যেসব নাস্তিকরা বলে কুরআন নাকি মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর তৈরি করা, পারলে ঐ গাধার বাচ্চারা এর উপযুক্ত জবাব দিক...(৩য় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ০৪ মে, ২০১৪, ১১:০৭:৪৭ রাত
প্রথম পর্বটি পড়ৃন এখানে
দ্বিতীয় পর্বটি পড়ৃন এখানে
যে সকল পর্যটক ব্রাজিল ঘুরতে যান, কিছু কিছু স্থান আছে যা তারা কখনো মিস করতে চান না। যেমন ক্রিস্টো রেডেন্টোর (দ্যা স্ট্যাচু অব ক্রাইস্ট), সুগারলোফ মাউন্টেইন, ইগুয়াজু ফলস্, আইপানেমা বিচ, টিযুকা ফরেস্ট ইত্যাদি। এগুলোর সাথে আরো একটি স্থান রয়েছে, যেটি যেমন অসাধারণ সুন্দর, তেমনি প্রাকৃতিক রহস্য মন্ডিত। সেটি হলো আমাজন বনাঞ্চলে অবস্থিত মানাউস।
কি আছে এই মানাউসে? আছে.......এবং সৃষ্টির এক অদ্ভুদ রহস্যই আছে এখানে। এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ব্রাজিলে অন্যতম বৃহৎ দুটি নদী, অনেকটা কালচে রঙের পানি বিশিষ্ট রিও নিগ্রো ও প্রায় বালু রঙ বিশিষ্ট আমাজন (স্থানীয় ভাষায় সোলিমোয়েস)। আর এখানেই দেখা মিলবে পৃথিবীর অনেকগুলো অসাধারন রহস্যের অন্যতম একটি।
এই দুটি নদী যখন মানাউসে এসে পরস্পরের সাথে মিলিত হয়, তখন কিন্তু একটি আরেকটির মধ্যে বিলিন হয়ে যায় না। নিজস্ব রঙ নিয়েই তারা পাশাপাশি কিন্তু পৃথক পৃথক ভাবে বয়ে চলতে থাকে (নিচের ছবিগুলো দেখলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে)। আর এই অসাধারন দৃশ্যটি দেখতে প্রতি বছর হাজারো পর্যটক বিভিন্ন নৌ-যানে চড়ে এই মিলনস্থলে যান।
এমনি দৃশ্য আপনি আরো দেখতে পাবেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়, আলাস্কা উপসাগরে, দক্ষিন নাইজেরিয়া, জিবাল্টায় ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের মিলনস্থল, মিশরে নীল নদ ও ভূমধ্যসাগরের মিলনস্থল সহ পৃথিবীর আরো অনেক স্থানে। এমনকি অনেকের কাছে শুনেছি বাংলাদেশের চাঁদপুর মোহনায়ও এমনি কিছু ঘটে (যেহেতু বিষয়টি আমার স্পষ্টভাবে জানা নেই, তাই জোর দিয়ে বলতে পারছি না।)
(Youtube link অটোমেটিক না দেখা গেলে এই লিঙ্ক গুলোতে দেখে আসুন-
১. https://www.youtube.com/watch?v=rBT9C0wdieI
২. https://www.youtube.com/watch?v=AQ16NM60FsM
৩. https://www.youtube.com/watch?v=fLImr3YGbtA
৪. https://www.youtube.com/watch?v=EbYUJv3iPEQ )
কিন্তু এর কারণ কি? বিজ্ঞানের কাছে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এর কোন উত্তর ছিলো না। পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দির মাঝামাঝি কালে বিজ্ঞানীরা মন্তব্য করেন যে, যেখানে দুটি বিরাট জলরাশী একত্রিত হয়, তারা একে অন্যের সাথে মিশে না। তাদের মতে, এই দুটি পৃথক জলরাশির মাঝে বিরাজ করে একটি অদৃশ্য বাঁধ, যা সৃষ্টি হয় তাদের পৃথক পৃথক তাপমাত্রার কারণে। সমুদ্রবিজ্ঞানীরা পৃথক পৃথক পরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন যে, এমন দুটি পৃথক জলরাশির মাঝে অবস্থান করে একটি বক্র বাঁধ। এই বাঁধটি যেমন পৃথক গুন সম্পন্ন জলরাশিকে পৃথক রাখে, তেমনি এই দুটি জলরাশি মিশ্রণের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সামঞ্জস্যকের ভূমিকাও পালন করে। যখনি একটি অংশের পানি অপর অংশে প্রবেশ করতে চায়, এই বাঁধটি তখন সেই পানিকে তার পূর্বের গুনাগুন পরিত্যাগ করে নতুন গুন গ্রহনে সাহায্য করে। এই ভাবে পৃথক দুটি জলরাশির বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন থাকে।
উপরোক্ত বিষয়টি শুধুমাত্র দুটি মিষ্ট পানির জলরাশির ক্ষেত্রেই ঘটে। লবনাক্ত ও মিষ্ট পানির ক্ষেত্রে ব্যাপারটি ঘটে ভিন্ন ভাবে। যদিও এখানে পৃথক দুটি জলরাশি স্পষ্ট ভাবেই পৃথক ভাবে প্রবাহিত হতে দেখা যায়। সমুদ্রবিজ্ঞানীদের ভাষায়, যেখানে লবনাক্ত ও মিষ্ট পানির জলধারা পাশাপাশি প্রবাহিত হয়, এমন মোহনা সমূহে “pycnocline zone with a marked density discontinuity separating the two layers.” অর্থাৎ এমন একটি জোন যেখানে দুটি স্তরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য একটি তৃতীয় বিচ্ছিন্নকারী স্বকীয় ঘনত্ব বিশিষ্ট স্তরের আবির্ভাব ঘটে। সমুদ্রবিজ্ঞানীরা গবেষনা করে দেখেছেন, লবনাক্ত ও মিষ্ট জলরাশির মধ্যেকার এই অদৃশ্য বাঁধের লবনাক্ততা উভয় জলরাশির তুলনায় ভিন্ন।
অবাক করার মতো বিষয় হলো, আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডোর প্রফেসর, বিশ্বের প্রথম সারির সমুদ্রবিজ্ঞানী ও ভূতাত্ত্বিক, ড. উইলিয়াম হে (Dr. William Hay) এই বিষয়টির বর্ণনা দিতে গিয়ে কুরআনের একটি আয়াত দিয়ে উদাহরণ পেশ করেন-
أَمَّن جَعَلَ الْأَرْضَ قَرَارًا وَجَعَلَ خِلَالَهَا أَنْهَارًا وَجَعَلَ لَهَا رَوَاسِيَ وَجَعَلَ بَيْنَ الْبَحْرَيْنِ حَاجِزًا أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
বল তো কে পৃথিবীকে বাসোপযোগী করেছেন এবং তার মাঝে মাঝে নদ-নদী প্রবাহিত করেছেন এবং তাকে স্থিত রাখার জন্যে পর্বত স্থাপন করেছেন এবং দুই প্রবাহমান জলরাশির মাঝখানে অন্তরায় রেখেছেন। অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বরং তাদের অধিকাংশই জানে না।
Or, Who has made the earth firm to live in; made rivers in its midst; set thereon mountains immovable; and made a separating bar between the two bodies of flowing water? (can there be another) god besides Allah. Nay, most of them know not. (সূরা নমল (২৭); আয়াত-৬১)
এ কোন অবাক কথা রে বাবা! বিজ্ঞানের উদাহরণ টানতে কুরআনের আয়াত! এ কুরআন তো ব্যাকডেটেড, ১৪০০ বছর আগে মুহাম্মাদ নামে এক অক্ষরজ্ঞানহীন আরবীয় বেদুইনের মস্তিস্ক প্রসূত গ্রন্থ (নাউজুবিল্লাহ)। আর উদাহরণ দিলেন বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম খ্যাতনামা একজন অধ্যাপক! এ ব্যাটা কি আবার মৌলবাদি হয়ে গেল নাকি?
না! বরং সে একজন নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে সত্যকে সত্য হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে। আসলেই আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে কুরআন ঘোষণা করেছে, পাশাপাশি প্রবাহমান পৃথক দুটি জলরাশির মধ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে এক অদৃশ্য বাঁধ। যার ফলে সেই দুটি জলরাশি পরস্পরকে অতিক্রম করতে পারবে না-
مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ يَلْتَقِيَانِ
بَيْنَهُمَا بَرْزَخٌ لَّا يَبْغِيَانِ
তিনি পাশাপাশি দুই দরিয়া প্রবাহিত করেছেন।
উভয়ের মাঝখানে রয়েছে এক অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না।
He has let free the two bodies of flowing water, meeting together:
Between them is a Barrier which they do not transgress (সূরা আর রহমান (৫৫), আয়াত: ১৯-২০)
এরপরও যে সকল কুপমুন্ডল, কপালপোড়া মূর্খের দলদের কুরআনের ঐশি বাণী হওয়া নিয়ে বিন্দুমাত্র দ্বিধা, সংশয় অথবা আপত্তি আছে, তারা পারলে এর বিপরীতে কোন যুক্তি, ব্যাখ্যা দেখাক।
বিষয়: বিবিধ
১৭০৯ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এ দৃশ্য আমাদের পদ্মা-মেঘনার সঙ্গমস্থল ভ্রমন করলেই দেখা যায়। বহুদুর বিস্তৃত সমতল থেকে গড়িয়ে আসা পদ্মার পলিবাহিত ঘোলাপানি সাথে আসামের পাহাড়ী অঞ্চলের স্বল্প বিস্তৃত ঝরণার সচ্চ পানির মেঘনার মিলন স্থানে ঘোলা-সচ্ছ পানির একটি লেয়ার চোখে পরে। এই কুদরী কোরান পয়দা হওয়ার শত বছর আগে পদ্মা-মেঘনার নৌকার মাঝিদের ভালকরেই জানা ছিল।
এত কিছুই যখন জানতেন, আপনাদের বাপ-দাদারা কুরআনের আগে এগুলো আবিস্কার করতে পারলো না কেন? ওহ, ভূলেই গিযেছিলাম; তারা তো তখন কিভাবে সম্মুখ আর পশ্চাৎদেশের পাতা কিভাবে শক্ত করে বাঁধতে হয আর মানব বর্জ্য কি আদৌ খাদ্য হিসেবে গ্রহন করা যায কিনা তা আবিস্কারে ব্যস্ত। আর আপনার মতো ব্যক্তিরা এখন ব্যস্ত কিভাবে ঠাকুরদের তলদেশ লেহন করে দালালীর পর্যায়টা আরেকটু বাড়িযে নেযা যায় সে চেষ্ঠায়। আবিস্কারের সময় কই!
এ দৃশ্য আমাদের পদ্মা-মেঘনার সঙ্গমস্থল ভ্রমন করলেই দেখা যায়। বহুদুর বিস্তৃত সমতল থেকে গড়িয়ে আসা পদ্মার পলিবাহিত ঘোলাপানি সাথে আসামের পাহাড়ী অঞ্চলের স্বল্প বিস্তৃত ঝরণার সচ্চ পানির মেঘনার মিলন স্থানে ঘোলা-সচ্ছ পানির একটি লেয়ার চোখে পরে। এই কুদরী কোরান পয়দা হওয়ার শত বছর আগে পদ্মা-মেঘনার নৌকার মাঝিদের ভালকরেই জানা ছিল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন