“প্রসঙ্গঃ কোরআন”

লিখেছেন লিখেছেন বিশ্বাসী হৃদয় ২১ আগস্ট, ২০১৩, ১০:৩০:৩৬ সকাল

(১)

কোরআন মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিশেষ নিয়ামাত যা আমাদেরকে দেখায় সঠিক পথের দিশা।এই সেই কোরআন যা আরবের মরূ প্রান্তরে পরিবর্তনের জোয়ার বইয়ে দিএছিল।যার সংস্পর্শে এসে একেকজন মানুষ হয়ে উঠেছিল একেকটি ইতিহাস।যা একেকজন মানুষকে করে দিয়েছিল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষে।এর পরশ পাথরের ছোয়ায় আরব হয়ে উঠেছিল আলোকিত আর সাথে আলোকিত করেছিল পৃথিবীকে।শাসন করেছে এর অর্ধেকভাগ।তাহলে যাদের কাছে এই পরশ পাথর এখনো বিদ্যমান তারা কেন আজ বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত,অবহেলিত জাতি।এর কারন এর ধারকেরা নিজেই।তারা এর প্রাপ্য সম্মান দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই কোরআন হচ্ছে এমন এক প্রেসক্রিপশন যাতে একসাথে সকল রোগের ঔষুধ রয়েছে।আর তাই আমার রবের নির্দেশনা হচ্ছেঃ

“তোমাদের রবের নিকট থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে,তার অনুসরণ কর আর তাঁকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করোনা।তোমরা খুব অল্প উপদেশই গ্রহন করো।”(সূরা আরাফ-৩)

এখন আমাদের ঠিক করতে হবে আমরা এ প্রেসক্রিপশন শুধুই মুখে আউড়িয়ে যাবো নাকি এতে দেয়া ওষূধ গুলো থেকে নিজ রোগ অনুসারে চিকিৎসা নিবো,এর যথাযথ অনুসরণ করব,নাকি করবোনা।ঠিক কিভাবে কোরআনের অনুসরণ করবো?

এ পথ আল্লাহর দেয়া।তাই তিঁনি বলে দিয়েছেন কিভাবে আমরা কোরআন নিয়ে চলবো। এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষনা করেনা?”(সূরা মুহাম্মাদ-২৪)

অর্থাৎ কোরআন বুঝে তা নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করতে হবে।তাহলে যারা কোরআন বোঝেনা তাদের কোরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষনার প্রশ্নই ওঠেনা।তাই কোরআন সে জাতির জন্য কল্যানকর যারা একে বোঝে। মহাজ্ঞানী আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন,“এ এমন এক কিতাব,যার মধ্যে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে,কোরআনের আয়াত আরবী ভাষায় সে জাতির জন্য যারা কোরআন বোঝে।” (সূরা ফুসলাত-৩)

আর যারা এতকিছুর পরেও কোরআন বুঝে পড়ে তার অনুসরণ করেনা তাদেরকে আল্লাহ্‌ গাধার সাথে তুলনা করেছেন।

আল্লাহ্‌ পবিত্র ইরশাদ করেন, “যাদেরকে তাওরাত দেওয়া হয়েছিলো,অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি,তাদের দৃষ্টান্ত সে গাধা যে পুস্তক বহন করে।”(সুরা জুময়া-৫) অর্থাৎ যে জাতির কাছে আল্লাহর কিতাব বা কোরআন আছে কিন্তু তারা বোঝানা এবং অনুসরণ করেনা,তার দৃষ্টান্ত গাধার মতো।তাই কোরআন আমাদের বুঝে পড়ে তা জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে।এ সম্পর্কে একটি হাদিস রয়েছে।

“জিয়াদ ইবনে লাবিদ(রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা রাসুল (সাঃ) কিছু আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, এটা ইলম উঠিয়ে নেয়ার সময়। আমি প্রশ্ন করলাম,হে আল্লাহ্‌র রাসুল(সাঃ)!ইলম কিভাবে বিলুপ্ত হবে? অথচ আমরা কোরআন পড়ি এবং আমাদের সন্তানদের পড়াই।আর তারা তাদের সন্তানদেরকে পড়াবে।এভাবে কিয়ামাত পর্যন্ত চলতে থাকবে।তিনি বললেন,হে জিয়াদ,তোমার ধবংশ হোক।আমি তোমাকে মদিনার জ্ঞানীদের অন্যতম মনে করতাম।তুমি কি দেখোনা,ইয়াহুদীরা তাওরাত কিতাব এবং নাছারারা ইঞ্জীল কিতাব পাঠ করে কিন্তু তারা এর মধ্যে যা আছে,তা মোটেই আমল করেনা।”(ইবনে মাজাহ)

সুতরাং শুধু তেলাওয়াত করে কোরআন রক্ষা করা যাবেনা।কোরআন রক্ষার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে জীবনের সর্বক্ষেত্রে এর যথার্থ অনুসরণ এবং বাস্তবায়ন করা।আর তাই মুসলিম জাতিকে কোরআনের বিধানকে ব্যক্তি জীবনে,সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈত

িক জীবনে বাস্তবায়িত করতে হবে,তা নাহলে কোরআন সমাজ থেকে উঠে যাবে।

আর এভাবে কোরআন কে অনুসরণ না করাকে কুফরির সাথে তুলনা করা হয়েছে।মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন, “যারা আল্লাহর নাযিল করা বিধান মোতাবেক সমস্যার সমাধান (বিচার-ফয়সালা,রাজ্যশাসন)করেনা তারা কাফের।”(সূরা মায়েদা-৪৪)

“সোহাইব (রাঃ) থেকে বর্নিত,রাসুল (সাঃ) বলেছেনযে কোরআনে বর্নিত হারামকে হালাল মনে করে,সে কোরআনের প্রতি ঈমানগ্রহণকারী নয়”-তিরমিযী

আর এদের জন্য রয়েছে চরম শাস্তি।আল্লাহ্ ঘোষনা করেছেন, “আমরা স্পষ্ট বয়ান সম্বলিত আয়াতস্মূহ নাযিল করেছি।অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে অপমানকর আযাব।”(সূরা মোজাদালা-৫)

(চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১১২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File