ইসলামী আন্দোলনের একজন কর্মীর যে গুনাবলী থাকা প্রয়োজন ।
লিখেছেন লিখেছেন ওবায়েদ উল্লাহ সোহেল ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:০৫:৫৭ সকাল
একজন প্রকৃত মুসলমানের আমৃত্যু
মিশন: দাওয়াত ইলাল্লাহ,
আল্লাহর পথে, সত্য-সুন্দর আর
কল্যাণের পথে মানুষকে ডেকে
ফেরা। নিজে কল্যাণের পথে,
সত্য ও সুন্দরের পথে চলার মাধ্যমে
অন্যকেও সেই একই পথে চলতে
আহ্বান করা, সহায়তা করা।
.
আল কুরআন হতে চয়নকৃত
গুটি কতক আয়াত
কেবলমাত্র প্রাসঙ্গিক
পরিবেশে আওড়ে দেয়া,
একইভাবে গুটিকতক হাদীস
ঝেড়ে দেয়া আর অমুসলিম
কিংবা মতাদর্শ বিরোধি অথবা
ভিন্নমতাবলম্বীদের
চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে,
জাহান্নামে তাদের কোন
স্তরে স্থান হবে, সে ফয়সালা
ঘোষণা করে মঞ্চ কাঁপানো
বক্তৃতার নাম ইসলামী আন্দোলন নয়।
.
ইসলামী আন্দোলন হলো;
মানুষকে বোঝানো যে,
ভিন্নমতাদর্শী, ভিন্ন মতাবলম্বী
হওয়া সত্তেও্র আপনি তার
কল্যাণকামী, তাকে
ভালোবোসেন। আপনার কাছে
একজন মানুষ হিসেবে তার মান-
সম্মান, জীবন-সম্পদ সকল কিছুই
পুরোপুরি নিরাপদ। ইসলামী
আন্দোলন হলো এটা প্রমাণ করা
যে, সমাজবাসীর জন্য আপনি
একজন প্রকৃতই কল্যাণকামী কর্মবীর।
.
ইসলামী আন্দোলনের একজন প্রকৃত
কর্মীর পরিচয় হলো;
.
এক-
বিশ্বের প্রতিটি মানুষই তার
সামনে
এলে তাকে সমীহ করতে বাধ্য হয়
তার প্রকাশমান সহাস্য
ব্যক্তিত্বের কারণে, অপরিচিত
হলেও তাকে আপন, অনেক দিনের
চেনা ভাবতে বাধ্য হয়।
.
দুই
আন্দোলনের একজন কর্মী রাসুল
সা: এর সুন্নাত; সরাসরি চোখের
দিকে তাকিয়ে কথা বলা বা
শোনা, মনযোগ দিয়ে
প্রতিপক্ষের কথা শোনা,
হাসিমুখে সম্ভাষণ, সদাচার,
যথাযথ সম্মান প্রদর্শন ও
স্পষ্টবাদীতা চর্চার মাধ্যমে এ
দুরুহ কাজটি সম্পন্ন করেন।
.
সমাজের দূর্বল, দু:স্থ ও অভাবী
জনগোষ্ঠী নিজেদের
প্রয়োজনের মহুর্তে সাহায্য,
সহযোগীতা ও পরামর্শের জন্য
তাকেই সবার আগে স্মরণ করে।
.
তিন-
সমাজে প্রতিষ্ঠিত
জালিম, অত্যাচারী, অসৎ
গণবিরোধি শক্তি বা ব্যক্তি
সর্বদা আন্দোলনের একজন কর্মীর
প্রতি কঠোর ভূমিকা নেয়। দৃশ্যমান
কোন কারণ ব্যাতিরেকেই
ইসলামী আন্দোলনের একজন প্রকৃত
কর্মী জালিম সমাজ, সরকার ও
প্রশাসনের পক্ষ হতে জুলুমের
মুখোমুখি হয়।
.
চার-
ইসলামী আন্দোলনের একজন
প্রকৃত কর্মী সমকালীন যুগ ও সমাজে
সবচেয়ে সৎ, চরিত্রবান, আধুনিক,
জ্ঞানী,
প্রাজ্ঞ ও সংস্কৃতিবান ব্যক্তিত্ব।
.
পাঁচ-
নির্ভিক ও সাহসী, নম্র ও
বিনয়ী, একইসাথে স্বল্প ও
মিষ্টভাষী।
.
ছয়-
যে কোন বৈরী
পরিস্থিতেও ইসলামী
আন্দোলনের একজন কর্মী স্থীর ও
অনড়। অল্পতেই পরিতৃপ্ত।
.
সাত-
সর্বোপরি, ইসলামী আন্দোলনের
একজন প্রকৃত ইসলামের মৌলিক
ইবাদাতের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ
নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও
একাগ্রতার পরিচয় প্রদানকারী।
.
ইসলামী আন্দোলনের একজন প্রকৃত
কর্মীকে কাছে থেকে দেখার
পরে সমাজে এক একজনের মনে এক
এক রকম ভাবনার উদয় হয়। আসুন
দেখি সম্ভাব্য সে সব
ভাবনাগুলো কেমন? -
.
তাগুত সরকার ও তার আজ্ঞাবহ প্রশাসন
ভাবে; ব্যাটা একটা পাক্কা
সন্ত্রাসী! - একজন তথাকথিত
সেকুল্যার মুসলিম ভাবে; ব্যাটা
ব্যাকডেটেড! - একজন কমুনিষ্ট
ভাবে; ব্যাটা একজন মোল্লা। -
একজন হিন্দু মনে মনে ভাবে, আহা
একজন অবতার যেন! - একজন খৃষ্টান
ভাবে; আহা যেন একজন এঞ্জেল!
- মেয়ের বাবা-মা ভাবেন; আহা
ছেলেটা বড় ভালো গো! -
সমাজের সবচেয়ে নিগৃহীত ও
বঞ্চিত জনগণ ভাবে; আহা, যেন
একজন ফেরেশতা! - একজন সহকর্মী
বন্ধু ভাবেন; আমার সবচেয়ে আপন
জন! - একজন মালিক বা অফিসের
বস ভাবেন; সবচেয়ে দক্ষ ও সৎ ও
নিষ্ঠাবান কর্মচারী/এমপ্লয়ী!
.
আর ইসলামী আন্দোলনরে একজন
প্রকৃত কর্মী নিজের ব্যপারে কী
ধারনা পোষণ করেন? তিনি সদা
সর্বদা এই ভয়েই কম্পমান থাকেন,
হায়, আমার নিজের প্রতি,
পরিবার, আত্বীয় স্বজনের প্রতি,
আমার জন্মভূমির প্রতি কোন
দায়িত্বই তো যথাযথভাবে
পালন করতে পারলাম না! আমিই
তো এ বিশ্বের সবচেয়ে বড়
পাপী! কাল কেয়ামতের মাঠে
আল্লাহ কী আমাকে ক্ষমা
করবেন?
.
এ ভয়ই তাকে সব সময়
সন্ত্রস্থ করে রাখে, করে রাখে
আল্লাহমুখী, আল্লাহর কাছে
এস্তেগফারে রাখে ব্যস্ত!
.
মোদ্দকথা হলো; ইসলামী
আন্দোলনের একজন কর্মী জীবনের
প্রতিটি মহুর্তই আল্লাহমুখী হয়ে
থাকেন। আল্লাহতেই তার ভরসা,
তাঁরই উপর তার আস্থা।
বিষয়: বিবিধ
১৯৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন