বদর যুদ্ধের পটভুমি- কুরাইশদের বানিজ্য কাফেলা লুটপাট করাই ছিল মুহাম্মদের উদ্দেশ্য।
লিখেছেন লিখেছেন শেষ বিকেলের ২২ মার্চ, ২০১৪, ০৭:৩৩:৩৮ সকাল
মুহাম্মদের সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ জীবনীগ্রন্থের লেখক মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের বর্ণনা:
“সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ২৮৯-২৯৬
হুবহু বাংলা অনুবাদ :
‘আল্লাহর নবী জানতে পারলেন যে আবু সুফিয়ান বিন হারব ত্রিশ-চল্লিশ জন সঙ্গী সহকারে কুরাইশদের এক বিশাল বাণিজ্য বহর (কাফেলা) নিয়ে সিরিয়া থেকে ফিরছেন, যে বাণিজ্য বহরে আছে প্রচুর অর্থ ও বাণিজ্য সামগ্রী।
তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সংগ্রহীত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে বদর যুদ্ধের যে কাহিনীগুলো আমি (ইবনে ইশাক) জেনেছি তারই ভিত্তিতে আমি বদর যুদ্ধের এই উপাখ্যান রচনা করেছি। তাঁরা বলেছেন, যখন আল্লাহর নবী জানতে পারলেন যে আবু সুফিয়ান সিরিয়া থেকে ফিরছেন তখন তিনি মুসলমানদের ডেকে পাঠান এবং ঘোষণা করেন, "এই সেই কুরাইশদের ধন-সম্পদ সমৃদ্ধ বাণিজ্য-বহর (কাফেলা)। যাও তাদের আক্রমণ কর, সম্ভবত: আল্লাহ এটি তোমাদের শিকার রূপে দান করবেন।" তারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়; কিছু লোক আগ্রহের সাথে, কিছু লোক অনিচ্ছায়। কারণ আল্লাহর নবী যে যুদ্ধে যেতে পারেন তা তাঁরা চিন্তা করেন নাই।
আবু সুফিয়ান হিজাজের নিকটবর্তী হলে প্রতিটি আরোহীর কাছে তিনি খবর সংগ্রহের চেষ্টা করেন। উৎকণ্ঠিত আবু সুফিয়ান কিছু আরোহী মারফত জানতে পারেন যে, মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের আহ্বান করেছেন যেন তাঁরা তাঁকে ও তাঁর কাফেলায় আক্রমণ করে। এই খবরটি জেনে আবু সুফিয়ান উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং দমদম বিন আমর আল-গিফারি নামক এক ব্যক্তিকে নিয়োগ করে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা যে এই আক্রমণের জন্য অপেক্ষা করছে, এই খবরটি কুরাইশদের জানানোর জন্য মক্কায় পাঠান; এবং তাকে আদেশ করেন যে, সে যেন কুরাইশদের তাঁদের মালামাল রক্ষার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান করে। দমদম দ্রুত বেগে মক্কার উদ্দেশ্যে ধাবিত হয়।
(মক্কায় এসে) --দমদম উঠের পিঠে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলে, "হে কুরাইশ, উটের কাফেলা, উটের কাফেলা! আবু সুফিয়ান ও তাঁর বাণিজ্য কাফেলায় আপনাদের যে যে সম্পদ আছে মুহাম্মদ ও তাঁর সহচররা তা হস্তগত করার অপেক্ষায় আছে। আমার মনে হয় না আপনারা তা রক্ষা করতে পারবেন। হেল্প! হেল্প!" ----
লোকজন দ্রুত প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং বলে, "মুহাম্মদ ও তার সহচররা কি মনে করেছে যে, এটি তাদের ইবনে হাদরামীর কাফেলা আক্রমণের মতই হবে"? আল্লাহর কসম, তারা শীঘ্রই টের পাবে যে এবার সেরূপ হবে না।"[পর্ব ২৯-নাখলা আক্রমণ] প্রত্যেকটি লোক নিজে অংশগ্রহণ করে অথবা তার পরিবর্তে অন্য কাউকে পাঠায়। সবাই অংশগ্রহণ করে। আবু লাহাব বিন আবদ আল-মুত্তালিব ছাড়া কোনো বিশিষ্ট লোকই অংশ গ্রহণে বিরত ছিলেন না। আবু লাহাব নিজে অংশ গ্রহণ করেননি, তিনি তাঁর পরিবর্তে আল-আস বিন হিশাম বিন মুগীরাকে পাঠান। আল-আস তাঁর কাছে চার হাজার দিরহাম ঋণগ্রস্ত ছিলেন, যা তিনি পরিশোধ করতে পারছিলেন না। তাই আবু লাহাব আল-আসকে নিযুক্ত করেছিলেন এই শর্তে যে, তাহলে তিনি আল-আসের ঋণ মওকুফ করবেন। আল-আস বিন হিশাম আবু লাহাবের পরিবর্তে এই অভিযানে অংশ নেন। আবু লাহাব থাকেন বিরত।
(অন্য দিকে) --আবু সুফিয়ান সতর্কতা হেতু তাঁর কাফেলার আগে আগে অগ্রসর হয়ে এক জলাশয়ের নিকটে আসেন। সেখানে তিনি মাজদি বিন আমর নামক এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করে জানার চেষ্টা করেন যে, সে কোনো কিছু দেখেছে কি না। জবাবে মাজদি তাঁকে জানায় যে, দু'জন আরোহী পাহাড়ের ওপর এসে থেমেছিল এবং চামড়ার থলিতে করে পানি নিয়ে ফিরে গিয়েছিল; এ ছাড়া সন্দেহজনক আর তেমন কিছুই সে দেখেনি। আরোহীরা যেখানে থেমেছিল আবু সুফিয়ান সেখানে গমন করেন এবং উটের কিছু লাদি কুড়িয়ে তুলে তা চূর্ণ করে তাতে খেজুরের বিচির সন্ধান পান। তিনি বলেন, "হে আল্লাহ, এ যে দেখি মদিনার পশুখাদ্য।" তিনি তৎক্ষণাৎ তাঁর সঙ্গীদের কাছে ফিরে যান এবং তাঁর যাত্রার গতিপথ পরিবর্তন করে বদরকে বামে ফেলে বড় রাস্তার পরিবর্তে সমুদ্র তীরবর্তী পথে যথাসম্ভব দ্রুত গতিতে রওনা হন।'
মুহাম্মদের যে দু'জন সহচর ঐখানে তাদের উট থামিয়ে আবু সুফিয়ানের কাফেলার সন্ধান করেছিল তাদের নাম আদি ইবনে আল জাগবা এবং বাছবাছ ইবনে আমর।
নবী মোহাম্মদ কতৃক কুরাইশদের বানিজ্য কাফেলা লুটপাটের অসংখ্য সহিহ হাদীসের মধ্যে নিচের হাদীসটি প্রনিধান যোগ্য।
সহি বুখারী: ভলূউম ৫, বই ৫৯, নম্বর ২৮৭
কাব বিন মালিক হইতে বর্ণিত:
আমি তাবুক অভিযান ছাড়া অন্য কোনো অভিযানেই আল্লাহর নবীর সাথে অংশ নিতে ব্যর্থ হইনি। যদিও আমি বদর অভিযানে অংশ গ্রহণ করিনি, কিন্তু আল্লাহর নবী এই অভিযানে অংশগ্রহণে অসমর্থ কাউকেই দোষারোপ করেননি। কারণ আল্লাহর নবী (কুরাইশদের) কাফেলা আক্রমণের জন্য গিয়েছিল, কিন্ত আল্লাহ তাঁদেরকে (মুসলমান) অপ্রতাশিতভাবে (কোনো পূর্ব অভিপ্রায় ছাড়ায়) শত্রুর সম্মুখীন করেছিলো।
সংক্ষেপে, ইসলামের ইতিহাসের আদি উৎসের পর্যালোচনার ভিত্তিতে যে সত্যে আমরা উপনীত হতে পারি, তা হলো:
১) নাখলা ও নাখলা পূর্ববর্তী ঘটনার মতই বদর যুদ্ধে আগ্রাসী আক্রমণকারী ব্যক্তিটি হলেন মুহাম্মদ ইবনে আবদ আল্লাহ ও তাঁর অনুসারী, কুরাইশরা নয়। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল নাখলা অভিযানের অনুরূপ হামলায় আবু সুফিয়ান বিন হারবের নেতৃত্বে সিরিয়া থেকে প্রত্যাবর্তনকারী কুরাইশদের বাণিজ্য-ফেরত সকল মালামাল লুন্ঠন; আরোহীদের খুন, পরাস্ত এবং বন্দী করে ধরে নিয়ে এসে তাঁদের প্রিয়জনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়।
