন
হচ্ছে, প্রিয় মার্ক জাকারর্বাগ,
মানবতা লঙ্ঘনের মতো হামলা
কি শুধু প্যারিসে হয়েছে?
.
ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক,
আফগানিস্তানে কি হয়নি?
যুগের পর যুগ ধরে কি
ফিলিস্তিনিরা নৃসংশ হত্যার
শিকার হচ্ছে না? ইরাক,
সিরিয়া, আফগানিস্তানেও কি
প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ
খুন হচ্ছে না? ফ্রান্সের মাত্র
১২৯ জন নিহতের প্রতি সমবেদনা
জানানোর জন্য ফ্রান্সের
পতাকায় ফেসবুক
ব্যবহারকারীদের
নিজেদেরকে মুড়িয়ে দেওয়ার
আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু লাখ
লাখ মানুষ যে সমস্ত দেশে খুনের
শিকার হয়েছেন এবং হচ্ছেন
তাদের জন্য কি কোনো
সমবেদনা নেই?
.
নাকি তারা মানুষ হিসেবে গণ্য
হতে
পারেনি উন্নত আর প্রভাবশালী
দেশগুলোর কাছে? জানি এ
প্রশ্নের উত্তর আপনি দিতে
পারবেন না। কারণ, আপনাদের
মানবতার সংজ্ঞা আলাদা। তবে
প্রিয় মার্ক জাকারবার্গ,
ফিলিস্তিন-সিরিয়া-ইরাক-
আফগানিস্তানেরও জাতীয়
পতাকা আছে, তারাও প্রতিদিন
শিকার হচ্ছেন সন্ত্রাসী
হামলার। আমরা তাদের প্রতি
সমবেদনা জানিয়ে, তাদের
জাতীয় পতাকায় নিজেদের
মুড়িয়ে নিতে চাই। আপনার
ফেসবুক কি তাদের প্রতি
সমবেদনা জানাতে পারে না?
.
আমরা ফ্রান্সের প্রতি মানবিক।
যুক্তরাষ্ট্র, লন্ডন বা
অস্ট্রেলিয়ার কেউ খুন হলেও
আমরা মানবিক হই। কিন্তু বছরের
পর বছর ধরে যেসব দেশের মানুষ
বিনাদোষে লাশ হয়ে
যাচ্ছেন তাদের প্রতি আমরা
কতটা মানবিক? আমরা তাদের
পক্ষে কতটুকু এগিয়ে গিয়েছি?
.
১৯৮৭ সালে ‘ইন্তিফাদা’ শুরু
হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনে এ
যাবৎ কত লাখ মানুষ নিহত
হয়েছেন, তার সঠিক খবর
কারোরই জানা নেই। তবে
প্রতিদিনই যে দেশে লাশের
স্তুপ তৈরি হচ্ছে সে দেশের
প্রতি ‘বিশ্ব মানবতা’ শব্দটি
তৈরি হয়নি। এ শব্দটি তৈরি
হয়নি ২০০১ সাল থেকে লাশের
মিছিলে পরিণত হওয়া
আফগানিস্তানের মানুষের জন্যও।
.
২০০৩ সাল থেকে ইরাক আর গত চার
বছর ধরে সিরিয়ায় যে গণহত্যা
করছে মার্কিন জোট তার জন্যও
‘বিশ্ব মানবতা’ শব্দটি নয়।
.
কারণ, এই গণহত্যাগুলো স্বয়ং
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করে যাচ্ছে।
তাই পেশী শক্তির কাছে হার
মেনেছে মানবতা নামের
শব্দটি। যুক্তরাষ্ট্র যাদের প্রতি
মানবতা দেখাবে তাদের
দিকেই সমবেদনা জানাবে
পুরো বিশ্ব।
.
ফলে আমরা যেভাবে উন্নত
দেশের নিরীহ নিহতদের জন্য
সমবেদনা জানাতে পারি
সেভাবে অনুন্নত রাষ্ট্রের
নিরীহ নিহতদের জন্য সমবেদনা
জানাতে পারি না। কারণ,
প্রভাবশালী দেশগুলোর
সংবিধানে হয়তো তারা
মানুষ হিসেবেই গণ্য নন, আর মানুষ
না হলে তাদের প্রতি সমবেদনা
জানাবো কী করে?
.
বিষয়: বিবিধ
১১৮৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পশ্চিমাদের ভন্ডামী নতুন কিছু নয়!!
মুসলমানদের মানবতা থাকতে নেই।
মুসলমানদের মানবতা থাকতে নেই।..সহমত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন