জীবনের মোড় ঘুরানো একটি বাস্তব ঘটনা
লিখেছেন লিখেছেন মধ্যমপন্থী ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:০৯:০৯ দুপুর
ছেলটি আমার বেশ পরিচিত। রুয়েট থেকে পাশ করার পর মাস ছয়েক ব্যাবসার জন্য বেশ দৌড়াদৌড়ি করেও ভাল কিছু করতে পারছিলনা, কারন প্রধানত দুটি-এক পুঁজির স্বল্পতা দুই সততার সাথে কম্প্রমাইজ করতে না পারা। যাহোক এক পর্যায়ে সে দেখল তার অধিকাংশ বন্ধুরাই বিভিন্ন ভাল ভাল MNC গুলোতে বেশ মোটা বেতনের চাকুরীতে ঢুকে গেছে, কিন্তু তার নিজের পরিচয় দেবার মত কিছুই নেই। ছেলেটির অবশ্য একটা ভাল গুন ছিল, সে কখনই ফরজ নামাজ বাদ দিত না। ৪র্থ বর্ষের শিহ্মা সফরে...চিম্বুক পাহাড়ে ১০ মিনিট অবস্হানের ভিতরেও সে আছরের সলাত পড়তে কার্পণ্য করেনি। তাই বলে সে মোটেও kL2 বা হুজুর টাইপের কিছু ছিল না, রাজনীতিও করেনি কখনও। কিন্তু আজ তো সে বড় helpless, চাকুরী দেবার মত নেই কোন মামা-চাচা; নেই কোন রাজনৈতিক আশীর্বাদ। সে মাগরিবের নামাজের পর তার অসহায়ত্বের বিষয়টা অনুধাবন করল এবং মসজিদের এককোনে দু-হাততুলে তার পালনকর্তার নিকট ফরিয়াদ জানাল এবং দোয়া শেষে খেয়াল করল তার চোখদুটিও তার সাথে বেশ একত্বতা ঘোষনা করেছিল। যাহোক অনেকটা অন্যমনষ্ক হয়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল সে, হঠাৎ একটি ফোন....”আপনার আগামীকাল একটা ইন্টারভিউ আছে”। এত লোভনীয় কম্পানী থেকে এভাবে ফোন !! সে বিশ্বাসই করতে পারছিল না। coincident নাকি আল্লাহর রহমত এত গবেষনার চেয়ে ভাল ইন্টারভিউ দেবার প্রস্তুতি গ্রহনই বেশী যৌক্তিক মনে হল তার কাছে।
যাহোক ইন্টারভিউ দিতে গেল সে, কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ডে গিয়ে সে বুঝতে পারল আরেকটি পরাজয়ের গল্পের সূচনা হয়ত হতে চলেছে। কারন পোষ্ট-১টি, দরকার ৫ বছরের অভিঞ্জতা এবং তার competitor হচ্ছে BUET ও KUET এর সিনিয়র ভাইয়েরা। আর সে ছিল একদম ফ্রেস-সাথে ছয় মাস বেকার থাকার অভিঞ্জতা। যাহোক ‘এসেছি যখন ইন্টারভিউ দেবার অভিঞ্জতা নিয়েই যাই’ এমন অনুপ্রেরনায় সে ইন্টারভিউ বোর্ডে গেল। কিন্তু ইন্টারভিউটি সবকিছু উলটপালট করে দিল-কেন যেন বোর্ডের প্রধান (একজন অস্ট্রেলিয়ান) তাকে ভীষন পছন্দ করল এবং একমাত্র তারই চাকুরীটা হয়ে গেল, শুধু তাই নয় সেখানেই সে appointment letter পেয়ে গেল এবং বেতনটা এমন ছিল যে তার পরিবার বিশ্বাস করছিল না।.......। এখনও সে বড় একটি MNC তে কাজ করে যাচ্ছে, আর আল্লাহর রহমতে ভালই আছে।
ঘটনাগুলি অবাস্তব মনে হলে কিছুই করার নেই......কারন এটা ১০০%সত্য। ঘটনাটি আমাদের অনেকের জন্য বেশ শিহ্মনীয় হতে পারে।
“আর যে আল্লাহ্কে ভয় করে, আল্লাহ্ তার জন্যে নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।” [সূরা ত্বালাক-২,৩]
রাসুল (সাঃ) বলেনঃ “আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি নিজের অবসর সময় তৈরী কর ও ইবাদতে মন দাও, তাহলে আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব । আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাতকে ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব কখনোই দূর করব না।" [তিরমিযী : ২৬৫৪; ইবনে মাজা : ৪১০৭]
বিষয়: বিবিধ
২৭৭৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অবিস্বাস করার কিছু নেই । ধন্যবাদ সুন্দর ঘটনাটা শেয়ার করার জন্য ।
যথার্থ বলেছেন, সহমত
জাযাকাল্লাহ...
আমার স্মৃতির ঝুলিতেও এমন একাধিক আছে!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন