তথাকথিত মুসলমান 'হেযবুত তাওহিদ' বরাবর আমার কিছু প্রশ্ন
লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ০৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৪৯:৪৩ রাত
প্রথমেই কিছু পুরানো কাসুন্দি ঘাঁটি। দিন তারিখ ঠিক মনে নেই, আমার এক বন্ধু হঠাৎ অসময়ে আমার বাসায় এসে হাজির। আমার রুমে ঢুকেই হাতের বইটি আমার সামনে ধরে বললো, দোস্ত এ্ই বইটা পড়সো? দেখলাম তার হাতের বইটি "দাজ্জাল-ইহুদি খ্রিষ্টান সভ্যতা" শিরোনামে, লেখক মোহাম্মদ বায়েজীদ খান পন্নী। নামের আকর্ষনে ওর কাছ থেকে বইটি নিয়ে পড়লাম। এবং...................যা বুঝলাম- তা আজও কেউ আমাকে বুঝাতে পারলো না।
এর বেশকিছুদিন পরের ঘটনা। একদিন দুপুরে বাসার কলিং বেল বাজলো, আমার ছোট ভাই দৌড়ে দরজা খুলে আবার ফিরে এসে বললো একটা বোরকা পড়া মহিলা বই বিক্রি করতে আসছে। আমরা সবই কিছুক্ষন অবাক চেয়ে রইলাম, তারপর আম্মু গিয়ে দেখলো, এক মহিলা কিছু বই বিক্রি করতে এসেছে। আম্মু কিছু না বুঝতে (সম্ভবত ভয়ে) মানা করে আসলো। আমি জিজ্ঞাস করায় বললো, হেযবুত তাওহীদ না কি কোন এক দলের কিছু বই নিয়ে এসেছে (বলা বাহুল্য আ্ম্মু এদের ব্যাপারে কিছুই জানতো না)।
আবার বিগত কিছুতদন ধরে (খুব সম্ভব ২/৩ মাস বা কমবেশী) আমাদের অফিসের পাশের যে দোকানে বসে আমরা চা খাই সেখানে এক মহিলা রোজ পত্রিকা বিক্রি করতে আসে, তার হাতের বান্ডিলে শুধু একটাই পত্রিকা "দেশের পত্র"।
এই হলো 'হেযবুত তাওহিদের' সাথে আমার পরিচয়ের মাধ্যম। এখন তাদের সম্পর্কে আমার ধারনা, মতামত, মন্তব্য এগুলো দিয়ে আর না ঘোলা করে তাদের কাছে আমার কিছু প্রশ্ন আছে যা সরাসরি করতে চাই। ইদানিং টুমোরো-তে তাদের খুব আনাগোনা, তাও আবার জ্ঞানগর্ভ (!) পোস্ট প্রতিদিন, চলমান ধর্মীয় রীতিনীতি নিয়ে অসাধারন (!) সমালোচনা, তাই ভাবলাম এখানে তাদের যে বিজ্ঞ লেখকরা আছেন, তারা খুব সহজেই আমার এই প্রশ্নগুলোর সুরাহা করবেন- তাই এখানেই প্রশ্নগুলো ঢাললাম:
(১) 'হেযবুত তাওহীদ'-এর নেতা বায়েজীদ খান পন্নীর মতে, হাদীস শরীফে দাজ্জাল রূপক অর্থে -ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর স্বপক্ষে তিনি বেশ কিছু যুক্তি(!)ও দাঁড় করিয়েছেন। আমার প্রশ্ন দাজ্জাল যদি আসলেই ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতা হয়ে থাকে, তাহলে হাদীসে উল্লেখ আছে "দাজ্জাল মক্কা ও মদীনা এই দুই পবিত্র শহরে প্রবেশ করতে পারবে না"(সহীহ বুখারী, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদি) এর দ্বারা কী বুঝা যায়? এটা সকলেই জানে এই দুইটি শহরই আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি দ্বারা সজ্জিত এবং বলাবাহুল্য এগুলোর বেশিরভাগই ঐসব ইহুদি-খ্রিস্টানদের বানানোই। এখন, আপনারা বলুন রাসূল (সা-এর হাদীসটি কি মিথ্যা নাকি আপনাদের নেতার বানানো যুক্তিগুলো?
(২) হাদীসে উল্লেখ আছে, ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ যুদ্ধের ময়দান থেকে দাজ্জালকে ধাওয়া করবেন এবং 'লুদ' নামক শহরের ফটকের সামনে তাকে হত্যা করবেন। (সহীহ মুসলিম, তিরমিজি)। এখন প্রশ্ন হলো, দাজ্জাল যদি তথাকথিত যান্ত্রিক সভ্যতা হয়, তাহলে একজন ব্যক্তি কিভাবে একটা নির্দিষ্ট স্থানে তাকে হত্যা করবে?
(৩) হাদীসে উল্লেখ আছে, 'দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না, কিন্তু তার প্রভাবে মদীনায় ভূমিকম্প হবে। মদীনার অধিবাসীরা ভয়ে শহর থেকে বের হয়ে আসবে। তখন মদীনার এক বুযুর্গের সাথে দাজ্জালের তর্ক-বিতর্ক হবে। দাজ্জাল তার সাথে যুক্তিতে না পেরে তাকে হত্যা করবে এবং পুনরায় জীবিত করে জিজ্ঞেস করবে, এখন মানো যে আমি খোদা? তখন ঐ বুযুর্গ বলবে, এখন আমার আরো দৃঢ় বিশ্বাস হয়ে গেছে যে তুই অভিশপ্ত দাজ্জাল। তখন দাজ্জাল তাকে পুনরায় মেরে ফেলতে চাইবে, কিন্তু পারবে না।' এখন, যদি দাজ্জাল আধুনিক সভ্যতা হয়ে থাকে তাহলে এই হাদীসটি কিভাবে ব্যাখ্যা সম্ভব?
(৪) বায়েজীদ পন্নী বলে থাকেন, ইসলাম নামক ঘরের ছাদ হলো জিহাদ। আমার প্রশ্ন আপনারা এমন কি গায়েবী জিহাদ করে থাকেন যা আজ পর্যন্ত কারো চোখে পড়লো না?
(৫) মহিলাদের দ্বারা বই, পত্রিকা বিক্রি করানো, লিফলেট বিতরন ইত্যাদি কি জায়েজ?
আশা করি হেযবুত তাওহীদের জ্ঞানী ব্যক্তিগন আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে কৃতার্থ করবেন।
বিষয়: বিবিধ
৪৫৭৬ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
২. পন্নির মতে রাসূল (স.) এর ইন্তেকালের ৭০ বছর পরই মুসলিম জাতি বিলীন হয়ে যায়। এর পরবর্তী তেরশত বছর যাবত যত মুহাদ্দীস, মুফাস্সির, মুজতাহিদ, ইমাম ইসলামের খেদমত করেছেন তাদের ৯৯% ই ভন্ড, ধর্ম ব্যাবসায়ী, মুশরিক (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)।
৩. তারা পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েনা, এবং আমাদের মত নামাজও পড়েনা, এক ভিন্ন রীতিতে নামাজ পড়ে, কারন তাদের বিশ্বাস নামাজ দেয়া হয়েছে একমাত্র সামরিক প্রশিক্ষণ এর জন্যই, এ জন্য তারা সেভাবেই নামাজ পড়ে যেভাবে পড়লে একজন সৈন্যের যুদ্ধের ট্রেনিং হয়ে থাকে, তাই তারা আমাদের মসজিদগুলোতে জামাতে উপস্থিত হয় না।
৪. তাদের মতে রাসূল (স.) এর ইন্তিকালের পর যেসকল মুসলিমগণ সশস্ত্র জিহাদ চালিয়ে আসতেছেন একমাত্র তারাই মুসলিম আর বাকী সবাই গনতন্ত্র বা রাজতন্ত্র বা বাদশাহীকে মেনে নিয়ে মুশরিক হয়ে গিয়েছে।
৫. তাদের এমাম পন্নির সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ঘটনাকে তারা মুজিযা হিসেবে প্রচার করে থাকে, অথচ মুজিযা কেবল মাত্র নবীদের সাথেই সংশ্লিষ্ট।
৬. পন্নি তার বই এর একজায়গায় লিখেছে তসবিহ এসেছে মূলত হিন্দুদের জপমালা থেকে তাই মুসলিমদের এটা বর্জন করা উচিত, অথচ তার মৃত্যুর ঘটানায় তারা বর্ণনা করে থাকে মৃত্যুর সময় সে তসবিহ জপতে ছিল!
৭. পন্নির লিখিত বই এ এসলাম এসলামই নয় তে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছে রাসূল (স.) এর ইন্তিকালের ৭০ বছর পর আসল ইসলাম বিলীন হয়ে গিয়েছে, আর এ বই ই তাদের সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি বা দলিল। পন্নি নিজেই সে বই এর শেষে উল্লেখ করেছে আমি এ বইতে যা প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছি তা প্রচারের জন্যই হেযবুত তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করলাম। (উল্লেখ্য তিনি ছিলেন একজন হোমিও প্যাথিক ডাক্তার, তবে তিনি মাওলানা মওদূদী (র.) এরও ছাত্র ছিলেন।)
৮. আপনার প্রথম প্রশ্নের জবাবে তারা বলে থাকে দাজ্জাল দ্বারা ইহুদী-খৃষ্টান সভ্যতা এবং তাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রকেও বুঝানো হয়েছে, আর গণতন্ত্র মদীনায় প্রবেশ করতে পারবেনা। এবার দেখা যাক তারা কি উত্তর দেয়।
আল্লাহর এই জমিনে কত বিচিত্র কিছিমের ই না মুসলিম আছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি ওনার বইটি পড়ে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার হয়েছিলাম - কিন্তু বইটির লিখক ও ওনার সংগঠনের আকিদা - বিশ্বাসের বিস্তৃতি দেখে সত্যিই অবাক হলাম।
আরো অবাক হবেন যদি পন্নীর অন্যান্য রচনা ও ওদের প্রকাশিত পত্রিকার বিশেষ কলামগুলো দেখেন। ওরা মনে করে, ইসলামের ১৫০০ বছরের ইতিহাসে শুধু ওনারাই দ্বীন বুঝতে পেরেছেন, আর নামজাদা মুজতাহিত, মুহাক্কিক, মুহাদ্দিস ও উলামায়ে হক্ব সবাই আঙুল চুষেছেন।
এখানে আপনি ৫ টি প্রশ্ন করেছেন যার প্রথম তিনটি প্রশ্নের উত্তর দাজ্জাল? ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতা ! নামক বইটিতেই বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা আছে যে বইটি আপনি ইতোমধ্যেই পড়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। কাজেই ঐ তিনটি প্রশ্নের উত্তর নতুন করে দেওয়ার কোন প্রয়োজনবোধ করছি না তাছাড়া তার সামর্থও আমার নেই, কারণ যিনি দাজ্জালকে চিহ্নিত করে বই লিখেছেন তাঁর লেখা বই থেকেই যখন আপনি এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পান নি তখন এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো সাধ্য আর কারো আছে বলে মনে হয় না।
কাজেই এখানে আমি সংক্ষেপে ৪ ও ৫ নং প্রশ্নের উত্তর পেতে সাহায্য করছি।
৪: আপনাকে আগে জানতে হবে জেহাদ মানে কী? জেহাদ মানে হলো- দীন প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক সংগ্রাম (হতে পারে সেটা মুখে বলে, যুক্তি-তর্ক করে বুঝিয়ে, বই লিখে, পত্রিকার মাধ্যমে, ডকুমেণ্টারী সিডির মাধ্যমে, টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে এবং সর্বশেষ ও চূড়ান্তভাবে সশস্ত্র যুদ্ধ করে)। তবে এর মধ্যে যেটা সশস্ত্রভাবে যুদ্ধ করা সেটাকে বলা হয় কেতাল যদিও তা জেহাদেরই একটা পর্যায়। রসুলাল্লাহর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবেন- তিনি মক্কার জীবনে কেতাল করেন নি, কেতাল ছাড়া জেহাদের যতরকম সুযোগ ছিলো তা তিনি করেছেন। এটা করতে গিয়ে তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদেরকে অমানবিক অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে, বন্দী জীবন কাটাতে হয়েছে, এমনকি তাঁর একাধিক সঙ্গীকে জীবন পর্যন্ত হারাতে হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ১৩ বছরের মক্কী জীবনে তিনি একটিবারের জন্যও অস্ত্র হাতে নেন নি, সেটাকে তিনি বৈধ মনে করেন নি যার অর্থই হলো আল্লাহ মক্কী জীবনে কেতালের অনুমোদন দেন নি।
অত:পর যখন তিনি ও তাঁর অনুসারীদের কথা মদীনার মানুষ শুনলো, তারা আল্লাহর পাঠানো হেদায়াহকে গ্রহণ করে নিলো তখন আল্লাহর রসুল তাঁর অনুসারীদের নিয়ে মদীনায় হেযরত করলেন। প্রতিষ্ঠা হলো একটি সার্বভৌম ইসলামী রাষ্ট্র, যে রাষ্ট্রের মূলনীতি বা ভিত্তি ছিল তওহীদ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহ ছাড়া কোন হুকুমদাতা নেই অর্থাৎ আল্লাহর সার্বভৌমত্ব। এর পর আসলো কেতালের বিধান। রসুলাল্লাহ ও তাঁর অনুসারী উম্মতে মোহাম্মদীর সশস্ত্র সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস শুরু হলো তখন থেকে।
এভাবেই আল্লাহ তাঁর প্রেরিত শেষ নবীকে দিয়ে আমাদের কর্মপন্থা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে- ব্যক্তিগত বা দলগত বা সাংগঠনিক পর্যায়ে থেকে অস্ত্র হাতে নেওয়া রসুলাল্লাহর সুন্নাহ পরিপন্থী, এটা আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন।
হেযবুত তওহীদ রসুলাল্লাহর প্রকৃত সুন্নাহ অনুসরণ করছে। যে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব আজ মানবজাতির মধ্যে থেকে হারিয়ে গেছে সেই আল্লাহর সার্বভৌমত্ব বা তওহীদকে মেনে নেওয়ার জন্য আহ্বান করছে হেযবুত তওহীদ। বই লিখে, বই বিক্রি করে, সিডি বিক্রি করে, তওহীদের ডাক সম্বলিত পত্রিকা বিক্রি করে, হকারি করে, হ্যাণ্ডবিল বিলি করে, টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইত্যাদি সর্ব উপায়ে হেযবুত তওহীদ চেষ্টা করে যাচ্ছে এই জাতিকে প্রকৃত তওহীদে ফিরিয়ে নেবার জন্য। এটা কী রসুলাল্লাহর মক্কী জীবনের জেহাদের সাথে মিলে না? এর চেয়ে বেশি আমরা কী করতে পারি? রসুলাল্লাহ ও তাঁর অনুসারীদের যেমন তওহীদের ডাক দেওয়ার অপরাধে হত্যা-নির্যাতন করা হয়েছিল আজ গত দীর্ঘ ১৮ বছর আমাদের উপরও নির্যাতন চালানো হয়েছে, ৫ শতাধিক মামলা করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা পুরোহীতরা ১৪০০ বছর আগের ঐ ধর্মব্যবসায়ী আবু জাহেল, ওতবা,আবু লাহাবদের মত আমাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে উস্কে দিয়ে আমাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করেছে। মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে সাধারণ মানুষকে দিয়ে আমাদের একাধিক ভাই-বোনকে হত্যা করিয়েছে।
কিন্তু আমরা একমুহূর্তের জন্যও পিছু হটিনি। আমাদের কাজ আমরা চালিয়ে গেছি। এটাই আমাদের জেহাদ,দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আমরা কোন অবৈধ অস্ত্রের সংস্পর্ষে যাই না, ভবিষ্যতেও যাব না কারণ সেটা আমাদের ইমামের নিষেধ।
আপনি বলেছেন আমাদের এই জেহাদ কারো চোখে পড়ে না আবার এটাও দেখেছেন যে- আমাদের ভাই বোনেরা দাজ্জাল বই বিক্রি করছে, পত্রিকা বিক্রি করছে যা স্ববিরোধী কথা। আমরা জেহাদ করছি, করেই যাব। সম্পূর্ণ আইন-শৃঙ্খলার মধ্যে থেকেই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে তওহীদের আহ্বান মানবজাতির সামনে তুলে ধরছি, মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি আপনার ৪ নং প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
এবারে আসি ৫ নং প্রশ্নের ব্যাপারে। প্রশ্নটি নিতান্তই একটি অমূলক প্রশ্ন। ইসলামের ইতিহাস যদি আপনি জেনে থাকেন তাহলে এটা নিশ্চয় জানেন যে- ইসলামের অগ্রযাত্রায় নারীদের অবদান কত গুরুত্বপূর্ণ।
হেযবুত তওহীদের মেয়েরা আন্দোলনের সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এমামুয্যামান সব সময় চেষ্টা কোরেছেন পুরুষদের পাশাপাশি যেন মেয়েরাও অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। তারা মহানবীর সঙ্গে থেকে সেই বিস্ময়কর বিপ্লব সম্পাদনে যে ভূমিকা রেখেছেন তা এমামুয্যামান হেযবুত তওহীদের মোজাহেদাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি আল্লাহ-রসুলের জীবন থেকে দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে তাঁর নারী সাহাবীরা পুরুষ সাহাবীদের সঙ্গে থেকে যুদ্ধ কোরেছেন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যাবলীতে সমানতালে অংশগ্রহণ কোরেছেন। মসজিদে নববীর এক পাশে তৈরি করা হোয়েছিল যুদ্ধাহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা। এই বিশেষ চিকিৎসা ইউনিটে অধ্যক্ষ ছিলেন একজন নারী। অথচ আজ বিকৃত অতি পরহেজগার নারীদের এই ব্যাপারে কোন ধারণাই নেই। বর্তমান ইসলামে যে নারী যত আপাদমস্তক কালো কাপড়ে ঢেকে গৃহ-অভ্যন্তরে অবস্থান কোরবেন তিনি তত বড় পরহেজগার। হেযবুত তওহীদের বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে সমস্ত রান্না মেয়েরাই কোরে থাকে। কেউ অসুস্থ হোলে তার চিকিৎসা, সেবাপ্রদান ইত্যাদি কাজে মেয়েরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
হেযবুত তওহীদের মেয়েরা শহরে এবং প্রত্যন্ত এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষকে তওহীদের বালাগ দিয়েছেন। মেলায়, মার্কেটে গিয়ে বই বিক্রী কোরেছেন, হ্যান্ডবিল বিতরণ কোরেছেন। তওহীদের বালাগ দিতে গিয়ে পুরুষদের সাথে অনেক মেয়েও হাসিমুখে জেল, জুলুম, ধর্মব্যবসায়ী আলেম ওলামাদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য কোরেছে, ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হোয়েছে, নিজের ঘরবাড়ি ও পরিবার থেকে বহিষ্কৃত হোয়েছে। অনেকে স্বামী, সন্তান, সংসার পর্যন্ত ত্যাগ কোরতে বাধ্য হোয়েছেন যেটা মহানবীর অনেক নারী সাহাবীর ক্ষেত্রেও হোয়েছিল। মানবজাতির কল্যাণের জন্য, মানবজীবনে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা কোরে সুবিচার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের আরাম-আয়েশ ও বিলাসিতার জীবন ত্যাগ কোরে অনেক মেয়ে কঠিন সংগ্রামের কণ্টকাকীর্ণ পথ বরণ কোরে নিয়েছে।
বর্তমানে বিকৃত পর্দাপ্রথার অজুহাতে আলেম-মোল্লারা মেয়েদেরকে গৃহকোণে বন্দী কোরে রাখতে চায়। তারা যে পদ্ধতিতে বোরকা দিয়ে মেয়েদেরকে মুড়ে রাখতে চায় তা আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী বৈধ নয়। সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, মো’মেন নারীগণ যেন তাদের শরীরের সাধারণ প্রকাশমান অংশ ব্যতীত তাদের আভরণ বাইরে প্রকাশ না করে এবং তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ কাপড় দ্বারা আবৃত করে। সাধারণতঃ প্রকাশমান বোলতে এখানে হাত, মুখমণ্ডল, পায়ের গোড়ালী ইত্যাদি বোঝানো হোয়েছে। তাই এমামুয্যামান হেযবুত তওহীদের মোজাহেদাদেরকে এভাবেই হেজাব কোরতে নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক হেযবুত তওহীদের সকল মেয়েরাই আন্দোলনের কাজে বা ব্যক্তিগত কাজে বাইরে গেলে আল্লাহর নির্দেশিত পদ্ধতিতে হেজাব করার চেষ্টা করে। মুখমণ্ডল ঢেকে রাখলে মানুষকে চেনার উপায় থাকে না, তাই আল্লাহর নির্দেশমত না কোরে বাড়িয়ে বা কমিয়ে হেজাব করা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করা।
নারীরা মহানবীর সামনা সামনি বোসে আলোচনা শুনতেন, শিক্ষা গ্রহণ কোরতেন, মহানবীকে প্রশ্ন কোরে জরুরী বিষয় জেনে নিতেন, অনেক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরামর্শও দিতেন। এ সময় মহানবী ও মেয়েদের মাঝে কোনো কাপড় টাঙ্গানো ছিল এই ব্যাপারে কেউ কোনো দলিল দেখাতে পারবে না। নারীরা মসজিদের পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে, জুমা’র সালাতে, দুই ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ কোরতেন। তারা পুরুষের সঙ্গেই হজ্ব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ কোরতেন, যেটা এখনও চালু আছে; তারা কৃষিকাজে, শিল্পকার্যে, ব্যবসা-বাণিজ্যে অংশগ্রহণ কোরেছেন। এ সমস্ত কাজ তারা এসলামের নির্দেশিত হেজাবের সাথেই কোরতেন। তেমনি হেযবুত তওহীদের মেয়েরাও পুরুষদের সঙ্গে একত্রে এমামুয্যামানের আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন, সালাহ কায়েম কোরেছেন। কখনও কখনও শুধু মেয়েদেরকে নিয়েও এমামুয্যামান আলোচনা কোরেছেন, সেখানে মেয়েরা তাদের পারিবারিক নানা সমস্যার বিষয়ের সমাধান এমামের কাছ থেকে শুনেছেন, নিজেদের দীন সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের উত্তর জেনে নিয়েছেন। এ কথা ভুললে চোলবে না যে, জাতির প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। একজন মানুষের একটি পা কেটে ফেলে দিলে সে যেমন চলতে পারে না, তেমনি এ জাতিটিও মেয়েদেরকে স্বেচ্ছায় গৃহনির্বাসন দিয়ে নিজেদের একটি পা-ই কেটে ফেলেছে।
আশা করি আপনার ৫ নং প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
দ্বিতীয়ত বলার আগে একটা বিষয় ক্লিয়ার করি, আমি কিন্তু কোন ভাইয়ের কথা বলিনি, আমি হেযবুত তাওহীদের যত বিলি কারী বা হকার দেখেছি তার সবই ছিলো মহিলা।
এবার, আপনার কথার তালেই বলি- মক্কী জীবনে আল্লাহর রাসূলের স্ট্রাগ্রল টা কোন দলিল না যে, একজন মুসলমান তার জীবনের প্রথম ৫৩ বছর মার খাবে আর পরের ১০ বছর শুধু যুদ্ধই করবে। ভূলে গেলে চলবে না, আল্লাহর রাসূল (সা এমন একটি বাগান আবাদের দায়িত্ব নিয়ে এসিছিলেন, যেখানে গাছ তো ছিলোই না, জমীনও ছিলো হাজারো পাথরে ভরা। সুতরাং ভালো ফসলের জন্য প্রথমে দরকার ছিলো উত্তম চাষের। যখনই জমি ফসল বোনার উপযুক্ত হয়ে এসেছে, তিনি একাধারে বীজ ছিটিয়েছেন, পানি দিয়েছেন, কীটনাশক দিয়েছেন পাশাপাশি ফসলও উঠিয়েছেন। বিপরীতে, আমরা এমন একিট বাগান পেয়েছি যেখানে আগেই চাষ করা হয়ে গেছে,বীজ ও অনেক ছিটানো, ফসলও কিছু প্রস্তুত। সুতরাং, তার (সা সময়ের চেয়ে আমাদের কাজ যেমন সহজ, তেমনি অনেকটা ভিন্ন, যার প্রমান খুলাফায়ে রাশেদার কর্মপন্থায় ও দেখা গেছে।
এবার আসি জিহাদের ব্যাপারে। জীহাদ কাদের বিরুদ্ধে? জীহাদ শুধু মাত্র বিধর্মী, কাফির, মুশরিক, মুরতাদ,মুনাফিকদের বিরু্দ্ধ জায়েজ। তাও যদি তারা মুসলমানদের কোন ক্ষতি বা ক্ষতির চেষ্ঠা করে তখনই। মুসলমানদের বিরুদ্ধে জীহাদ হারাম। মুসলমানদের জন্য হেদায়াত, দাওয়াত অথবা শাস্তি, যুদ্ধ নয়। এবার যদি আপনাদের জিজ্ঞাস করি, আপনাদের এই পত্র-পত্রিকা, লিফলেট, বই ইত্যাদির মাধ্যমে কাদের বিরুদ্ধে জীহাদ ঘোষনা করছেন? কাফের? মুশরিক? মুরতাদ? নাস্তিক? নাকি মুসলমানদের বিরুদ্ধে? গত ৪ই এপ্রিল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার কারী, ইসলামের মর্যাদা নিয়ে ছিনিমিনি কারী নাস্তিকদের বিরুদ্ধে যখন সারা দেশের মুসলিম সমাজ ফুঁসে ওঠে, যেখানে ভ্রান্ত শিয়া সম্প্রদায়্ও তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত হয়, তখন আপনাদের মহামান্য ইমাম সাহেব নিরব ছিলেন কেন? তার তো কোন মন্তব্য কোন মিডিয়া বা অন্য কোথাও আসে নি?
আপনাদের ইমাম সাহেব দাজ্জালকে চিহ্নিত করার েয দাবি করেছে, তা মূলত মোহাম্মাদ আসাদ নামক এক ব্রিট্রিশ ভদ্রলোকের লেখা থেকে ধার করা এবং লেখক নিজেও এই মতটিকে খুব একটা প্রাধান্য দেন নি। তো, আমার ভাবতে অবাক লাগছে, রাসূল (সা-এর হাদীসগুলোর সম্ভবত এমন কোনটিই নেই যেটা কোন সাহাবা, তাবেঈ নিদেন পক্ষে কো তাবে-তাবেঈন দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়নি, অথচ এই ব্যাথ্যা এই দুই ভদ্রলোকের আগে কেউ উপলব্ধি করতে পারলো না......খুবই অদ্ভুত!
এবার আসি পর্দা ও নারীদের দিয়ে লিফলেট বিতরন প্রসংঙ্গে। আমি আপনাকে উল্টো প্রশ্ন করছি, আপনি যে মহিলা সাহাবাদের উদাহরণ দিলেন, তাদের কে কোন মজলিস করে দ্বীনের দাওয়াত দিত? কে রাস্তায় বের হয়ে মানুষকে দাওয়াত দিয়েছে? কোন কোন মহিলা সাহাবী ঘরে বসে হাদীসের দরস দিতেন, তাও পর্দার আড়ােল থেকে। এভাবে প্রকাশ্যে রাস্তায় এসে বেগানা পুরুষদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার বিষয়ে কোন দলিল কমপক্ষে আমার জানা নেই, বা কারো কাছে শুনিনি। ব্যতিক্রম শুধু মাত্র হেযবুত তাওহিদের মহিলারা। তাও তাদের কয়জন দ্বীনের প্রাথমিক মাসআলা জানে তাতে আমার ঘোর সন্দেহ আছে ।
এবার আরো কিছু প্রশ্ন পেশ করি-
(১) হাদীস শরিফে আছে, রাসূল (সা ইরশাদ করেন, "আমার উম্মতের মধ্যে একটা বড় অংশ কখনো গোমরাহীতে ঐক্যবদ্ধ হবে না"। আপনাদের ইমামের মতে, সঠিক দ্বীনের বুঝ শুধু হেযবুত তাওহীদ ওয়ালাদের আছে, যাদের অবস্থান শুধু বাংলাদেশে, তাও মোট মুসলমানের ১০%ও না। তাহলে কী উক্ত হাদীসটি মিথ্যা?
(২) রাসূল (সা ইরশাদ করেন 'ইলমে দ্বীন যদি সেতারা তারার দিকেও চলে যায়, তবু কুফার কিছু লোক তাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবে"। অধিকাংশ মুহাক্কিকের মতে, এই কথাটি ইমামে আযম আবু হানিফা (রহ.) কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। এখন যদি রাসূল (সা-এর পরবর্তী ৭০ বছরে দ্বীন বিকৃত হয়ে যেয়ে থাকে, তাহলে এই হাদীসটি তো মিথ্যা হয়ে গেলো?
(৩) সর্বপরি, হেযবুত তাওহীদ কর্তৃক আবিস্কৃত নতুন নতুন মাসআলা সমূহ ইতপূর্বে কোথাও আমল হয়েছে, এমনটি রাসূল (সা হতে এই পর্যন্ত এগুলোর কোন অস্তিত্ব ছিলো বলে কোন কিতাবে পাওয়া যায় নি। তাহলে এগুলো কি স্বপ্নপ্রাপ্ত? নাকি রাসূল (সা এর পরবর্তী উম্মতের সব আলেমই গন্ডমূর্খ ছিলো?
দ্বিতীয়ত বলার আগে একটা বিষয় ক্লিয়ার করি, আমি কিন্তু কোন ভাইয়ের কথা বলিনি, আমি হেযবুত তাওহীদের যত বিলি কারী বা হকার দেখেছি তার সবই ছিলো মহিলা।
এবার, আপনার কথার তালেই বলি- মক্কী জীবনে আল্লাহর রাসূলের (সাঃ) স্ট্রাগ্রল টা কোন দলিল না যে, একজন মুসলমান তার জীবনের প্রথম ৫৩ বছর মার খাবে আর পরের ১০ বছর শুধু যুদ্ধই করবে। ভূলে গেলে চলবে না, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এমন একটি বাগান আবাদের দায়িত্ব নিয়ে এসিছিলেন, যেখানে গাছ তো ছিলোই না, জমীনও ছিলো হাজারো পাথরে ভরা। সুতরাং ভালো ফসলের জন্য প্রথমে দরকার ছিলো উত্তম চাষের। যখনই জমি ফসল বোনার উপযুক্ত হয়ে এসেছে, তিনি একাধারে বীজ ছিটিয়েছেন, পানি দিয়েছেন, কীটনাশক দিয়েছেন পাশাপাশি ফসলও উঠিয়েছেন। বিপরীতে, আমরা এমন একিট বাগান পেয়েছি যেখানে আগেই চাষ করা হয়ে গেছে,বীজ ও অনেক ছিটানো, ফসলও কিছু প্রস্তুত। সুতরাং, তার (সাঃ) সময়ের চেয়ে আমাদের কাজ যেমন সহজ, তেমনি অনেকটা ভিন্ন, যার প্রমান খুলাফায়ে রাশেদার কর্মপন্থায় ও দেখা গেছে।
এবার আসি জিহাদের ব্যাপারে। জীহাদ কাদের বিরুদ্ধে? জীহাদ শুধু মাত্র বিধর্মী, কাফির, মুশরিক, মুরতাদ,মুনাফিকদের বিরু্দ্ধ জায়েজ। তাও যদি তারা মুসলমানদের কোন ক্ষতি বা ক্ষতির চেষ্ঠা করে তখনই। মুসলমানদের বিরুদ্ধে জীহাদ হারাম। মুসলমানদের জন্য হেদায়াত, দাওয়াত অথবা শাস্তি, যুদ্ধ নয়। এবার যদি আপনাদের জিজ্ঞাস করি, আপনাদের এই পত্র-পত্রিকা, লিফলেট, বই ইত্যাদির মাধ্যমে কাদের বিরুদ্ধে জীহাদ ঘোষনা করছেন? কাফের? মুশরিক? মুরতাদ? নাস্তিক? নাকি মুসলমানদের বিরুদ্ধে? গত ৪ই এপ্রিল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার কারী, ইসলামের মর্যাদা নিয়ে ছিনিমিনি কারী নাস্তিকদের বিরুদ্ধে যখন সারা দেশের মুসলিম সমাজ ফুঁসে ওঠে, যেখানে ভ্রান্ত শিয়া সম্প্রদায়্ও তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত হয়, তখন আপনাদের মহামান্য ইমাম সাহেব নিরব ছিলেন কেন? তার তো কোন মন্তব্য কোন মিডিয়া বা অন্য কোথাও আসে নি?
আপনাদের ইমাম সাহেব দাজ্জালকে চিহ্নিত করার েয দাবি করেছে, তা মূলত মোহাম্মাদ আসাদ নামক এক ব্রিট্রিশ ভদ্রলোকের লেখা থেকে ধার করা এবং লেখক নিজেও এই মতটিকে খুব একটা প্রাধান্য দেন নি। তো, আমার ভাবতে অবাক লাগছে, রাসূল (সাঃ)-এর হাদীসগুলোর সম্ভবত এমন কোনটিই নেই যেটা কোন সাহাবা, তাবেঈ নিদেন পক্ষে কো তাবে-তাবেঈন দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়নি, অথচ এই ব্যাথ্যা এই দুই ভদ্রলোকের আগে কেউ উপলব্ধি করতে পারলো না......খুবই অদ্ভুত!
এবার আসি পর্দা ও নারীদের দিয়ে লিফলেট বিতরন প্রসংঙ্গে। আমি আপনাকে উল্টো প্রশ্ন করছি, আপনি যে মহিলা সাহাবাদের উদাহরণ দিলেন, তাদের কে কোন মজলিস করে দ্বীনের দাওয়াত দিত? কে রাস্তায় বের হয়ে মানুষকে দাওয়াত দিয়েছে? কোন কোন মহিলা সাহাবী ঘরে বসে হাদীসের দরস দিতেন, তাও পর্দার আড়ােল থেকে। এভাবে প্রকাশ্যে রাস্তায় এসে বেগানা পুরুষদের দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার বিষয়ে কোন দলিল কমপক্ষে আমার জানা নেই, বা কারো কাছে শুনিনি। ব্যতিক্রম শুধু মাত্র হেযবুত তাওহিদের মহিলারা। তাও তাদের কয়জন দ্বীনের প্রাথমিক মাসআলা জানে তাতে আমার ঘোর সন্দেহ আছে ।
এবার আরো কিছু প্রশ্ন পেশ করি-
(১) হাদীস শরিফে আছে, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, "আমার উম্মতের মধ্যে একটা বড় অংশ কখনো গোমরাহীতে ঐক্যবদ্ধ হবে না"। আপনাদের ইমামের মতে, সঠিক দ্বীনের বুঝ শুধু হেযবুত তাওহীদ ওয়ালাদের আছে, যাদের অবস্থান শুধু বাংলাদেশে, তাও মোট মুসলমানের ১০%ও না। তাহলে কী উক্ত হাদীসটি মিথ্যা?
(২) রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন 'ইলমে দ্বীন যদি সেতারা তারার দিকেও চলে যায়, তবু কুফার কিছু লোক তাকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবে"। অধিকাংশ মুহাক্কিকের মতে, এই কথাটি ইমামে আযম আবু হানিফা (রহ.) কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। এখন যদি রাসূল (সাঃ)-এর পরবর্তী ৭০ বছরে দ্বীন বিকৃত হয়ে যেয়ে থাকে, তাহলে এই হাদীসটি তো মিথ্যা হয়ে গেলো?
(৩) সর্বপরি, হেযবুত তাওহীদ কর্তৃক আবিস্কৃত নতুন নতুন মাসআলা সমূহ ইতপূর্বে কোথাও আমল হয়েছে, এমনটি রাসূল (সাঃ) হতে এই পর্যন্ত এগুলোর কোন অস্তিত্ব ছিলো বলে কোন কিতাবে পাওয়া যায় নি। তাহলে এগুলো কি স্বপ্নপ্রাপ্ত? নাকি রাসূল (সাঃ) এর পরবর্তী উম্মতের সব আলেমই গন্ডমূর্খ ছিলো?
মন্তব্য করতে লগইন করুন