হিজাব; আভিজাত্যের মূর্ত প্রতীক (রমযান পোষ্ট-সুরা আহযাব : ৫৯)
লিখেছেন লিখেছেন সুমাইয়া হাবীবা ১৭ জুলাই, ২০১৪, ০৩:৫৫:১৮ দুপুর
“হে নবী! তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদেরকে বলে দাও তারা যেন তাদের চাদরের প্রান্ত তাদের উপর টেনে নেয়। এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চিনে নেয়া যায় এবং কষ্ট না দেয়া হয়। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।” – আহযাব : ৫৯ ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আসসালাম। আজকের বিষয় হচ্ছে কুরআন স্টাডি। উপরের আয়াতটি নিয়ে কিছু কথা। এত স্বল্প পরিসরে সম্পূর্ণ আলোচনা সম্ভব নয় তবে এর নির্যাসটুকু নেয়ার চেষ্টা করবো আমরা ইনশাআল্লাহ।।
উপরোক্ত আয়াতটিতে বাহ্যিকভাবে সবচেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন সর্বাধিক সম্মানিত মুমিন নারীদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। এবং মূল হলো একটি নির্দিষ্ট বিষয়। তা হলো হিজাব। আর একটি ব্যপার বলে নেয়া দরকার যে, যেহেতু কুরআনের নির্দিষ্ট আয়াত নিযে আলোচনা তাই আয়াতানুসারে কেবল নারীর হিজাব বা পর্দা নিয়েই আলোচনা হবে। আশা করি কারো আপত্তি হবেনা।
হিজাব কি কেন তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এবং এ নিয়ে কোন দ্বিধাবিভক্তিও নেই। আমাদের প্র্যাকটিসিং মুসলিম সমাজে মোটামুটি প্রত্যেকেই বোরকা, বড় ওড়না, স্কার্ফ ব্যবহার করে থাকেন। শলিীনভাবে চলেন বা চেষ্টা করেন। এমনকি যারা হিজাব ব্যবহার করেন না তারাও জানেন। কিন্তু মানেন না। আর যে বিষয়টা নিয়ে মতবিরোধ, কখনো কখনো কোন্দল পর্যন্ত হয়ে থাকে তা হলো নিকাব। আমি ব্লগের সীমাবদ্ধতার কারনে আজ হিজাব ও নিকাব নিয়েই বেসিক কয়েকটিমাত্র কথা বলবো।
হিজাবের আয়াত নাযিলের সময়কাল-
যে কোন বিষয়কে যথার্থভাবে ও গভীরভাবে বুঝতে এবং এর থেকে লাভবান হতে গেলে সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী, পারিপার্শিক অবস্থা ইত্যাদী জানা জরুরী। যখন এই হিজাব বা পর্দা বা শালীনতা মেইনটেইনের আয়াত নাযিল করা হয় তখন ৫ম হিজরী। মুসলিম সমাজ অনেকাংশে সুশৃংখল। একটি ইসলামী সমাজ ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম। এবং প্রায় ৫টি বৎসর অতিবাহিত হয়েছে। অশ্লীলতা অনেকাংশে বিদুরিত হলেও পাপাচার অনেকাংশে হ্রাস পেলেও আলাদা করেই নির্দিষ্ট করেই হিজাবের আয়াত নাযিল হয়েছে। পাঠক, এই পয়েন্ট টি কোট করুন। আমার কথা বুঝতে এটির দরকার পড়বে।
এবার আয়াতের পোষ্ট মর্টেম। আয়াতে আল্লাহ কি বলেছেন? বলেছেন তার আদেশ বা তার সিদ্ধান্ত। কাকে বলেছেন? বলেছেন তার প্রতিনিধিকে। তার দূত কে। রাসূলুল্লাহ সো)কে। কাদের ব্যাপারে বলেছেন? বলেছেন তার সবচাইতে প্রিয় বান্দাহদের সম্পর্কে। রাসুলের পরিবারের নারীদের সম্পর্কে। সেই সঙ্গে মুমিনাহ নারীদের সম্পর্কে। এটি আমার ২য় পয়েন্ট। মাথায় রাখুন।
এখন আসা যাক, আয়াতের শাব্দিক অর্থে। আয়াতে যে শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে তা হচ্ছে জিলবাব। অর্থ বড় চাদর। ইদন অর্থ টেনে নেয়া বা জড়িয়ে নেয়া বা ঝুলিয়ে দেয়া। এ নিয়ে অনেক মতবিরোধ আছে। আমি তাই সেদিকে যাচ্ছিনা।
এবার মূল আলোচনায় যেতে পারি। আমার কাছে হিজাবের বিষয়টা ক্লিয়ার। আয়াতটিও। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বড় চাদর দিয়ে জড়িয়ে নারীর আব্রু মেইনটেইন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
হিজাব আপনি অনেকভাবেই করতে পারেন। আপনার নিজস্ব স্টাইল নিজস্ব চিন্তাভাবনা থাকতেই পারে। তবে মূল বিষয়কে ঠিক রেখে। বেসিক হলো বিষয়ের অবকাঠামো। বেসিককে বদলানো যায়না। বেসিক বদলালে বিকৃত হয় বিষয়। দালান অলংকরন করুন কিন্তু সংযত হয়ে, ফাউন্ডেশন অক্ষত রেখে। নয়তো দালানই ভেঙ্গে পড়বে। আর আপনার দালান তৈরীর মূল উদ্দেশ্য বসবাস করা সেটিই আর হবেনা। ঠিক তেমনি হিজাবের মূল হলো অন্যের কুদৃষ্টি থেকে নিজের সৌন্দর্য আড়াল করে হেফাজত করা। যেমনি করে আমরা আমাদের মূল্যবান ধনরত্ন সম্পদ চোর-ডাকাতের হাত থেকে বাচাঁতে লুকিয়ে যত্ন করে রাখি। আর প্রতিটি নারীর কাছেতো নিজের আব্রুর চেয়ে বড় আর কোন ধন আছে বলেতো আমি জানি না।
গহনার বাক্স যেমন গহনার সারথী তেমনি সৌন্দর্য হলো আব্রুর সারথী। গহনার বাক্স দেখলেই বোঝা যায় গহনার উপস্থিতি, প্রকৃতি। তেমনি নারীর সৌন্দর্য যদি প্রকাশিত হয় তবে আব্রুর উপর হামলা হবেনা কেন! তবে নারীকে পূর্ণ অধিকার দিয়েছে ইসলাম সৌন্দর্য প্রস্ফুটিত করার। অবশ্যই বৈধ পন্থায় এবং সৃষ্টিগত বিকৃতি না ঘটিয়ে, সংযতভাবে। মুহরিম পুরুষ এবং বালক, নারীদের সামনে। অর্থাৎ যেখানে কোন ভয়ের কারন নেই। (সূরা নূর -৩০)
যারা মনে করেন হিজাব মানেই একদম ছেড়া-ফাঁড়া রংজ্বলা দৃষ্টিকটু একটি আলখেল্লা গায়ে চাপানো। কিংবা আলাভোলাভাবে দুনিয়াবিমুখ হয়ে বাইরে বের হওয়া। এবং এটিই সঠিক পথ, তাকওয়ার পথ। আর যারা মনে করেন হিজাব পরতে হয় তাই পরছি, কিন্তু আমার নিজস্ব স্টাইল হিজাবের আগে যেমন ছিল তেমনই অপরিবর্তিত থাকবে। আমার সকল সৌন্দর্য অবশ্যই প্রকাশিত হতে হবে। আমাকে দেখে লোকেরা বিমোহিত আর তা দেখে আমি তৃপ্ত হবো। কিংবা অনান্য পোষাকের মতই হিজাবও একটি সাধারন পোষাক মাত্র এর আলাদা কোন লক্ষ্য উদ্দেশ্য নেই বা আমি পূরণ করবোনা। এ দু’দলের জন্যই আল্লাহর রাসূলের(সা) কিছু কথা।
• যেহেতু প্রয়োজনে মেয়েদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি, কাজের অনুমতি ইসলাম দিয়েছে সেহেতু যে হিজাবটি আপনি পরছেন সেটি চটকদার না হোক পরিপাটি পরিচ্ছন্ন হবে। তাতে কোন দোষ নেই। ইসলাম অগোছালো অপরিচ্ছন্নতা সাপোর্ট করেনা। স্বয়ং আল্লাহর রাসূল(সা) পরিচ্ছন্ন পোষাক পরতেন। তো আপনি আয়রন ছাড়া কোঁচকানো বোরকা পড়লে সেটা তাকওয়া হবে কি?
• নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে কোমলতার প্রতীক করে। চক্ষু শীতলকারী মোহনীয় রুপে। এবং পুরুষের জন্য আকর্ষনীয় করে। তাইতো হিজাব এলো। নারী যদি কুসুম-কোমলই না হয় তবে এতকিছুর দরকার ছিল কি! আপনি যদি আপনার কোমল রুপটি তাকওয়ার দোহাই দিয়ে নষ্ট করে ফেলেন তবে কি আল্লাহর সৃষ্টিবিধানের সাথেই সাংঘর্ষিক হয়ে গেল না? আপনাকে আপনার কোমল রুপটিও লালন করতে হবে একই সাথে হিজাবের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে এর সংরক্ষণ এবং মিস ইউজ বন্ধ করতে হবে। সাজগোজ না করার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই। নিজেকে অসুন্দর করে রাখার মধ্যে কোন তাকওয়া নেই। তাকওয়া হলো সেটাই যে আপনি সুন্দরভাবে শালীনভাবে সংযতভাবে নিজেকে কোমল রাখবেন। আল্লাহ, স্বামী দুপক্ষই সন্তুষ্ট থাকবে। এতে আপনিই শুধু ঠিক থাকবেন না স্বামী-স্ত্রী দুজনই তাকওয়াবান হবেন। দাম্পত্য সম্পর্ক, সংসার সব ভালো থাকবে। ইসলাম এটাই বলে।
• আর অবিবাহিত হলে তো কথাই নেই। আপনার বিয়ের সুযোগ সৃষ্টির জন্যই আপনাকে সুন্দর করে থাকার অধিকার ইসলাম আপনাকে দিয়েছে। কেউ(অবশ্যই বৈধ ব্যক্তি। তবে বিয়ের জন্য যে কোন ব্যক্তি অবশ্যই দেখতে পারে) আপনাকে দেখে বিয়ের জন্য যোগ্য মনে করলে আপনার তাকওয়া নষ্ট হবে এমন তো কোন কথা শরিয়তে দেখিনি। বরং উপযুক্ত মেয়েদের বিয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয় এমনটাই আল্লাহর রাসূল(সা) চাইতেন। উম্মুল মুমিনীনদেরও এ ব্যপারে তাগিদ দিতেন।
• আপনাকে তাকওয়ার মানে বোঝানো হয়েছে অন্য রংয়ের বোরকা বাদ দিয়ে একমাত্র সাদা বা কালো বোরকা পরা। আসলেই কি তাই? আমি তো অন্যরকম জানি। আমি জানি বোরকা কি রংয়ের সেটা মূখ্য নয়। কিভাবে পরছেন, কি ধরনের পরছেন সেটা মূখ্য। (হযরত আলী(রা) বর্ণনা করেন-একবার আল্লাহর রাসূল(সা) আমাকে একটি লাল রংয়ের কারুকার্য খচিত নকশী বড় চাদর দিলেন। আমি একদিন সেটি পরে বাইরে বের হলাম। তখন রাসূলের(সা) সাথে দেখা হলে আমি তার মুখে অসন্তোষ দেখতে পেলাম। আমি সাথে সাথে সেটি খুলে ফেললাম। বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাগের কারন কি! তিনি বললেন আমি এটি তোমার জন্য দেইনি। তোমার পরিবারের স্ত্রীলোকদেরকে পরিধানের জন্য দেবে।(বুখারী)। আমার জানা মতে আলীর(রা) স্ত্রী ছিলেন ফাতিমা(রা)। রাসূলের কন্যা। আয়াতানুসারে যিনি হিজাবের বিধানের মধ্যেই পড়েন।
• এ ছাড়া গহনা পরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে।( হযরত আয়শার(রা) মিথ্যা অপবাদের ঘটনা। তিনি সফরে ছিলেন। এবং সে সময় একটি মূল্যবান হার গলায় পরেছিলেন। সেটি হারানোতেই ঘটনার সূত্রপাত। অর্থাৎ বাইরে বেড়াতে গেলে হিজাবের ভেতরেই অলংকার পরা যাবে।) যদি না সেগুলো এমন হয় যে গণহারে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে যেমন নূপুর, ঘুঙ্গুর, ঝুমঝুমিওয়ালা চুড়ি বা হার।( সুরা নূর ) আর মহিলাঙ্গনে তো অবশ্যই।
এবার আধুনিকাদের প্রসঙ্গে আসি।
অনেকেই আটসাট হিজাবের ব্যপারে বাইরের দেশগুলোর উদাহরন টানেন। ছোট, গলা অবধি স্কার্ফের ব্যপারেও। এমনকি বোরকার নীচে জিনস পরা, শর্ট বোরকা পরা, পেছনে আবার বেল্ট বাঁধা, নেটের স্কার্ফ পাতলা সচ্ছ স্কার্ফ বাঁধা, স্কার্ফের ভেতর উঁচু চূঁড়া করে চুল বাঁধা ইত্যাদি। তাদের জন্য আমার একটাই কথা। ইসলাম এসবের একটারও অনুমতি দেয় না। আপনাদের আইডল কে? কোন বিদেশীনি না উম্মুল মুমিনীন?
নেকাব প্রসঙ্গ-
আমি কে কি বলেছেন সেসব কোন বিতর্কে যাবনা। শুধু সাধারন কয়েকটা কথা।
• আমার প্রথম পয়েন্টটি স্মরন করুন। হিজাবের আয়াত নাযিলের সময়কাল। স্বয়ং আল্লাহর রাসূল(সা) জীবিত থাকার পরও একদল সাচ্চা ঈমানদার সাহাবীদের উদ্দেশ্য করে হিজাবের আয়াত নাযিল করলেন আল্লাহ। যারা রাসূল(সা) দ্বারা ট্রেইন্ড। তাহলে আপনি আমি কি করে আমাদের ঈমানের বড়াই করতে পারি যে কোন নারীর উন্মুক্ত সুন্দর মুখটি আমার মনে ফিৎনা সৃষ্টি করবেনা। যেখানে মেডিক্যাল সায়েন্স বলে যে একজন নপুংশকেরও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী হরমোনটি থাকে।
• কোন পুরুষ কি আছেন যে কোন মহিলার চেহারা না দেখেই তাকে বিয়ে করতে রাজী হবেন? কিংবা শুধু মেয়ের হাত অথবা পা দেখে করবেন তাকে বিয়ে? তাহলে কেন খামোখা বলেন যে চেহারা কোন ব্যপার না! এটার গুরুত্ব নেই!
• অনেকেই বলে থাকেন যে যদি চেহারা ঢাকতেই হতো তাহলে দৃষ্টি সংযত করার নির্দেশ কেন এলো! ওকে। নারী কি কেবল মুসলিম সমাজেই ছিল? কোন অমুসলিম নারী কি আরবে ছিল না? বা এখন নেই? বরং মুসলিম মহিলারাইতো ভালোভাবে চলেন। কিন্তু অমুসলিম কোন নারী যেভাবে চলে তাতে ফিৎনার আশংকা আরো বেশি! সেদিকটির জন্যই এই নির্দেশ।
• অনেক বিশেষজ্ঞের মতে নেকাব কেবল নবী পরিবারের জন্যই আল্লাহ নির্ধারিত করেছেন। তাই কি? তাহলে মুমিনাহদের কথাটা এলো কেন! যাক, তবু আমি মানছি। কারন অনেক মহিলা সাহাবীই চেহারা খোলা রেখে চলেছেন। আল্লাহর রাসূল(সা) সময়েই। এবং অনুমোদনও ছিল। কিন্তু আপনি মানতে পারবেন কি আপনার সামনে আপনার চাইতে অন্য কোন মহিলাকে অসাধারন বলা হলে? মনের ভেতর একটু হলেও দাগ পড়বে। পড়বেই। তাহলে শেষদিনে আপনি কোন দলে থাকতে চান? সাধারন না অসাধারন?
• শেষে একটা সাধারন কথা বলি, যুগে যুগে যত রাজকন্যা, রানী, মহারানী, সম্রাজ্ঞী এসেছে প্রত্যেকেই কিন্তু প্রাসাদের অভ্যন্তরে থাকতেন। তাদের গন্ডী ছিল সীমিত। তারা কোথাও বের হলেও তাদের নিজস্ব বাহনে যেতেন। আর তা থাকতো পর্দা দিয়ে ঘেরা। সাধারনেরা তাদের দেখতে পেত খুবই কম। কালেভদ্রে একবার। আপনি এখনও যদি ইংল্যান্ডের রানীর বাসভবন, বাহন দ্যাখেন তাহলেই বুঝবেন। শুধু তারাই না যুগে যুগে অভিজাত ফ্যামিলির নারী হলেই এমনটা দেখা যেত। তবে সাধারন পরিবারের নারীরা যথেচ্ছাভাবে বাইরে যেতো। উঁচু ফ্যামিলির মেয়েদের পোষাক ছিল লম্বা পোষাক। ঝোলানো পোষাক। ফোলা পোষাক। আর তাদের এই বিশেষ পোষাক, চলাফেরার বিশেষ ব্যবস্থা দেখেই তাদের চেনা যেত তাই তাদের সম্মান করা হতো। আর যেসব মেয়েরা যথেচ্ছাভাবে বের হতো, চলাফেরা করতো, তাদের চালচলন অনুযায়ী তাদের ক্লাস নির্ধারন হতো। আমি কিন্তু কোন মুসলিম সমাজের কথা বলছিনা। বলছি অমুসলিম সমাজের কথা। অর্থাৎ পর্দা বা হিজাবের ব্যপারটা কেবল মুসলমান সমাজেই না সকল ধর্মের সমাজেই প্রচলিত। এবং আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবেই প্রচলিত।
আর আল্লাহ কি বলেছেন আয়াতে? যাতে তাদের চিনে নেয়া যায়। তাহলে আর তাদের কষ্ট দেয়া হবেনা। অর্থাৎ, লোকেরা বুঝবে এরা হিজাব পালনকারী। এরা অভিজাত। তখন এদের সাথে সংযত হয়ে আচরন করবে। তো এখন আপনিই বলুন, আপনি কি হতে চান অভিজাত নারী নাকি সাধারন কেউ?
• সবশেষে আমার ২য় পয়েন্টটি মনে করুন। আল্লাহ বলেছেন ”মুমিনাহদের বলো।” আর মুমিনাহ কারা? আল্লাহর কাছে সবচাইতে প্রিয় ও সম্মানিত। এর দ্বারা আল্লাহ এটা নির্ধারন করে দিলেন যে, যে নারী মুমিনাহ হতে চায় তার জন্য এই বিধান। অর্থাৎ মুমিনাহ হতে চাইলে হিজাবের পরিপূর্ণ বিধান মানতেই হবে। এটা প্রমানিত।
ঈমান, তাকওয়া এগুলো তো নিজের মনের ব্যপার। কিন্তু একটা কথা সিদ্ধ; যখন সমাজটাই অস্থির হয়ে যায়, তখন ঈমান, তাকওয়ার নিরুপন খুব কঠিন হয়ে যায় মানুষের জন্য। অনেকটা যেন দুনিয়ার পুলসিরাত। তবে ঠিক পথের খোঁজ পেতে হলে অন্তরে আল্লাহর ভয়যুক্ত প্রেম থাকাটা জরুরী। আপনি কোন পথে হাঁটবেন তাতো আপনিই ঠিক করবেন। সিদ্ধান্ত তো সর্বদা আপনারই হবে।।
বিষয়: বিবিধ
২০০৫ বার পঠিত, ৫১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
cover deye dakar ki ase apu?
সময়োপযোগী পোষ্টের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
< < < দ খ ল > > >
এখানে তারাবীহ-র পর মন্তব্য করা হবে!
ওকে...আমি জেগেছি, শুকরিয়া...
জাযাকাল্লাহু খইর।
আর হ্যা, পোষ্ট টি বড়, তবু পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
অনুরোধ;-পোষাক পরা হয়, পড়া নয়৷ সব কটি পরা,পড়া হয়ে গেছে, শুধরে দিলে ভাল হয়৷ অযাচিত উপদেশে মাইণ্ড না করলে কৃতজ্ঞ হব৷ ধন্যবাদ৷
আপনার লিখার উপর কমেন্ট করার কোন সুযোগ নেই। মাশাআল্লাহ চমৎকার গুছিয়ে লিখেছেন।
আল্লাহ আপনাকে যথার্থ পুরুষ্কারে পুরুষ্কৃত করুন।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
আল্লাহ আপনাকে আরো বেশি লিখার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
ﺗﻘﺒﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻨﺎ ﻭ ﻣﻨﻜﻢ
সব্বাইকে ঈদ মুবারক।
আপনার বাড়িতে রান্নাঘড়ের প্রতিটি হাড়িতে আমার ঈদের দাওয়াত রইলো।
আমার ঈদ বোনাস যেনো ঠিকঠিক পাই হামমম এটা যেনো মনে থাকে।
আমার কথাই বলি, রাস্তা দিয়ে যখন হাঁটি, কোন মেয়ের দিকে চোখ পড়লেই চোখ সরাতে ইচ্ছে হয় না তবু সরিয়ে ফেলি দ্বিতীয়বার তাকানোর আগেই, কাজটা কঠিন এই জনাকীর্ণ শহরে তবু শতভাগ চেষ্টা করি আমার চোখের দেখা ভাললাগা একজনাতেই (ভবিষ্যতে) নির্দিষ্ট করে রাখার জন্য। একবার দেখাতেও যদি ভাল লেগে যায়, তার রেশ কাটতে কিছু সময় কেটে যায়। অথচ একজন আপাদমস্তক বোরখা পরিহিতাকে দেখলে শ্রদ্ধা জাগে মনে, ভাবী ইশ সবাই যদি এমন করে চলত, তবেতো এতো অনাচার হতনা, মনে কুচিন্তা আসেনা। তৃষনার্ত চোখ দ্বিতীয়বার তাকানোর প্রয়োজন বোধ করে না এবং রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বখাটের ছেলের দলও নারী পথচারীকে দেখে শরীরে নিয়ে রগরগে কমেন্ট করে না। এইভাবেই বোরখা পরিহিতারা(বোরখার বিধান সম্পূর্ণ পালন করে) কালো হাতের থাবা থেকে নিজেদের ইজ্জত আব্রু কে রক্ষা করে থাকে। কিছু ব্যতিক্রম আছে, বোরখা পড়েও ইজ্জত আব্রু রক্ষা করতে পারে না, তবে এটা পরীক্ষিত সত্য যে, অধিকাংশ বোরখাধারীর জন্য অন্যদের চাইতে ইজ্জত অনেকঙ্গাশে সহজতর হয়।
আমি মুখ ঢেকে রাখার পক্ষেই। কেননা, কোন মেয়েদের যে অংগগুলো পুরুষের দৃষ্টি চুম্বকের মত তাদের কাছে টেনে নিয়ে যায় তা হল, মুখ, বুক আর নিতম্ব। যারা মুখ খোলা রাখে, বুক আর নিতম্ব ঢাকা থাকায় পুরুষের দল তাদের সম্পূর্ণ মুখের দিকেই নিবদ্ধ করে। মুখ দেখেই বুঝে নেয় ভিতরটা কেমন হতে পারে। তাই মাথায় কুচিন্তা ভন ভন করতে থাকে। তাছাড়া আপনার সাথে সহমত হয়ে বলি, সাধারণ না থেকে আল্লাহর কাছে অসাধারণ হতে চাইলে মুখ ঢেকে রাখার বিকল্প কিছু দেখিনা।
মেয়েদের সাজগুছের ব্যাপারে ইসলামে নিষেধাজ্ঞা নেই, তা হতে হবে মাহরাম আর স্বামীর সামনেই। আবার এমন সাজগুজও করা বাঞ্চনীয় নয় যেমন পার্লারে গিয়ে নিজের নিজস্বতাকে জলাঞ্জলি দিয়ে সাক্ষাত নায়িকা হয়ে আসা, যা পানিতে ভেজালেই শেষ, যাতে স্বামীর ভাললাগায় সন্তুষ্ট না হয়ে পর পুরুষ কে দেখানোর বাসনা জাগ্রত হয়।
আর একটি কথা, মেয়েদের যেকোন রঙইয়ের কাপড় পরা যায় তা ঠিক, তবে বাস্তবতার আলোকে যদি বলি, তাহলে কালো রং্যের বোরখাই মেয়েদের জন্য পারফেক্ট, যাতে পুরুষের আকর্ষণ কম হয়। তা যদি এক রং্যের হয় তা আরো ভাল। কেননা, বোরখার বেশি কারুকাজের জন্য পুরুষদের দৃষ্টি সহজে এড়াতে পারে না। কালো পড়লে পুরুষ কে আকর্ষণ করে না, কিন্তু কালো বোরখার মাঝেই যেন নারীর আভিজাত্য খুজে পাওয়া যায়। তা এই জন্য যে, জামা আর বোরখার চেহারা একি রকম হয়ে যায়।
তবু যারা মনে করেন, লাল নীল রঙ্গীন বেশে বোরখাবিহিন বের হতে পারবনা, রঙ্গীন বোরখাও পরা যাবেনা, তারা মনে অসস্তি না রেখে ঢেকে রাখার সম্পূর্ণ বিধান বজায়ে রেখে যকোন রঙয়ের বোরখাই পরতে পারে। তা বোরখা ফেলে দেয়ার চেয়ে অনেকগুন ভাল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন