আজ কিছু কৌতুক শোনাবো.................আশা করি এমন মজার কৌতুক অন্য কোথাও পাননি।
লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:২৩:৪১ দুপুর
১. একবার রাসূল (সাঃ), হযরত আলী (রাযি.) ও আরো কয়েকজন সাহাবী একত্রে বসে খেজুর খাচ্ছিলেন। রাসূল (সাঃ) কৌতুক করার উদ্দেশ্যে নিজের খাওয়া খেজুরের দানা গুলো আলীর (রাযি.) সামনে জমা করতে থাকলেন। খাওয়া শেষ হলে দেখা গেলো, হযরত আলীর (রাযি.) সামনে অন্য সকলের চেয়ে দ্বিগুন দানা জড়ো হয়ে আছে। রাসূল (সাঃ) বললেন, ”আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যে অন্যদের তুলনায় দ্বিগুন খেয়ে থাকে।” বিষয়টা অনুমান করতে পেরে আলী (রাযি.) তৎক্ষনাৎ বললেন, ”আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যিনি খাওয়ার সময়, এমনকি খেজুরের দানাও বাদ দেন না।” (সহীহ জা'মী-৭৩৪২)
২. একবার এক মহিলা সাহাব এসে রাসূলুল্লাহর (সাঃ) কাছে একটি সাওয়ারী উটের দরখাস্ত জানালেন। রাসূল (সাঃ) বললেন, ”হ্যাঁ, তোমাকে আমি অবশ্যই উটনীর বাচ্চার পিঠে উঠাবো।” সাহাবা বললেন ”ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! বাচ্চা তো আমার ভার সহ্য করতে পারবে না।” রাসূল (সাঃ) বললেন, “তোমাকে অবশ্যই উটনীর বাচ্চার পিঠেই উঠাবো।” ইতোমধ্যে উপস্থিত সাহাবাগণ কথাটির তাৎপর্য বুঝতে পারলেন (যে প্রত্যেক উটই কোন না কোন উটনীর বাচ্চা) এবং হাসতে লাগলেন। (মুসতাদরেক ই হাকিম, শামায়েল ই মুহাম্মাদী, অধ্যায়-৩৬, হাদীস নং-২৩৮)
৩. একবার এক বয়োবৃদ্ধা সাহাবী এসে রাসূল (সাঃ) বললেন, ”ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! আমার জন্য জান্নাতের দুআ করুন।” রাসূল (সাঃ) বললেন, “কোন বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” শুনে উক্ত বৃদ্ধা কাঁদতে লাগলেন। তখন রাসূল (সাঃ) সাহাবাদের পাঠিয়ে তাকে বুঝিয়ে বললেন, ”জান্নাতে প্রবেশকারী প্রত্যেক নারী পরিপূর্ণ যুবতী হিসেবেই প্রবেশ করবে।” শামায়েল ই মুহাম্মাদী, অধ্যায়-৩৬, হাদীস নং-২৪০)
৪. আয়িশা (রাযি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ”একদা আমি ও রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কোন এক সফরে ছিলাম। তখন আমি বেশ হালকা গড়নের ছিলাম এবং মোটা হয়ে যাইনি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আশেপাশের সাহাবাদের বললেন, ” তোমরা এগিয়ে যাও, আমরা পরে তোমাদের নাগালে পেয়ে যাবো।” যখন তারা সামনে এগিয়ে গেলেন তখন রাসূল (সাঃ) আমাকে বললেন, ”চল, উটের দৌড় প্রতিযোগীতা করি।” আমরা প্রতিযোগীতা করলাম এবং আমি জিতে গেলাম। রাসূল (সাঃ) এ ব্যাপারে আর কখনো কিছুই বলেন নি। এরই মধ্যে আমিও কিছুটা মোটা হয়ে গেলাম। এমনি ভাবে আরেকটি সফরের সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আশেপাশের সাহাবাদের বললেন, ” তোমরা এগিয়ে যাও, আমরা পরে তোমাদের নাগালে পেয়ে যাবো।” যখন তারা সামনে এগিয়ে গেলেন তখন রাসূল (সাঃ) আমাকে বললেন, ”চল, উটের দৌড় প্রতিযোগীতা করি।” আমরা প্রতিযোগীতা করলাম এবং এবার রাসূল (সাঃ) জিতে গেলেন। তখন তিনি হাসতে হাসতে আমাকে বললেন, ”এবার আমরা সমান হয়েছি।” (সাফওয়াতুস সাফওয়া, খন্ড-১, পৃ: ৬৮)
৫. একদা রাসূল (সাঃ) কোন এক মহিলা সাহাবীকে কৌতুকচ্ছলে বললেন, ”তুমি কি খেয়াল করে দেখেছ যে, তোমার স্বামীর চোখে একটা সাদা দাগ আছে?” কথা শুনে উক্ত সাহাবী খুব মন খারাপ করলেন এবং বাসায় গিয়ে স্বামীকে সব কথা খুলে বললেন। সব শুনে স্বামী বললেন, ”রাসূল (সাঃ) তোমার সাথে কৌতুক করেছে। তুমি কি দেখনা, সবার চোখেই সাদা দাগ থাকে!” (ইবনে কুতাইবি-৪৩৯)
৬. একদা হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন (রাযি.) রাসূলের (সাঃ) পবিত্র কাঁধে চড়ে ঘোড় সাওয়ারীর ছলে খেলা করছিলেন। এমন সময় উমর (রাযি.) সেখানে উপস্থিত হলেন। দৃশ্য দেখে তিনি বললেন, ” তোমরা তো দারুন ভাগ্যবান হে! কি চমৎকার ঘোড়াই না তোমরা সাওয়ারীর জন্য পেয়েছে!!”
রাসূল (সাঃ) উত্তর দিলেন, ”তারা তো ভালো আরোহী বটেই, তাদের বাবা আরো ভালো আরোহী।” (হাইশামি, থন্ড-০৯, পৃ:১৮১-১৮২)
৭. নুয়াইমান (রাযি.) কে রাসূল (সাঃ) খুব ভালোবাসতেন। নুয়াইমান (রাযি.) ইচ্ছা করলেন রাসূলের (সাঃ) জন্য কিছু চমৎকার উপহার নিয়ে যাবেন। একদিন তিনি দেখলেন, মদীনায় এক লোক ভালো মানের মধু নিয়ে এসেছে। তিনি সে মধু রাসূলের (সাঃ) জন্য ক্রয় করলেন, কিন্তু বিক্রেতাকে দাম দিলেন না। অতঃপর মধু নিয়ে রাসূলের (সাঃ) দরবারে এসে মধু দিয়ে বললেন, ”এগুলো আপনার জন্য এনেছি।” রাসূল (সাঃ) খুশি হলেন এবং কিছু মধু পান করলেন। এমতাবস্থায় বিক্রেতা এসে দাম চাইলো এবং নুয়াইম (রাযি.) রাসূলের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ”উনার কাছ থেকে দামটা নিয়ে নিন।” রাসূল (সাঃ) বললেন, ”আমি মনে করেছিলাম তুমি মধুটা আমার জন্য কিনে এনেছ।” তিনি উত্তর দিলেন, ”আমি তো কিনেই আনতে চেয়েছিলাম, আমার কাছে টাকা ছিলো না।” তো আমি আর কি করতাম!” উত্তর শুনে রাসূল (সাঃ) মৃদু হাসলেন এবং মধুর দাম মিটিয়ে দিলেন। (আল ইসতিয়াব, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা: ৪৭৩)
বিষয়: বিবিধ
২৪১৩ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পড়ার জন্য অসংথ্য ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহু খইর।
খুউব খুউব ভালো লাগ্লো । জাজাকাল্লাহ।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)ও হাস্য-রসিকতা করতেন; কিন্তু এর ভিতরে একতিলও মিথ্যে থাকতো না। উল্লেখিত প্রতিটি অংশেই আমরা এই বিষয়টি দেখতে পাই।
তাই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনেও যেন মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সম্পুর্ণ অনুসরণ করতে পারি, আল্লাহ পাক আমাদেরকে সেই তৌফিক দান করুন-আমীন।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি এর বাকী অংশটি এভাবে পড়েছি-মহিলাটি মন খারাপ করল,তারপর যকন বড় সাইজের উট আনা হল,তখন তিনি বললেন-আপনি না বলেছিলেন উটের বাচ্চা দিবেন ! উত্তরে রসূল(সাঃ)বলেন-প্রত্যেক উট তো উটের বাচ্চাই....সোর্স সহি সেটা মনে আছে...
অসাধারণ কিছু হাদীস শোনালেন। জাজাকাল্লাহ
এক সাহাবীর শরীর ছিল বিশাল,এক সপরে রসুল(সাঃ) ছোট সাইজের তাবুর মধ্যে ছিলেন। বাইরে থেকে উক্ত সাহাবী ঢোকার ানুমতি চাইলে তিনি(সাঃ)বলেন-তুমি আসতে পার,তোমার পুরো শরীরসহ...সনদ সহি, কিতাবের কথা মনে নেই...সিহাহহ সত্তিাহ নিশ্চিত
শেষের হাদীসটি জানা ছিলো না। জানানোর জন্য শুকরিয়া।
বারাকাল্লাহু ফিহী
মন্তব্য করতে লগইন করুন