যখন তারা নারীবাদী, যখন তারা নারীবাদী নন!

লিখেছেন লিখেছেন চিরবিদ্রোহী ১৫ নভেম্বর, ২০১৩, ০৭:৪৪:৩১ সন্ধ্যা



আমার এক বন্ধু যিনি দাওরা হাদীস পাশ আলিম, তাঁর নিজের পরিবারের ঘটনা। তাদের বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। অন্য দশটা পরিবারের মত উত্তরাধিকার সম্পদ নিয়ে এ পরিবারেও কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। চার ভাই চার বোনের বিশাল পরিবার। যখনই কোনো বৈঠক শুরু হয়েছে কলহ বিবাদ ছাড়া সেই বৈঠক শেষ হয়নি। বিবাদের মূল বিষয় বোনদের অংশ। আমার বন্ধুটির বড় ভাইয়ের প্রস্তাব হল বোনদের গুরুত্বহীন, স্বল্পমূল্যের কিছু জমি থেকে নামমাত্র কিছু সম্পদ দেয়া। এ প্রসত্মাবের পক্ষে অন্য দশটা চতুর লোকের ন্যায় সে বিভিন্ন যুক্তি দাঁড় করিয়ে চলেছে, যেমন বোনদের বিবাহের সময় লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিবাহ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বাবা মৃত্যুর আগে একথা ওকথা বলে গেছেন (যাতে ছেলেরা সম্পদ বেশি পায়)।

আমার আলিম বন্ধুটির বক্তব্য হল, বোনরা কতটুকু পাবে তা কুরআন নির্ধারণ করে দিয়েছে। নতুন করে নির্ধারণের কিছুই নেই। আর বাবা যদি

কিছু বলে থাকেন যা কুরআনী বণ্টননীতির পরিপন্থী তাহলে তিনি ঠিক করেননি। জীবনে সবার পাওনা এমনকি বাস রিকসার ভাড়া পর্যন্ত পাই পাই হিসাব করে আদায় করেছি।

আর আপন বোনের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করব! সে যখন এ কথা বললো তখন তার অন্য ভায়েরা এমনভাবে ক্ষিপ্ত হল যে, বর্ণনাতীত । অন্যদের আক্রমন যেমনই হোক বড় ভাই একেবারে খড়গহস্ত। গল্পের আসল জায়গাটা এটা। ঢাকার এক নামীদামী নারীবাদী সংগঠনের নেতা; যিনি কিনা নারী অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে দশ বিশটি গালি আলিমদের না দিলে তার সপ্তাহের কর্মসূচী শেষ হয় না। কিন্তু আপন বোনদের ক্ষেত্রে এই হচ্ছে তার আসল চেহারা।

আসলে এ এক বাস্তবতা যে, ঈমান দুইটি বিষয়কে নিশ্চিত করে, একটি হচ্ছে ‘আমন’ (নিরাপত্তা) আর দ্বিতীয়টি আমানতদারী। এই ঈমানের চর্চা, বাদ দিয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে যেখানে যত কর্মসূচী পালিত হয়েছে সবই ‘চকচক করে তবে সোনা নয়’। এদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝার জন্য অধিকার-প্রতিষ্ঠা সংগ্রামের ফেরীওয়ালা সেই বানরের কিচ্ছা স্মরণ করতে পারেন। বক্তৃতার পূর্বে তার মত দরদী, ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী নেতা পাওয়াই যায় না। কিন্তু বাস্তবে রুটি ভাগের পর্ব যখন এল তখন একবার এর ভাগ থেকে খায় আরেকবার ওর

ভাগ থেকে। এভাবে খেয়ে খেয়ে সমান অর্থাৎ শেষ করে দিল। এই হচ্ছে ওদের সমবণ্টন।

প্রতারণা আর কাকে বলে! আমার বন্ধুটি কোনো নারীবাদী সংগঠনের কর্মী না হওয়ায় সে এই প্রতারণা করতে অপারগ। অথচ নারীবাদী প্রতারকেরা কিনা আলেমদের বলে নারী-অধিকার হরণকারী। কী বিচিত্র এ দুনিয়া!! আমাদের সমাজকে বিশেষকরে নারী সমাজকে বুঝতে হবে যেদিন

শিয়ালকে দিয়ে মুরগি পাহাড়া দেয়া সম্ভব শুধু সেদিনই হয়ত এ সকল প্রতারকদের দ্বারা নারী অধিকার রক্ষা পাবে। শুধু আমার বন্ধুটির বোনদের অধিকার নয় বরং সমস্ত সৃষ্টির অধিকার নিশ্চিত করবে যে বিষয়টি তা হচ্ছে ঈমান ও আখিরাতের চর্চা।

তাই এ এক বাস্তবতা বা নারী অধিকার নিয়ে মাতমকারীরাই নারীস্বার্থের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।

বিষয়: বিবিধ

১৫২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File