নারীদের দুষ্টুমি (রম্য)
লিখেছেন লিখেছেন বুসিফেলাস ২১ মে, ২০১৫, ১২:০৮:৩১ দুপুর
এক ঝাঁক মেয়ে মিলে ছেলেটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। হিংস্র বাঘিনী যেমন করে হরিণের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠিক তেমন করে।
ছেলেটার বগলকাটা গেঞ্জি ছিঁড়েছুঁটে একাকার। পড়নের হাফপ্যান্টটা হাঁটুর নিচে নামিয়ে ফেলেছে কয়েকজন। কেউ কেউ মহাউৎসাহে ছেলেটার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গাগুলো খাঁমচে ধরেছে।
তার গগনবিদারী চীৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠলেও অদূরে দাঁড়ানো নারী কনস্টেবলটি নির্বিকার ছিলেন।
ছেলেটাকে বাঁচাতে তিনি এগিয়ে এলেন না। আসবেন কেন? বিনে পয়সায় এমন রসালো দৃশ্য দেখার সুযোগ কি কেউ মিস করে? হাজার হোক, পুরুষ শরীর তো! নারীদের তো আকর্ষণ থাকবে।
সম্ভ্রম হারানো নগ্ন যুবকটি আধমরা হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
সারাদেশে হৈহৈ রব পড়ে গেল। জাতীয় দৈনিকগুলোর শিরোনাম হলো,
" সৈকতে স্নান করতে গিয়ে কতিপয় যুবতীর হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হলো যুবক। "
এ ঘটনায় সারাদেশে 'ছি ছি' রব পড়ে গেল। পুরুষবাদী সংগঠন গুলো মানবন্ধন করলো। না, কিছুতেই এটা মেনে নেওয়া যায়না। পুরুষরা বাবার জাত। তাদের এই অবমাননা?
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একে কিছু মেয়ের দুষ্টুমি বলে আখ্যায়িত করায় নারীরা বেশ পুলকিত হলো। এমন নারীবান্ধব সরকারই তো তাদের চাই।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় উঠে গেল। শুরু হলো যুক্তি-তর্কের লড়াই।
পুরুষরা এটাকে নারী চরিত্রের অবক্ষয় বললেও নারীরা তা মানতে নারাজ।
না, সব দোষ ঐ ছেলেটার। সে যদি হাঁটুর উপর এবং নাভির নিচে হাফপ্যান্ট পরে গোসল না করতো তাহলে তাকে মেয়েরা তাকে লাঞ্চিত করতোই না।
সব দোষ ঐ হাফপ্যান্টের। তোমরা বুকের লোম দেখাবা, নাভির নিচে হাফপ্যান্ট পরে সমুদ্রস্নান করবা আর মেয়েরা চুপচাপ দেখবে - তাতো হয়না, না?
তোমাদের অর্ধনগ্ন দেহ দেখেই তো মেয়েরা উত্তেজিত হয়ে এমন কান্ড ঘটায়। তোমরা নাভির উপর কাপড় পরো, হাঁটুর উপর কাপড় উঠিয়োনা, বুকের লোম ঢেকে রাখো - দেখি তোমাদের কে শ্লীলতাহানি করে!
মিষ্টি খুলে রাখলে মাছি তো বসবেই...
কিছু নারীর এহেন বক্তব্যে পুরুষদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে পড়লো।
এরা কি মানুষ? ছি !
যারা ছেলেটার শ্লীলতাহানি করলো তাদেরই সাপোর্ট করছে নারীরা?
মানা গেল ছেলেটা উরু দেখিয়েছে।
তা বলে তাকে নগ্ন করবে মেয়েরা?
হায় খোদা !
একটা ছেলে যদি বেপর্দা হয়ে পাপ করে, তবে তাকে নগ্ন করা যে আরো কোটিগুণ বেশি পাপ।
এই বোধটুকুও হারিয়ে ফেলেছে নারী জাতি !
যাই হোক, আরেক পুরুষ সংগঠন এই জঘন্য কাজের বিচার চাইতে গিয়ে আচ্ছামতো ধোলাই খেলো।
কিছু নারী পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছেলেদের লুঙ্গির গিট ধরে টেনে - হিঁচড়ে মাটিতে ফেললো।
কেউ ধরলো টুঁটি চেপে, কেউ দিলো গলাধাক্কা, কেউ মারলো কোমরে লাথি।
কী নির্যাতন! কী নির্যাতন!
এতোকিছুর পরেও যে যার স্ট্যান্ডপয়েন্টে অটল থাকলো।
নারীদের সেই এক কথা - পুরুষের পর্দা ঠিক করো, শ্লীলতাহানি বন্ধ হবে।
পুরুষরা নাভির উপর কাপড় পরুক, বুকের লোম ঢেকে রাখুক, পাতলা লুঙ্গি না পরুক, দাড়ি না কামাক, হাফপ্যান্ট না পরুক, লুঙ্গিতে কাছা মেরে ক্ষেতে-খামারে কাজ না করুক, ধর্মীয় পোশাক পরুক (পাঞ্জাবী - পাজামা, ধুতি এবং অন্যান্য), তবেই শ্লীলতাহানি বন্ধ হবে।
আর তা না হলে মুখের সামনে রসগোল্লা ঝুললে মাছি বসবেই। একশোবার বসবে। এতে কোন পাপ নেই।
অন্যদিকে পুরুষরা প্রশাসনের দূর্বলতা এবং নারীদের অসংযত দৃষ্টি দেখে মর্মাহত হলো।
নাহ, মনুষ্যত্ব বলে কিছু আর রইলোনা পৃথিবীতে।
সংবাদটা পড়তে পড়তেই ঘুম ভাঙলো সেজুঁতির।
ওমা ! কি বাঁধনছাড়া স্বপ্ন !
কোন সাহসে যে স্বপ্নটা ওর চোখে এলো কে জানে !
সেঁজুতি ভাবনায় পড়ে গেলো।
সত্যিই তো! দিনকে দিন ছেলেরা যে হারে জামা-কাপড় নিচের দিকে নামাচ্ছে, তাতে তো এমনটা ঘটবেই।
ছেলেদের শরীয়তী পোশাক পরতে অসুবিধা কোথায়? নাকি তাদেরও যে পর্দা আছে সেটা তারা ভুলেই গেছে?
একজন পুরুষকেও তো ছেলেদের পর্দা নিয়ে কথা বলতে দেখা গেলোনা। কাউকে না। নাকি ছেলেদের জন্য দোজখ হারাম?
উঠে দাঁড়ালো সেঁজুতি।
আজ একটা মিশন চালাতেই হবে।
অন্তত দুজন বেপর্দা পুরুষকে জব্দ করবে সে। লজ্জা পেয়ে যদি কিছু শেখে।
দেখাই যাক না, কী হয় !
লেখিকা- অনামিকা খুশবু অবনী।
বিষয়: সাহিত্য
১৭৫১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সত্যিই তো...কোরআনে যে আল্লাহ ছেলেদেরও পর্দার কথা বলেছেন, দৃষ্টি সংযত করতে বলেছেন সেটা কয়জন পুরুষ মেনে চলে...সবাই শুধু মেয়েদেরই পর্দা করার কথা বলে যান ভাঙা ক্যাসেট এর মতো...
http://www.bing.com/search?q=rape+is+not+a+crime+,+it's+a+surprise+sex&src=IE-TopResult&FORM=IE10TR
লিংক দুটো আপনাকে পুলকিত করবে আশা করি ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন