কমেন্ট ডিলেট করে দেয়া...এ কেমন কাপুরুষ সূচক মানসিকতা?
লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ১৩ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:১৮:৫১ রাত
ব্লগের এই প্ল্যাটফর্মটাকে শিক্ষামূলক হিসেবে ধরেই এখানে এসেছিলাম। নানা ধরনের মানুষ তাদের চিন্তাধারা, আবেগ, গবেষণা, উপলব্ধি এখানে তুলে ধরেন। সেগুলো থেকে আমার মতো মানুষের অনেক কিছু জানার ও শেখার অভিজ্ঞতা হয়। মাঝে মাঝে নিজের লেখা পোস্ট করি, যেখানে বন্ধুরা মূল্যবান মতামত দেন, অনুপ্রেরণা যোগান, ভুলগুলো ধরিয়ে দেন, নতুন তথ্য সংযোজন করেন। সব মিলিয়ে এই ব্লগ থেকে একজন পাঠক ও লেখক হিসেবে পর্যাপ্ত খোরাক পাই তা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। সেজন্য এই প্ল্যাটফর্ম, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ, ব্লগারগন সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ না জানিয়ে অকৃতজ্ঞের খাতায় নাম লেখাতে চাই না।
বলা হয়, চাঁদের গায়ে কলঙ্ক আছে। তেমনি এই সুন্দর প্ল্যাটফর্মটাকেও নোংরা করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে কিছু পেইড নাস্তিক দালাল আর কিছু তথাকথিত জ্ঞানের আধারগন। প্রথোমক্ত দলের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু বলার প্রয়োজন নেই, ইতোমধ্যেই নিজেদের কর্মকান্ড ও ব্লগারদের সর্তকতামূলক পোস্টের ফলে তারা কপালে মোহর মারার মতোই চিহ্নিত হয়ে গেছে। দ্বিতীয়োক্তদের নিয়েই আমার কিছু উপলব্ধি তুলে ধরার প্রয়াস করছি।
এই শ্রেণীর লোকগুলো বোধ হয় নিজেকে মহাজ্ঞানী পন্ডিত ভেবেই এখানে জ্ঞান ফলাতে আসে। তাদের কথার সাথে একমত হলে তো হলো, না হলে আর রক্ষা নেই। যেভাবেই হোক তাকে হেনস্ত করতে হবে। আর এই কাজের জন্য তারা সবচেয়ে জঘন্য যে উপায় অবলম্বন করে, তা হলো কমেন্ট মুছে দিয়ে ব্লক করে দেয়া, যাতে নতুন কোন পাঠক বুঝতেই না পারে যে ওনার জ্ঞানের রফাদফা করে দেয়া হয়েছে। দুটো অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি-
১. বেশ কিছুদিন আগে চক্রবাক নামে একজন "পড়ুন চোখ খুলে, হাসুন প্রাণ খুলে (১৫+)" শিরোনামে একটি পোস্ট দেয় যাতে দাড়িঁ নিয়ে কৌতুক করা হয়। ব্লগার কাহাফকে উনি টিটকারী মারেন ১৫+ পোস্ট দেখেই ঢুকে পড়ার কারণে, কিন্তু নিজে যখন ১৫+ পোস্ট দিলেন তখন বোধ হয় লজ্জাশরম সব ড্রয়ারে তুলে রেখেছিলেন। এর প্রতিবাদ করার আমাকে অবজ্ঞাস্বরে বলেন কৌতুকের ইসলামী ভার্সন দেখাতে। লক্ষনীয় আরো দুএকজন একই প্রতিবাদ করায় তাদেরও তীর্যক ভাবে কটাক্ষ করা হয়।ওনার উত্তরে আমি "আজ কিছু কৌতুক শোনাবো.................আশা করি এমন মজার কৌতুক অন্য কোথাও পাননি। " শীর্ষক একটি পোস্ট দেই, যেখানে আমার জানা নির্ভরযোগ্য হাদীস থেকে রাসূলের (সাঃ) কিছু কৌতুক তুলে ধরি। উনি সেটাকে পাত্তাই দিলো না, কারণ হাদিসগুলো যে কিতাব থেকে দেওয়া সেগুলোর নাকি ওনার কাছে ভিত্তি নেই!!!!! তো উনাকে যখন বললাম হাদীসগুলোর দূর্বলতা তুলে ধরতে, উনি একগাদা পাগলের প্রলাপ বকে অতঃপর এক জঘন্য কাজ করে বসলেন। বুখারীর বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীর রেফারেন্সে মনগড়া কথার পসরা মেলে ধরলেন।
বুঝতেই পারছেন, যে লোকের দ্বারা ফাতহুল বারীর নামটাও ঠিকমতো লেখা সম্ভব হয়নি, উনি যে কি রেফারেন্স দিতে পারেন! তার উপর ওনার বক্তব্য, প্রচলিত বুখারী নাকি ফাতহুল বারি হতে সংকলিত। যখন ওনার মিথ্যাচারগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে লাগলাম, ব্যাস; উনি ওনার ব্রক্ষ্মাস্ত্র প্রয়োগ করে দিলেন। আমার কমেন্ট ডিলেট করে ব্লক করে দিলেন, ফলে এখন কেউ দেখলে মনে করবে আমিই হয়তো ভূল করার কারণে আর কিছু বলতে পারিনি। অথচ ওনাকে আমি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, ওনার রেফারেন্সগুলো থেকে একটা বাক্যও যদি ফাতহুল বারী থেকে প্রমাণ করতে পারে তাহলে ওনার পায়ের জুতা মালা বানিয়ে পুরো ঢাকায় ঘুরবো.......
বুঝে আসে না, একজন লোক যে কিনা নিজের স্বার্থসিদ্ধীর জন্য নামজাদা মুহাদ্দিসের নামে দেদারসে মিথ্যা চালিয়ে দেয়, সে নিজেকে মুসলমান দাবি করে কিভাবে? উনি নাকি আবার তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের উপর গবেষনাও করেন.....
দ্বিতীয় আরেকজন হলো জিয়া মির্জা নামের এক ব্লগার। অবশ্য এই লোকটার উপর আমার বিরাট সন্দেহও আছে। এই জঘন্য প্রাণিটাযে শিআদের মু'তার ফসল তাতে আমার মোটামুটি সন্দেহ নেই। সম্ভবত আনোয়ার আলী, শিআনে আলি, জিয়া মির্জা- এ কয়টি নিক একই ব্যক্তির, যা তাদের লেখার ধরণ থেকে অনুমান হয়। এই ব্যাটা রাফেজিতো কমেন্ট ডিলেট করার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। আমার অনন্তত পাঁচটি কমেন্ট, যা পাঁচটি ভিন্ন পোস্টে করা, সে সাবলিল ভাবে মুছে দিয়েছে, কিন্তু তার বিপরীতে নিজের প্রতিউত্তরটা সাইনবোর্ড বানিয়ে রেখেছে। যদিও কমেন্টগুলোর স্ন্যাপ রাখিনি, তবু নিচের নমুনাটা দেখলে অনুমান করা যাবে।
খেয়াল করলে দেখবেন, রিদওয়ান ভাইয়ের কমেন্টটা আমাকে উদ্দেশ্য করে লেখা, তার অর্থ এর উপরে বা অন্য কোথাও আমার কমেন্ট ছিলো, যা মুছে দেয়া হয়েছে।
অবশ্য এই লোকের সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা, আমার কাছে ওর চরিত্রটা শিআ ধর্মের জনক আবদুল্লাহ বিন সাবাহর মতো মনে হয়। আবদুল্লাহ বিন সাবাহ মুসলমানদের মধ্যে প্রবেশ করেছিলো মুসলমান সেজে। এরপর ধীরে ধীরে আহলে বাইতদের প্রতি ভালোবাসা, হযরত আলীর (রাযি.) অধিকার রক্ষা, হযরত উসমান কর্তৃক কুরআন পোড়ানো ইত্যাদির আড়ালে সে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে সক্ষম হয়, যার পরিণতি ইসলাম হতে বের হয়ে সর্বপ্রথম বাতিল ফির্কা শিআর জন্ম এবং একদল লোকের হাতে হযরত উসমানের (রাযি.) মর্মান্তিক শাহাদত। এই লোকটিও তেমনি শুরু করেছিলো ইরান প্রীতিবাচক পোস্টের মাধ্যমে, কিন্তু সর্বশেষ পোস্টে তার মূল চরিত্রটা সামনে আসে, যখন আযানের প্রচলনকে হযরত উমর (রাযি.) এর প্রবর্তিত বিদআত আখ্যা দেয়।
আমির মুআবিআকে তো সে রীতিমতো জঘন্য ভাষায় আক্রমন করেছে, যা একমাত্র রাফেজি শিআ ছাড়া কোন মুসলমানের পক্ষে সম্ভব না।
হয়তো এই লেখার পিছনে আমার ব্যক্তিগত আবেগও কাজ করছে। কিন্তু সেটাকে পাশ কাটিয়ে একটু চিন্তা করে দেখুন। আপনার পোস্টে আরেকজনের কমেন্ট মূলত তার চিন্তার বহিপ্রকাশ। সেটাকে মুছে দেয়ার অধিকার কি আছে? আর যারা এমন কাজ করে বেড়ায়, তাদের পাবলিক ব্লগে লেখার মানসিকতা ও যৌক্তিকতা কতটুকু সে বিবেচনা আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম।
সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা সেটা হোক, জিয়া মির্জা নামধারী এই রাফেজিটা নিদ্বির্ধায় এখানে বিচরণ করছে, নিজের ইচ্ছামত সাহাবাদের (রাযি.) বিরুদ্ধে বিষোগার করছে, আর এখানের মডারেটদের চোখে আর না এখানকার বড় বড় ইসলামি চিন্তাবিদদের চোখে তা পড়ছে। সাহাবাদের প্রতি নগ্ন আক্রমন হওয়ার পরও যে চোখ মুখ বুঁজে বসে থাকে, সে কিভাবে নিজেকে মুসলমান দাবি করে?
বিষয়: বিবিধ
১৭৪৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটা কিছুতেই মানা যায় না।
দিন-দিন ব্লগের পরিবেশ গুটি কয়েক নিকধারীর কারণে নোংরা থেকে নোংরাতর হচ্ছে!অথচ মডুবৃন্দের কোন প্রতিক্রিয়া দৃষ্টি গোচর হচ্ছে না!
অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে এ কারণে!ফলশ্রতিতে আমাদের মত সাধারণ ব্লগ পাঠকরা বন্চিত হচ্ছে খুউব!
সাধারণ ব্লগ পাঠক-মন্তব্যকারী হিসেবে ব্লগের সুষ্ঠ-সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়া আনার জোড় দাবী জানাচ্ছি!!
জাযাকাল্লাহু খইর।
কিছু কিছু ব্লগার আছেন যারা তাদের পোস্টের বিষয়ে কোন নেগেটিভ মন্তব্য শুনতেই চান না ।
তারা চান প্রশংসামূলক মন্তব্য ।
অথচ একটা ব্লগ যুক্তি তর্কের মাধ্যমেই প্রানবন্ত হয়ে উঠে.
উনারা চান ডাকসাইটে লিখকের মতই অন্যান্য ব্লগারগন তাদেরকে সমীহ করে চলবে । কেউ কেউ আবার এদের বই কেনার বিজ্ঞাপন দিয়ে পোস্টও দেন ।
এখন বাকি আছে ব্লগাররা লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের কাছ থেকে তাদের বই পড়ে মুগ্ধ হয়ে অটোগ্রাফ নেবার , যেটা বইমেলাতে হয়ে থাকে ।
ুউনারা এই কাজটা করতে পাবেন খুব সহজেই । উনাদের একটা সাইন স্ক্যান করে ফাইল করে সেভ রাখতে পারেন । পরে বিমুগ্ধ পাঠক চাহিবা মাত্রই দিতে পারেন ।
কিছু গুন গ্রাহী ব্লগার দিয়ে আগে থেকেই এমন একটা পরিবেশ বানিয়ে রাখবে যেমনটা গুলিস্তানে টোটকা মলম বিক্রিকারীরা করেন ''আমি ব্যবহার করছি ভাই , উপকার পাইছি ভাই'' এরকম করে থাকে ।
এভাবে বিভিন্ন ডাকসাইটে লেখকের ন্যায় ''অমুক ব্লগার ফ্যান ক্ল্যাব'' নামে একটা গ্রুপই তৈরি হয়ে যাবে ।
টুমরোতে এরকম সিন্ডিকেটেড ব্লগিং খুব হয় , যা ব্লগের পরিবেশটাকে পানসে বানিয়ে ফেলে ।
এই উদাসিনতা ও পক্ষপাতিত্বের ফলে মাঝে মাঝেই মনে হয়, এই ব্লগটাকে ছেড়ে চলে যাই। যে মডারেট আমাদের চিন্তা করে না, তার ব্লগে থাকার মানেটাই কি!
আর ঐ সব ব্লগারদের কথা বলছেন! ওনাদের কি ঘন্টার যোগ্যতা আছে যে ওনাদের প্রশংসা করবে? স্রেফ চেহারা দেখে প্রশংসার কথা হলে তো টম ক্রজ বা লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিও কে অগ্রগণ্য করতাম, ওনাদের তো চেহারাই দেখা যায় না। আর যাদের কথা বলছি, তাদের যুক্তি ও জ্ঞানভান্ডার এমনই যে, মক্তবের বাচ্চারাও শুনে হাসবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন