ফোন এসেছে, ফোন আসেনি, ফোন...., আসলে কি ঘটেছিল???

লিখেছেন লিখেছেন সামছুল করিম ১২ জানুয়ারি, ২০১৫, ১২:৪৯:১০ রাত

ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি অমিত শাহ বিএনপির চেয়ারপারসনকে ফোন করেছিল কিনা, এ বিষয়টি এখন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা যতটুকু না রাজনৈতিক, তারচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ আমাদের রাজনৈতিক দৈন্যতার কারণে।

৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন যখন দেশের জনগণের স্বিকৃতি পেলনা, তখন সরকার ব্যাস্ত হয়ে পড়েন বিদেশের স্বিকৃতির জন্যে। তারই ধারাবাহিকতায় ভারত দায়িত্ব নেয় বিভিন্ন দেশে এ সরকারের স্বিকৃতি অর্জনের। দূর্ভাগ্যের বিষয় প্রথমদিকে এতে খুব বেশী সফলতা আসেনি। তদুপরি, ডেভিড ক্যামারুনের সাথে ফটো সেশনকে দ্বিপাক্ষিক মিটিং বলে সরাকরের পক্ষ থেকে প্রচারের পর বৃটিশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে 'সঠিক তথ্য' প্রচার করা হয়, যা ছিল সরকারের জন্যে অনেকটাই বিব্রতকর। একই ঘটনা ঘটেছিল হোয়াইট হাউজে ফটো সেশনের ক্ষেত্রে। দুর্ভাগ্য আমাদের। সরকার আমাদের থেকে বিদেশী সরকারের সাথে তার ছবি তোলার সুযোগকেই বেশী গুরুত্বপূর্ন মনে করে। বিষয়টি অনেকটাই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের স্বিকৃতির মতো।

আওয়ামীলীগের পদাংক অনুসরণ করে বিএনপিও একই রাজনৈতিক দৈন্যতার পরিচয় দিয়েছে। বিদেশের কে কাকে ফোন করেছে, এ বিষয়টি কখনই মূখ্য বিষয় নয়, যতটা না গুরুত্বপূর্ন বাংলাদেশের মানুষের বিএনপির আন্দোলনে সম্পৃক্ততা। বিএনপি এই টেলিফোন কলের প্রচারের সাথে সাথে আওয়ামীলীগের জন্যে গুরুত্বপূর্ন হয়ে দাড়ায় এ কথা প্রমাণে যে ভারত থেকে এমন কোন ফোন কল আসেনি। এবং তারা তাই করল। এখন দেখার বিষয় আসলে কি ঘটেছিল। আওয়ামী মিডিয়া সেলের সহযোগী টিভি চ্যানেল - চ্যানেল ৭১ এবং চ্যানেল ২৪ এই নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে। কিন্ত এ রিপোর্ট গুলোও বিতর্কের উর্ধ্বে উঠতে পারেনি। প্রধানতঃ কন্ঠস্বরের ভিন্নতার কারণে। সহযোগি একটি ব্লগে এই নিয়ে একটি রিপোরর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে প্রথম আলোর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন, যা এবিষয়ে সন্দেহ দূরিভূত না করে আরও বাড়িয়েছে। মূলত সরকারের উদ্দেশ্য ছিল প্রমাণ করা ভারত বিএনপিকে নয় আওয়ামীলীগকেই অনুমোদন করে। সরকার এ ক্ষেত্রে সফল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আসলেই ফোন এসেছিল কিনা?

আগে যেমন উল্লেখ করেছিলাম, এই সৌজন্যতার ফোনের যদিও মুল্য নেই, কিন্ত মানুষিক ভাবে পরাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ এবং একশ্রেনীর মানুষের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম, যা উপরেই উল্লেখ করেছি। কারণ বাংলাদেশ এখন আর গণপ্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ নয়, বরং এই দেশ এখন ভারতেরদয়াতন্ত্র বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশ এখন একধরনের অলিখিতভাবে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের শাষণ চলছে। হায়রে স্বাধীনতা!! স্বাধীনতার নাম ভাংগিয়ে দেশে রাজনীতি চলেছে এত দিন - মুক্তিযুদ্ধা আর রাজাকার, দেশকে এই দুভাগে ভাগ করে ফেলেছে রাজনীতিকেরা। আর এখন স্বাধীনতাকেই বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে।

যাক যা বলছিলাম, অমিত শাহের ফোন এর বিষয়টি সেই পর্যন্ত মিমাংসা হবেনা, যেই পর্যন্ত না বিজেপির ওয়েব সাইটে এ বিষয়ে কোন বিবৃতি প্রকাশিত হবেনা, যেমন ঘটেছিল শেখ হাসিনার সাথে ডেভিড ক্যামেরুনের বৈঠক নিয়ে, যা পরে ডাউনিং স্টৃট বা ডেভিড ক্যামেরুনের অফিস তাদের ওয়েব সাইটে বিবৃতি দিয়ে অস্বীকার করে। এ পরস্হিতি জাতী হিসাবে বাংলাদেশের জন্যে লজ্জ্বাজনক।

ফোন আসার বিষয়ে অন্য একটি বিকল্প কারণ হতে পারে, বিএনপিকে বোকা বানানো। হয়ত ভারত থেকে একটি কল এসেছিল অমিত শাহ এর নাম করে যা বাস্তবে অমিত শাহের ছিলনা। হয়ত এ ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলার জন্য। এতে আমরা ধরেই নিচ্ছি খালেদার নিকট ফোন এসেছিল। আর ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনীতির কুটচালের অংশ হিসাবেই হয়ত করা হয়েছে। এ বিষয়টি লিখতে সত্যিকার অর্থেই অপমানে মাথা নীচু হয়ে আসে। বাংলাদেশের তথাকথিত রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী বা সুশীলদের আত্নহত্যা করা উচিত। একটি টেলিফোন এতই গুরুত্বপূর্ণ?????

ভারত বা বিশ্ব রাজনীতিবিদরা আমাদের এই উলংগপনা, নোংরামি দেখে নিশ্চই হাসছেন।

বিষয়: বিবিধ

১২৮২ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300227
১২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০২:১৪
হাকালুকি লিখেছেন : ভার‍্যতের একটি দলের প্রধানের ফোন আসা না-আসা নিয়ে যা হচ্ছে তাতে যে জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত
১২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:৫৩
242977
সামছুল করিম লিখেছেন : সহমত @হাকালুকি
300229
১২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:০১
সাদাচোখে লিখেছেন : BNP-Jamayat is deceived all along. If they wish not to be deceived - they need to extra careful.
১২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:৫৮
242979
সামছুল করিম লিখেছেন : In an oppressive context where two heads can't come together for making an appropriate measure, power grabber can mislead people by isolating the opposition from the mass people.

Bangladesh is in all out so called political war.
300237
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:০৬
তহুরা লিখেছেন :
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:৫৬
242982
সামছুল করিম লিখেছেন : ওমাগো ডরাইছি (ভয় পাইছি)।
300262
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
হতভাগা লিখেছেন : ভারতের উচ্ছিষ্ট খাবার জন্য আমাদের নেতাদের কত উতসাহ !
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:০৯
243004
সামছুল করিম লিখেছেন : ঠিক বলেছেন। বিষয়টা অনেকটা নিজের জমি মহাজনের কাছে বন্ধক দিয়ে নিজেই সেখানে শ্রমিক হয়ে যাওয়া।
300275
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:২২
আবরণ লিখেছেন : একটা প্রতিবেশী দেশের ক্ষমতাসীন দলের সভাপতির একটা ফোন কলের এত গুরুত্ব দিতে গিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা নিজেদেরকে এবং সেই সাথে গোটা দেশের জনগনকে কোথায় নিয়ে গিয়েেছে..। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা বিরুদ্ধমতকে হেয় করতে গিয়ে নিজেদেরকে এবং সেই সাথে গোটা দেশের জনগনকে ছোট করেছেন। তবে এক্ষেত্রে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে পোষ্ট টির লেখক "সামছুল করিম" সাহেবের অভিমতটিই সঠিক। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধমতকে বেকায়দায় ফেলানোর কুটকৌশল রচনা ও বাস্তবায়নের ক্ষমতার কাছে বিএনপি দুগ্ধ পোষ্য শিশু মাত্র। আওয়ামী লীগের কাছে বিএনপির অ-নে-ক শেখার আছে। অতীতে তারা শেখে নাই বিধায়ই তাদের কপালে আজ এই দুর্গতি। এখনও যদি তারা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে না শেখে তাহলে বিএনপি বাংলাদেশে অতীত ইতিহাস হয়ে যাবে। যুদ্ধ আর প্রেমের ক্ষেত্রে যেমন প্রতিপক্ষকে ছাড় দেওয়া যায় না তেমনি রাজনীতির ক্ষেত্রেও অনুরুপ। যে ভুল আওয়ামী লীগ কখনো করেনা সেই ভুল বিএনপি বার বার করে বলেই দেশে এত জনসমর্থন থাকা সত্বেও তারা আজ ক্ষমতার বাইরে। ধন্যবাদ।
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৪০
243008
সামছুল করিম লিখেছেন : ধন্যবাদ আবরণ আপনার বিস্তারিত মতামতের জন্য। রাজনীতিতে জিততে হলে অনুসরণ করলে হয়না, বরং সেই জিতে যে অনুকরণীয় কৌশল অবলম্বন করে।

বিএনপির জনসমর্থন আছে, সুবিধাবাদী নেতা আছে, কিন্তু কর্মী নেই। আর নেতাদের সাথে সমর্থকদের সংযোগ নেই। ফলে বিএনপিকে এই সমস্যাটি মাথায় রেখেই কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।
300285
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:১৯

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : আল্লার মুমিনদের বিরুদ্ধে ইহুদী-নাসারার ষড়যন্ত্র..........
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:৪৫
243010
সামছুল করিম লিখেছেন : মুসলমান আর মুমিন কি এক কথা? বাংলাদেশের শতকরা কত হার মুসলমান মুমিন? বর্তমানে মুমিনদের মূল শত্রু হল নামদারী মুসলমানরা।
300319
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কিন্তু কথা্ হইল যে ফোন আসেনাই বলে বাংলাদেশের মিডিয়া লাফাচ্ছে সেই ফোন নিয়ে ভারতিয় মিডিয়া কিন্তু বলছে করা হয়েছে।
১২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৪৭
243041
সামছুল করিম লিখেছেন : বাংলাদেশের মিডিয়া লাফাচ্ছেনা, লাফাচ্ছে তারাই যারা সরকার দলীয় মুখপাত্র।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File