তোমাদের ত্যাগ বৃথা যাবেনা
লিখেছেন লিখেছেন গ্রাম থেকে ১৬ এপ্রিল, ২০১৪, ১১:৩৫:১৮ সকাল
সেদিন ঘরে ঘুমিয়েছিলাম। রাত আনুমানিক ২টা হবে, এমন সময় কার ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যায়। উঠতে না উঠতেই দরজায় খুব জোরে জোরে শব্দ শুনে চিন্তায় পড়ে যাই। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন রকমে অনেক কষ্ট স্বীকার করে বিকল্প রাস্তায় ঘর থেকে বাহির হই।
আশঙ্কামুক্ত দুরত্বে অবস্থান করে দেখি অনেক মানুষের আনাগোনা।
ভাবলাম যা বুঝেছি তাই সঠিক। কিছুক্ষন পর আম্মার ফোন পেয়ে বাড়িতে এসে শুনি পুলিশ আসেনি এসেছিলো আমার খোঁজে এক লোক। তার শব্দ শুনে বাড়িতে কিছু লোকজন জড়ো হয়েছিলো পুলিশ এসেছে ভেবে। পরদিন খোঁজ নিয়ে জানি সে আমাদের আন্দোলনের এক ভাই। ফোন দেই তাকে কেন এসেছিলো জানতে।
সে বলে 'ভাই, সরি আমি বুঝতে পারিনি কেন আপনার বাড়িতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ আমার মায়ের কথা মনে হওয়ায় তাকে দেখতে চাইছিলাম। পরে রাতেই হেটে বাড়িতে গিয়েছি।' আমি তো শুনে তাজ্জ্বব রাত ২টার সময় সে বাড়িতে গিয়েছে তা ও প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার হেটে। (এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ২/৩দিন আগে সে আমাদের গ্রামে লজিং এ এসেছে।) আমার কাছে বিষয়টা অস্বাভাবিক লাগলো। কারন সে খুব প্রতিভাবান একটা ছেলে।
আমার একাডেমিতে কিছুদিন শিক্ষক হিসেবে ছিলো। সে খুব ভালো ছবি আঁকতে পারে। তার আঁকা ছবি দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না এরকম ছবি তার আঁকা। একাডেমিতে কিছুদিন থেকে শহরে চলে যায়। কাজ করে শিশুবিভাগে। সেখানেই মানসিক সমস্যা শুরু হওয়ায় সে চলে আসে বাড়িতে। যাহোক আমি খোঁজ নিলাম তার সম্পর্কে। কি হয়েছে তার? এই প্রশ্নের জবাব পেয়ে আমি অনেক কষ্টে চোখের অশ্রু সংবরণ করি। কারণ সে যে ত্যাগ স্বীকার করছে এটাতো ইসলামী আন্দোলনের চিরায়ত ইতিহাস। কয়েকবছর আগে ছোটবোনকে পরীক্ষার হলে দিয়ে আসার সময় এক ছাত্রলীগ নেতা তাকে খুব জোরে থাপ্পড় দেয়, যাতে তার কান থেকে প্রচুর রক্তক্ষরন হয়।তাৎক্ষনিক ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসায় সে ভালো হয়ে যায়। কিন্তু কে জানতো এটা অনেক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিবে প্রিয় ভাইয়ের জীবনে। তার উন্নত চিকিৎসার চেষ্ঠা চলছে, দেখা যাক কি হয়।
এইভাবে কত ভাই তাদের ব্রেইন হাত পা চোঁখ এমনকি তাদের জীবনই অকাতরে দান করছেন শুধুমাত্র একটি সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দেয়ার জন্য।
আল্লাহ তাদেরকে কবুল করুন।
আমিন
বিষয়: বিবিধ
১১১৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমিন
আল্লাহতায়লা তাকে সুস্থতা দিন।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন