একজন ওহিদুজ্জামানই আজকের বাংলাদেশ

লিখেছেন লিখেছেন সামছুল করিম ০৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০৪:২৯:১১ রাত

ফেসবুকে যে কমেন্টের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক একেএম ওহিদুজ্জামানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম তারেক মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়ার আদালত তা একটি পত্রিকা চাপিয়েছে। কমেন্টটি ছিল '‘টিভিতে বড় বড় অক্ষরে দেখাচ্ছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও আইটি স্পেশালিস্ট সজীব ওয়াজেদ জয়’, এর আগে দেখাতো, ‘প্রতিবন্ধী বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে পড়ালেখা শেষে কয়েকটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়ে আইটি স্পেশালিস্ট; আর নিজের প্রতিবন্ধী সন্তান লালন পালন করে প্রতিবন্ধী বিশেষজ্ঞ। মায়ের আবার রয়েছে দেড় ডজন ডক্টরেট ডিগ্রি। হেঃ হেঃ হেঃ পুরোটাই বিজ্ঞানী পরিবার। ভাগ্যিস প্রকৃত বিজ্ঞানী বাবাকে এসব প্রতিভার বিকাশ দেখতে হচ্ছে না।’'

এই যদি হয় বাংলাদেশের কন্ডিশন, তবে এই দেশে আইনের শাসন আছে এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আল্লার কাছে ফরিয়াদ - 'হে প্রভু! আমাদের বাংলাদেশেই যখন পাঠালে তবে বোবা, বধির, অন্ধ করে পাঠালেনা কেন?' আমাদের জীবন যদি হত পশুর জীবন তবে কেউ চিন্তার বা লিখার স্বাধীনতা চাইতে আসতোনা। আজ বাংলাদেশের প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ঊচিত মুখে কালো কাপড় বেঁধে এই জংলী অপশাসনের প্রতিবাদ করা।

আমার রাজনৈতিক দর্শণের সাথে অধ্যাপক ওহিদুজ্জামানের চিন্তার নুন্যতম মিল নেই। তারপরও আমি তার বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তিনিতো তার স্টেটাসে কাউকে গালি দেননি, যদিও তার কথায় স্যটায়ার আছে, তাতো স্বীকৃত এবং গ্রহনযোগ্য।

বংগন্ধুর পুরোজীবনের রাজনৈতিক অর্জন যেভাবে মাত্র সাড়ে তিন বছরের চুড়ান্ত অপশাসন বাকশাল গঠনের মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটেছে, যার বোঝা বাংলাদেশ টেনেছে প্রায় ২০ বছর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান শাসন বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাবে তা আল্লাহই ভাল বলতে পারেন।

আমি শুধু সরকারকে বলতে চাই, আদালতের মাধ্যমে মানুষের চিন্তার স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে দেয়া, পুলিশের উদ্ধত রাইফেলের তাজা বুলেটে বিরোধীদের রক্তে রাজপথ রন্জিত করে হয়ত সাময়িক ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে পারবেন, কিন্তু চুড়ান্তভাবে বংগবন্ধু কন্যা বাংলার মানুষের কাছে জননেত্রীর আসন হারাবেন, এটা নিশ্চিত। হরতালে জনজীবনের নিরাপত্তা বিধান যেমন সরকারের দায়িত্ব তেমনি হরতালকারীদের নিরাপত্তা বিধানও সরকারের দায়িত্ব। সরাসরি গুলি করে হত্যার যে শাসন চালু হয়েছে, তার ভবিষ্যত কত ভয়ংকর হবে তা হয়ত সরকার প্রশাসন এখনও কল্পনাও করতে পারছেননা।

সবশেষে বলতে চাই, বাকস্বাধীনতার আসল উদ্দেশ্য তখনই অর্জিত হবে, যখন আপনি আপনার বিরুদ্ধে আপনার শত্রুর সমালোচনার সম্মান রক্ষা করতে নিজের জীবন বিপন্ন করতে রাজী হবেন। আসবে কি সেই সুদিন এই অভাগা দেশে?

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File