স্বপ্ন দেখি সেই মহান দিনের!!!!
লিখেছেন লিখেছেন বিশ্বাসী হৃদয় ২৮ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:২৩:৩২ রাত
আজ ২৮শে অক্টোবর। সাত বছর আগে এই দিনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতা ছাড়ার দিনে পুরানা পল্টন মোড়ে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়।
সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ মেরে লাশের ওপর নৃত্য উল্লাস করার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছিল তখন।আজও লাখো মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায় এ দিন।এখনও কোন বোন তার ভাইকে স্বপ্নে দেখে আঁতকে ওঠে সেদিনের সে নির্মমতাকে স্মরন করে।এ এমন এক দৃশ্য যা যতবারই দেখা হোকনা কেন চোখের পানি আটকে রাখা যায়না।তবুও শহীদের সাথীরা ব্যাথার বোঝা মাথায় নিয়ে এগিয়ে চলে সামনের দিকে।তাদের সামনে যে অনেক কাজ!
২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রেডিও-টিভিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। মূলত এ ভাষণ শেষ হওয়ার পরপরই দেশব্যাপী শুরু হয় লগি-বৈঠার তাণ্ডব। বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-জামায়াত অফিসসহ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেমন চালানো হয় পৈশাচিক হামলা, তেমনি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় অনেক অফিস, বাড়িঘর, পুরো দেশব্যাপী চলে তাণ্ডবতা।
চারদলীয় জোট সরকারের ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বিকাল ৩টায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ছিল। সকাল থেকেই সভার মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল। বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের লগি, বৈঠা ও অস্ত্রধারীরা জামায়াতের সমাবেশের দিকে এগিয়ে আসে। এসময় জামায়াত ইট পাটকেল ও গজারীর লাঠি দিয়ে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় বিজয়নগর, তোপখানা রোড, মুক্তাঙ্গন ও পল্টন মোড় এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
লগি বৈঠার বাহিনীর হামলায় পিছু হঠতে বাধ্য হয় জামায়াত শিবির। শিবির নেতা মুজাহিদুল ইসলামকে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করায়। একই লগি বৈঠার হামলায় মারা যায় জসিম উদ্দিনসহ ৫ জন।
পুরো ঘটনায় নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিপুল সংখ্য পুলিশ বাহিনীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
২৮ অক্টোবরের আগ থেকেই পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার ঘোষণা করা হচ্ছিল, লগি-বৈঠা, কাস্তে বা অন্য কোনো অস্ত্রশস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ও বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সেদিনের সেই স্মৃতি ভোলার নয়।দুনিয়ার আদালতে এখনও এর বিচার পাইনি আমরা। আল্লাহর আদালতে বিচার দিয়ে রেখেছেন শহীদের সাথী আর স্বজনেরা। কিন্তু এই দুনিয়ার আদালতেও তাদের একদিন কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে ইনশাল্লাহ।এখন তা শুধুই সময়ের ব্যাপার মাত্র।আল্লাহ এই সকল শহীদের স্বপ্নের বাস্তবায়নে আমাদের সাহায্য করুন।তাদের শাহাদাত কবুল করুন,জালিমের বিষদাত ভেঙ্গে দিন,ধৈর্যের সাথে তাঁর পথে দৃঢ় থাকার তৌফিক দিন । আর এ সকলের বিনিময়ে আমাদের দান করুন কাঙ্ক্ষিত পুরস্কার যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত,যেখানে আমরা সবাই ঊড়ে বেড়াব জান্নাতের পাখি হয়ে। স্বপ্ন দেখি সেই মহান দিনের!!!!
বিষয়: বিবিধ
১০২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন