ইসলামের দূষ্টিতে যে সকল মেয়েদের বিয়ে করা হারাম।
লিখেছেন লিখেছেন ওবায়েদ উল্লাহ সোহেল ০৩ আগস্ট, ২০১৫, ০৫:৩১:৪৭ বিকাল
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বংশ
পরম্পরায় মানব প্রজন্মকে দুনিয়ায়
টিকিয়ে রেখে দুনিয়াকে
আবাদ রাখার জন্য বিবাহ বন্ধনকে
বৈধ করেছেন।
.
এটাকে আল্লাহ তাআলার একটা
গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও সিস্টেম। এ
ছাড়া বিবাহের মাধ্যমে
দাম্পত্য জীবন গঠন করা নবীদেরও
সুন্নত।
.
আল্লাহ তাআলা বলেন: ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﺃَﺭْﺳَﻠْﻨَﺎ
ﺭُﺳُﻠًﺎ ﻣِّﻦ ﻗَﺒْﻠِﻚَ ﻭَﺟَﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟًﺎ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺔً ﺍﻟﺮﻋﺪ :
٣٨
.
অর্থাৎ, নিশ্চয় আপনার পুর্বে
অনেক রাসুলকে প্রেরণ করেছি।
আমি তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-
সন্ততি দানকরেছি। (সুরা রা’দ
৩৮)বিশ্বনবী মুহাম্মদ রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম আমাদের আদর্শ।
আমাদের জীবনে আমরা কোন
কাজ কিভাবে করব রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সেটি দেখিয়ে দিয়ে
গেছেন।
.
হাদীস শরীফে এসেছে: ﻋﻦ ﺃَﻧَﺲَ ﺑْﻦَ
ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﺟَﺎﺀَ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔُ ﺭَﻫْﻂٍ ﺇِﻟَﻰ
ﺑُﻴُﻮﺕِ ﺃَﺯْﻭَﺍﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻬُﻌَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺴْﺄَﻟُﻮﻥَ
ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺓِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻮَﺳَﻞَّﻡَ ﻓَﻠَﻤَّﺎ
ﺃُﺧْﺒِﺮُﻭﺍ ﻛَﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﺗَﻘَﺎﻟُّﻮﻫَﺎ ﻓَﻘَﺎﻟُﻮﺍ ﻭَﺃَﻳْﻦَ ﻧَﺤْﻦُ ﻣِﻦْ
ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻤَﻘَﺪْ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺗَﻘَﺪَّﻡَ
ﻣِﻦْ ﺫَﻧْﺒِﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﺄَﺧَّﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺣَﺪُﻫُﻢْ ﺃَﻣَّﺎ ﺃَﻧَﺎ ﻓَﺈِﻧِّﻲ
ﺃُﺻَﻠِّﻲ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞَ ﺃَﺑَﺪًﺍ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُ ﺃَﻧَﺎ ﺃَﺻُﻮﻡُ ﺍﻟﺪَّﻫْﺮَ ﻭَﻟَﺎ
ﺃُﻓْﻄِﺮُ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺁﺧَﺮُ ﺃَﻧَﺎ ﺃَﻋْﺘَﺰِﻝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓَﻠَﺎ ﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺃَﺑَﺪًﺍ
ﻓَﺠَﺎﺀَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ
ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃَﻧْﺘُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻗُﻠْﺘُﻢْ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﺃَﻣَﺎ ﻭَﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧِّﻲ
ﻟَﺄَﺧْﺸَﺎﻛُﻢْ ﻟِﻠَّﻪِ ﻭَﺃَﺗْﻘَﺎﻛُﻢْ ﻟَﻪُ ﻟَﻜِﻨِّﻲ ﺃَﺻُﻮﻡُ
ﻭَﺃُﻓْﻄِﺮُﻭَﺃُﺹﻲِّﻟَ ﻭَﺃَﺭْﻗُﺪُ ﻭَﺃَﺗَﺰَﻭَّﺝُ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓَﻤَﻦْ ﺭَﻏِﺐَ
ﻋَﻦْ ﺳُﻨَّﺘِﻲ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣِﻨِّﻲ
.
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীদের
বাড়ীতে তিনজন লোক আসল।
তারা রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
ইবাদাত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা
করল-তার ইবাদাত কেমন ছিল? .
তারা রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর
ইবাদাত সম্পর্কে তাদেরকে
জানালে তারা সেটাকে খুবই
কমমনে করলেন।
তারা বললেন: কোথায় নবী
(মর্যাদার দিক থেকে) আর
কোথায় আমরা? কারণ, আল্লাহ
তাআলা নবীজী রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর পুর্ব ও পরবর্তী সব
গুনাহ ক্ষমা করার ঘোষণা
দিয়েছেন। তাদের একজন বলল:
আমি এখন থেকে সর্বদা
সারারাত নামাজ পড়ব।
দ্বিতীয়জন বলল: আমি এখন থেকে
আজীবন (সাওমে দাহর) রোজা
রাখতে থাকব। রোজা ভাঙ্গবো
না।
.
তৃতীয়জন বলল: আমি নারী সংগ
থেকে দূরে থাকব আজীবন,
বিবাহ করব না কখনো। অতঃপর
রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের
কাছে এসে বললেন: তোমরা এমন
সব কথা বলছিলে! জেনে রাখ!
আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের
থেকে আল্লাহকে অনেক বেশী
ভয় করি।এতদসত্ত্বেও আমি রোজা
রাখি আবার রোজা ছেড়ে দিই,
নামাজ পড়ি, ঘুমাই এবং বিবাহ
করি। যে ব্যক্তি আমার এ সুন্নাত
থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে সে
আমার উম্মত নয়। (বুখারী )
.
রাসুল রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
َﺍ ﻣَﻌْﺸَﺮَ ﺍﻟﺸَّﺒَﺎﺏِ ﻣَﻦِ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻉَ ﻣِﻨْﻜُﻢُ ﺍﻟْﺒَﺎﺀَﺓَ
ﻓَﻠْﻴَﺘَﺰَﻭَّﺝْ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﺃَﻏَﺾُّ ﻟِﻠْﺒَﺼَﺮِ ﻭَﺃَﺣْﺼَﻦُ ﻟِﻠْﻔَﺮْﺝِ ﻭَﻣَﻦْ
ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻪِ ﺑِﺎﻟﺼَّﻮْﻡِ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻭِﺟَﺎﺀ হে
যুবকেরা! তোমাদের মধ্যকার যে
সামর্থবান সে যেন বিবাহ করে।
কেননা, তা তার দৃষ্টি
নিম্নগামী রাখতে ও
লজ্জাস্থানকে হেফাজত করায়
সহায়ক হয়। আর যে বিবাহের
সামর্থ রাখে না, সে যেন (তার
পরিবর্তে) রোজা রাখে।
কেননা, তা তার জন্য ঢালস্বরূপ
(অনেক অপরাধ হতে রক্ষা করে)।
(বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে
মাজাহ, দারেমী, নাসায়ী,
মুসনাদে আহমদ)
.
এবার আসুন! আমরা দেখে নিই
কাদেরকে বিবাহ করা বৈধ এবং
কাদেরকে বিবাহ করা বৈধ নয়।
আল্লাহ তায়ালা এ সম্বন্ধে
কুরআন মজীদে বলেন:অর্থাৎ,
তোমাদের জন্য হারামকরা
হয়েছে তোমাদের মাতা,কন্যা,
বোন, ফুফু, খালা, ভাইয়ের মেয়ে,
বোনের মেয়ে, দুধমাতা, দুধ বোন,
শাশুড়ী, দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত
হয়েছে এমন স্ত্রীর অন্য ঘরের যে
কন্যা তোমার লালন পালনে
আছে; যদি তাদের সাথে
দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত না হয়
তাহলে, তাকে বিবাহ করাতে
দোষ নেই। এ ছাড়া তোমাদের
ঐরসজাত পুত্রের স্ত্রী, ও একত্রে
দুই সহদরা বোনকে বিবাহাধীনে
রাখা। তবে, আয়াতনাযিলের
পুর্বে যা হয়ে গেছেতা
আলাদা।
.
নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা
ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।আর (শরীয়ত
সম্মত পন্থায় প্রাপ্ত) ক্রীতদাসী
ব্যতিত বিবাহিতা (যে অন্যের
বিবাহাধীনে আছে)
মহিলাদেরকেও তোমাদের জন্য
হারাম করা হয়েছে। এদের
বাইরে যে কোন (মুসলিম বা
আহলে কিতাব) মহিলাকে
তোমাদের জন্য বিবাহ করা
বৈধকরা হয়েছে। এটা আল্লাহ
তায়ালার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট।
(সুরা নিসা: ২৩-২৪)
.
যে সমস্ত মহিলাদেরকে বিবাহ
করা হারাম তাদেরকে দু’টি
ভাগে ভাগ করা হয়েছে।•
স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ মহিলা :
তারা তিন শ্রেণীর।ক.বংশগত
কারণে নিষিদ্ধ: তারা হচ্ছেন-
.
১. মাতা
২. দাদী
৩. নানী
৪. নিজের মেয়ে, ছেলের
মেয়ে, মেয়ের মেয়ে যত নিচেই
যাক না কেন।
৫. আপন বোন, বৈমাত্রেয় বোন ও
বৈপিত্রেয় বোন।৬. নিজের ফুফু,
পিতা, মাতা, দাদা, দাদী,
নানা ও নানীর ফুফু।
৭. নিজের খালা, পিতা, মাতা,
দাদা, দাদী, নানা ও নানীর
খালা।
৮. আপন ভাই, বৈমাত্রেয় ভাই ও
বৈপিত্রেয় ভাই ও তাদের
অধঃতন ছেলেদের কন্যা।
৯. আপন বোন, বৈমাত্রেয় বোন ও
বৈপিত্রেয় বোন ও তাদের
অধঃতন মেয়েদের কন্যা।খ. দুগ্ধ
সম্বন্ধীয় কারণে নিষিদ্ধ:বংশগত
কারণে যাদেরকে বিবাহ করা
নিষিদ্ধ দুগ্ধ সম্বন্ধের কারণেও
তারা নিষিদ্ধ।
.
তবে, শর্ত হচ্ছে-গ. বৈবাহিক
সম্বন্ধের কারণেনিষিদ্ধ:
১. পিতা, দাদা ও নানা (যতই
উপরে যাক না কেন) যাদেরকে
বিবাহ করেছেন।
২. কোন পুরুষের সাথে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর দৈহিক
সম্পর্ক স্থাপিত হোক বা না হোক
উক্ত পুরুষের পুত্র-পোত্র বা
প্রপোত্রের সাথে মহিলার
বিবাহ নিষিদ্ধ।
৩. কোন পুরুষের সাথে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর দৈহিক
সম্পর্ক স্থাপিত হোক বা না হোক
উক্ত পুরুষের পিতা-দাদা বা
নানার সাথে মহিলার বিবাহ
নিষিদ্ধ।
৪. শাশুড়ী। মহিলার সাথে
বিবাহ হলেই তার মাতা ও দাদী
বা নানী হারাম হয়ে যাবে।
দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হোক বা
না হোক।
৫. স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক
স্থাপিত হলেই তার কন্যা, তার
পুত্রের কন্যা ইত্যদি হারাম হয়ে
যাবে।• সাময়িক ভাবে নিষিদ্ধ
মহিলা:সাময়িক কারণে কখনো
কখনো মহিলাকে বিবাহ করা
নিষিদ্ধ হয়ে থাকে। উক্ত কারণ দূর
হয়ে গেলে তাকে বিবাহ করা
বৈধ হবে।
.
১. কোন মহিলাকে বিবাহ
করলেই তার আপন বোন, ফুফু,
খালাকে বিবাহ করা হারাম
গণ্য হবে। তবে, তাকে যখন
তালাক দিয়ে দেবে কিংবা,
স্বামী মারা যাবে এবং সে
ইদ্দত শেষ করবে,তখন তাকে সে
বিবাহ করতে পারবে।
২. যে মহিলা অন্যের
বিবাহাধীনে ছিল। তাকে
স্বামী তালাক দিয়েছে
কিংবা মারা গেছে এবং সে
ইদ্দত পালন করছে; এমতাবস্থায়
তাকেবিবাহ করা নিষিদ্ধ। ইদ্দত
শেষ হয়ে গেলেই বিবাহ করতে
পারবে।অনেকে জিজ্ঞাসা
করে থাকেন
যে,খালাতো,মামাত
ো,ফুফাতো বাচাচাতো
বোনকে বিবাহ করা যাবে
কিনা?তার উত্তর হচ্ছে- আসলে
আল্লাহ তায়ালা উপরোক্ত
আয়াতে যাদের সাথে বিবাহ
করানিষিদ্ধ সকলের কথাই বলে
দিয়েছেন।
খালাতো,মামাতো,ফুফাতো
বা চাচাতো বোন তাদের
মধ্যকার কেউ নন। অতএব,
তাদেরকে বিবাহ করা বৈধ।
এমনকি, চাচা মারা গেলে বা
তালাক দিয়ে দিলে চাচীকে
বিবাহ করার বৈধতাও ইসলাম
দিয়েছে। তবে, তাদেরকে
বিবাহকরবেন কি করবেন না
সেটা আপনার ইচ্ছা।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৫ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গুছিয়ে লিখলে আরো ভালো হত। ধন্যবাদ।
ভাল লাগল...।
মন্তব্য করতে লগইন করুন