তিক্ত অভিজ্ঞতা
লিখেছেন লিখেছেন মরহুম সাদেক ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:২৩:২০ দুপুর
প্রায় এগার বছর আগের কথা,
ঢাকা গিয়েছিলেম ব্যাক্তিগত এক কাজে,
বাইতুল মুকাররাম এর পাশের ফুতপাতে কিছু সুন্দর সুন্দর জিনিষ পত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা ।
একটি মেজ্ঞাইবার চাকু আমার খুব পছন্দ হলো । টিভিতে তখন মেজ্ঞাইবার দেখাত, বিধায় চাকুটার প্রতি বারাবরই আকর্ষন ছিলো ।
যা হোক আমি দোকানীকে দাম জিজ্ঞেস করলাম ।
দোকানদার বললো ৯৫০ টাকা,
আমি আকশ থেকে পড়লাম, বড়জোড় দামটা ৫০০ টাকা বলতে পারতো, কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না ।।
চিন্তা করলাম দাম বল্বোনা, চলেই যাই, দুপা সামনে এগিয়েছি,
দোকানী বললোঃ এই যে দাম বললেন না ?
.....না ভাই নেবনা,
.....তাইলে দাম জিজ্ঞেস করলেন কেনো ? কত দিবেন বলেন ,
আমি যতই বলি নেবোনা দোকানদার নাছোড়বান্দা, দাম তাকে বলতেই হবে ।
নিজেকে পুরাই অসহায় লাগছিলো, কারন দোকানী বুঝে গিয়েছিলো আমি সিলেটি, স্থানীয় না ।
আমার কথাবার্তায় সিলেটি টান ছিলো ।
এই সমস্যাটা বঙ্গ দেশের সব জায়গায় আছে । ঐ যাত্রা সরি বলে পার পেয়েছিলাম ।
.
.
.
আমাদের গ্রাম থেকে এক লোক এসেছে সিলেট ।
বেচারা গ্রাম্য লোক, কালে ভদ্রে সিলেট আসে তেমন জানা শুনা নেই ।
সিলেট কিন ব্রিজের লাইনে তখন কিছু খুচরা/ভাসমান দোকানী ছিলো,
যারা চিরুনী সুই সুতা, জাত-বিজাতের সেন্ট বিক্রি করতো ।
সেন্টের আকর্ষনীয় বোতল দেখে গ্রাম্য (ফুলমিয়া) ভাইটির সখ জাগলো,
সে দাম জিজ্ঞেস করলে দোকানী বললো ৫০০ টাকা, দাম শুনে ফুলমিয়া দমে গেলো,
আর কথা না বলে সামনে হাটতে থাকলো,পিছন থেকে দোকানীও লোকটিকে ঝাপটে ধরলো,
.....দাম বলেন নইলে যেতে পারবেন না,
ফুলমিয়ার অবস্থা তখন খুব খারাপ, পারলে লুঙ্গিতে হাগু মুতু করে দেয় আরকি ।
সে আগ পিছ না ভেবে মারলো ভূ দৌড়.........ফুলমিয়াও দৌড়ায় দোকানীও দৌড়ায় ।
পরিশেষে ভাগ্যক্রমে আমাদের গ্রামের আরেক লোকের সামনে
পড়ে যাওয়ায় সে ঐ যাত্রায় বেচে যায় ।
দোকানী বুঝে গিয়েছিলো লোকটা স্থানীয় না, গ্রাম থেকে এসেছে, তাই চান্সটা হাতছাড়া করতে চায়নি ।
.
.
.
এক বন্ধুর সাথে বন্দর লাল বাজার গিয়েছিলাম মাছ কিনতে......
কতক্ষন এদিক সেদিক ঘুরে দুটি মাছ পছন্দ হলো ।
বন্ধুটি জিজ্ঞেস করলো মাছ দুটির দাম কত ?
.....১৭০০ টাকা ।
আরেকটু হলেই মাথার মইধ্যে হার্ট এটাক হইয়া যাইতো । কি বলা যায় চিন্তা করছিলাম......।
সাথের বন্ধুটি বলেই ফেললো ৫০০ টাকা দেবো.........
মাইমল বেটা (ফিসারম্যান) এমন অদ্ভুত চোখে আমাদের দিকে তাকালো যেনো আমরা চিড়িয়াখানার কোন বান্দর প্রজাতী ।
.....অতবর মাছ খাইছলায়নী জীবনে ? ( জীবনে কখনো এতোবড় মাছ খেয়েছেন)।।
মাটি......তুই ফাটা দে নিচে হান্দাইয়া যায়.........
আমাদের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি............
কোন কথা না বলে এক পা দুপা করে সুবোধ বালকের মতো মাছ বাজার থেকে বেড়িয়ে আসলাম ।
.
.
.
স্থানীয় জিনিসটা মানুষের অনেক বড় পুজি ।
এইটাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ অনেক আকাম কুকাম করতে পারে ।
অন্যকে সহজে বিপদে ফেলতে পারে, অন্যের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা নিতে পারে,
এমন কি ব্ল্যাকমেইল পর্যন্ত করতে পারে ।
জীবনের প্রতি পদক্ষেপই একেকটা শিক্ষা ।
আমি একটা জিনিষ খুব মেনে চলি,
মুচীর সাথে, গাড়ির ড্রাইভারের সাথে এবং মাইমলদের সাথে তর্কে লিপ্ত হইনা ।
আপনি যতবড় লোকই হোন না কেন, এদের কাছে আপনি ডালভাত.........
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৫ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাললাহ খায়ের
জাযাকাল্লাহ খায়ের
এই ক্ষেত্রে পাল্টা ধমক দেওয়া উচিত মনে হয়।
ভালো লাগার জন্য মোবারকবাদ
একটা জিনিষ কিন্তু আমার মাথায় ঢুকেনাই, আপনারা আব্দুস সাদেক যে নাম রাখলেন, সেইটা ক্যাম্নে ? আব্দু শব্দের সাথে শুধু আল্লাহর ছিফতি নাম গুলা যুক্ত হয়, যেমন আব্দুল জব্বার, আব্দুল ফাত্তাহ, আব্দুল কাদির । কিন্তু সাদেক তো আল্লার সিফতি নাম না ।
সমস্যা নাই এটা সম্পুর্ন আপনাদের ব্যাপার । ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন