প্রশ্ন: গায়রে মাহরুমের সামনে চেহারা খোলা রাখা যাবে কি? ফেসবুকে নিজের/অন্যের হিজাব পরিহিত ছবি কি দেওয়া যাবে?

লিখেছেন লিখেছেন Shopner Manush ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০১:০৪:৫৫ রাত

প্রশ্ন: গায়রে মাহরুমের সামনে চেহারা খোলা রাখা যাবে কি? ফেসবুকে নিজের/অন্যের হিজাব পরিহিত ছবি কি দেওয়া যাবে? উত্তর: চেহারা খোলা রাখার ব্যপারে স্কলারগনদের ভিতর মতবাদ-

একদল স্কলারগন বলেছেন- প্রত্যেক মুমিন নারীর জন্য অবশ্যই গায়রে মাহরুমের সামনে মুখ ঢেকে রাখতে হবে।

আরেক দল স্কলারগন বলেছেন- এটি সুন্নাহ, মুখ ঢেকে রাখা ফরজ/ওয়াজিব নয়। কিন্তু যদি ফিতনার আশংকা করা হয়, তাহলে মুখ ঢেকে রাখাই উত্তম।

উভয় দলের মধ্যে যথেষ্ট এবং সহীহ দলীল আছে। একদল বলেছে মুখ ঢেকে রাখতে হবে, আরেক দল বলেছে মুখ খোলা রাখলে সমস্যা নেই। কিন্তু বোন দেখুন, যে দলটি বলেছে মুখ খোলার রাখলে সমস্যা নেই, তারা আবার এটিও বলে দিয়েছে- “যদি ফিতনার আশংকা করা হয়, তাহলে মুখ ঢেকে রাখাই উত্তম”বর্তমানে দুনিয়াতে ফিতনা সমুদ্রের ঢেউ এর মত করে ছড়াচ্ছে। রাস্তা ঘাট, স্কুল কলেজ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যেথায় যান, ফিতনার সম্মুখীন হবেনই। এমতাবস্থায় অবশ্যই প্রত্যেক নারীর জন্য নিজের মুখ ঢেকে গায়রে মাহরুমের সামনে যাওয়া অবশ্যক। আর ফেসবুক কি পরিমাণ ফিতনায় ভরপুর, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। “হে প্রিয় নবী! তোমার স্ত্রীগণকে ও কন্যাদের ও মুমিন-লোকের স্ত্রীলোকদের বলো যে তারা যেন তাদের বহির্বাস থেকে তাদের উপরে টেনে রাখে। এটিই বেশী ভাল হয় যেন তাদের চেনা যায়, তাহলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ্ পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা”। (সূরা: আল-আহযাব, ৫৯) এখন আসি ফেসবুকে নিজের হিজাব পরিহিতি ছবি দেওয়ার প্রশ্নে- বোন আমার। আপনি মাশাআল্লাহ হিজাব করেন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে অনেক সুন্দর করে তৈরি করেছেন। আপনি হলেন আপনার স্বামীর জন্য প্রশান্তি। হিজাব ছাড়া আপনাকে সুন্দর দেখায়, কিন্তু হিজাবে আপনাকে আরও অনেক সুন্দর দেখায় মাশাআল্লাহ। কেননা ইসলাম মানুষের অন্তরের পরিশুদ্ধের পাশাপাশি বাহ্যিক অবকাঠামোকেও করে তুলে আরও সুন্দর । কিন্তু বোন আমার, আপনি সম্পূর্ণ হিজাব করে আপনার সুন্দর চেহারার ছবিটি যখন ফেসবুকের পাতায় দেন, শত শত মানুষের চোখে তা পড়ে। আপনার মুখ ঢাকা, কিন্তু আপনার চোখ দেখা যাচ্ছে। আপনার মুখের কেন্দ্রবিন্দু চোখ, এ এমন সুন্দর একটি সৃষ্টি যা দেখা মাত্রই স্বামীর দিলে প্রশান্তি নেমে আসে, যার পানিতে নিমিষেই স্বামী তার রাগ ভুলে যায়, যার ইশারায় নেমে আসে স্বামী স্ত্রীর মাঝে ভালবাসা, যার দিকে চেয়ে মানুষ তার মনের ভাষা প্রকাশ করে, এতটাই সুন্দর এবং এতটাই প্রশংসনীয় সৃষ্টি, তা এখন পরপুরুষ দেখছে। এখন বলুন বোন, আপনার হিজাব কি সম্পূর্ণ হয়েছে? বোন আমার, আপনার হিজাব পড়া, কিন্তু মুখ খোলা ছবি যখন আপনি ফেসবুকের পাতায় লিপিবদ্ধ করেন, প্রতিনিয়ত শত শত পরপুরুষের চোখে তা পড়ে। আপনার যে সুন্দর্য দেখা শুধু বৈধ ছিল আপনার স্বামীর জন্য, তা এখন পর পুরুষ দেখছে। প্রত্যেক দিন আপনার লেখা মানুষ পড়ছে, আপনার ওয়াল ভিজিট করছে, আর আপনার এই রূপ প্রতি মুহুর্তে তারা দেখছে, নানা চিন্তা তাদের মাথায় শয়তান খেলাচ্ছে। কিন্তু বোন আমার, আপনার এই রূপ দেখার অধিকার তো ছিল শুধু আপনার স্বামীর । আপনার রূপ দেখার হক তো শুধু আপনার স্বামীর। বোন আমার, এর মানে কি এ নয়, আপনি আপনার সুন্দর চেহারাটি পরপুরুষকে দেখিয়ে স্বামীর হক নষ্ট করছেন? এর মানে কি এ নয়, আপনার হিজাব পরিপূর্ণ হয়নি? আপনি নিজের ছবি দেননি, কিন্তু অন্য আরেক বোনের ছবি নিজের ওয়ালে দিয়েছেন, তার রূপ সকল পরপুরুষের সামনে তুলে ধরছেন, আপনার কি মনে হয়, আপনি ঐ বোনের গুনাহের বোঝা নিজের কাধে নিচ্ছেন না?? “যে ভয় করে সে যথাসত্বর উপদেশ গ্রহণ করবে” (সূরা: আল-আলা, ১০) আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল সঠিক বুঝ দান করুক। স্বামী, তথা স্ত্রীর হক আদায় আরও মনোযোগী হই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে হেদায়াত দান করুক। আমীন।



বিষয়: বিবিধ

১৭২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File