২) এই অভিযানে কুরাইশদের মূল উদ্দেশ্য ছিল - মুহাম্মদ ও তাঁর সহকারীর করাল গ্রাস থেকে আবু সুফিয়ান ও তার সহযাত্রীর (যারা ছিল বিভিন্ন কুরাইশ গোত্রের নিকট আত্মীয়, প্রতিবেশী অথবা বন্ধু-বান্ধব) নিরাপত্তা বিধান এবং তাঁদের জীবিকার অবলম্বন অর্থ ও বাণিজ্য-সামগ্রী রক্ষার চেষ্টা।
৩) বদর যুদ্ধের প্রকৃত কারণ হলো - মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীর উপর্যুপরি আগ্রাসী কর্মকাণ্ড, পথিমধ্যে বাণিজ্য-ফেরত কুরাইশ কাফেলা আক্রমণ, বাণিজ্য সামগ্রী লুণ্ঠন ও তাঁদের প্রিয়জনদের খুন অথবা বন্দী করে মুক্তিপণ দাবীর অনুরূপ অনৈতিক সন্ত্রাসী অপকর্মের পুনরাবৃত্তি রোধে ক্ষতিগ্রস্ত (Victim) কুরাইশদের আত্মরক্ষা ও প্রতিরোধের চেষ্টা।
এ বিষয়ে আরো রেফারেন্স এখানে :
ইবনে ইশাক পৃষ্ঠা ২৮৯, আল-তাবারী পৃষ্ঠা ১২৯১-১২৯২
ইবনে ইশাক পৃষ্ঠা ২৯১, আল-তাবারী পৃষ্ঠা ১২৯৫-১২৯৬
ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা ২৯৫-২৯৬, আল-তাবারী পৃষ্ঠা ১৩০৫-১৩০৮
কিতাব আল-তাবাকাত আল-কাবির -পৃষ্ঠা ২৬
তফসীর ইবনে কাথির:
http://www.qtafsir.com/index.php?option=com_content&task=view&id=1565&Itemid=63#1
বিষয়: বিবিধ
৩৪৯১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমনে হুবহু বলিতে যাইয়াও সেখানে ফাঁকে ফাঁকে কথাকে জোড়াতালি লাগাইয়াছেন, যেভাবে আমনি অতিতেও ভণ্ডামী করিয়াছেন, যেহেতু হিন্দু ধর্মের মানুষগুলো নিচু মানসিকতার ও হিংসুটে। যাউকগ্যা
আমার বাড়ীর পাশ দিয়া আমারে মারিবার লাগি কেউ যদি উটে-গাধায় করিয়া বল্লম, ত্রিশুল, গোজালি, তরবারী লইয়া শত্রুর বাড়ী যায়। নিশ্চয়ই আমি সেই রাস্তায় দাড়াইয়া হাতে ফুল লইয়া, আমনেরে পানি পান করিবার জন্য রাস্তায় দাড়াইয়া থাকিব না। আমনেরে ধরি হিন্দি স্টাইলে নায়িকারে কোলে তুইলা যেইভাবে চুম্বা মারে আমি তাহা করিব না। যাউকগ্যা
নিশ্চয়ই আমি আমনের সমুদয় অস্ত্র শস্ত্র কাড়িয়া নিতে চাহিব, তাও না পারিলে সে সব নষ্ট করিয়া দিতে চাহিব, তাও না পারিলে আমনের সরবরাহের পথ বন্ধ করিব। আমনে দেখেন নাই ১৯৭১ সালে ভারতের দাদা বাবুরা পাকিস্তানের অস্ত্র যাতে বাংলা দেশে আসতে না পারে সেই জন্য পাকিদের উপর হামলা করেছে, তাদের রাস্তা বন্ধ করেছে, অবশেষ বাংলাদেশ থেকে পাকিদের ভাঙ্গা অস্ত্র, গোলাবারুদ, ভাঙ্গা ট্যাংক, মানুষের রান্নার হাড়ি পাতিল পর্যন্ত চুরি করিয়া লইয়া গেল। যাউকগ্যা
কুলাঙ্গার ভারতের দাদারা আশা করিয়াছিল চট্টগ্রাম থেইকা বিনা মাশুলে কলিকাতায় মাল আনা নেওয়া করিব। সীতাকুন্ডে শিবিরের রাবনীয় মারে ভারতের মোহ ভাঙ্গিল, তারা চিন্তা করিল পথে পথে যদি শিবির রাবনীয় স্টাইলে ভারতের মালের উপর হামলা করে, বেচারা ভিখারী ভারতের কাঙ্গালের দশা হইবে। তাদের আবদারে হাসিনা গান্ধি শিবির মারা শুরু করল। আওমীলীগ চায় ভারতের দাদাদের জন্য ঢাকা চট্টগ্রাম রাস্তা ফ্রি করিতে হইবে। যাউকগ্যা
উপরের এসব যদি অন্যায় না হয়, আমনের পিতাগোর দেশের এসব কুকীর্তি যদি অন্যায় না হয়, তাইলে মুসলমানের কাম কিতাল্লাই অন্যায় হইল? আমনেরে আমনের কতার উত্তর দিবার দরকার নাই, আগে এই কতার উত্তর মারেন। যাউকগ্যা
কুত্তা বিলাই গেল তল, ছুচো বলে কত জল
মন্তব্য করতে লগইন করুন