মুসলমানদের অনগ্রসরতা, দুর্ভাগ্য ও আমার দৃষ্টিভঙ্গি

লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ২০ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:৩০:১৫ দুপুর



আজ অনেক দিন পর পরিচিত এই প্লাটফর্মে ফিরে এলাম। মাঝখানে কেটে গেছে প্রায় ২ মাস................!!! ব্যক্তিজীবন, পেশাজীবন ও পারিবারীক জীবনের বিভিন্ন ব্যস্ততায় ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও এদিকে নজর দিতে পারিনী, এমনকি ঈদ-উল-আযহার মুবারকবাদ ও জানাতে পারিনি। Broken Heart Broken Heart Broken Heart খারাপ কি লাগেনি? না লেগে উপায় আছে! যেখানে আমার প্রতিদিনের আনাগোন, সেখানে যদি একদিনও না থাকতে পারি, তাহলে যে কেমন লাগে তা হয়তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

যাই হোক, আশা করি পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহর মেহেরবাণীতে টুডে পরিবারের সকলেই ভালো আছেন।

এ দীর্ঘ বিরতীর পর ব্লগে এসেই পরিবর্তনের ছোঁয়া অনুভব করলাম। ব্লগে নিয়মিত সৃজনশীল ও চিত্তাকর্ষক লেখার পসরা সাজিয়ে বসেছে বেশ কয়েকজন নতুন দোকানী। নতুনদের এই আগমন, আসর্ষনীয় লেখা ও সাবলীল উপস্থিতিতে যারপরনাই উচ্ছাসিত লাগছে। কিন্তু খারাপ লাগলো, যখন দেখলাম অতি পরিচিত মুখের অনেকেই নেই.......এমন কি পেছনের দিকের পাতা গুলোতেও। বোঝাই যাচ্ছে, আমার মত আরো অনেকেই অনুপস্থিত হয়ে উঠেছেন। তারা ফিরে আসলে কি যে ভালো লাগতো.............

আশা করি নতুন পুরোনো সবাই মিলে নিত্যনতুন সৃজনশীল, জ্ঞানগর্ভ, শিক্ষনীয় ও হৃদয়ছোঁয়া লেখা দিয়ে ভরে তুলবেন এই প্লাটফর্মকে, যেখানে পাঠক পাবে পড়ার রসদ, অনুসন্ধীৎসুরা খুঁজে নেবে নতুন জ্ঞান, আর মেধার হবে উপযুক্ত মূল্যায়ন। Rose Rose Rose Rose


অবসর সময়ে যে আলোচনাগুলো মুখরোচক হয়ে ওঠে তন্মধ্যে একটি হচ্ছে জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের অনগ্রসরতা। প্রায়শ কথাটা এভাবে বলা হয় যে, ‘জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনগ্রসর বলেই মুসলমানদের এই দুর্গতি।’

এটা ঠিক যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের তুলনায় প্রাচ্য পিছিয়ে রয়েছে। তবে এটাও ঠিক যে, সেই অনগ্রসরতাই এ জাতির দুর্গতি ও পরাধীনতার কারণ নয়। প্রকৃতপক্ষে সমস্যা অন্য জায়গায়। মুসলিম উম্মাহর মাঝে কিছু বৈশিষ্ট্যের জাগরণ সম্ভব হলে বিদ্যমান জ্ঞান ও প্রযুক্তিই তাদের জাতীয় প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। তাই মুসলমানদের পরাধীনতার প্রসঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনগ্রসরতার প্রশ্ন অবান-র; বরং তা মূল সমস্যা থেকে দৃষ্টিকে সরিয়ে দেয়, উপরন' কিছু আত্মঘাতী বিভ্রানি- সৃষ্টি করে।

এ প্রসঙ্গে দু’টি বিষয়ে চিন্তা করা যায়। এক. আধুনিক শিক্ষাব্যবন্থায় মুসলমানদের অংশগ্রহণ দুই. আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলমানদের পারদর্শিতা। আমাদের দেশের কথাই ধরুন। এটি একটি মুসলিম দেশ এবং এদেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ মুসলিম। তবে আধুনিক শিক্ষা-ব্যবস্থাই এদেশের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত শিক্ষার মূলধারা। অতএব দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থী আধুনিক শিক্ষা-ব্যবস্থায় শিক্ষাগ্রহণ করছে। এটি শুধু বাংলাদেশের কথা নয়, সকল মুসলিম দেশে আধুনিক শিক্ষা-ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত। তদ্রূপ যেসব দেশে মুসলিমরা সংখ্যালঘু সেখানকার পরিসংখ্যান গ্রহণ করলেও একই চিত্র পাওয়া যাবে। সেসব দেশের অভিবাসী মুসলিম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থানীয় শিক্ষা ধারার সঙ্গেই জড়িত এবং বলা বাহুল্য তা আধুনিক শিক্ষা। তাহলে কীভাবে বলা যায় যে, মুসলিম-সমাজে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা নেই? কোনো শিক্ষিত মুসলমান যখন এমন কথা উচ্চারণ করেন তখন একটি মারাত্মক আশঙ্কা উঁকি দেয় যে, তাহলে কি মুসলমান অবচেতন মনে নিজের পরিচয়ও ভুলতে বসেছে? তারা কি শুধু মসজিদ-মাদরাসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরই মুসলমান বলে ভাবতে শুরু করেছেন?

যাই হোক, দ্বিতীয় প্রসঙ্গ অর্থাৎ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে মুসলিমদের পারদর্শিতার বিষয়টিও এখান থেকে প্রমাণিত হয়। যেহেতু সিংহভাগ মুসলিম আধুনিক শিক্ষা-ব্যবস্থায় জ্ঞান অর্জন করছে তাই মুসলিমসমাজে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের এমন কোনো বিষয় আছে কি, যা নিয়ে মুসলিমরা পড়াশোনা করছেন না? বিশেষজ্ঞতা ও পারদর্শিতারও অভাব আছে বলে তো মনে হয় না। এমনকি বৈশ্বিক পর্যায়ের প্রতিভাও মুসলমানদের মধ্যে সৃষ্টি হয়নি বা হচ্ছে না এমন বলা হলে তা হবে সত্যের অপলাপ। কোনো উদ্যমী ব্যক্তি যদি এ ধরনের মুসলিম প্রতিভার একটি তালিকা তৈরি করেন তাহলে, হলফ করে বলা যায়, তা বেশ দীর্ঘই হবে।

অতএব এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন যে, মুসলিম সমাজে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা নেই। কেউ হয়তো বলতে পারেন, ‘পাশ্চাত্যের সমপরিমাণ তো নেই।’ তাহলে বলব, আপনি ঠিক বলেছেন, কিন্তু এর তো প্রয়োজনও নেই। এখানে তুলনা নয়, পর্যাপ্ততাই মূল। অর্থাৎ ওদের তুলনায় আমাদের কম আছে না বেশি-এটি মূল প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের যা আছে তা কি আমাদের প্রয়োজন পূরণে পর্যাপ্ত ছিল না? অবশ্যই ছিল। সিংহভাগ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় সংশ্লিষ্ট থাকার পরও তা পর্যাপ্ত নয়-এটা হাস্যকর।

তাহলে কেন আমাদের প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে না? কেন মুসলমান পরাধীন? মূল সমস্যাটা কী? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদেরকে সাহসিকতার সঙ্গে ভাবতে হবে। সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কী হতে পারে তা পরবর্তী প্রশ্ন। প্রথমে সমস্যা নির্ণয়ে সাহসী ও ন্যায়নিষ্ঠ হওয়া অপরিহার্য। আমাদের মূল সমস্যা মাত্র একটি। আমি অত্যন- স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে, তা হচ্ছে মুসলিম হয়েও আমরা জীবনের সকল অঙ্গণে ইসলামকে ত্যাগ করেছি।

মুসলিম জাহানের বিভিন্ন ভূখণ্ড দীর্ঘ সময় অমুসলিম উপনিবেশ দ্বারা আক্রান- ছিল। সেই পরাধীনতার যুগে অমুসলিমরা আমাদের সমাজ-ব্যবস্থ, অর্থ-ব্যবস্থা ও বিচার-ব্যবস্থার যে নীতি ও কাঠামো প্রস'ত করে দিয়েছে স্বাধীনতার পরও তা আমরা ত্যাগ করতে পারিনি। এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে আমাদের জাতীয় শিক্ষা-ব্যবস্থায়।

শুধু তাই নয়, পরাধীনতার যুগে তারা আমাদের যে মানস-কাঠামো তৈরি করেছে আমরা এখনও তা বহন করছি। চিন্তা ও মূল্যবোধ এবং দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণ কোনো কিছুতেই আমরা স্বকীয়তায় প্রত্যাবর্তন করতে পারিনি। তাই জাতি হিসেবে মুসলিম হয়েও আমাদের সমাজ-ব্যবস্থা, অর্থ-ব্যবস্থা ও বিচার-ব্যবস্থায় এর কোনো প্রভাব নেই। অতএব শিক্ষা-ব্যবস্থাতেও তা অপরিহার্যভাবেই অনুপসি'ত। আমরা পারিনি আমাদের জাতীয় শিক্ষা-ব্যবস্থাকে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ঢেলে সাজাতে, এমনকি সফলভাবে ইসলামকে অন-র্ভুক্ত করতেও আমরা সক্ষম হইনি। ফলে লক্ষ লক্ষ মুসলিম শিক্ষার্থী জ্ঞান-বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করলেও চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গিগত স্বাতন্ত্র অর্জনে সক্ষম হচ্ছে না। একজন অমুসলিম যেমন স্রষ্টা সম্পর্কে নিষ্পৃহ হয়ে সৃষ্টিজগতকে পর্যবেক্ষণ করে আমাদের শিক্ষিত সমপ্রদায়ও কি তা-ই করেন না? ফলে সৃষ্টির অপার রহস্য উন্মোচিত হওয়ার পরও এই জ্ঞান তাদেরকে স্রষ্টা পর্যন্ত পৌঁছুতে সাহায্য করে না।

জীবন-দর্শন ও আচরিত জীবন ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও এ কথা সত্য। একটি সাহসী জাতির যে স্বাধীন নির্বাচন-শক্তি থাকা অপরিহার্য আমরা তার পরিচয় দিতে পারিনি। তাই পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে তাদের অবাস-ব ও অকল্যাণকর জীবন-দর্শনও আমরা গ্রহণ করে ফেলেছি। অথচ এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। পাশ্চাত্যের ভোগবাদ ও নাসি-ক্যবাদ কি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অপরিহার্য অনুষঙ্গ? এটা কি কোনোভাবেই সম্ভব নয় যে, আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে গ্রহণ করব, কিন' তা প্রয়োগ করব আমাদের নিজস্ব বিশ্বাস ও জীবন-দর্শনের আলোকে? অর্জিত জ্ঞানকে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বিন্যস- করে নিতে পারলে, সন্দেহ নেই, আমরাই হয়ে উঠতাম পৃথিবীর সেরা শক্তি। এটি নিছক একটি তত্ত্ব নয়, মুসলিম উম্মাহর অতীত ইতিহাস এরই জ্বলন- প্রমাণ।

আমাদের মাঝে সর্বোচ্চ সম্ভাবনা ছিল পৃথিবীর নেতৃত্ব গ্রহণের এবং বিশ্ব মানবতার কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার, কিন' চিন-াগত পরাধীনতা ও নির্বিচার পরানুকরণ সেই অমিত সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তিক্ত হলেও সত্য এই যে, সভ্যতা, আধুনিকতা, প্রাগ্রসরতা ইত্যাদি বিভিন্ন অসার শব্দ ও অলিক কল্পনার দ্বারা দাসত্ব ও পরানুকরণকেই শিক্ষা ও শিক্ষা-ব্যবস্থার মৌলিক দর্শনরূপে গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে মুসলমানদের মানস-কাঠামো এমনভাবে গড়ে উঠছে যে, নিজ সম্ভাবনাকে অনুধাবন করাও তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। রোগাক্রান্ত ব্যক্তি যখন রোগ সম্পর্কেই উদাসীন হয়ে যায়; তখন আরোগ্য লাভ অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়ে।

তবুও শেষ কথা এই যে, হতাশার ঘন আঁধারেও আশার আলোকবিন্দু দেখা যাচ্ছে। অব্যাহত জুলুম-অত্যাচার এবং শোষণ ও বঞ্চনার কারণে মুসলিম জাহানে প্রাণের স্পন্দন স্পষ্ট হয়ে ওঠছে। একই সঙ্গে দীর্ঘ ভোগবাদী ও নিপীড়নমূলক জীবন-ব্যবস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে অমুসলিম সমাজেও ইসলামী জীবনাদর্শের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। ওই সময়টা বোধ হয় খুব বেশি দূরে নয় যখন ইসলামই হয়ে ওঠবে বিশ্ব মানবতার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। আর ইসলাম যেহেতু সর্বজনীন আদর্শ তাই তা গ্রহণ করে অন্যান্য জাতি যদি আদর্শিক প্রতিযোগিতায় অগ্রগামীও হয়ে যায় তবে আশ্চর্য হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। তখন মুসলিম-সমাজে, মুসলিম পিতা-মাতার সন্তান হিসেবে অতি সহজে ইসলামী পরিচয় পেয়ে যাওয়া সত্ত্বেও যারা এর মূল্য অনুধাবনে সক্ষম হয়নি তারা ঈর্ষান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেও তা কোনো সুফল বয়ে আনবে না।

কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তবে আমি তোমাদের পরিবর্তে নিয়ে আসব অন্য এক সমপ্রদায়। অতঃপর তারা তোমাদের মতো হবে না।’ আমাদের যাদেরকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম-পরিচয় দান করেছেন তারা নিশ্চয়ই এই দুর্ভাগ্য বরণ করতে প্রস'ত নই। সেক্ষেত্রে ইসলামী আদর্শের দিকেই আমাদের ফিরে আসতে হবে। সম্ভবত এখনো তার সুযোগ রয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৩৬ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

276366
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৭
নূর আল আমিন লিখেছেন : আহলান ওয়ালা সাহলান
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
220349
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহু খইর।
276377
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৯
চেয়ারম্যান লিখেছেন : ওয়ালাইকুম-আসসালাম
স্বাগতম আবার ও
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
220350
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ধন্যবাদ চেয়ারম্যান সাপ। Winking Winking
জাযাকাল্লাহু খইর
276398
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৪
আল সাঈদ লিখেছেন : অসাধারণ উপস্থাপন।
মুসলিম হয়েও আমরা জীবনের সকল অঙ্গণে ইসলামকে ত্যাগ করেছি।এটাই সত্য।
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
220351
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : সহমত। জাযাকাল্লাহু খইর।
276412
২০ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৮
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : কোন সম্প্রদায় যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকে তাদের কখনো উন্নতি হয় না। ছোট খাট আকিদাগত অমিল এবং ক্ষমতার লোভে মুসলিমরা তো বছরের পর বছর ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ করতে করতে ক্ষান্ত হয়ে যাচ্ছে। তাদের জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করার সময় কোথায়।

কাজী নজরুল ঠিকই বলেছিলন "যে সময়ে মানুষ বিভিন্ন গ্রহ উপগ্রহে পরিভ্রমন করতেছে সে সময়ে মুসলমান গন বিবিকে সহি তালাক দেবার পন্থা খুজে।"
২০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:১৯
220387
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : কথাটি বহুলাংশে ঠিক। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, অনেক সময় এই ছোটখাটো অমিলগুলো পরবর্তীতে বড় বড় ফেতনার সৃষ্টি করে। সে হিসেবে বোঝা মাত্র এগুলোকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করাই উলামায়ে হক্ব ও দ্বীনদার মুসলমানদের কর্তব্য।
আরেকটা কথা, আক্বিদার ক্ষেত্রে কোন রূপ অমিল কষ্মিকালেও গ্রহনযোগ্য নয়। আক্বিদা তাই হতে হবে, যা কুরআন, রাসূলের (সাঃ) আমল ও হাদীস এবং সাহাবায়ে কিরামদের (রাযি.) আসার দ্বারা প্রমাণিত। এক্ষেত্রে নতুন অথবা ভিন্নধর্মী কোন কিছু কোনমতেই গ্রহনযোগ্য নয়।
সময় দিয়ে পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খইর।
২১ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:১২
220594
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : "অনেক সময় এই ছোটখাটো অমিলগুলো পরবর্তীতে বড় বড় ফেতনার সৃষ্টি করে। সে হিসেবে বোঝা মাত্র এগুলোকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করাই উলামায়ে হক্ব ও দ্বীনদার মুসলমানদের কর্তব্য।"

এটা কি আদৌ সম্ভব হয়েছে। তহেল শিয়া, সুন্নি সহ বিভিন্ন উপদল সৃষ্টি হল কি ভাবে?? একটি কথা মনে রাখবেন বিতর্ক সবসময় বিভক্তিই বাড়ায়। যদিও যে বিষয় গুলো নিয়ে বিতর্ক আছে সেই বিষয় গুলো এডিয়েও মুসলিম হওয়া যায়।
২১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৩
220684
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : তার মানে আপনি বুঝাতে চাচ্ছেন, কোন বাতিল চিহ্নিত হলেও তার বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে ঐক্যের অজুহাতে তা মেনে নেয়া? ইসলাম কি এটার অনুমোদন দেয়? একজন শিআ-যে খুলাফায়ে রাশেদার প্রথম তিন মহিমান্বিত খলিফাকে খলিফা তো দূরের কথা মুসলমান বলে মনে করে না,তাদের গালি দেয়াকে সাওয়াবের কাজ মনে করে, উম্মাহাতুল মু'মিনীন আয়িশা (রাযি.) কে যে চরিত্রহীনা বলে গালি দেয় (নাউযুবিল্লাহ), এগুলো ভূলে আমি তার সাথে যাবো ঐক্য করতে??? একজন বিদআতী- যে মাজার পুজা, কবর পুজাকে ধর্মের অঙ্গ বানিয়ে নিয়েছে, ভন্ড পীর সেজে সরলমনা মুসলমানদের প্রতারিত করে, নিজের ইচ্ছানুযাী শরিআকে বিকৃত করে, তার এই সব কিছু আমি মেনে নিবো তথাকথিত ঐক্যের খাতিরে? দুঃখিত জনাব, কুরআন-সুন্নাহ এর অনুমতি দেয় না, বিধায় অন্তত পক্ষে আমার দ্বারা তা সম্ভব নয়। ইতিহাস সাক্ষি দেয়, ঘরের শত্রু বিভীষনরাই সবচেয়ে বেশি বিপদজনক। দুটো ঘটনা এখানে উল্লেখ করতে হয়-
(১.) মদীনা আগমনের পর রাসূল (সাঃ) ইহুদদের সাথে যে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন, সে অনুযায়ী বাহ্যিক শত্রুর মোকাবেলায় সকলকে এক কাতারে দাঁড়ানোর শর্ত ছিলো। কিন্তু পর পর বদর, উহুদে ইহুদিরা শেষ মুহুর্তে এসে বেঈমানি করে ফিরে গিয়েছিলো। তার উপরে, খন্দকের যুদ্ধের সেই বিপদময় সময়ে তারা প্রকাশ্যে বহিশত্রুর সাথে হাত মিলিয়ে ছিলো। অথচ তাদের বড় একটা অংশ বাহ্যিক ভাবে নিজেদের মুসলমান দাবি করতো, রাসূল (সাঃ) মদীনার প্রধান হিসেবে স্বীকার করতো। যদিও এর আগেই তাদের অনেক মুনাফেকী রাসূলের (সাঃ) কাছে প্রকাশ পেয়েছিলো, তথাপি আল্লাহর নির্দেশ ও তাদের চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে তিনি তখন কিছু বলেননি। এখন রাসূল (সাঃ) ও নেই, আর কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সম্ভবনাও নেই। সুতরাং, এতসব জেনে বুঝে তাদের সাথে হাত মিলানো এক প্রকার মুনাফেকি।
হয়তো প্রশ্ন উঠতে পারে- তারা তো ইহুদি ছিলো, তাহলে আসুন এবার মুসলমান নামধারী কিছু লোকের কাহীনি দেখে আসি-
(২)শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবনে তাইমিয়া (রহ.)-এর নাম ও বীরত্ব কে না জানে? মহান এই মানুষটার উদ্দিপনা, পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে দামেস্কের লোকেরা দূর্ধর্ষ তাতারীদের পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো। যদিও প্রথম বার তারা পরাস্ত হয়েছিলো, কিন্তু শাইখুল ইসলামের অনুপ্রেরণা ও বীরত্বের প্রভাবে আল্লাহর প্রত্যক্ষ সাহায্যে দ্বিতীয় বার জয়ী হতে সক্ষম হয়। যুদ্ধের সময় একটা বিষয় বেশ লক্ষ্যনীয় ছিলো,দামেস্কী সিরিয়ান ও মিশরীয় বাহিনির প্রতিটি গোপন খবর ও কৌশল তাতারীদের কাছে ফাস হয়ে যেত। যুদ্ধের পর অনুসন্ধান করে দেখা গেল,দামেস্ক শহরের উপকন্ঠে বসবাস কারী বেশ কিছু শিআ লোকজন এই কাজ টি করতো। এরা দামেস্কের খবরাখবর তাতারীদের পৌছে দিতো, তাতারীদের রসদপত্রের ব্যবস্থা করতো এবং যুদ্ধে তাদের সর্বাত্মক সহযোগীতা করতো। (তা'রিখে দাওয়াত ওয়া আজিমাত,মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী রহ. খন্ড-২ সহ শাইখুল ইসলামের যে কোন জীবনি দ্রষ্টব্য) এই ছিলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে শিআদের প্রকাশ্য অবস্থানের রূপ। এমন ঘটনা ইতিহাসে আরো অনেক। অমুসলিম শীআরা মুসলামনদের বিরুদ্ধাচার ও ধ্বংস করে দিতে ইহুদি খ্রিষ্টানদের সাথে হাত মিলাতেও কসুর করেনি। সবচেয়ে বড় কথা, যারা সাহাবাকে মা-বোন তুলে গালাগালি করে, তাদের সাথে এসব ভূলে ঐক্য করতে যাবো? অসম্ভব।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে- "সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিলো।" (১৭:৮১)
অপর দিকে হাদীসে রাসূলে বর্ণিত হয়েছে, "তোমাদের মধ্যে যে কেউ একটি অসৎকাজ (হতে) দেখবে, সে যেন তাকে তার হাত দ্বারা প্রতিহত করে। তবে যদি সে ঐরূপ করতে অক্ষম হয়, তাহলে কথা দ্বারা যেন তাকে প্রতিহত করে, যদি এরপরও করতে অক্ষম হয়, তাহলে যেন অন্তর দিয়ে তাকে ঘৃণা করে। আর সেটা হবে সবচাইতে দুর্বল ঈমান।" (মুত্তাফাকুন আ'লাই, সহীহ বুখারী-কিতাবুল ইলম, সহীহ মুসলীম-কিতাবুল ঈমান)
সত্যকে মিথ্যা থেকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে সুতরাং, সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশানো যাবে না। আর কোন অন্যায় (হোক তা দ্বীন বা দুনিয়া সম্পর্কিত) দেখলে তা প্রতিহত করাই শক্তিশালী ঈমানদারের কাজ।
আশা করি বিষয়টা স্পষ্ট করতে পেরেছি। জাযাকাল্লাহু খইর।
২১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৫৭
220694
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : আপনি তাদেরকে যেমন ভ্রান্ত পথে আছে বলে মনে করেন ঠিক তেমনি তারাও মনে করে আপনারাই ভ্রান্ত পথে আছেন।
আমাদের দোষটা এখানেই। অন্যকে দোষ চাপাই কিন্তু আত্বসমালোচান করি না। আপনি হয়ত অনেক গুলো রেফারেন্স দিবেন তাদের বিরোদ্ধে যদিও আমি বাংলাই শিক্ষিত মানুষ তেমন বুঝিনা। তবে বুঝতে চেষ্টা করি। কিন্তু আপনার বিরোধীরাও তো কোরআনের হাদিস থেকে অনেক গুলো রেফারেন্স দেয়। এখন আমি বাংলা শিক্ষিত মানুষ কোন দিকে যাব? হিন্দু, বৌদ্ধ, খিষ্ট্রানদের সাথে আপনি এক সঙ্গে বসবাস করতে পারবেন, পড়তে পারবেন, চাকরী করতে পারবেন, কিন্তু সামান্য আকিদা গত পার্থক্যের জন্য তাদের সাথে মিশতে পারবেন না এটা কোন ধরনের কথা?
২১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৮
220772
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : মূল কথা বসবাস করা বা একসাথে থাকা নয়। সেটা তো সম্ভব, যদি সদিচ্ছা থাকে। প্রশ্ন হলো, আপনি কি তাদের সাথে হাত মিলিয়ে ইসলাম কায়েম করতে পারবেন কি না। দেখুন, যদি আপনি ভিন্ন ধর্মী কোন মানুষকে ইসলাম কায়েমের জন্য সহযোগীতা করতে বলেন, সে করবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একজন মুসলমান যখন জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলামের কর্তৃত্ব মেনে নিতে অস্বীকার করে তখন তাকে কি বলবেন? যাই বলেন, অন্তত মুসলমান বলবেন না।
ভাই, আমিও যে আরবীতে মহাপন্ডিত হয়ে গেছি তা কিন্তু নয়, আমি নিজেও ইংরেজী সাহিত্যে লেখা পড়া করা মানুষ। কিন্তু আগ্রহ, বলতে পারেন পরকালে বাঁশ খাওয়ার ভয় আমাকে বাধ্য করেছে কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান আহরণের প্রচেষ্টা চালাতে। একজন মুসলমান হিসেবে আপনারও উচিত চেষ্টা করে যাওয়া। কেননা, দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা ফরজ, আমরা টাকা কামানোর উদ্দেশ্যে দুনিয়াবী বড় বড় ডিগ্রি ধারণ করে বসে আছি কিন্তু পরকালে যে ইলম মুক্তি দেবে তার ব্যাপারে বরাবরই একটা উদাসীনতা।
তারপরও, যতটুকু আল্লাহ আপনাকে জানার তাওফিক দিয়েছে, তা নিয়েই এগিয়ে দেখেন, যদি প্রকৃত ঈমানের দাবীদার ও আল্লাহকে রাজী খুশি করার পাকা নিয়ত করেন, মিথ্যার দুর্গন্ধ আল্লাহ আপনার সামনে উন্মুক্ত করে দিবেন। মনোযোগ দিয়ে কুরআন পড়ুন, দেখবেন বাতিল ফিরকার সব দাবির অযৌক্তিকতা আপনার কাছে প্রকাশ পেয়ে যাবে। কুরআন কখনো বাতিলের পথ দেখাবে না, কুরআন "লা রইবা ফিহ" এটা নূর, যার হকের পথ দেখাবে। দেখুন, ইহুদি-খ্রিষ্টানরা আল্লাহর কালাম বিকৃত করার দুঃসাহস দেখালেও কখনও নিজ রাসূলের সাথীদের গালি দেয়ার ধৃষ্ঠতা দেখায় নি, যা দেখায় এই আকলের দুশমন মু'তার পয়দায়েশ শিআ রাফেজিরা। এটাই ভেবে দেখুন, আপনি এমন এক লোককে বন্ধু ও সফর সঙ্গী করে নিলেন, যে আপনার সাথে পানাহার করে, উঠাবসা করে, এক সাথে নামাজ পড়ে। কিন্তু নামাযে আপনি যখন কিরাত পড়ছেন বা তাশাহহুদ পড়ছেন, পাশে খেকে সে তখন সরবে "আল্লাহুম্মা লা'নাতু আলা আবু বকর,আল্লাহুম্মা লা'নাতু আলা উমর আল্লাহুম্মা লা'নাতু আলা উসমনা, আল্লাহুম্মা লা'নাতু আলা আয়িশা, লানাতুল্লাহি আলাই" জপে যাচ্ছে। একজন মুসলমান হিসেবে এটা সহ্য করতে পারবেন?
হ্যাঁ, ঐক্য সম্ভব। যদি তারা তাদের এই বিশ্বাস তাদের পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রাখে, প্রকাশ্যে এগুলো না করে তাহলে ঐ্ক্য সম্ভব।
সর্বোপরী মুসলমানদের জন্য মুসলমানই বন্ধু হিসেবে যথেষ্ঠ, যেমনটি কুরআনে বলা হয়েছে। প্রকৃত মুসলমান ৩১৩ জন হলেই ১০০০ জনের উপর ফতেহ লাভ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ।
একটি অনুরোধ, ইউটিউব থেকে পাকিস্তানের পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকী হকনাওয়াজ শহীদ (রহ)-এর কিছু বয়ান শুনুন, আশা করি অনেক কিছু জানতে পারবেন।
২১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:৪০
220786
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : লম্বা কিচ্ছা কাহিনী না বলে সংক্ষেপে উত্তর দিন।

আপনি কি জানেন মুসলিম হতে হলে কি কি শর্ত পূরণ করতে হয়? জানা থাকলে উত্তর দিন।
২১ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:৪০
220886
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : আপনাকে যুক্তিভিত্তিক মানুষ মনে করেছিলাম, সে ধারণাটা ভূল প্রমান করে দিলেন। অথবা এও হতে পারে, উলুবনে মুক্তা ছড়িয়ে দেয়ার বোকামি করছি আমি।

যাই হোক, প্রশ্নটা দেখে অবাক হওয়া ছাড়া কি গতি আছে? নিজের মুখেই আগের কমেন্টে বললেন,
তাদের বিরোদ্ধে যদিও আমি বাংলাই শিক্ষিত মানুষ তেমন বুঝিনা। তবে বুঝতে চেষ্টা করি।
এখন আবার সরাসরি আমাকে মুসলিম হওয়ার শর্ত জিজ্ঞেস করলেন!! আসলেই, আজব দুনিয়া!!!!

যদিও বুঝতে পারবেন কিনা সে সন্দেহ তৈরি করে দিলেন, তাও উত্তর দেয়া আমার উপর দায়িত্ব। সংক্ষেপে বলে দেই-
একজন মুসলিম সেই যে - যে ইসলামকে অন্তরে বিশ্বাস করে, মৌখিক ভাবে স্বীকার করে এবং কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করে। অর্থাৎ(১) এক আল্লাহ অস্তিস্ত, গুনাবলি ও তার দ্বারা রাসূলের (সাঃ) উপর অবর্তীর্ন সবকিছুকে সত্য বলে স্বীকার করে নেয় (২) নিজের জীবনের প্রতিটি দিক (ব্যক্তিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিয়, অর্থনৈতিক) আল্লাহর হুকুম ও তার রাসূলের স্থাপিত আদর্শ অনুসারে গড়ে (৩) আদল, ইনসাফ ও আখলাকে খইর ধারণ করে (৪) আল্লাহ, রাসূল ও ইসলামের প্রতি ভালোবাসাকে সবকিছুর তুলনায় বেশি প্রাধান্য দেয়, বিধায় এর জন্য প্রয়োজনে জান মাল কুরবান করতে প্রস্তুত থাকে- এই সব গুনাবলি অন্তরে ধারণ, মুখে প্রকাশ ও কর্মে বাস্তবায়নকারী ব্যক্তিই হলো মুসলিম।
এবার জনাব, কষ্ট করে একটু বলবেন কি যে, সাহাবায়ে কিরাম বা উম্মাহাতুল মু'মিনীনদের (রাযি.) গালি দিলে সে কি মুসলিম থাকে কিনা? তার বিধান টা কি?
২২ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:১৪
220958
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : আমাকে আপানার কাছে যুক্তিহিন মর্খ মনে হবে। কারণ আমি আপনার মত শুনা কথা নিয়ে অন্ধবিশ্বাসী হয়ে পড়ে থাকি না। শিয়ারা সাহাবাদের গালি দেয় নি। তারা শুধু এটা বলেছে যে 'আলী (রা) কে প্রথম খলিফা করা উচিৎ ছিল বলে এটা বলে । শুধু মাত্র এই দাবীটার জন্য অমুসলিম হয়ে যায় না।
গালি গালাজ যদি করেই থাকে তাহলে তাদের মাঝেও আপনার মত কিছু উগ্র মানুষ আছে, তারাই করতে পারে, সাবাই নয়।

এবার আসি সুন্নিদের ব্যাপারে। সব সুন্নি রা যে মাজার পুজা করে এটাও ঠিক না । এখানে আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন জিয়ারত আর পুজা কিন্তু এক জিনিস নয়।
হ্যা ওখানেও কিছু উগ্র মতবাদের মানুষ আছে তারা ভক্তি জানাতে গিয়ে সিসদা দিয়ে ফেলে। এটা সম্পূন্য শিরক। তবে এটা সব সুন্নিরা করে না।
২২ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৫৬
221060
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন :
আমাকে আপানার কাছে যুক্তিহিন মর্খ মনে হবে। কারণ আমি আপনার মত শুনা কথা নিয়ে অন্ধবিশ্বাসী হয়ে পড়ে থাকি না।

শুনা কথা নিয়ে অন্ধবিশ্বাসী???? Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
আসলেই হাসালেন ভাই। তর্কের গোঁড়ামী যে মানুষকে কোন পর্যায়ের বুদ্ধিহীন করে দেয়, সে ধারণা হয়তো পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেন নি।
উপরে প্রথম কমেন্টেই আমার পূর্বের একটা ব্লগের লিংক দিয়েছিলাম। হয়তো খেয়াল করেন নি, আবারও দিচ্ছি-
শী’আরা কি আসলে মুসলমান? একটি পর্যালোচনা
একবার দেখে আসুন, শীআদের মৌলিক আক্বিদা, সুনান, তাফসির ও ফিকহের কিতাব থেকে কিভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি ওদের আসল চেহারা। ঐ লেখায় জনৈক শিআ ভাই রেফারেন্সগুলোর সতত্যা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন, (লেখার নিচে কমেন্টেগুলোতে দেখুন), তার জবাবে বইয়ের পাতা স্ক্যান করে তুলে দিয়েছিলাম। তার জবাবে বইয়ের পাতা স্ক্যান করে তুলে দিয়েছিলাম।

আর উগ্রপন্থির কথা বলছেন? উগ্রপন্থা বলতে কি বুঝায় তা কি একটু বুঝিয়ে বলবেন? একজন মুসলিম আর একজন উগ্রপন্থী মুসলিমের মধ্যে পার্থক্যটা বলেন তো?
কুরআন পড়েছেন? " হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও....) (২:২০৮) অর্থাৎ দ্বীনের ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে (সেটা যদি ফরজ, ওয়াজিব বা সুন্নাত পর্যায়ের হয়) কোন ছাড় দেয়া চলবে না, এটাকেই যদি উগ্রপন্থি বলে, তাহলে এমন জ্ঞানহীন, দ্বীনি ইলমহীন গন্ডমূর্খ মুসলমান না হয়ে, একজন উগ্রপন্থি মুসলমান হতে পারায় আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
২২ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৩
221074
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : আপনার দেওয়া লিংক গুলো তো আপনাদেরই লেখা। সেখানে নতুন আর কি বা থাকবে!!!!
আপনাদের মত কিছু মানুষ আছে যারা কথায় কথায় ইহুদিদের দালাল, মোনাফেক, নাস্তিক ঘোষনা করে।
কয়েক টা উদাহরণ দিয়..
## ডা. জাকির কে অনেকে কথায় কথায় ইহুদিরে দালাল বলে। তাহলে আসলেই কি জাকির ইহুদিদের দালাল??
## মউদুদীকেও অনেক কে ঠিক একই ভাবে গারি দেয়। তাহরে কি মউদুদী আসলেই তাই ছিল?

এই রকম আরো হাজারও উদাহরন দিতে পারব। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল ইসলামকে আমরা প্রতিনিয়ত কঠিন করে তুলতেছি। আমার কখনো whole islam ফলো করি না। শুধু মাত্র হুজুদের দেওয়া একটি ছকের মধ্যে অবর্তিত হতে থাকি। কিন্তু এই ছকটি বিভিন্ন হুজুরের বিভিন্ন রকম। এটাই একমাত্র


ধন্যবাদ
২২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৪
221115
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ভাই, ইনসাফের দৃষ্টি যদি কোথাও কিনতে পাওয়া যেত, তাহলে সেটা কিনে আপনাকে হাদিয়া দিতাম, যাতে তা পরে দেখতে পারেন।
আমাদের দেওয়া লিঙ্কের বই আমাদেরই লেখা, এমন অদ্ভুদ কথা বলার আগে আল্লাহর দেওয়া বিবেকটা কি একবার খাটিয়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করলেন না? আমরা কি শিআ আকাবির হওয়ার ঠেকা নিয়ে বসেছি? এগুলো তাদের লেখা, যারা শিআ ধর্মের প্রধান প্রধান বিশারদ। মুসলমানদের মধ্যে যেমন প্রতিথযশা মুহাদ্দিস ইমাম বুখারী (রহ.), ইমাম মুসলিম (রহ.), ইমাম তিরমিযী(রহ.) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.), মুফাস্সির ইবনে কাসির (রহ.), জালালুদ্দিন সুয়ূতী(রহ.), ফখরুদ্দীন আল রাজী (রহ.), ফিকাহবীদ ইমাম আবু হানিফা (রহ.), ইমাম শাফি (রহ.), ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.); তেমনি ইবনে ইয়াকুব কুলাইনি, মুল্লা বাকির মাজলীশি, গোলাম হুসাইন নাজাফী, ইবনে বাদওয়া কুমী ইত্যাদি শিআদের নিজস্ব চিন্তাধারার প্রখ্যাত আলেম। ঐ পোস্টে এদের লেখা বিভিন্ন কিতাব, যা শিআদের মৌলিক কিতাব হিসেবে গৃহীত ও সমাদৃত, সেখান থেকে রেফারেন্স দেয়া হয়েছে।
যাই হোক, এই বিষয়ে আপনার সাথে আরো কথা বলার কোন ইচ্ছাই আমার নেই। কেননা, তার্কিক গোঁড়ামির উধ্বে না উঠা পর্যন্ত ইনসাফের সাথে যাচাই করা সম্ভব না।
276435
২০ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৪
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : কবি নজরুলের কথাটি আমার খুব মনে পড়ে যখন দেখি একজন আলেম অন্য আলেম এর বিরুদ্ধে ফতুয়া দেয়।
"বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে,
আমরা এখনো বসে।
বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজছি,
কুরআন ও হাদীস চষে।
হানাফী,স্বাফী,মালেকি,হাম্বলী মিটেনি গোল,
আজরাইল আসিয়া হাঁকিয়া কহিল তোলপাতল।"

ধন্যবাদ সুন্দর যুক্তি উপস্থাপন করার জন্য। Rose
২০ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:১৯
220388
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : কথাটি বহুলাংশে ঠিক। কিন্তু এটাও ভুলে গেলে চলবে না, অনেক সময় এই ছোটখাটো অমিলগুলো পরবর্তীতে বড় বড় ফেতনার সৃষ্টি করে। সে হিসেবে বোঝা মাত্র এগুলোকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করাই উলামায়ে হক্ব ও দ্বীনদার মুসলমানদের কর্তব্য।
আরেকটা কথা, আক্বিদার ক্ষেত্রে কোন রূপ অমিল কষ্মিকালেও গ্রহনযোগ্য নয়। আক্বিদা তাই হতে হবে, যা কুরআন, রাসূলের (সাঃ) আমল ও হাদীস এবং সাহাবায়ে কিরামদের (রাযি.) আসার দ্বারা প্রমাণিত। এক্ষেত্রে নতুন অথবা ভিন্নধর্মী কোন কিছু কোনমতেই গ্রহনযোগ্য নয়।
সময় দিয়ে পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খইর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File