হাসিনা কি সিকিম এর লেন্দুপ দর্জি হতে চলেছেন ???
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাধারী ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৯:৩৭:০৪ সকাল
কে এই লেন্দুপ দর্জি?
গতকাল বেগম খালেদা জিয়া হাসিনা কে লেন্দুপ দর্জির সাথে তুলনা করেছেন। হাসিনা লেন্দুপ দর্জির রোল করতাছে বলেছেন। কে এই লেন্দুপ দর্জি? কেন বিখ্যাত?? লেন্দুপ দর্জির নাম আসলেই চলে আসে হিমালয়ের পাদদেশে সবুজে ভরা অনিন্দ্য সুন্দর একটি স্থানের নাম। সিকিম। সিকিম তার নাম। ৭০৯৬ কিলোমিটার আয়তনের এই স্থানটি পুরো ইতিহাস জুড়েই ছিলো শ্বাধীন একটি দেশ। ১৮৮৮ বৃটিশরা দখল করলে ও এর মাত্র ৪ বছর পরেই আবার স্বাধীনতা ফিরে পায়। ১৯৪৭ এ জালিম ইংরেজ চলে গেলে গণভোট হয় এবং সিকিমের জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয়। তারা ভারতের সাথে মিশে না। এরপর থেকেই শুরু হয় ভারতের গভীর ষড়যন্ত্র। আর তারা কিনে নেয় এই লেন্দুপ দর্জি কে। মীর জাফরের সমার্থক লেন্দুপ অক্টোবর ১১,১৯০৪ জন্ম নেয়। ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক সুধীর শর্মা তার pain of loosing a nation গ্রন্থে বলেন , "আমায় লেন্দুপ দর্জি নিজে বলেছেন যে,বছরে তিন - চার বার আমার সাথে "র" এর লোক দেখা করতো এবং দেশে অশান্তি,অরাজকতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে বলতো "। সেই লক্ষ্য নিয়ে রাজতান্ত্রিক দেশ সিকিমে ১৯৬২ তে sikkim national Congress (SNC) গঠন করে। নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হয় লেন্দুপ। ভারতের সৈন্য ১৯৭০ সালে দেশে তীব্র অরাজকতার সুযোগে সিকিমে প্রবেশ করে এবং বিএসদাস নামের একজন কে প্রশাসক নিয়োগ করে। সিকিমের সাথে বহির্বিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সারাদেশ ভারতীয় সৈন্য ছেয়ে যায়। এই অবস্থায় ১৯৭৪ নির্বাচন হয়। আর এতে লেন্দুপ দর্জির দল (ভারতীয় বন্দুকের জোরে)এসএনসি ৩২ আসনের মধ্যে ৩১ আসন লাভ করে। উল্লেখ্য রাজতন্ত্র বিরোধী ছিলো বিধায় জনগণ এই দল কে সাপোর্ট করে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গণতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে, চলবে এই শ্লোগানে দর্জির নেতৃত্বে ২৭ মার্চ ১৯৭৫ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ৬ এপ্রিল ১৯৭৫ ইন্ডিয়ার সাথে একীভূত হওয়ার বিল সংসদে পাশ করে এবং ১৬ মে ফাইনালি স্বাধীন সিকিম দীর্ঘ হাজার বছরের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়ে ভারতের অধীন একটি রাজ্য হয়ে যায়। আর উক্ত ষড়যন্ত্রের মূল কারিগর ছিলো লেন্দুপ দর্জি। যে মীর জাফরের মতো নিজ জাতির স্বাধীনতা ভারতের হাতে বিক্রি করে দেয়।এরপর থেকে লেন্দুপ দর্জি নামটি গাদ্দারের সমার্থক হয়ে দাড়ায়। ১৯৭৯ পর্যন্ত সে মুখ্যমন্ত্রী থাকে। এরপর তাকে ভারত সরকার ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। ২৮ জুলাই ২০০৭ দীর্ঘ লিভার রোগে আক্রান্ত এই মীর জাফর পশ্চিম বংগের কালিম্পং হ্নদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। মারা যাওয়ার সময় সে ছিলো একেবারে নিঃসঙ্গ। স্বেচ্ছানির্বাসিত ছিলো সে। মৃত্যুর পূর্বে জন আস্থা নামক এক সাময়িকীতে সে বলে, সিকিম কে ভারতের সাথে একীভূত করার জন্য হেন কোনো কাজ নেই আমি করিনি কিন্তু কার্য উদ্ধারের পর আজ ভারত সরকার আমাকে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। গাদ্দারদের শেষ পরিণতি মনে হয় এমনই হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৭০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন