ব্লগ/ফেসবুক আপনাকে কতটুকু ব্লক করে রেখেছে, ভেবে দেখেছেন ?
লিখেছেন লিখেছেন আমি সমালোচক ২৭ নভেম্বর, ২০১৪, ০৬:০৭:৪০ সন্ধ্যা
প্রথমেই বলে রাখি আমি ব্লগের বিপক্ষে নই। বরং ভালোভাবেই এর পক্ষে। তবে প্রতিদিন যে কাজ গুলো আমার করতে হয় বা সবার করা উচিত তা হলো-
১। চাকুরী কিংবা পড়ালেখায় ফাকি না দেয়া।চাকুরী কিংবা পড়ালেখায় ফাকি দিয়ে ব্লগ লিখা কতটুকু সঠিক তা যিনি লিখছেন তিনিই ভালো বুঝবেন।
২। পিতা-মাতা/স্ত্রী-সন্তান দের হক আদায় করতে যে সময় টুকু লাগে তা দেয়া উচিত।কারন এ ব্যাপারে আল্লাহ আপনার কাছে জানতে চাইবে।ব্লগের অজুহাত দিয়ে পার পাবেন কিনা ভেবে দেখুন?
৩।পাচ ওয়াক্ত ফরয নামাজ জামাতের সাথে মসজিদে গিয়ে পড়া উচিত।নামাজের হিসাব আল্লাহ সবার আগে নিবেন।রাত জেগে ব্লগে আড্ডা দিলেন আর ফজরের সময় ঘুমিয়ে থাকলেন কিংবা ঘুম ঘুম চোখে কোনোমতে নামাজ পড়লেন(খুশু-খুজু ছাড়াই এতে রাত জেগে যত ভালোই(দেশ ও জাতির জন্য/জ্ঞান গর্ভ আসলে পরিনামে নীট রেজাল্ট জিরো।
৪।প্রতিদিন(একান্ত অসম্ভব না হলে কিছু সময় কুরান-হাদীছ,ইসলামী বই অধ্যায়নের জন্য দেয়া উচিত।আমার তো মনে হয় ব্লগে যেভাবে পাতার পর পাতা পড়ি আমরা তার ১০% ও যদি কুরান হাদীছ পড়ি অনেক অনেক জানা হতো।তার মানে এই নয় কুরান-হাদীছের বাহিরে দুনিয়ার আর কিছুই আপনি জানবেননা।তবে সবার আগে জানা উচিত কোনটা আপনার জানার দরকার নাই।
মেডিকেলে এক টা গল্প আছে-
ভালো ডাক্তার হচ্ছে সে যে জানে কিভাবে অপারেশন করতে হয়
তার চেয়ে ভালো ডাক্তার হচ্ছে সে যে জানে কোন রোগে অপারেশন লাগবে
তবে সবচেয়ে ভালো ডাক্তার সে যে জানে কোন রোগীর অপারেশন করতে হবেনা
তাই আমি মনে করি ভালো ব্লগার হচ্ছে সে যে জানে তার কোন বিষয়ে লেখা উচিত না আর পড়াও উচিত না।
৫।মুসলমান হিসেবে আল্লাহ আপনাকে যে দাওয়াতী মিশন এবং দ্বিনের দায়িত্ত দিয়ে পাঠিয়েছেন তা যথাযথ পালন করতে যে সময় সেয়া দরকার তা দেয়া উচিত।অনেকেই website,blog এ ইসলামের কিছু কথা বলেই নিজের দায়িত্ত শেষ বলে মনে করে তাদের মনে রাখা উচিত সমাজের কত % লোক এসব ব্যবহার করে বা এর efficiency কতটুকু।তবে মূল কাজ করার পর এখানে ইসলামের কথা বলার বিপক্ষে আমি নই।তবে এটিকে মূল প্লাটফর্ম না বানানো উচিত।
আমি উপরের যে কাজ গুলির উল্লেখ করলাম তা মানুষ হিসেবে(বিশেষ করে মুসলমান হিসেবে খুবই জরুরী এবং মউলিক কাজ।এগুলোর জন্য সরাসরি আপনাকে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।এগুলো করার পর কারো যদি সময় থেকেই থাকে তার জন্য ব্লগ লেখা/পড়া করতে কোনো অসুবিধা নাই।কিন্তু উপরের কাজ গুলো ব্লগের অজুহাতে না করলে পার পেয়ে যাবার সম্ভাবনা আল্লাহই ভালো জানেন।
আমার লেখাটিকে স্বাভাবিক ভাবেই নেন।হতাশ হবার কিছু নাই।তবে চিন্তা করার এবং নিজেকে review করার সুযোগ আছে বলে মনে করি।exceptional example দিয়ে মূল লেখাকে বিতর্কিত না করাই ভালো।যেমন কিছু উদাহরন দেই-
১।ব্লগ থেকেও জ্ঞান অর্জন করা যায়
২।ব্লগেও কুরান হাদীছ পড়া যায়
৩।ব্লগেও দ্বীনের কাজ করা যায়
৪।ব্লগে সামাজিক কাজ করা যায়
ইত্যাদি ইত্যাদি
এগুলো সবই যায় এবং সবই ভালো কাজ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ১০ টি পোস্ট পড়ার পর হয়তো দেখবেন ২ টা আসলেই দরকার ছিল,বাকী ৮ টাই দরকার নাই।কিন্তু কুরান- হাদীছ পড়লে কিন্তু ১০০% ই লাভ।কোনোটাই অদরকারী কিছু নাই।তেমনি ভাবে আপনাকে মনে রাখতে হবে এখানে আপনি যে effort দিচ্ছেন তা থেকে outcome কতটুকু?কারন একজন বুদ্ধিমান লোক অযথা খাটুনি করেনা।
আর আমি শুধু কিন্তু ভালো কাজ গুলোর উদাহরন দিয়েই বলার চেষ্টা করলাম যে এসব ভালো কাজও কারো জন্য ভালো বা জরুরী নয়।জে বাজে খারাপ বেহুদা দিক গুলোর কথা তো বললামই না।কারন ও গুলো definitely খারাপ।না বুঝার কিছু নাই।
একটি পরিসংখ্যান ও নিজেকে নিয়ে চিন্তা
ধরি যে ব্লগার সপ্তাহে এক টি ভালো মানের পোস্ট দেয় সেই regular blogar (যদিও এর চেয়েও বেশী বেশী পোস্ট অনেকেই দেয় তাদের সংখ্যাও নেহাত কম নয় ।দেখুন এই ব্লগারের কত সময় যায়
-এক টা পোস্ট লিখতে চিন্তা ভাবনা সহ মিনিমাম ১ ঘন্টা তো দরকার
-ধরি কমেন্ট আসলো ৫০ টা।বার বার নিজের পাতা খুলে এসব কমেন্ট পড়া এবং reply করতে আরো এক ঘন্টা
-ধরি একজন রেগুলার ১০ টি ভালো মানের পোস্ট পড়েন।সময় লাগবে আরো এক ঘন্টা।কমেন্ট করতে ১০-১৫ মিনিট
তাহলে মাসে প্রায় ৪০ ঘন্টা।আমি ফেসবুক,ইন্টারনেট ব্রাউজিং,চ্যাটিং এসব বাদ দিয়েই বলছি।
তাহলে একজন সাধারন ব্লগার মাসে ৪০ ঘন্টা সময় দিচ্ছে বছরে ৪৮০ ঘন্টা যার ৫০% সময় দিলে মোটামোটি পুরো কুরান তাফসীর সহ এক বছরে পড়া সম্ভব।কিন্তু আমরা কজন পুরো কুরান নিজেদের জীবনে পুরোটা বুঝে পড়েছি।
তাই আপনাকে চিন্তা করতে ব্লগ আপনার জন্য কতক্ষন,কত টুকু জরুরী যা case to case different. আরেক জনের ব্লগের কারনে জীবনের পরিবর্তন হয়েছে(ভালো হয়েছে কিন্তু আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তা আপনাকে বুঝতে হবে।
সবশেষে হাদীছ আল আশআরী থেকে এই প্রশ্ন দুটো তুলে ধরে যা আল্লাহ সবাইকে করবেন উল্লেখ করে শেষ করছি-
-তোমার জীবন কাল কিভাবে অতিবাহিত করেছ?
-তোমার যুবক কাল কোন পথে ব্যয় করেছ?
উত্তর আমাদের ready তো?
লিখাটি সোনার বাংলাদেশ ব্লগে নীরব ঝড় নামে একজন ব্লগার পোষ্ট করেছিলেন, উপকারী মনে করে শেয়ার করলাম
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন