আলবদর কমান্ডারের ফাঁসি বনাম শহীদ কামরুজ্জামান

লিখেছেন লিখেছেন সামছুল করিম ১২ এপ্রিল, ২০১৫, ০১:৪০:০৩ রাত

অনেকেই বিভিন্ন ব্লগে কামরুজ্জামানের ছেলে ওয়ামীকে গালাগালি করছেন।কামরুজ্জামানের ফাঁসি হয়েছে হত্যার সাথে জড়িত একজন পরিকল্পনাকারী, এবং নেতৃত্বদানকারী হিসাবে, সরাসরি হত্যাকারি হিসাবে নয়।। মাত্র কয়েক মিনিট আগেই সোহাগপুরের বিধবা পল্লীর ১২০ জনকে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় কামরুজ্জামানের ফাঁসি হওয়ার সাথে সাথে এর প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

একপক্ষ খুশীতে উদ্বেল, আর একপক্ষ শোকে বিহব্বল। এমন অবস্হায় সঠিক সমালোচনা করা কঠিন। ভবিষ্যতে এই রায় নিয়ে অনেক বেশী রাজনীতি হবে, হতে পারে এই রায় বাংলাদেশর জনগণ তথা রাজনীতির গলার কাঁটা। কেন বলছি, তার বিশ্লেষণ পড়ার আগে সংক্ষিপ্ত রায়টি আমাদেরসময় ডট কমের এই লিংক থেকে পড়ে নিতে পারেন:

http://www.amadershomoys.com/newsite/2015/04/11/258486.htm#.VSlm1NKsiSo

সাত অভিযোগের ভিত্তিতে কামরুজ্জামানের বিচার হয়। তার মধ্যে চুড়ান্তভাবে রায়:

১ নং অভিযোগ - খালাস

২ নং অভিযোগ - ১০ বছরের কারাদন্ড

৩ নং অভিযোগ - সংখ্যাগরিষ্টের মতামতের ভি্ত্তিতে মৃত্যুদন্ড।

৪ নং অভিযোগ - যাবজ্জীবন

৫ নং অভিযোগ - খালাস

৬ নং অভিযোগ - খালাস

৭ নং অভিযোগ - যাবজ্জীবন

অর্থাৎ ৩ নং অভিযোগের রায়ই আজ কার্যকর করা হল যাতে মাননীয় বিচারকেরা একমত হতে পারেননি। এবার আসুন দেখে নিই অভিযোগটি কি ছিল। অভিযোগটি হচ্ছে, কামরুজ্জামানের পরিকল্পনায় এবং নেতৃত্বে সোহাগপুরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর (পড়ুন কুত্তাবাহিনী) ১২০ জনকে খুন করে এবং অনেক মহিলাকে ধর্ষন করে। মূলতঃ ১২০ জনকে খুনের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্বদানকারী হিসাবেই তার ফাঁসি কার্যকার হয়।

যে কারণে বিচারপতিরা দ্বিমত পোষণ করেছেনঃ মূলত সাক্ষীর স্বাক্ষ্য এ ক্ষেত্রে সকল বিচারপতির কাছে সমানভাবে গ্রহনযোগ্য মনে হয়নি। বিচারপতিদের মতের ভিন্নতা বাদ দিলেও আমার কাছে এ বিষয়টি অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। কারণ ঐ সময়ে কামরুজ্জামানের বয়স ছিল ১৯ বছর, এবং সে এইচ এস সি ২য় বর্ষের ছাত্র ছিল। এ বয়সের কেউ পরিকল্পনা করে, নেতৃত্ব দিয়ে সেনাবাহীনির মাধ্যমে এত বড় একটি ঘটনা ঘটিয়ে ছিল, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। ৪৫ বছর আগের থেকে বর্তমান সময়ে ছেলেরা অনেক বেশী ম্যাচিউরড। বর্তমানেও জামাত শিবিরের ১৯ বছর বয়সী কেউ তাদের সরকারের শাষনাধীনে (অনুমান করুন) সেনাবাহিনীকে দিয়ে এত বড় ঘটনা ঘটানো অসম্ভব। সর্বোচ্চ ১৯ বছর বয়সী একজন সেনাবাহীনীকে তথ্য সরবরাহ করতে পারে, বা রাস্তা চিনিয়ে দিতে পারে। তাই বলছি, এই বিচারের রায় কার্যকরের মাধ্যমে ৪৫ বছর পুরানো ক্ষতকে সারিয়ে না তুলে, মনে হচ্ছে, বরং নতুন ক্ষত সৃষ্টি করা হয়েছে। হয়ত আগামীতে সোহাগ পুরের বিধবা পল্লীর হত্যার অন্য কোন কাহিনী প্রমানীত হলেও, এবং রাষ্ট্র কর্তৃক কামরুজ্জামানের পরিবার ক্ষতিপুরুন পেলেও অবাক হবনা।

বিষয়: বিবিধ

১২৫২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

314362
১২ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০১:৫৩
শেখের পোলা লিখেছেন : আইন যেখানে নিজস্ব মতামত সেখানে অবাক হবার কি আছে? একে একে অনেকের কপালেই এমন জুটবে৷ সত্যিকার মুমিনের জন্য এটা একটা পরীক্ষা৷ উনি তাতে পাশ করে গেলেন৷ এতেই আমার সান্ত্বনা৷
314375
১২ এপ্রিল ২০১৫ রাত ০২:১২
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : সত্য একদিন সবার সামনে পরিষ্কার হবে ,,কামারুজ্জামান হত্যার বিচার সময়ের দাবি আর সময় এলেই সেটা পূরণ হবে। ইনশা আল্লাহ
314392
১২ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৫:০৮
কাহাফ লিখেছেন :
রাজনৈতিক প্রতিহিংশায় মজলুম কামারুজ্জামান কে হত্যা করা হয়েছে বিচারিক আংগিকে!
এটাই সত্য বলে সাধারণ মানুষ মনে করে!!
314403
১২ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ০৯:২৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ওই বিধবা পল্লির সত্য কাহিনি ইতঃমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি শেরপুর এর অধিবাসি জন্মসুত্রে হিন্দু লেখিকা মিনা ফারাহ ও তার সমর্থন করেছেন। কিন্তু এই মিথ্যাবাদিরা সেটা মানতে নারাজ।
314417
১২ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ১০:০৩
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! যুগে যুগেই আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠার জন্যে রক্ত বিলাতে হয়েছে, আমরা তো সেই উত্তরসূরী! ভয় নেই, এই রক্তের বিনিময়ে, এই কোরবানির বিনিময়ে জান্নাতের ওয়াদা আছে.....আল্লাহ কবুল করুন এই রক্ত এই কোরবানি! আর আল্লাহর ওয়াদা মত জান্নাতের বাসিন্দা হিসেবে কবুল করুন! আমিন ছুম্মা আমিন! সবকিছুর পরে এটাই শান্তনা যে তিনি এখন আল্লাহর নৈকট্য পেয়ে ধন্য হয়েছেন.....।
314421
১২ এপ্রিল ২০১৫ সকাল ১০:৪৩
ইয়াফি লিখেছেন : সরকারের রাজনৈতিক জিঘাংসা পূরণে কিছু বিচারক সহয়োগী হয়েছেন। এতে তাঁরা আইন, যুক্তি, সাক্ষ্যকে তোয়াক্কা করেননি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File