বিএনএফ - সরকারী বিরোধী দলঃ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এবং ভারতের ২৯তম রাজ্য
লিখেছেন লিখেছেন সামছুল করিম ২১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:৩১:৩৪ রাত
লিখার শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, কারণ আজ এমন কিছু বিষয় এ লিখায় উঠে আসছে যা কারো কারো আবেগে আঘাত হানতে পারে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় আমার কাছে যা সত্য মনে হচ্ছে তাই লিখার চেষ্টা করেছি।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রবনতায় পূর্বাভাস করা যায় আগামী ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ ভারতের অষ্টম ইউনিয়ন টেরিটরি এবং ২০ বছরের মধ্যে ২৯তম রাজ্য হিসাবে স্হান করে নিবে ভারতের মানচিত্রে। দাবার চক সেভাবেই কষা হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত যতটুকু প্রভাব বিস্তার করতে পারে সম্ভবত সে নিজে তার বর্তমান ৭ টি ইউনিয়ন টেরিটরীতেও এতবেশী প্রভাব বিস্তার করতে পারেনা। এই ৭টি ইউনিয়ন টেরিটরি সবগুলোই বিভিন্ন সিমান্ত অন্চলে অবস্হিত। এখানে দেখুনঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Union_territory
শেখ হাসিনার মত ক্ষমতা অন্ধ, ভারত বান্ধব, এবং প্রধান দলের নেতা থাকলে ভারতের জন্যে এই কাজ খুবই সহজ। সেনাবাহিনীতে কু করে ক্ষমতায় আসা এরশাদ অনেক আগ থেকেই ভারতের আয়ত্বে। বাকী থাকে বিএনপি এবং জামাত। বিগত ৭ বছরে এই ২ দলের কোমর অনেকাংশে ভেংগে দেয়া হয়েছে। যে টুকু শক্তি এদের বাকী আছে তা আগামী ৬ মাসের মধ্যে নিঃশেষ করার প্রচেষ্টায় বিএনএফ গঠন করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে জামাতের নিঃশেষ অনেকেরই কাম্য।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির কারণে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে আমার যে আবেগ এবং মোহ ছিল তা অনেকাংশে ভেংগে গেছে। একটি দেশের মূল শক্তি তার রাজনীতির সততা, নৈতিকতা, এবং বিশ্বাস যোগ্যতা। এই শক্তিই দেশের যাবতীয় শক্তিগুলোকে সংগঠিত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে এ শক্তি ক্ষয়ে যেতে যেতে এখন প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। বিএনএফ এর আত্নপ্রকাশ সম্ভবতঃ দেশের ক্ষয়িষ্নু স্বাধীনতার শেষ প্রতিক।
খবরে প্রকাশ ৫ জন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে বিএনএফকে হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে বিএনপির সাবেক এবং বর্তমান মিলে ৫০ এর অধিক নেতাকে দলে ভিড়িয়ে নির্বাচন করার জন্যে। উদ্দেশ্য হচ্ছে ১৮ দলীয় জোট বিহীন নির্বাচনকে গ্রহনযোগ্যতা দেয়া। তবে এ টাকা সরবরাহ করছে পার্শ্ববর্তী একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্হা। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্হিতি এবং বিএনএফ এর রেজিষ্ট্রেশন পাওয়ার পদ্ধতিতে মনে হচ্ছে এ খবর বিশ্বাসযোগ্য।
শেখ হাসিনার ধ্বংসাত্নক রাজনৈতিক পদক্ষেপ, ভারতীয় দুতাবাসের সরাসরী রাজনীতিতে জড়িয়ে যাওয়া, আর বিকলাংগ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভূঁইফোড় বিএনএফ এর প্রসব এবং এসব কিছুর সাথে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্হার যোগাযোগ ভারত কর্তৃক বাংলাদেশ সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনারই অংশ। ভারত যেভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রন করছে, তাতে স্বাভাবিক ভাবে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ আর স্বাধীন দেশ নেই।
ইদানিংকালে আমার কেন জানি মনে হচ্ছে বগংবন্ধুকে হত্যার পিছনেও ভারতের হাত ছিল। কারণ তাঁকে হত্যা পরিকল্পনা এবং হত্যা পরবর্তী সরকারে আওয়ামীলীগের লোকজনই অংশ নিয়েছিল। তাঁকে হত্যার অন্যতম কারণ সম্ভবত স্বাধীনতার পর তার স্টেটমেনশীপ ভারত বিরোধী ভূমিকা।
একটি দেশের স্বাংস্কৃতি ধ্বংস হলে তার স্বাধীনতা হুমকীর মুখে পড়ে। আর রাজনীতি ধ্বংস হলে দেশ স্বাধীনতা হারায়। বাংলাদেশের রাজনীতির বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। সমসমায়িক কালে নৈতিকতাটুকুও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর এর জন্য প্রধানত দায়ী শেখ হাসিনা এবং এরশাদ। খালেদা জিয়া বা বিএনপির রাজনৈতিক ব্যার্থতাও কম দায়ী নয়।
রাজনীতির অসততা, অনৈতিকতা, এবং অবিশ্বাসকে গ্রহনযোগ্য করতে এই তথাকথিত রাজনীতিবিদ এবং তাদের চাটুকারেরা একটি বাক্য চালু করেছেন - "রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই"। এটা হচ্ছে রাজনীতির চুড়ান্ত অবক্ষয়কে মেনে নিতে বাধ্য করার একটি কৌশল মাত্র। মনে রাখতে হবে রাজনীতির অবক্ষয়কে মেনে নেয়া মানে স্বাধীনতার অবক্ষয়কে মেনে নেয়া। ৪০ বছর আগের প্রজন্মের স্বাধীনতার ভূমিকা দিয়ে আজ স্বাধীনতার পক্ষ বিপক্ষ বিচার করতে গেলে আমাদেরকে চুড়ান্ত পরিনতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
বিষয়: রাজনীতি
১৫৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন