রাজনীতিবিদদের বিনুদুন

লিখেছেন লিখেছেন মোমের মানুষ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১১:২০:৩১ রাত

সাংবাদিকতারই এক সহকর্মী। যখনই তার মন খারাপ হয় ফেসবুকে একটি ছবি বের করেন আর প্রাণখুলে হাসেন। ছবিটি বানানো তবে অবাস্তব নয়। বাচ্চা একটি ছেলেকে মারতে উদ্যত পুলিশ। বাচ্চাটি বলছে, আমিতো দেয়াল নাড়াইনি। হাসার মতো ছবিই বটে। বাংলাদেশে এখন আসলে হাসির ছবির কোন অভাব নেই।

‘উই আর লুকিং ফর শত্রুজ’ এরও বহু আগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিনোদনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমাদের এক রাষ্ট্রনায়ক নানাভাবে আমাদের বিনোদিত করতেন। সাইকেলে চড়ে অফিসে যাওয়ার কসরত দেখাতেন। তার গোয়েন্দা হাজির হয়ে যেতেন এক সপ্তাহ আগে আর জুমার আগের রাতে স্বপ্ন দেখে তিনি ওই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতেন। তার বিনোদন এখনও অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন তিনি আমাদের বিনোদন জোগাচ্ছেন। যেদিন যে চরিত্রে অভিনয় করছেন কথা বলছেন সে চরিত্রের সঙ্গে মিল রেখে। এবং সবাই জানেন, তার কোন কথাই শেষ কথা নয়। তবুও আমরা তার কথাকে গুরুত্ব দেই। সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ।

তবে কোন কিছুই বিচিত্র নয়, বিনোদনের রাজার একসময়কার সহকর্মীও বিনোদন জুগিয়ে চলছেন। শেয়ারবাজার তার ভাষায় ছিল দুষ্টু এখন দুষ্টু হয়েছে সংবাদ মাধ্যম। কথায় কথায় বোগাস আর রাবিশ বলা তার ট্রেড মার্ক। এমনকি বয়সের ভারে ক্লান্ত এ রাজনীতিবিদ একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করেন নোবেল বিজয়ীর প্রতিও। ছাত্রসংগঠনের নেতারা তার ভাষায় বদমাশ। কিন্তু সে বদমাশদের বিরুদ্ধে তিনি কোন ব্যবস্থা নেন না।

আরেক রাজনীতিবিদ হাল আমলে নতুন করে তার মুখে ভাষা ফুটেছে। যদিও একসময় প্রভাবশালী মন্ত্রী থাকাকালে তিনি মাটি খুঁড়ে সন্ত্রাসী বের করে আনতে চেয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী সেসময়েই বাংলাদেশে সন্ত্রাস সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছিল। এখন তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের বাড়ি পাঠানোর ভয় দেখাচ্ছেন। বাড়িতেইতো মানুষ সবচেয়ে নিরাপদ থাকে। সরকারি কর্মকতাদের নিশ্চয়ই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

হরতাল সমর্থকদের নাড়ানিতে বহুতল ভবন ভেঙে যাওয়ার তত্ত্ব প্রচার করে এ আলোচিত হন একজন। এবার তিনি হাত মিলিয়েছেন আরেক প্রভাবশালীর সঙ্গে। যিনি মনে করেন গরু আর ছাগল চিনলেই ড্রাইভার হওয়া যায়। দেশের ড্রাইভার হতে হয়তো এতটুকু যোগ্যতা হলেই চলে কিন্তু গাড়ির চালকদের যোগ্যতা যে আরও বেশি প্রয়োজন তা তাদের কে বুঝাবে। সড়ক খুনিদের, যাদের খামখেঁয়ালিতে অনেক সময়ই প্রাণ হারাণ নিরাপরাধ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কোন হত্যা মামলা না হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন দুই উজির। হত্যার লাইসেন্স দেয়ার অধিকার যে তারা কথায় পেলেন তা বোঝা দায়।

বিরোধী কয়েকজন প্রতিনিয়ত বিনোদন দিয়ে যাচ্ছেন। একদিন তারা বলেন, আন্দোলন হবে ঈদের পরে। কোন ঈদের পরে তা আর বলেন না। একদিন বলেন, আন্দোলন হবে ২৪শে অক্টোবর আবার বলেন নভেম্বর আবার বলেন, ২৪শে জানুয়ারি পর। আমরা বিনোদিত হই তাদের খেলা দেখে।

কথাটি নভোজোৎ সিং সিধুর। সাবেক ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটার। এখন ঝড় তোলেন কমেন্ট্রি বক্সে। ক’দিন আগেই তিনি বলেছেন, আইপিএল হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটের বিদ্যা বালান। বিনোদন, বিনোদন আর বিনোদন।

লেখক সাজেদুল হক

বিষয়: রাজনীতি

১২৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File