বিদ‘আত এর পরিচয় ও পরিনাম
লিখেছেন লিখেছেন মরহুম সাদেক ২১ আগস্ট, ২০১৪, ১১:০৭:৫১ রাত
الحمد لله رب العالمين, و الصلوة والسلام على من اختص بالخلق العظيم. وعلى اله الذين قاموا بنصرة الدين القويم, ومن تبعهم باحسان الى يوم الدين- وبعد:
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) যে আদর্শ পৃথিবীর মানুষের কাছে পেশ করেছেন তাই হচ্ছে সুন্নাত। বিদ‘আত শব্দটি আরবী হলেও সারা পৃথিবীর মুসলমানদের কাছে এটি একটি অতীব পরিচিত পরিভাষা। অর্থ ও প্রয়োগগত দিক থেকে এটি সুন্নাতের রিপরীত হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অপ্রিয় হলে ও সত্য যে কালের পরিক্রমায় মুসলমানদের কথা-বার্তা ও আক্বীদা বিশ্বাসে প্রবেশ করেছে অসংখ্য বিদ‘আত। যা আজ গোটা মুসলিম মিল্লাতকে মহামারির ন্যায় করেছে বিপর্যস্ত। তাই আজ সুন্নাত থেকে বিদ‘আতকে আলাদা করা এবং বিদ‘আতের সর্বনাশা ভয়াবহ পরিনাম সম্পর্কে সমগ্র মুসলিম মিল্লাতকে অবহিত করণ একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করি। আলোচ্য প্রবন্ধটি তারই একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস।
বিদ‘আতের পরিচয়:
--------------------
* আভিধানিক অর্থ: البدعة শব্দটি باب فتح এর মাসদার, অভিধানে এর কয়েকটি অর্থ পাওয়া যায়। যেমন-
(১) নতুন সৃষ্টি।
(২) অভিনব কোনো কিছু তৈরী করা।
(৩) দৃষ্টান্ত বিহীন সৃষ্টি।
(৪) ধর্মে নতুন কিছুু আবিষ্কার করা ইত্যাদি।
[Adictionary of Modern written Arabic এ বলা হয়েছে Newness/Novelty (নতুনত্ব/ অভিনবত্ব)
এ দৃষ্টিকোন থেকে আল্লাহ্ হচ্ছেন بديع কারণ তিনি অস্তিত্বহীন থেকে সৃষ্টি করেন, তাই তাকে بديع বলা হয়।
আল-মুনজিদ ফিল-লুগাতি ওয়াল আ’লাম এ বলা হয়েছে-
هى كل ما احدث على غير مثال سبق
“প্রত্যেক নতুন উদ্ভাবিত জিনিস যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই”।
(বিদ‘আতের পরিভাষিক সংজ্ঞা:
----------------------------------
বিদ‘আতের পারিভাষিক অর্থ নিম্বরূপ-
هى ما استحدث فى الدين على وجه القربة.
নৈকট্য লাভের আশায় দ্বীনের মধ্যে যা কিছু নতুন করে সৃষ্টি করা হয়, তাই বিদ‘আত।
ইমাম নববী (রঃ) বলেন-
البدعة كل شئ عمل غير مثال سبق وفى الشرع احداث مالم يكن فى عهد رسول الله صـ
বিদ‘আত বলা হয় এমন কার্যকলাপকে যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই। আর শরীয়তের পরিভাষায় বিদ‘আত বলা হয় এমন সব বিষয়কে যা রাসুল (সঃ) এর যমানায় ছিল না।
* মুফতি সাইয়্যদ মুহাম্মদ আমীমুল ইহসান (রঃ) বলেন-
هى الامر المحدث الذى لم يكن عليه الصحابة والتابعون ولم يكن مما اقتضاه الدليل الشرعى.
“এমন নব উদ্ভাবিত বিষয় যা সাহাবা ও তাবিঈনের যুগে ছিল না এবং যার উদ্ভাবন শরয়ী কোন দলিলের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
* প্রখ্যাত হাদীসবিদ ইমাম খাত্তাবী বলেন-
وكل شئ احدث على غير اصل من اصول الدين وعلى غير عياره وقياسه واما ما كان مبنيا على قواعد الاصول ومردود اليها فليس ببدعة ولاضلالة.
“যে মত বা নীতি দ্বীনের মুলনীতির উপর প্রতিষ্টিত নয় এবং কোন দৃষ্টান্ত ও ক্বিয়াস সমর্থিত নয় এ রকম যাই নতুন আবি®কৃত হবে তাই বিদ‘আত।”
* উপরোক্ত সংজ্ঞা সমুহে একথা প্রতীয়মান হয় যে, আক্বীদা ও আমলের সে সব আবি®কৃত পন্থা ও পদ্ধতিকে বিদ‘আত বলা হয়, যা রাসুল (সঃ), সাহাবা, তাবিঈন ও তাবি তাবিয়ীনের যামানার পর সওয়াব ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টি হাসিলের উদ্দেশ্যে করা হয়ে থাকে। অথচ এর কোন প্রমান তাদের কথায় বা কাজে স্পষ্টরূপে বা ইঙ্গিতে পাওয়া যায় না এবং শরিয়তে এর কোন ভিত্তি নেই।
কুরআনে বিদ‘আত শব্দের উল্লেখ
----------------------------------
* কুরআন মজীদে বিদ‘আত শব্দটি তিনটি স্থানে তিন ভাবে উল্লেখিত হয়েছে।
এক:
আল্লাহ্ সম্পর্কে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে দু’টো আয়াতে । যেমন-
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَإِذَا قَضَى أَمْراً فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ. البقرة-১১৭
“আসমান ও জমিনের নতুন উদ্ভাবন কারী নতুন সৃষ্টিকারী, তিনি যখন কোনো কাজের ফয়সালা করেন তখন শুধু তাকে বলেন: হও, অমনি তা হয়ে যায়।”
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ أَنَّى يَكُونُ لَهُ وَلَدٌ وَلَمْ تَكُن لَّهُ صَاحِبَةٌ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ وهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ. الانعام-১০১
“তিনি তো আসমান যমীনের নব সৃষ্টিকারী। তার সন্তান হবে কোত্থেকে, কেমন করে হবে তার স্ত্রী? তিনিই তো সব সৃষ্টি করেছেন।
* এ দ’ুটো আয়াতে আল্লাহ্ তাআলাকে আসমান যমিনের “বদীউন” তথা পুর্ব দৃষ্টান্ত, পূর্ব উপাদান ও পূর্ব প্রস্তু’তি ছাড়াই সৃষ্টিকারী বলা হয়েছে।
দুই:
অন্য আয়াতে রাসুল (সঃ) সম্পর্ক এভাবে বলা হয়েছেÑ
قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنْ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلا بِكُمْ. )الاحقَاف-৯(
“আপনি বলুন আমি এমন কোন রাসুল নই যার কোন পূর্ব দৃষ্টান্ত নেই। আমি জানিনা আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে।”
তিন:
বনি ইসরাঈলের কতিপয় লোকদের বিশেষ আমল সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন-
وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ. )الحديد-২৭(
“আর বৈরাগ্যবাদ সেতো তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করেছে। আমি এটি তাদের উপর লিখে ফরয করে দেইনি।
* উপরোক্ত আয়াত সমূহ থেকে একথা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, بدعة শব্দের অর্থ হচ্ছে নাই থেকে সৃষ্টিকরা। নিরস্তির থেকে অস্তিত্ব দেয়া, নব্য উদ্ভাবন ইত্যাদি।
সুন্নাত ও বিদ‘আতের পার্থক্য:
অন্ধকার না বুঝলে যেমন আলো বুঝা যায় না, ঠান্ডা না বুঝলে গরম বুঝে আসেনা, মুর্খতা না বুঝলে শিক্ষা বুঝে আসেনা, তেমনি সুন্নাত না বুঝলে বিদ‘আত বুঝা যায় না। কারণ বলা হয়ে থাকে-
تعرف الاشياء باضدادها.
السنةআরবী শব্দ:। -এর অভিধানিক অর্থ:
الطريقة محمودة كانت او مذمومة.
(পন্থা-পদ্ধতি, রীতি, নিয়ম, পথ, স্বভাব ইত্যাদি চাই তা ভাল হোক কিংবা মন্দ হউক)
কুরআন- হাদীসে سنة শব্দটির ব্যবহার:
কুরআন এবং হাদীসে এ শব্দটির অধিক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। যেমন:
(কুরআন মজীদে এর ব্যবহার)
سُنَّةَ اللَّهِ الَّتِي قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلُ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلاً.) الفتح-২৩(
فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ اللَّهِ تَبْدِيلاً. )الفاطر-৪৩(
سُنَّةَ مَن قَدْ أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِن رُّسُلِنَا وَلاَ تَجِدُ لِسُنَّتِنَا تَحْوِيلاً.) بنى اسرائيل-৭৭ (
(হাদীসে এর ব্যবহার)
مَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً كَانَ لَهُ أَجْرُهَا.
لتتبعن سنن من قبلكم الشبر بالشبر والذراع بالذراع والباع بالباع حتى لو أن أحدهم دخل حجر ضب لدخلتموه.
উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস সমুুহে ‘সুন্নাত’ শব্দটি طريقة পথ- পন্থা, পদ্ধতি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
সর্বোপরি এ কথা বলা যায় যে, সুন্নাত শব্দেটি তিনটি অর্থে ব্যবহৃত হয়।
(র) নবীর হাদীস (রর) নবীর আমল (ররর) নবীর তরীক্বা।
* উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, রাসুল (সঃ) কর্তৃক অনুসৃত মতে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সকল কর্মনীতিই হলো সুন্নাত। আর এনীতিতে কোন প্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন ও বিকৃতি সাইনেরই অপর নাম হলো বিদ‘আত।
আল্লামা শাওক্বানী বলেন- وتطلق فى الشرع على مقابلة السنة.
সুন্নত ও বিদ‘আতের পার্থক্যের কিছু উদাহরণ: যেমন-
------------------------------------------------------------
(১) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে আযান- এক্বামত আছে, কিন্তু খুতবা নাই। পক্ষান্তরে জুম‘আর নামাজে খুতবা আছে। দুই ঈদের নামাজ ও জানাযার নামাজে আযান এক্বামত নেই। এখন যদি কেউ নিজের মনগড়া ইচ্ছায় একথা বলে যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং ঈদ ও জানাযার নামাজ একই তাই এখানে আযান - একামত দিতে হবে এবং জুমআর নামাজ ছাড়াও যে নামাজ গুলো আছে তাতে খুতবা দিতে হবে, এ ধারনা পোষণকারীর নামাজ না হওয়ায় কারণ হলো তার নামাজ নবীর দেখানো সুন্নাত তথা ত্বরীকা অনুযায়ী হয় নাই। তাই এটা বিদ‘আত হবে।
মোট কথা- ধর্মের কাজ নবীর তরীকা অনুযায়ী করলে নবীর সুন্নাত হবে আর ধর্মের কাজ নিজের ইচ্ছামত করলে বিদ‘আত হবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, ধর্মের কাজ ছাড়া যতকাজ আছে তা মনগড়া করলে বিদ‘আত হবে না। যেমন মাইক তৈরী, যন্ত্রপাতি, মেশিনারী দ্রব্য, রকেট, বিমান, টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল, গাড়ি, কম্পিউটার, বিল্ডিং ইত্যাদি আবিস্কার বিদ’আত নয় , কারণ এ গুলো ধর্মের কাজের জন্য তৈরি করা হয় নাই।
বিদ‘আতের প্রকারভেদ:
------------------------
সাধারণভাবে বর্তমানে মুসলিম সমাজের প্রচলিত ধারণা হলো:
বিদ‘আত দু প্রকার ,যথা :
(১) বিদ‘আতে হাসানাহ
(২) বিদ‘আতে সায়্যিআহ্
কেউ কেউ বিদ‘আতে সায়্যিআকে بدعة مستقبحة বা ঘৃণ্য বিদ‘আত নাম দিয়েছেন। আর এই বিদআতকে حسنة ও سيئة ঐ দুটি ভাগে ভাগ করার কারণে বহু সংখ্যক বিদ‘আত ভালো বিদ‘আত এর নাম নিয়ে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে ইসলামী আক্বীদা ও আমলের বিশাল ব্যবস্থাপনায় অনুপ্রবেশ করেছে। ফলে তাওহীদ বাদীরা আজ বিদ‘আত সমুহ অবলিলাক্রমে করে যাচ্ছে। যা প্রকৃতপক্ষে তাওহীদ ও সুন্নাহ বিরোধী।
এখানে উল্লেখ্য যে, যদিও আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী عمدة القارى এর মধ্যে বিদ‘আতকে দু’প্রকার বলেছেন। তিনি বলেনÑ
ثم البدعة على نوعين : بدعة حسنة وبدعة مستقبحة
কিন্তু তা গ্রহণযোগ্য নয়। বিদ‘আতকে দু’ভাগে ভাগ করা একেবারেই অমূলক ও অযৌক্তিক। কারণ রাসুল (সঃ) এর যুগে বিদ‘আতের মধ্যে হাসানা বা ভালো দিক পাওয়া যায়নি। আর রাসূলের যুগেও নয় এবং রাসুল (সঃ) এর বানীর মাধ্যমেও বিদ‘আতকে এভাবে দু’ভাগ করা হয়নি।
তবে মুসলিম সমাজে বিদ‘আতের এ ভাগ চালু হয়, হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল কারী বর্ণিত হযরত ওমরের তারাবীহ এর সালাত সংক্রান্ত হাদীসের উক্তি نعمة البدعة هذه “এটা একটা উত্তম বিদ’আত” নামক বাক্য থেকে।
উত্তম বিদ’আত বলার পর আপনা আপনি বুঝা যায় যে, এর বিপরীতে আরেকটি বিদ‘আত অছে যা অবশ্যই খারাপ ও নিন্দনীয় হবে।
*হযরত ওমর (রাঃ) এর হাদীসের জবাব
(১) হযরত ওমর (রাঃ) এর উক্তি দিয়ে বিদ‘আতকে ভাগ করলে রাসুলের হাদীস كل بدعة ضلالة “সব বিদ‘আতই গোমরাহী” অর্থহীন হয়ে যায়।
(২) হযরত ওমর কর্তৃক তারাবীহের সালাত জামায়াত সহকারে পড়ানো এটা নতুন নয় বরং এর ভিত্তি পূর্বে পাওয়া যায়। কারণ রাসুল (সঃ) এর যামানায় স্বয়ং রাসুল (সঃ) নিজে দুই তিন রাত ইমাম হয়ে নামাজ পড়িয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন Ñ
عن عائشة زوج النبي صلى الله عليه وسلم * أن النبي -صلى الله عليه وسلم- صلى في المسجد فصلى بصلاته ناس ثم صلى من القابلة فكثر الناس ثم اجتمعوا من الليلة الثالثة فلم يخرج إليهم رسول الله -صلى الله عليه وسلم- فلما أصبح قال قد رأيت الذي صنعتم فلم يمنعني من الخروج إليكم إلا أني خشيت أن يفرض عليكم وذلك في رمضان. )بخارى ومسلم(
* উপরোক্ত হাদীস থেকে একথা প্রতীয়মান হয় যে, জামাআতের সাথে তারাবীহের নামাজ পড়ানোর কাজ প্রথমে নিজে রাসুল (সঃ) করেছেন। আর তা পর পর তিন রাত্রি পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তাহলে হযরত ওমর জামায়াতের সাথে তারাবীহ পড়াকে বিদ‘আত বললেন কেন? এর জবাব হলো হযরত ওমর এখানে শাব্দিক ও আভিধানিক দৃষ্টিকোন থেকে বিদ‘আত বলেছেন পারিভার্ষিক দ্রষ্টিকোন থেকে নয়।
কারণ রাসুল (সঃ) ২-৪ দিন পড়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। হযরত আবু বকর এর খিলাফত কালেও তা আর জামায়াতের সাথে চালু করা হয়নি। এ হিসাবে হযরত ওমরের একে বিদ‘আত বলা ভূল হয়নি এবং তাতে করে এটা বিদ‘আত ও হয়ে যায়নি।
*মুহাদ্দিসীনে কেরামের মতে হযরত ওমরের نعمة البدعة هذه এর তাৎপর্য :
نعم الامر البديع الذى ثبت عن رسول الله صـ وترك فى زمان ابي بكر لاشتغال الناس فيما حصل بعد وفات الرسول صـ.. (نيل الاوطار)
জামাআতের সাথে তারাবীহ পড়া এক অতি উত্তম ব্যবস্থা। যা রাসুলে করীম (সঃ) থেকে শুরু হয়েছিল এবং পরে হযরত আবু বকর এর সময়ে লোকদের নানা জঠিলতার মশগুল হয়ে থাকার কারনে পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছিল।
*মুল্লা আলী ক্বারী হযরত ওমর ফারুকের কথার ব্যাখ্যায় বলেনÑ
انما سماها بدعة لاعتبار صورتها فان هذا الاجتماع محدث بعده عليه الصلاة والسلام.
উমর ফারুক এ কাজকে বিদ‘আত বলেছেন
বাহ্যিক দিক লক্ষ্য করে। কেননা নবী কারীমের পর এই প্রথম বার নতুন ভাবে জামায়াতে সাথে তারাবীহের নামাজ চালু হয়েছিল।
ইসলামে বিদ‘আতে হাসানাহ্ বলতে কিছু আছে কি?
-------------------------------------------------
রাসুল (সঃ) অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় সকল বিদ‘আতকে ভ্রষ্ট বা দালালাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাই কিছু কিছু বিদ‘আতকে হাসানাহ বলার কোন সুযোগ নেই। কেননা রাসুর (সঃ) বলেছেনÑ
فإن أصدق الحديث كتاب الله وخير الهَدْىُ هَدْىُ محمدٍ وَشَرَّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلُّ محدثة بِدْعَةٍ وكل بدعة ضلالة وكل ضلالة فى النار.
নিশ্চয় সর্বোত্তম কথা হলো আল্লাহ্র কিতাব আর সর্বোত্তম হিদায়াত হলো মুহাম্মদ এর হিদায়াত। সর্বনিকৃষ্ট বিষয় হলো মনগড়া নব প্রবর্তিত বিষয়। আর প্রত্যেক নব প্রবর্তিত বিষয়ই বিদ‘আত এবং প্রত্যেক বিদআতই গুমরাহী।
তাই বিদআতকে দু ভাগে ভাগ করলে রাসুল (সঃ) এর এ ঘোষনাকে অগ্রাহ্য করা হয়।
এ প্রসঙ্গে শাইখ ইবনে ফাউযান বলেন:
من قسم البدعة الى بدعة حسنة وبدعة سيئة فهو غالط مخطئ ومخالف لقوله عليه الصلاة والسلام فان كل بدعة ضلالة لان الرسول صـ حكم على البدع كلها بانها ضلالة.
যে ব্যক্তি বিদ‘আতকে হাসানাহ ও সায়্যিআহ্ বলে বিভক্ত করল সে ভূল করল এবং “সকল বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা” মর্মে রাসুল (সঃ) এর বাণীর বিরোধীতা করল। কেননা রাসুল (সঃ) সকল বিদ‘আতকে গুমরাহী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সর্বোপরি একথা বলা যায় যে, বিদ‘আতকে এভাবে ভাগ করে এর কিছু অংশকে হাসানাহ্ বলা গুমরাহী বৈ কিছু নয়।
বিদ‘আত চেনার সহজ উপায়
বিদ‘আতের যারা প্রবর্তক তারা বিদ‘আতকে সুন্নাতের নাম দিয়ে প্রবর্তন করে। তাই বেদ‘আতকে চেনার প্রথম উপায় হলো শরীয়াতের দলীলের শরনাপন্ন হওয়া। কিন্তু এ কাজ সহজ নয়। অতএব সুন্নাত থেকে বিদ‘আতকে পৃথক করার তথা চেনার সহজ উপায় হলো: সুন্নাতের কোন রকমারী রূপ নেই, এটি সর্বদা এবং সর্বত্র একই রকম। পক্ষান্তরে বিদ‘আত একেক স্থানে একেক রকম। এমনকি একই বিদ‘আত একেক এলাকায় একেক ভাবে পালিত হয়। আবার অন্য এলাকায় অন্য ভাবে পালিত হয়। সুতরাং ষ্টাইল (Style) বা ধরণের ভিন্নতার দ্বারা সুন্নাত থেকে বিদ‘আতকে আলাদা করা যায়।
সমাজে যেভাবে বিদ‘আত চালু হয়:
---------------------------------
সমাজে বিদ‘য়াত চালু হওয়ার মূলে চারটি কারণ লক্ষ্য করা যায়:-
এক:
------
ব্যক্তি তার নিজের থেকে বিদ‘আত চালু করে সমাজে তা চালিয়ে দেয়। পরে তা সাধারণ ভাবে সমাজে প্রচলিত হয়ে পড়ে।
দুই:
------
কোন আলেম বা পীর সাহেব নিজে জানা সত্ত্বেও শরীয়ত বিরোধী একটা কাজ করছেন: কিন্তু তা দেখে সমাজের জাহিল লোকেরা মনে করতে শুরু করে যে, এত বড় আলেম বা পীর সাহেব হয়ে যেহেতু এটা করেছেন, তাই এটা অবশ্যই শরীয়ত সম্মত। নতুবা কি তিনি এটা করতেন? এভাবে এক ব্যক্তির কারণে গোটা সমাজে বিদ‘আত চালু হয়ে যায়।
তিন:
-------
জাহিল লোকেরা শরীয়ত বিরোধী কাজ করতে শুরু করে। কিন্তু সমাজের আলেম ও বড় বড় বুযুর্গ ব্যক্তিগন এ ব্যাপারে নিজের ইমানের দায়িত্ব আদায় না করে কোন রূপ প্রতিবাদ না করে মৌনতার পরিচয় দেন।হতে পারে এটা নিজের চাকরি, ব্যবসা, অথবা অন্যান্য দুনিয়াবী স্বার্থের কারণে। তখন সমাজের লোকেরা মনে করে যেহেতু আলেমগন উক্ত কাজে বাধা দেননি তাই এটা বিদ‘আত হবে না।
চার: শরীয়ত সম্মত কাজকে শরীয়াত বিরোধী মনে করে বাদ দেয়া। যেমন- কোন কাজ শরীয়ত সম্মত অথচ তা সর্বসাধারণের মাঝে আলেমরা সঠিক ভাবে প্রচার না করার কারণে লোকজনের মনে এ কথা বদ্ধমূল হয় যে, এটা শরীয়াত সম্মত নয়। শরীয়ত সম্মত হলে আলেম সাহেবগণ বাধা দিতেন। যেহেতু বাধা দেন নাই তাই এটা শরীয়তে না থাকাটাই স্বাভাবিক।
বিদ‘আতের ধরণ:
-----------------
পরিচয়গত দিক থেকে বিদ‘আতী কাজগুলো প্রধানত তিন ধরনের। যথা:
১.
البدعة الحقيقية বা মৌলিক বিদ‘আত: এটা এমন বিদ‘আত কোরআন সুন্নায় যার কোন অস্তিত্ব নেই। যেমন:- মৃত ব্যক্তির কাছে কিছু চাওয়া, মৃত ব্যক্তির নামে চল্লিশা করা ইত্যাদি।
২.
البدعة الاضافية বা সংযুক্ত বিদ‘আত: এমন বিদ‘আত কোরআন হাদীসে আর ভিত্তি রয়েছে। কিন্তু এগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে পস্থা পদ্ধতি, ধরণ পরিমান ও সময়কাল ইত্যাদির দিক থেকে শরীয়াত বিবর্জিত। যেমন: ফরজ নামাজের পরে উচ্চস্বরে সামষ্টিক যিকির ও মুনাজাত। কিন্তু মূলত এসব দো’আ ও যিকির বিদ‘আত নয় তবে উচ্চস্বরে সামষ্ঠিকভাবে পড়া বিদ‘আত।
৩.
البدعة التركية বর্জিত বিদআত: এটা এমন বিদ‘আত যা কুরআন এবং সুন্নায় বর্ণিত বিধানকে বর্জন করা হয়। যেমন: নামাজের শুরুর সময় আরবীতে নিয়্যাত করা।
শরীয়াতের মানদন্ডে বিদ’আত:
--------------------------------
আল্লাহ্র অনুমোদনহীন মানবীয় প্রবৃত্তি উ™ু¢ত কাল্পনিক কোন প্রথা প্রবর্তন করে তার প্রতি ইবাদাতের মাহাত্ম আরোপকে বিদ‘আত নামে আখ্যায়িত করা হয়। আর এটি শিরকতুল্য অপরাধ। এ কারনেই মহানবী (সঃ) স্বীয় উম্মতকে বিদ‘আতের ব্যাপারে অত্যন্ত জোরালোভাবে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেনÑ
اياكم ومحدثات الامور فان كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة.
“তোমরা নিজেদেরকে দ্বীনের নতুন আবি®কৃত বিষয়াদি থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে। কেননা দ্বীনে প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত জিনিসই বিদ‘আত এবং সব বিদ‘আতই গোমরাহীর মূল।” ( সুনানে আহমদ)
এ হাদীসের শব্দ محدثات الامور এর ব্যাখ্যায় আল্লামা আহমদুল বান্না তার “ফতহে রাব্বনী”তে লিখেছেনÑ
وهى ما لم يكن معروفا فى كتاب ولا سنة ولا اجماع وهى البدعة.
محدثات الامور বলতে এমন জিনিস ও বিষয়াদিকে বুঝায় যা কুরআন সুন্নাহ এবং ইজমাÑ কোন দিক দিয়েই শরীয়তে বিধিবদ্ধ নয়।
রাসুুল (সা.) বলেন-
# من عمل عملا ليس عليه امرنا فهو رد. (مسلم)
# من احدث فى امرنا هذا ما ليس منه فهو رد. (بخاري)
“যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে তা প্রত্যাখান হবে।”
# اتبعوا ولا تبتدعوا.
“তোমরা রাসুলের আদর্শ অনুসরণ কর কোন ক্রমেই বিদ‘আত কর না”
সর্বোপরী একথা বলা যায় যে, বিদ‘আত একটি মারাত্মক পাপ। তাই তা থেকে বেঁচে থাকা একান্ত প্রয়োজন।
বিদ‘আতের পরিনাম
---------------------
যারা বিদ‘আতের চর্চা করেন তারা শুধু হইকালেই নিন্দনীয় নন। বরং পরকালে রয়েছে তাদের জন্য মারাত্মক পরিণতি। যারা বিদ‘আত সৃষ্টি করে আর যারা তাদেরকে প্রশ্রয় দেয় তাদের সকলকে হাদীস শরীফে লা‘নত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে নিুে কতিপয় দলীল পেশ করা হলো:
আমল নষ্ট হওয়া:-
মহান আল্লাহ্ বলেনÑ
قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالأَخْسَرِينَ أَعْمَالاً. الَّذِينَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُونَ صُنْعًا.
“হে নবী আপনি বলে দিন যে, আমি কি তোমাদেরকে বলব: কারা আমলের দিক থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ? তারা হলো যারা তাদের পার্থিব জীবনের সকল চেষ্টাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অথচ তাদের ধারনা যে, তারা ভাল কাজই করছে।” (আল কাহফ, ১০৩,১০৪)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত আলী (রাঃ) ও সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) বলেন, ضَلَّ سَعْيُهُمْ তথা “আমলের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত” বলতে বিদ‘আত চর্চাকারীকে বুঝানো হয়েছে।
আমল কবুল না হওয়া:
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূল (সঃ) বলেছেন-
ابى الله ان يقبل عمل صاحب بدعة حتى يدع بدعته.
“মহান আল্লাহ্ বিদ‘আতীদের আমল কবুল করতে অস্বীকার করেছেন, যতক্ষন না তারা তা পরিত্যাগ করে।”
তাওবার পথ বন্ধ হওয়া:
ان الله حجب التوبة عن كل صاحب بدعة حتى يدع بدعته.
“নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রত্যেক বিদ‘আতীদের তাওবায় পথ বন্ধ করে দেন। যতক্ষন না সে তার বিদ‘আতকে ছেড়ে দেয়।
হাউজে কাওসার থেকে বঞ্চিত হওয়া:
“সহীহ্ মুসলিম ও মুসনাদে আহমদে বর্ণিত, হাশরের ময়দানে রাসুলে কারীম (সঃ) তার উম্মতকে পেয়ালা ভরে ভরে হাওযে কাওসারের পানি পান করাবেন। লোকেরা এক দিক থেকে আসতে থাকবে ও পানি পান করে পরিতৃপ্ত হয়ে অপর দিকে চলে যেতে থাকবে। এসময় তার একদল উম্মত হাওজে কাওসারের দিকে আসতে থাকবে। তখন নবী বলবেন-
يحال بينى وبينهم.
“আমার ও তাদের মাঝে প্রতিবন্ধক দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে।” তখন আমি আল্লাহকে বলব এদের বাধা দেওয়া হল কেন? তখন আল্লাহ্ বলবেন-
#- انك لاتدرى ما احدثوا بعدك.
# وانهم غيروا دينك.
# নিশ্চয় আপনি জানেন না , অথচ তারা আপনার পরে দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয় আবিষ্কার করেছিল।
# আর নিশ্চয় তারা আপনার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছিল ।
বিদ‘আতীরা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যায়:
لا يقبل الله لصاحب بدعة صوما ولا صلاة ولا صدقة ولا حجا ولا عمرة ولا جهادا ولا صرفا ولا عدلا يخرج من الإسلام كما تخرج الشعرة من العجين.
“বিদ‘আতী ব্যক্তির নামাজ, রোজা, সদ্কা, হাজ্জ, উমরাহ্, জিহাদ এবং ফরয ও নফল ইবাদত কিছুই আল্লাহ্ তাআলা কবুল করেন না। সে ইসলাম থেকে এরূপ বেরিয়ে যায় যেমন আটা থেকে চুল বেরিয়ে যায়।”
(ইবনে মাজাহ)
আল্লাহ ও ফেরেশ্তাদের লা‘নত:
من احدث فيها حدثا او اوى محدثا فعليه لعنة الله والملائكة والناس اجمعين.
“যে ব্যক্তি বিদ‘আত সৃষ্টি করবে, অথবা বিদ‘আত চর্চা কারীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহ্ , ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের লা‘নত বর্ষিত হবে।” এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্র বাণী:
فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
“যারা তাঁর রাসূলের হুকুমের বিরোধিতা করে তাদের ভয় করা উচিত যে, তাদের উপর কোন ফিতনা বা কোন মর্মদন্তু —শাস্তি আসতে পারে।” (আননুরÑ৬৩)
জাহান্নামের কুকুর :
অন্য বর্ণনা রাসুল (সঃ) বলেন-
قال رسول الله صـ اصحاب البدع كلاب اهل النار.
“বিদ‘আতীরা হলো জাহান্নামের কুকুর।” (আল জামী- আসসাগীর)
ইসলাম ধ্বংস কারী:
من وقر صاحب البدعة فقد اعان على هدم الاسلام.
“যে ব্যক্তি কোন বিদ‘আতীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল সে ইসলাম ধ্বংস করার কাজে সাহায্য করল। (বায়হাক্বী)
রিসালাত অস্বীকার কারী :
قال امام مالك من ابتدع بدعة يراها حسنة فقد زعم ان محمدا صـ قد خان فى الرسالة.
“যে ব্যক্তি (ইসলামের মাঝে) কোন বিদ‘আতের উদ্ভাবন করে এবং একে সাওয়াবের কাজে মনে করে প্রকৃত পক্ষে সে অভিযোগ আনল যে, মুহাম্মদ (সঃ) তার রিসালাতের দায়িত্ব পালনে খিয়ানত করেছেন। (আল-ই‘তিসাম)
সমাজে প্রচলিত কতিপয় বিদ‘আত
জানাযার নামাযের পর লাশ সামনে রেখে সম্মিলিত দোয়া।
মৃত ব্যক্তির চল্লিশা ও ফল-ফসলের শিরনী।
পীর বুজুর্গদের মাজারে কোন কিছু চাওয়া।
কবরের উপর গম্বুজ অথবা চাদর দেওয়া।
কদমবুসী করা।
জন্মদিন পালন করা।
মীলাদ মাহফিল ও মীলাদে ক্বীয়াম পালন করা।
ফরয নামাজের পর হাত তুলে সমষ্টিগত দোয়া।
মান্নত করা।
রাসুলের নাম শুনে আঙ্গুল চুম্বন করে চোখে মাখা।
আযানের আগে দুরুদ শরীফ পড়া।
শবে’বরাতে হালুয়া, রুটি, আতশবাজী ও ঘরে বাহিরে বাতি জালিয়ে আলোক সজ্জা করা এবং সামষ্টিক ভাবে কবর জিয়ারত করা।
আশুরায় মর্সিয়া, মাতম করা।
রবিউল আওয়াল মাসে ঘটা করে ঈদে মিলাদুন্নাবী পালন।
মাজারে দান খয়রাত করা।
খতমে বুখারী
মাইক যোগে কুরআন খতম।
নামাযের আরবী নিয়্যত বাধ্যতামুল মনে করা।
শেষ কথা:
উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয় যে, বিদ‘আত একটি ঈমান বিধ্বংসী কাজ। তাই যারা রাসুলের সুন্নাতকে ভালোবাসেন তাদের উচিত নির্বাক, নিশ্চুপ ও নিস্ক্রিয় হয়ে বসে না থেকে বিদ‘আত প্রতিরোধে ও নবীর সুন্নাত প্রতিষ্ঠায় ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান সুসংঘবদ্ধ একদল মুমিন তৈরীতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাওয়া। অন্যতায় এ সমাজ বিদ‘আতের প্রবল স্রোতে ভেসে যেতে পারে রসাতলে। বিদ‘আতের মুলোৎপাঠন করে কেবল রাসুলের পোশাকী সুন্নত নয় বরং তার আনীত জীবন বিধান কুরআনের আহকাম ও দ্বীনকে পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই সমাজ থেকে সকল প্রকার অবিচার-অনাচার শিরক, বিদ‘আত ইত্যাদি আপনা-আপনী দুরীভূত হয়ে যাবে। কারণ দ্বীন কায়েম হচ্ছে সকল ফরযের বড় ফরয।
“আল্লাহ আমাদেরকে বিদ‘আত মুক্ত আমল করার তৌফিক দিন।” (আমীন)
লিখেছেন - হাফেজ মো: মাহবুবুর রহমান
বিষয়: বিবিধ
১৮১৬ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর বেদআতি দের চোখ খুলেদিন বোঝার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন