পতনের দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে ...
লিখেছেন লিখেছেন সামছুল করিম ১৮ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৭:১০:৩৬ সন্ধ্যা
ভুল পথ পতন ত্বরান্নিত করে। সরকার আসলেই ভুল পথে। আওয়ামীলীগ যে রাজনৈতিক কৌশল গ্রহন করেছে এর নাম হচ্ছে - ডু অর ডাই ( হয় জিতব নতুবা মরব)। এই কৌশল মানুষ তখনই নেয় যখন মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্ত আওয়ামীলীগের তো সেই অবস্হা ছিলনা। তবে কেন সরকার বা আওয়ামীলীগ এই কৌশল গ্রহন করল?
এই কৌশলের কারণেই সরকার যৌথ বাহীনির অলআউট অপারেশন (বা সার্বিক যুদ্ধ) গ্রহন করেছে। এ সার্বিক যুদ্ধের নমুনা হচ্ছেঃ ১) মিডিয়ায় সার্বিক নিয়ন্ত্রন (সোশাল মিডিয়া সহ) ২) শত্রুকে ধ্বংস করতে সর্বোচ্ছ শক্তির ব্যবহার ৩) সামাজিক এবং অন্যান্ন রাষ্ট্রীয় শক্তিকে নিয়ন্ত্রনে রাখা, যাতে শত্রু পক্ষ কোন ভাবেই কোন দিক থেকে সমর্থন না পায়।
বর্তমান সরকার এই সার্বিক যুদ্ধ নিয়েই মাঠে নেমেছে। এ ক্ষেত্রে বিরোধীদের গেরিলা প্রতিরোধের যে পদ্ধতি তৈরি হচ্ছে তা দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশকে সিভিল ওয়ারে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন এই পথ বেচে নিল? এর কারণ একটাই হতাশা। সেই হতাশা তৈরি হয়েছে মূলত বয়স এবং সম্ভাবনা বিচারে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রধান শেখ হাছিনার পক্ষে বিরোধি দলে গিয়ে আন্দোলন করে ৫ বছর পর আবার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই। হাসিনার ছেলে জয়ের ও নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা নেই। আবার হাসিনা নিজের নেতৃত্বকে নিষ্কন্টক রাখতে আওয়ামীলীগের সকল সম্ভাবনাময়ী নেতৃত্ব ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে শেখ পরিবারের পক্ষে বিশেষ করে শেখ হাসিনার পরিবারের রাজনীতি বিলীন হওয়ার যাবতীয় সম্ভাবনার ভীতিই আজকের বাংলাদেশ সিভিল ওয়ারের দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে।এই ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্যই রাষ্ট্রের সকল শক্তিকে দলীয় (গোপালী) করণের মাধ্যমে দেশে যুদ্ধাবস্হ তৈরি করা হয়েছে। শেখ হাসিনা এখন আর আওয়ামীলীগকেও বিশ্বাস করেনা, তাই সব যায়াগায় গোপালগন্জ।
কিন্ত শেখ হাসিনা ভুল করছেন, পুলিশ প্রশাষন ভুল করছেন, ভুল করছে বিজিবি। কারণ বিরোধী নেতৃত্ব বা দলকে নিঃশেষ করা যাবেনা। যেমন পারেনি বিএনপি। সুতরাং আওয়ামীলীগের এই কৌশলই ভুল। কিন্তু এই ভুলের মাশুল দিবে দেশের মানুষ, প্রশাষন এবং আওয়ামীলীগ নিজেই।
সঠিক রাজনীতি হচ্ছে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলবস্হাকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা। যে বা যারা অত্যাচার, নির্যাতনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার এই আমলকে দীর্ঘায়িত করার প্রয়াশে লিপ্ত তাদের জন্য বলছি , ২০১৫ সালে এটা অসম্ভব। ভাইবার, ট্যাংগো, ফেইসবুক সবকিছু বন্ধ করে দিলেন, পত্রিকাগুলোকে পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে বিরোধীদের বিপক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করলেন, টিভির টক শো এবং খবরেও বুদ্ধিবেশ্যাদের দিয়ে মানুষকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করলেন - কিন্ত জানা প্রয়োজন মানুষের বিশ্বাস একবার হারিয়ে ফেললে তা আর ফেরত পাওয়া যায়না সহজে। তার প্রমাণ এত কিছুর পরও বিরোধীদের সফল অবরোধ। এই অবরোধ আর যদি ১ মাস চলে তবে সরকারের পতণ অনিবার্য। আর গণ আন্দোলনে আওয়ামীলীগের পতন হলে আগামী ২০ বছরেও আওয়ামীলীগকে খুজে পাওয়া যাবেনা। তাই সরকার, প্রশাষন, বা আওয়ামীলগের নীতি নির্ধারক এবং সাধারণ কর্মীদের বলছি, দেশ বাঁচাণ, মানুষ বাঁচান, আওয়ামীলীগ বাঁচান। শেখ হাসিনা মানেই আওয়ামীলীগ নয়। আওয়ামীলীগ তখনও ছিল যখন হাসিনা ছিলেননা।
আওয়ামীলীগ বা বিএনপি যে দলই হারুক তাতে বাংলাদেশ হারবে। এই দুই দলকেই বাংলাদেশের দরকার।
বিষয়: রাজনীতি
১৩৬৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন