আমি চট্টগ্রামের ছেলে বলে গর্ব অনুভূত হচ্ছে.....

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১০:৫৫:১৭ সকাল

আজকের আজাদীতে একটি খবর পড়ে খুব ভাল লাগছে ।

খবরটি হল:

স্বাধীনতা ঘোষনা, অস্ত্রাগার লুন্ঠন ও ড. ইউনুসের নোবেল প্রাপ্তিতে গর্ব করতে পারে চট্টগ্রাম : ব্যারিস্টার রফিক

ব্যারিস্টার রফিকুল হক। সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ। যার নাম বর্তমান সময়ে জড়িয়ে যাচ্ছে সামনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হওয়ার সম্ভাবনার সাথে। আইন অঙ্গনে (পাকিস্তান আমলসহ) যার ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে পদচারণা সেই ব্যারিস্টার রফিকুল হক একান্তে কথা বলেছেন দৈনিক আজাদীর সাথে। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টায় নগরীর সিনিয়র’স ক্লাবে দৈনিক আজাদীকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা, ড. ইউনূস প্রসঙ্গ উঠে আসে। নীচে প্রশ্নোত্তর আকারে বিষয়গুলো তুলে ধরা হল।

আজাদী : সামনে জাতীয় নির্বাচন। আওয়ামী লীগ বিএনপি দুইদলের মধ্যে কেউ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার কথা বলছেন, আর কেউ বলছেন অন্তর্বর্তী (সংবিধান অনুযায়ী) সরকারের কথা। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?

ব্যারিস্টার রফিক : হ্যাঁ। নির্বাচন খুব কাছাকাছিই চলে এসেছে। কিন্তু দুইজন (দুই নেত্রী) এখনও ইগো নিয়ে বসে আছেন। আর আমরা সাধারণ মানুষরা আছি মহাটেনশনে। কী হবে? কী হতে যাচ্ছে। এভাবে তো হবে না। দুইজনকে এক জায়গায় আসতেই হবে। তা না হলে সামনে ঘোর বিপদ। তবে আমার বিশ্বাস সমাধান এক ধরনের হবে।

আজাদী : আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ওই মনোভাব এখনও রয়েছে আপনার?

ব্যারিস্টার রফিক : ভাই ওকথা আর বইলেন না। একবার বলে প্রধানমন্ত্রী আমাকে উদ্দেশ্য করে ‘মুই কার খালুরে’ বলেছেন। আমি আর কারও ডাবল খালু হতে চাই না।

আজাদী : তারপরও দুই দল কিংবা দুই নেত্রী চাইলে আপনি কি প্রস্তুত আছেন?

ব্যারিস্টার রফিক : হ্যাঁ। দুই নেত্রী চাইলে এখনও তত্ত্বাবধায়ক কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হতে আপত্তি নেই। কিন্তু চাইবে বলে মনে হয় না। দুই নেত্রী চাইলে যে কেউ প্রস্তুত থাকবে।

আজাদী : অনেকে বলছেন আপনি দুই নেত্রীকে ম্যানেজ করতে পারবেন সংলাপের জন্য। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী?

ব্যারিস্টার রফিক : আমি দুই নেত্রীকে জেল থেকে বের করেছি। দুইজনেরই মামলা পরিচালনা করেছি। ওই বিশ্বাস থেকেই হয়ত বলছেন সবাই। কিন্তু যে যার অবস্থানে অনড় থাকলে সমাধান হবে না। ম্যানেজও সম্ভব নয়।

আজাদী : আগামী নিবার্চনের পদ্ধতি নিয়ে একেকজন একেকভাবে সংবিধানের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?

ব্যারিস্টার রফিক : হ্যাঁ। একেকজন একেকভাবে সংবিধানের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। আসল কথা হচ্ছে বর্তমান সংবিধানের আলোকে আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নিবার্চন অনুষ্ঠিত হতেই হবে। তবে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যদি কোন তারিখ ঘোষিত হয় তখন ওই তারিখের তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে।

আজাদী : দেশের বর্তমান অবস্থাকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

ব্যারিস্টার রফিক : বর্তমানে দেশ খুবই ক্রাইসিস সময় অতিক্রম করছে। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সমাধানের কোন পথ এখনও দেখা যাচ্ছে না।

আজাদী : ক্রাইসিস অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে আপনার প্রস্তাব কি?

ব্যারিস্টার রফিক : বিরোধী জোটের দাবি অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি না হয়, অন্তর্বর্তী সরকারও হতে পারে সমঝোতার ভিত্তিতে। এক্ষেত্রে সরকারি দলের নির্বাচিত ৫ জন, বিরোধীদল বিএনপি’র ৫ জন ও জাতীয় পার্টির ২ জন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার হতে পারে।

আজাদী : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নিয়ে কি হবে?

ব্যারিস্টার রফিক : এটা বর্তমান সময়ের জন্য মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। কোন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য মানুষ খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ সবার কাছে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য হতেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বিএনপি বলছে তাকে দিয়ে হবে না। কারণ তিনি দলীয় লোক।

আজাদী : চট্টলার সন্তান ড. ইউনূসকে নিয়ে বর্তমান সরকারের নানাজনের বিভিন্ন বক্তব্যের ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?

ব্যারিস্টার রফিক : চট্টগ্রাম তিনটা জিনিষ নিয়ে বিশেষভাবে গর্ব করতে পারে। এক. কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা। ঘোষণা কে করেছে সেই বিতর্কে নাইবা গেলাম। দুই. চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং তিন. ড. ইউনূসের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি। এ নোবেল বাংলাদেশকে কত উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সেটা আমরা বুঝেও যেন বুঝতে পারছি না। তবে, সম্মানী মানুষকে অসম্মান করা যেন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে।

আজাদী : চট্টগ্রামকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

ব্যারিস্টার রফিক : চট্টগ্রাম আমারও গর্বের স্থান। কারণ এ চট্টগ্রামেই ড. ইউনূসের জন্ম।

আজাদী : দুই দলের ঝগড়াঝাটির সুযোগে অন্যকোন শক্তি নাক গলাতে পারে কিনা?

ব্যারিস্টার রফিক : উত্তর পাড়া থেকে ক্ষমতায় আসার ভয় এখন নেই। কারণ পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী উত্তর পাড়া থেকে কেউ আসলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এ অবস্থায় মঈনুদ্দিন, ফখরুদ্দিনরা আর আসার সাহস পাবে না।

আজাদী : তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বের ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?

ব্যারিস্টার রফিক : দুইবারের বেশী প্রধানমন্ত্রী হতে না পারার বাধ্যবাধকতা সংবিধানে সংযোজিত হওয়া সময়ের চাহিদা। এ ধরনের আইন হলে বারবার একজন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। তরুণ নেতৃত্ব উঠে আসবে তখন। সজীব ওয়াজেদ জয়, তারেক রহমান ও মাহি বি চৌধুরীর মতো তরুণরা নেতৃত্বে আসলে রাজনীতিতে মানসিকতার পরিবর্তন আসতে পারে।

আজাদী : দুই নেত্রীর কাছে আপনার কোন আহ্বান আছে?

ব্যারিস্টার রফিক :আহ্বান একটাই। আমাদেরকে উদ্ধার করেন এ অবস্থা থেকে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File