স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার করবে বাংলাদেশ সরকারঃ শেখের বেটি।(রম্য)
লিখেছেন লিখেছেন বুসিফেলাস ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১২:২৪:৪২ দুপুর
সম্প্রতি হয়ে গেল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার ভোটাভুটি এ নিয়ে কি ভাবছে বাংলাদেশ এটি এখন সারা বিশ্বের আগ্রহের বিষয়। এ নিয়ে আমাদের "আন্তর্জাতিক চেতনা মিশন" পরিচালিত ডেইলি চ্যাত্না ভ্যালের বাংলা এডিশনের স্পেশাল করসপনডেন্ট জনাব কাম রুল গিয়েছিলেন বাংলাদেশের লেডী হিটলার ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সমুদ্র বিজয়ী জনাবা শেইখ হাঁসিনা ওরফে মুজিব পুত্রীর কাছে। তিনি এ ব্যাপারে আমাদের সাথে খোলামেলা ভাবে জানিয়েছেন তার সুচিন্তিত!!! ভাবনা।
কামঃ সালাম, নমস্কার, আদাব,শত শ্রী আকাল প্রিয় আপা কেমন আছেন?
হাঁসিনাঃ জ্বী ভালো। তোমার না দুপুর তিনটায় আসার কথা ছিল? রাত তিনটায় কেন?
কামঃ আপা আমার তিনটার সিডিউল মিস হওয়ায় ভাবলাম আপনি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে যখন মদিনা সনদ নিয়ে গবেষণায় বসবেন তখনই আমি আপনার কাছে আসব। তা ছাড়া আমার বন্ধু মৃণাল আপনার আরও কিছু চাহিদার কথা আমায় জানিয়েছে, তার জন্য শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতেই দেরি হল।
হাঁসিনাঃ স্মিত হেসে...ইনটেলিজেন্ট বয়। আসলে সবই আব্বার স্বপ্ন।
কামঃ তো আপা দেশের সামগ্রিক অবস্থা কেমন?
হাঁসিনাঃ এই তো ভালোই চলছে চেতনা বিরোধী সব শক্তিকে দমন করে ফেললাম। জামায়াত-শিবির ব্যস্ত নেতা বাঁচাতে আর বিএনপি ব্যস্ত দল গোছাতে, সাথে জাতীয় পার্টি আছে স্বামী-স্ত্রীর গৃহকোন্দলে। সব মিলিয়ে মজায় মজায় দিন যাচ্ছে।
কামঃ শুনলাম মোদী নাকি আপনাকে মনমোহনের মত পছন্দ করছে না? কি করবেন এখন?
হাঁসিনাঃ কি যে বলনা কা-ম কেন পছন্দ করবে না! আমি দিল্লি যাই তারপর দেখবে কিভাবে পটিয়ে ফেলি। আসলে আমাকে অনেককেই পটিয়ে ক্ষমতায় থাকতে হয় কখনও ওবামাকে, কখনও শি জিনপিং কে পটাতে হয় আবার কখনও বা নিজের আশপাশের নেতাদের। আর বয়স তো মাত্র ষাট এখন না পটালে কখন!? তবে একটাই দুঃখ সাকাকে আর এই জীবনে পটানো হয়ে উঠল না।
কামঃ সিডিউসড ও দুঃখিত হয়ে, আচ্ছা আপা বাদ দিন কাজের কথায় আসি। শুনলাম স্কটল্যান্ডের মানুষ নাকি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে এ ব্যাপারে আপনার চেতনাগত মত কি?
হাঁসিনাঃ আসলে স্কটল্যান্ডের সব মানুষ স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার তা নয় কিন্তু মাত্র ৫৫% মানুষ রাজাকার, বাকী ৪৫% মানে সিংহভাগ মানুষ স্বাধীনতাকামী মুক্তিযোদ্ধা। আর ওখানের স্বাধীনতার পক্ষের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সরকার জানেনা কিভাবে ইলেকশনে পাশ করতে হয়।
সমস্যা হল ওখানের স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে এখানকার স্বাধীনতা বিরোধীদের সম্পর্ক আছে কিন্তু ওখানকার স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ সরকার আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি। তবে যোগাযোগ করলে ফল অবশ্যই ভিন্ন হত এবং সুন্দর ইঞ্জিনিয়ারিং করে ডিজিটাল কায়দায় সুষ্ঠুভাবে জিতে যেতে পারতো তারা।
কামঃ তবে আপা এখানেও কি আপনি জামায়াত সংশ্লিষ্টতা দেখতে পাচ্ছেন?
হাঁসিনাঃ অবশ্যই তারা বিশ্বের সব স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সাথে লিয়াজো রাখে এবং ফান্ডিং করে।
কামঃ তবে আপা কি করা যায়?
হাঁসিনাঃ কি করা যায় বড় কথা নয় আমার যা যা করা দরকার তার সবই আমি করব। খুব শীঘ্রই আমি স্কটল্যান্ড সফরে যাব এবং সেখানকার সরকার থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা নিয়ে আমাদের দুটো আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে ওই স্কটিশ স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার শুরু করব। অন্যথায় আমাদের দেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের সাহস আরও বেড়ে যাবে।
কামঃ ব্রিটিশ সরকার বা স্কটল্যান্ড সরকার কি এতে রাজি হবে?
হাঁসিনাঃ রাজি হোক বা না হোক আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাব। কারণ এটা আমার বাবার স্বপ্ন। আমি আমার বাবার স্বপ্ন আর আমার দাদাদের স্বপ্ন পূরণে ক্ষমতায় আসীন হয়েছি।
কামঃ অবাক হয়ে- ওমা তাহলে ১৬ কোটি মানুষের লাভ কি? তারা কেন আপনাকে সহ্য করবে!?
হাঁসিনাঃ কি বলে আবার সহ্য করবেনা! অবশ্যই সহ্য করতে হবে যারা চেতনা সহ্য করবে তারা পাচ্ছে যাচ্ছেতাই করার লাইসেন্স, আর যারা করছে না তাদের উপর যাচ্ছেতাই করার লাইসেন্সও আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে রেখেছি। তার ফলও পাচ্ছি সুপার!
কামঃ কিন্তু আপা এটা কি ঠিক হচ্ছে? অন্যায় হচ্ছে না!?
হাঁসিনাঃ কি এতবড় সাহস! তুমি আমাকে জ্ঞান দাও? এক্ষুনি গুম হলে কেউ হদিস পাবে না, তুমি জানো?
কামঃ ভয় পেয়ে; ধুর আপা সিরিয়াসলি নিয়ে নিলেন! ওটা তো জোক ছিল।
হাঁসিনাঃ হুম তাই বল। আচ্ছা ওসব বাদ দাও। তুমি মৃণালের সাথে কথা বলে আরও কিসের যেন প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলে? চল সেই পর্ব শুরু করা যাক।
অতপরঃ দুজনেরই অন্দর মহলে প্রবেশ তবে ওখানে কি ঘটেছিল তার ব্যাপারে আর কিছু জানা যায়নি...
পরদিন সকাল সাড়ে এগারটায় সূর্যি মামা প্রচন্ড তেজে সূর্য নিজের কক্ষে ঘুরে যাচ্ছে। আপা তাকে বালিশের নিচে রাখা ম্যাডেলটি গলায় পড়াতে যাবেন, তখনি দেখা গেলো বিছানায় কাম রুল নেই! শুধু পড়ে আছে হাতে লিখা একটি চিঠি।
প্রিয় আপা,
তুমি যখন এই চিঠিটি পড়ছ তখন আমি বাংলাদেশের বর্ডার পেরিয়ে গেছি। তবে মনে করিওনা যে আমার আগমনটির সাথে জামায়াত বা শিবিরের সম্পর্ক ছিল। সব কিছুতেই যদি তাদের হাত থাকতো তবে তুমি মাটির উপরে নয় বরং বাবার সাথে একসাথেই মাটির নিচে শাস্তি ভোগরত অবস্থায় থাকতে। আসলে বিবেকের দায় বদ্ধতা থেকেই আমার আগমন আর সেলফ মিশন সেরে প্রস্থান। ডাক্তার আমাকে আর মাত্র তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে। বর্তমানে আমার এইডস-এর একদম শেষ স্টেজ চলছে। তাই আমি- আমাকে ও আমার মত অনেককে নষ্ট করার মূল ব্যক্তিটিকে একটু দুনিয়াবী শাস্তি দিতে বৃথা চেষ্টা করে গেলাম। এতে যদি আমার কিছুটা দায়মুক্তি হয়।
ইতি,
ছদ্মবেশী কাম রুল রূপী “ইমরান এইডস সরকার”।
ইহা শুনিয়া শেখের বেটি সত্য সত্যই তৎক্ষণাৎ তাহাজ্জুদ নামাজে ব্যস্ত হইয়া পড়িল।
বিষয়: সাহিত্য
১৯৫৮ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি কি বলেন?
চমৎকার হয়েছে কথোপকথনটি ।
অশেষ ধন্যবাদ।
মাইর দিলে আমি নাই কইলাম।
(তবে ভাল লাগসে সেই কথা বললাম)
ওদের(স্কটল্যান্ড) বিষয়ে বিন্দু মাত্র মাথা ঘামালেও চেতনা দন্ড সাথে থাকবে বর্তমান চেতনার ধ্বজাধারীদের।বিষয় টা ভালো করেই জানে এরা।
আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন