ডঃ ইকবালের “শিকওয়া” এবং আমার “দুঃসাহসিক চাওয়া”
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা ১১ আগস্ট, ২০১৪, ১০:৩৪:১৮ রাত
শিকওয়া অর্থ নালিশ, অভিযোগ কিংবা অনুযোগ ।
ডঃ ইকবাল যখন তাঁর বিখ্যাত কবিতা “শিকওয়া” লিখলেন চারদিকে হৈ চৈ পড়ে গেলো। কারন তিনি সেই কবিতায় আল্লাহর কাছে অভিযোগ করেছিলেন – কেন গরীবরা দু’বেলা খেতে পায়না? কেন কাফেররা বেদ্বীন হয়েও মুসলমানদের উপর ছড়ি ঘুরায়?- এসব। ফলাফল- জেলে পুরে দেয়া হলো তাঁকে।
এরপর তিনি আরেকটি কাব্য রচনা করলেন, জেলে বসেই- “জাওয়াবে শিকওয়া”। তাঁর সেই উত্থাপিত অভিযোগ গুলোর উত্তর। সমালোচকদের মুখে ছাই পড়লো এবার। তিনি পরিচিত হলেন “কবি সম্রাট” নামে।
আমিও একদিন তাই আল্লাহর সামনে প্রশ্নের ঝুড়ি নিয়ে উপস্থিত হলাম। ফলাফল- ফেঁসে গেলাম আমি। আমাদের কথোপকথন তুলে ধরা হলো—
আমি- ইয়া রাব্বুল আলামীন! আমরা তো আপনার মনোনীত ধর্মের উপর সদা অটল, তারপরও মুসলমানদেরকে কেনো আজ কাফেরের পাপোশ হয়ে দিন যাপন করতে হচ্ছে?
আল্লাহ- “ তোমরাই উপরে থাকবে যদি তোমরা মু’মিন হও”। (৩/১৩৯)
আমি-(বিস্ময়ে) তাহলে কি আমরা মুসলমানরা মু’মিন নই?!
আল্লাহ- “ গ্রাম্য ব্যক্তিরা বলে-আমরা ঈমান আনলাম। তুমি তাদেরকে বলে দাও যে “তোমরা তো ঈমান আনোনি, বরং বলতে পারো যে আমরা মুসলিম হয়েছি”। বস্তুত, তোমাদের হৃদয়ে কখনোই ঈমান প্রবেশ করেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, তাহলে তোমাদের কোনো সৎকর্মই বিফলে যাবেনা”। (৪৯/১৪)
আমি- আমরা তো আপনার আর আপনার নবীর কথাই অনুসরণ করি। নামায পড়ি, হালাল রিযিক অন্বেষণ করি, রোজা রাখি...... সবই তো মানি। তাহলে?
আল্লাহ- “মানুষ কি ভেবেছে যে তারা ঈমান এনেছে বললেই তাদেরকে পরীক্ষা করা ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হবে? তাদের আগেও যারা এসেছিলো তাদের পরীক্ষাও আমি নিয়েছি। আল্লাহ জেনে নিয়েছেন কারা সত্যবাদী আর কারা মিথ্যুক”। (২৯/২-৩)। “ তোমরা তো কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস করো আর কিছু অংশ অস্বীকার করো...যারা এমনটা করে পৃথিবীতে লাঞ্ছনা ছাড়া আর কী পরিণাম হতে পারে বলো?”। (১/৮৫)
আমি-(অসহায় ভাবে) আমরা তাহলে কোন কথাটা মানছি না ?
আল্লাহ- “বল, তোমাদের পিতা, সন্তান, স্ত্রী, পরিবার, সঞ্চিত সম্পদ এবং ব্যবসা- যে ব্যবসায় লোকসান হওয়ার আশঙ্কা তোমরা করো- যদি তোমাদের কাছে আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে অধিক প্রিয় হয় তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরিণতি আসার অপেক্ষা করো”। (৯/২৪)
আমি-(বিহ্বল হয়ে) আমরা তো আপনাকে আর আপনার নবীকে প্রানের চেয়ে বেশি ভালোবাসি...।
আল্লাহ- “ কেনো তোমরা যা করোনা তা বলে বসো। যা করোনা তা বলাটা আল্লাহর রাগকে বাড়িয়ে দেয়”। (৬১/২)
আমি- কিন্তু জিহাদের কথা যে বললেন। জিহাদের নাম নিলেই তো এখন সন্ত্রাসী ডাকা হবে...!
আল্লাহ- “ যদি তোমরা পিছপা হও তাহলে তোমাদের স্থানে আল্লাহ এমন এক জাতিকে অধিষ্ঠিত করবেন যারা তোমাদের মতো হবেনা”। (৪৭/৩৮)
এ জায়গায় এসে আমি ফেঁসে যেতে শুরু করলাম। আমার মাথা কাজ করছে না আর।
আমি- কিন্তু আমাদের মাঝে তো অনেক অনৈক্য, শত্রুরাও অনেক দিক দিয়ে শক্তিশালী।
আল্লাহ- “ মু’মিনরা পরষ্পর ভাই, নিজের ভাইদের মাঝেই সংশোধন করো”। (৪৯/১০), “ আর তোমরা যারা ঈমান এনেছো তারা ধৈর্য্য ধারন করো, ধৈর্য্যের উপদেশ দাও আর পারষ্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করো”। (৩/২০০)... “এবং আল্লাহর রজ্জুকে সম্মিলিতভাবে আঁকড়ে ধরো, ভেদাভেদ করোনা”। (৩/১০৩)
আমি- তাহলেই কি আমরা বিজয়ী হবো?
আল্লাহ- “ আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় অত্যন্ত সন্নিকটে, মু’মিনদেরকে তাই সুসংবাদ দাও...”। (৬১/১৩)
[আবার সেই ঈমান আর মু’মিনের প্রশ্নে এসে ঠেকেছে পরিস্থিতি, ঈমানের ট্রেনিং নিতে রাসূল (সা) এর কাছে একবার যাবো কিনা ভাবছি]
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৯২৫ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিছুদনের মধ্যেই নবীজির (স) কাছে যেতে চাই ঈমানের ট্রেনিং নিতে ইনশাআল্লাহ।
প্রিয়তে রাখার জন্য আবারো ধন্যবাদ।
ক্ষুদ্র ইলম দিয়ে আপনাদেরকে বহুরূপী স্বাদ দিয়ে যেতে আমি প্রস্তুত।
আপনার জন্যও একই দোয়া রইল।
ربنا لا تزغ قلوبنا بعد إذ هديتنا وهب لنا من لدنك رحمة، إنك انت الوهاب. أمين
প্রভুর কোন কোন প্রশ্নকে এড়িয়ে যাব আমরা।
আপনাকে ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন