সরকারের সংবিধান, আমরা 'সং' বিধান

লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ২৮ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:৪৮:৫৬ রাত



আজব এক দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। এই দেশে ন্যায়ের কথা ও আইনের কথা বলতে বলতে নেতারা নাভিশ্বাস তুলে ফেলেন, কিন্তু কর্মকান্ডে তার বিন্দুমাত্র প্রতিফলন হয় না। এই দেশে কথায় কথায় সংবিধান, সংবিধানের পবিত্রতা, সংবিধানের মান্যতার কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে সরকার, কিন্তু কাজে শুধু সেগুলোই করে যেগুলো নিজের স্বার্থের সাথে জড়িত।

আজ থেকে ১ বছর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ২টি ঘটনা ঘটে গিয়েছিলো। ১. যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসীর দাবি নিয়ে শাহবাগের আন্দোলন, ২. ইসলামের অবমাননাকারী অনলাইন এক্টিভিস্ট ও ব্লগারদের ফাঁসি দাবি করে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন। কার প্রতি কার কেমন আচরন ছিলো তা নাহয় আর আলোচনা নাই করলাম। আমি যে দিকটাতে আলোকপাত করতে চাই তা হলো-

অনিয়ম, আইন ভঙ্গ, সন্ত্রাসবাদ, সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র ইত্যাদি হাজারো অভিযোগ তুলে হেফাজতের কর্মীদের এক রাতের সময়ও না দিয়ে গায়ের জোরে তাড়িয়ে দেয়া হলো শাপলা চত্বর থেকে। কিন্তু তারা যে দাবি নিয়ে এসেছিলো, সে দাবি গুলো কি একেবারেই ভিত্তিহীন ছিলো?

এদেশে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কেউ কোন বাজে উক্তি করলে ঠেঙিয়ে তার চৌদ্দগুষ্টি সহ উদ্ধার করে দেয়া হয়। অথচ যারা অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে ইসলাম, রাসূল (সাঃ) সহ অন্যান্য ধর্মের বিরুদ্ধে চরম অশালীন, কুরুচীপূর্ণ, আক্রমনাত্মক মন্তব্যের জোয়ার ভাসিয়ে দিচ্ছে, তাদের কি করা হচ্ছে? কিছুই না। তারা এখনো সক্রিয়। বিশ্বাস না হলে নিজের চোখে দেখে আসুন।

http://www.dhormockery.com/

২০১৩ সালের মার্চের দিকে এমন কতিপয় সাইট ও এক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে রিট দায়ের করেছিলেন আমাদের ইংরেজী বিভাগের সহ: অধ্যাপিকা বাতুল সারওয়ার সহ সমাজের প্রতিষ্ঠিত কয়েকজন বুদ্ধিজীবি ও শিক্ষাবিদ। আদালত তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সকল সাইট পরিদর্শন করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয় বিটিসিএলকে। কিন্তু কোথায় কি! আরো হাজারো মামলার মতো এটিকেও বস্তায় বন্দি করে বুড়িগঙ্গার তুলে হেফাচতে রাখা হলো।

বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনা পরিচ্ছেদের ৩য় ভাগের ৩৯ এর ২ (ক) ধারা অনুসারে:

”রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বাথে কিংবা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনের প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ সাপেক্ষে

(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং

(খ) সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতার

নিশ্চয়তা দান করা হইলো।

এখন, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা কি সরকারের নিকট দাবী করতে পারি না, এদেশের ৯৯.৯০ মানুষ ধার্মীক, সংবিধান অনুযায়ী আমাদের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। একই সংবিধান অনুযায়ী তাদের কোন অধিকার নেই আমাদের ধর্ম সম্পর্কে কুমন্তব্য করার। হয় তাদের এই কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে অথবা আইন অনুযায়ী শাস্তি দিতে হবে।

আসুন, আমরা সম্মিলিত ভাবে আমাদের এই দাবি তুলে ধরি। অন্যথায় আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে এমন এক দানবের সামনে গিয়ে পড়বে, যে তাদেরকে শিক্ষা দিবে ধর্ম ও নৈতিকতা বিরোধী চরিত্র গঠনের। ফলে আমাদের অবস্থা হয়তো হবে জাপানের মতো, যেখানে সন্তান বৃদ্ধ বাবা-মাকে জঙ্গলে ছেড়ে আসে, যাতে বন্য পশু তাদের খেয়ে ফেলতে পারে।

বিষয়: বিবিধ

১৮৯২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

214580
২৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:১৫
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : ফলে আমাদের অবস্থা হয়তো হবে জাপানের মতো

জাপান হওয়ার সৌভাগ্য হলে আল্লাপূজারীদের কপাল খুলে জেত....
২৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪১
162859
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : জাপান এমন কী বালটা ফালাইছে যে জাপান হওয়া লাগবে? বাবা-মাকে ক্ষুধার্থ বন্য প্রাণীর সামনে দিয়ে আসা অকৃতজ্ঞ-দালাল নাস্তিকদের দ্বারাই সম্ভব।
২৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৭
162861
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : জাপানার জৌলস দেখে হতভাগা মোহাম্মদপূজারী মুমিনের হিংশা লাগে নাকি? Rolling on the Floor Rolling on the Floor
২৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:১১
162876
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : এমন জৌলুস আমাদের দরকার নেই, আজ পর্যন্ত কোন মুসলমান ঐ শালা জাপানীদের ফলো করতে চেয়েছে? কী এমন করেছে ঐ শালারা? হঠাৎ ভাগ্য ফকিরেরও খোলে, কোন কোন দিন ৫০০ টাকার নোটও ভিক্ষায় পেয়ে যায়। জাপানের অবস্থাও তাই, এখন তো পতন মাত্র শুরু।
আর মুসলমানরা সেই জাত, যারা ৮০০বছর স্পেনে রাজত্ব করেছে। মন্দ দিন সবার আসে, তবে মুসলমানদের দিন এতোও খারাপ আসেনি যে, ঐ সব নাস্তিকদের ফলো করতে হবে। যারা জাপানের জৌলুস দেখে পাগলপারা, তারা চলে যাক জাপানে।
২৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:১৫
162878
খেলাঘর বাধঁতে এসেছি লিখেছেন : আঙ্গুর ফল টক............
২৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
163158
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : এগুলো কুপমুন্ডকের খোঁড়া যুক্তি। প্রকৃতপক্ষে শেয়াল কখনো আঙুর খায় না।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File