নবীকরীম(সাঃ)এর পীর মুরিদী ও ইলিয়াস(রহঃ)এরপীর মুরিদী । ধরাবাহিক পর্ব-১
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারা ২১ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৪৯:১৩ সন্ধ্যা
মূল রচনায়
ফকিহুল উম্মত হযরত মাওলানা মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী (রহ.), মুফতিয়ে আজম, দারুল উলূম দেওবন্দ, ভারত এর বিশিষ্ট খলিফা শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা মামুন রশিদ (দা.বা.), ঢাকা।)
বর্তমান সংস্করণের পটভূমি
২০০২ ইং সালের রমজান মাসে আমার বর্তমান মুরব্বি হযরত মাওলানা ইবরাহিম সাহেব পাণ্ডোর আফ্রিকী (দা.বা.) বগুড়া জামিল মাদরাসায় এতেকাফ করলেন। অধমও সে এতেকাফে শরীক রইলাম। রমজানের শেষে তিনি অধমকে 'তারবীয়াতুত তালিবীন' নামক উর্দু কিতাবটি দিয়ে বললেন, এর অনুবাদ কর। বাংলা ভাষায় অনুবাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও অনুবাদের কাজ শুরু করলাম। অনুবাদ হয়ে গেলে কিতাবটি কম্পোজ ও ছাপার জন্য হামিদিয়া প্রেসে পাঠানো হল। তখন প্রেসের ম্যানেজার সাহেব বললেন, এ অনুবাদটি না ছেপে পুনরায় সুন্দরভাবে অনুবাদ করে ছাপার ব্যবস্থা করলে ভাল হয়। অধম বিষয়টি বুঝতে ভুল না করে সঙ্গে সঙ্গে ফোনে বলে দিলাম, আপনার সাথে অধমের কোন দ্বিমত নেই। যত টাকা লাগুক না কেন, আপনি সুন্দর অনুবাদের কাজ করিয়ে নিন এবং তা ছাপার ব্যবস্থা করুন। তখন থেকে অধমের মনে অনেক দিন ধরে লুকিয়ে থাকা অন্য একটি বাসনা জেগে উঠল। তাহল, সাহারানপুরের মাজাহেরুল উলূম মাদরাসায় রমজান মাসে হযরত শায়েখ যাকারিয়া (রহ.)এর এতেকাফের মজলিসে এবং দারুল উলূম দেওবন্দের ছাত্তা মসজিদে ফকিহুল উম্মত হযরত মুফতি মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী (রহ.)এর এতেকাফের মজলিসে যেসব উর্দু কিতাবের তালিম হত, সেসব কিতাব বাংলায় অনুবাদ হলে বাংলাভাষী মানুষদের অনেক উপকার হবে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে যারা আমাদের সাথে এতেকাফে শরীক হন, তাদের জন্য অনেক উপকারী হবে বলে আশা করা যায়। এই লক্ষ্যে সেসব কিতাব অনুবাদ করানোর কাজ শুরু করে দিলাম। সেসব অনুবাদ দেখা ও সংশোধন করা এবং ছাপানোর কাজের ব্যবস্থাপনা করতে থাকলাম।
২০০৪ ইং সনের শেষ দিকে, সম্ভবত অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া (রহ.)এর বিশিষ্ট খলিফা হযরত মাওলানা ইসমাঈল মায়মান (দা.বা.)এর লিখিত 'বাইয়াত কি হাকিকত' নামক একটি উর্দু রেসালার অনুবাদ করার কাজ হাতে নিলাম। রেসালাটি ফকিহুল উম্মত হযরত মাওলানা মুফতি মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী (রহ.)এর পবিত্র রমজানের এতেকাফের মজলিস দারুল উলূম দেওবন্দের ছাত্তা মসজিদ থেকে হাদিয়া স্বরূপ পেয়েছিলাম। সে রেসালাটিতে পীর-মুরিদী সম্পর্কে অতি সংক্ষেপে কিছু আয়াত ও হাদীস বর্ণনা করার পাশাপাশি বুযুর্গগণের পীর-মুরিদীর কথা উল্লেখ করে এর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পীর-মুরিদী বিরোধীদের প্রশ্নের সামান্য উত্তরও দেওয়া হয়েছে। কিন্ত্মু অধম অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পীর-মুরিদী সম্পর্কে আরো কিছু হাদীস তাতে যোগ করে ২০০৬ ইং সনের প্রথম দিকে প্রথম বার কিতাবটি সংকলিত হয় ৯৬ পৃষ্ঠায়।
প্রথম বার কিতাবটি ছেপে আসে বুধবার দিবাগত রাতে। সে রাতে স্বপ্নে দেখি, একটা সুন্দর রাস্তার পাশে অবস্থান করছি। হযরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) সে রাস্তার বামদিক দিয়ে এসে ডান দিকে যাচ্ছেন। অধমকে দেখে তিনি অধমের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। অধমও হযরতের দিকে অবাকদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। হযরতের ঠোট দুটোতে উজ্জ্বল হাসির নূর ঝলমল করছে। পরিধানে খয়েরী রঙ্গের জামা-পায়জামা শোভা পাচ্ছে। তাকে শক্তিশালী ও মেহনতী মানুষ মনে হচ্ছে। এ অবস্থায় ভাবতে থাকলাম, সাথীরা অনেকেই হযরতকে স্বপ্নে দেখেছেন কিন্ত্মু অধম কোন দিন তাকে স্বপ্নে দেখিনি, তাই খুশির সাথে মনে মনে বলছিলাম, "আল-হামদুলিল্লাহ্" এবার অধমও হযরতকে স্বপ্নে দেখে নিলাম। এরপর হযরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) উর্দু ভাষায় অধমকে বললেন, آگے اور بھی کچھ کرنا ہے"আগে আওর ভি কুচ্ছ করনা হায়।" অথবা তিনি একথা বললেন, آگے اور بھی کچھ کرنا پڑے گا "আগে আওর ভি কুচ্ছ করনা পড়েগা" অর্থাৎ "আগামীতে এ কিতাবে আরো কিছু কাজ করতে হবে"। এ কথা বলে তিনি ডান দিকে চলে গেলেন এ পর্যন্ত স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। তখন হযরতকে স্বপ্নে দেখার আনন্দ হচ্ছিল, কিন্ত্মু আগে আরো কাজ করতে হবে, সে কাজটা কি? এই প্রশ্ন অন্তরে বারবার আসতে লাগল।
চলবে
বিষয়: বিবিধ
২৪০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন