যেমনটি করবে তেমনটিই আশা করো....
লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ২৫ এপ্রিল, ২০১৪, ০৭:৫২:১৩ সন্ধ্যা
শিপু সাহেব একজন চাকুরিজীবি। আর্থিক দিক থেকে মোটামুটি স্বচ্ছল। বাস করেন ঢাকা শহরে। বাড়িতে থাকেন স্ত্রী, ৪ বছরের ছেলে ও মায়ের সাথে। তার মায়ের বেশ বয়স হয়েছে, ঠিকমত চোখে দেখেন না, হাত-পায়ে শক্তিও নেই। প্রায়ই এটা ওটা হাত থেকে ফেলে দেন। সেদিন খেতে বসে তার হাত ফসকে কাঁচের দামি গ্লাসটা পড়ে ভেঙ্গে গেল। শিপু সাহেবের স্ত্রী রাগে গজগজ করতে লাগলেন। পরদিন শিপু সাহেব বাজার থেকে মায়ের জন্য কাঠের প্লেট, গ্লাস নিয়ে আসলেন; এবার আর পড়ে ভাঙবে না- স্ত্রীরও মন খারাপ হবে না।
কয়েক দিন পর। রাতে খেতে বসেছেন। মা পানি নিতে হাত বাড়াতে গিয়ে অসাবধানতা বসত তরকারির বাটিতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন। বাটি ভেঙ্গে গেল, তরকারি টেবিলে পড়ে দাবি টেবিল আর টেবিলের উপরের দামি কাপড়ে দাগ লেগে গেল। কিছু তরকারি ছিটকে পড়লো শিপু সাহেবের স্ত্রীর দামি নাইট গাউনের উপর। স্ত্রী মুখে কিছু বললেন না, খাবার টেবিল থেকে উঠে গেলের ঝাড়া দিয়ে, সারা রাত শিপু সাহেবের সাথে না বললেন কথা, না তার কোন কথার উত্তর দিলেন।
পরদিন শিপু সাহেব মায়ের জন্য সিঙ্গেল টেবিল আর চেয়ার নিয়ে আসেন। মা এখন নিজের আলাদা টেবিলে বসে নিজের কাঠের প্লেট আর গ্লাসে খাওয়া দাওয়া করেন। মায়ের এখন ভাতে আলাদা লবন নিতে হয় না, চোখের নোনতা জল পড়ে তার প্রতিটি লোকমায় বাড়তি নোনতা স্বাদ আনে।
এর কয়েক দিন পর, ছুটির দিন। বাজার থেকে ফিরে এসে শিপু সাহেব দেখলেন তার ৪ বছরের ছেলে কতগুলো কাঠের টুকরো আর হাতুড়ি নিয়ে কী যেন করছে। মুচকি হাসলেন শিপু সাহেব। ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ”কী করছো বাবা?” ছেলে উত্তর দিলো, ”চেয়ার, টেবিল, আর প্লেট বানাবো।” শিপু সাহেব একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কেন? এগুলো কার জন্য?” ছেলে উত্তর দিলো, “তোমার আর আম্মুর জন্য। তোমরা বুড়ো হলে তোমাদেরও তো দাদুর মতো আলাদা টেবিল চেয়ার আর কাঠের প্লেট দিতে হবে না।”
শিপু সাহেবে চেহার অভিব্যক্তিটা আর লক্ষ্য করতে পারা যায় নি।
(সংগৃহিত)
বিষয়: Contest_father
১৩১৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আহা কি বাঁশটা দিলো
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন