ফিলিস্তিনে নির্মম ও নিশংস্র ইসরাইলি হামলার মৌন প্রতিবাদ-আসুন নিজেদের বাসার ছাদে এবং ফেসবুক/টুইটার/হোয়াটস্এ্যাপ/ব্লগ প্রোফাইলে কালো পতাকা ধারন করি। (আমার ফেসবুক পাতা হতে)
লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ২১ জুলাই, ২০১৪, ০৮:৩০:২৩ রাত
ফিলিস্তিনে চলছে স্মরণকালের অন্যতম নিশংস্র ও নির্মম গনহত্যা। তথাকথিত মানবতাবাদি ও বিশ্বমোড়লরা এই গনহত্যার বিষয়ে কাঁচুমুচু করে মুখ খুলছে না। কিন্তু যারা মুসলমান, যারা মুসলমানদের ভালোবাসেন, যারা মানুষকে ভালোবাসেন তারা ঠিকই এই প্রতিবাদ করছেন নিজের স্থান ও সাধ্য অনুযায়ী। আসুন, এই প্রতিবাদের ভাষাকে আরো একটি স্লোগান দেই।
বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা উপলক্ষে সারা দেশে প্রিয়দলের পতাকা উড়িয়েছেন অনেকেই। এবার আসুন ইসরায়েলি বিমান হামলায় যে শত শত নিরাপরাধ মানুষ মারা যাচ্ছে তাদের স্মরণে অন্তত একটি কালো পতাকা উড়িয়ে দেই। মানুষ দেখুক বাংলাদেশের আকাশে কালো পতাকা উড়ছে ইসরায়েলি বর্বরতা বিরুদ্ধে। মানুষ দেখুক, নির্মম গনহত্যার প্রতিবাদ হচ্ছে তাদেরই আবিস্কৃত সোস্যাল সাইটগুলোতে।
আপনি ঈদ উৎসব করছেন, বাচ্চাদের জন্যে জামা কাপড় কিনছেন, আরো কিনুন, আপনার ঈদ আপনারই থাকবে, শুধু এক খন্ড কালো পতাকা উড়িয়ে সবাইকে জানিয়ে দিন ইসরায়েল যা করছে তা কোনো যুদ্ধ নয়। এটা শুধুমাত্র নির্লজ্জ গণহত্যা, মুসলিম নিপীড়ন।
ইহুদি লেখক নোয়াম চমস্কি পর্যন্ত বলছেন গাজায় ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন হচ্ছে। নিরস্ত্র মানুষকে ঘর থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। বিমান থেকে লিফলেট ফেলা হচ্ছে যাতে লেখা আছে ফিলিস্তিনিরা সরে যাও। ওসব ঘরবাড়িতে অতীতের মত ইহুদীদের বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে ডেকে এনে ঢুকিয়ে দেয়া হবে।
একটি কালো পতাকা আপনার প্রতিবেশির চোখে পড়বে। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লা থেকে মহল্লায় প্রশ্ন সৃষ্টি করবে কেন এই কালো পতাকা। তারা জানেন ইসরায়েলিরা কি করছে গাজায়। যারা জানেন না, টেলিভিশন দেখেন না, পত্রিকা পড়ার সুযোগ পান না তাদের কালো পতাকা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়ে দিন আপনিও মানুষ হত্যার প্রতিবাদ করছেন।
পতাকা ওড়ানোটাতো আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। যেমন দিন কয়েক আগে অনেকেই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্সের পতাকা উড়িয়েছেন। পতাকা আইনে তা নিষিদ্ধ থাকলেও অনেকেই প্রিয় দলের প্রতি আবেগ ও ভালবাসা ওসব দেশের পতাকা উড়াতে বাধ্য করেছে। দেশের কোথাও কোথাও জরিমানা করা হয়েছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পতাকা নামিয়ে ফেলতে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পতাকা ওড়ানোর মধ্যে দোষের কিছু নেই। এমনকি ফাইনাল খেলা শেষ হবার পর মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেসি গোল দিলে ভাল হত। এটা তার ফুটবলের প্রতি অনুরাগেরই বহি:প্রকাশ। এই অনুরাগ, ফুটবলের প্রতি ভালবাসা যদি দোষের কিছু না হয়, তাহলে অসহায় মানুষগুলোর প্রতি সহমর্মিতা কেন দোষের কিছু হবে? যে ফিলিস্তিনিদের মেরে ফেলা হচ্ছে, বোমার আঘাতে তাদের বাড়ি ঘর চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হচ্ছে তাদের প্রতি একটু সহানুভূতি জানানো কি মানুষ হিসেবে আমরা দেখাতে পারি না।
আমরা ভাষার দাবিতে বুকের তাজা রক্ত দিয়েছি। আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস আছে। ফিলিস্তিনিরা সংগ্রাম করছে মানুষ হিসেবে এ পৃথিবীতে টিকে থাকার। আমরা ভাষা দিবসে বুকে কালো ব্যাজ পড়ি। এখন শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে ফিলিস্তিনে, তাদের বিনা দোষে, বিনা কারণে হত্যা করা হচ্ছে, আসুন তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে কালো পতাকা উড়াই।
মসজিদে যে ইমাম মোনাজাত ধরছেন, তিনি যেন ফিলিস্তিনে মানুষের প্রতি ইসরায়েলি বর্বর হামলার বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান। আমরা আমাদের পকেট থেকে দুটো পয়সা খরচ করতে পারব না, কিন্তু একটি কালো পতাকা উড়ালে অন্তত ফিলিস্তিনের মানুষ জানবে এই বাংলায় তাদের প্রতি মানুষ হয়ে মানুষের প্রতি সহানুভূতি ও প্রতিবাদ জানানোর কেউ আছে।
মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো বছরে শত শত বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনছে ইসরায়েলের দোসর, মদদদাতা, পরামর্শদাতা দেশগুলোর কাছ থেকে। কই সে সব অস্ত্র তো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে না একটি ফিলিস্তিনি শিশু রক্ষার জন্যে। মানবতা রক্ষার জন্যে। এই ঈদে মধ্যপ্রাচ্যের রাজা বাদশাহরা, তাদের যুবরাজ ও পত্মীরা উড়োজাহাজে গিয়ে বিলেতের মত বিভিন্ন দেশ থেকে কেনাকাটা সারছেন। তাদের বিমান উড়ে যাওয়ার সময় তারা কি দেখতে পাচ্ছেন গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর সেই জনবসতি থেকে বিষাক্ত ফসফরাসের কালো ধোঁয়া কিভাবে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠছে। আপনি যদি একটি কালো পতাকা তুলতে পারেন তাহলে তা হবে ওই আঘাতের বিরুদ্ধে সবচেয়ে মৌন ও দুর্বল হলেও বিবেকের দ্বার রুদ্ধ না করা অন্তত একটি প্রতিবাদ মাত্র।
আর যারা ভিন্ন ধর্মী বন্ধু আছেন তাদের নিকট অনুরোধ, একটু ভেবে দেখুন, ইসরাইলী বর্বরগুলো যাদের হত্যা করছে, তারা কি শুধুই মুসলমান, তারা কি মানুষ নয়? একটি ফিলিস্তিনি শিশু, হয়তো সে মুসলমান, তার সাথে সাথেই সে মানব শিশু। তার মা তার নাম ধরে ডাকছে। তার নাম ধরে শোকে স্তব্ধ হয়ে কাঁদছে। যেমন ১৯৭১ এ কাঁদতেন যুদ্ধে যাওয়া কোনো মুক্তিবাহিনীর সদস্য ছেলের কোনো মা। তবু তার হাতে অস্ত্র ছিল। ফিলিস্তিনিরা নিরস্ত্র। আমি আপনাকে বলছি না, আপনি মুসলমানদের পক্ষে দাঁড়ান, আমি আপনাকে কড়জোরে অনুরোধ করছি, আপনি মানুষ হয়ে মানুষের পক্ষে দাঁড়ান।
Please, আমার এই Statues-এ কোন Like/Comment-এর দরকার নেই। শুধুমাত্র নিজের বন্ধুদের সাথে Share করুন। আর মানবতার স্বার্থে, মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে আপনার Profile Picture-এ কালো পতাকা ধারণ করুন। বাসার ছাদে উড়িয়ে দিন একখন্ড কালো পতাকা। হয়তো আজকে ফিলিস্তিনের অসহায়, নিরপরাধ মানুষগুলোর জন্য আমাদের এতটুকু সহানুভূতি ও সহমর্মিতা শেষ বিচারের দিনে আমাদের নাজাতের পথ খুলে দিবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫১ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
flag of khilafah
রসুল (সা) বলেন: কিয়ামত কায়িম হবে না যতক্ষন না মুসলমানরা ইহুদিদের সাথে যুদ্ধ করবে। তখন মুসলমানরা ইহুদিদেরকে হত্যা করবে। এমনকি যে কোন ইহুদি কোন গাছ বা পাথরের পেছনে লুকিয়ে থাকলে সে গাছ বা পাথর বলবে: হে মুসলিম! হে আল্লাহর বান্দাহ! এই যে ইহুদি আমার পিছনে লুকিয়ে আছে। আসো তাকে হত্যা করো। কিন্তু গারক্বাদ নামক গাছটি। সে তো তাদেরই গাছ। তাই সে তাদের ব্যাপারে মুসলমানদেরেকে কিছুই বলবে না। (বুখারী, হাদীস নাং-২৯২৬, মুসলিম, হাদীস নং-২৯২২,
==============
প্যালেষ্টাইনকে সাপোর্ট করে পতাকা উড্ডনয় করে কি ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছেন? পারলে নির্যাতীত মুসলিম উম্মাহর জন্য মুসলিমদের ক্বিতালে জন্য উদ্বুদ্ধ করুন। আর এটাই আল্লাহর নিদের্শ। আল্লাহর নির্দেশকে বাদ দিয়ে হাম্বিতাম্বি করে কোন ফায়দা হবে কি?
যেখানে মুসলিম উম্মাহর ফরজ গুলো নিয়েই টানাটানি সেখানে সরাসরি ক্বিতাল!!!!! ভাই, একটু ভেবে দেখুন, আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই, তবে সব সময় আর প্রেক্ষাপটে কি একই ভাবে পালন করতে হবে? মদ তো ইসলাম অনুমোদনই করেনি (যে কারণেই রাসূল সা: কে সযত্নে এর থেকে দূরে রাখা হয়েছে আর পূর্ববর্তী নবী আ. গনকেও ) , কিন্তু বাতিল করে বিধান জারী করলো কখন? হিজরতের ২ বছর পর, অর্থা/ নব্যূয়তের ১২ বছর পর। এটাই ইসলামী সহনশীলতা। যে কোন বিধান কায়েম করতে আগে মানুষকে প্রস্তুত করে তুলতে হয়। এটা সেরকমই একটা উদ্যোগ, আগে মুসলমানরা পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল তো হোক।
যেখানে মুসলিম উম্মাহর ফরজ গুলো নিয়েই টানাটানি সেখানে সরাসরি ক্বিতাল!!!!! ভাই, একটু ভেবে দেখুন, আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই, তবে সব সময় আর প্রেক্ষাপটে কি একই ভাবে পালন করতে হবে? মদ তো ইসলাম অনুমোদনই করেনি (যে কারণেই রাসূল সা: কে সযত্নে এর থেকে দূরে রাখা হয়েছে আর পূর্ববর্তী নবী আ. গনকেও ) , কিন্তু বাতিল করে বিধান জারী করলো কখন? হিজরতের ২ বছর পর, অর্থা/ নব্যূয়তের ১২ বছর পর। এটাই ইসলামী সহনশীলতা। যে কোন বিধান কায়েম করতে আগে মানুষকে প্রস্তুত করে তুলতে হয়। এটা সেরকমই একটা উদ্যোগ, আগে মুসলমানরা পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল তো হোক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন