শমী কায়সার , আপনার পিতাকে "দালাল" বলে গেছেন শেখ মুজিব।

লিখেছেন লিখেছেন জিসান গাজি ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৩:১৩:৪২ দুপুর



শমী কায়সার , আপনার পিতাকে "দালাল" বলে গেছেন শেখ মুজিব।

শমী কায়সার শহীদুল্লাহ কায়সার এর মেয়ে এবং জহির রায়হানের ভাতিজি সেদিন গয়েস্বর দাদা'র মন্তব্য সুত্রে তাঁকে কুলাঙ্গার বলার ধৃষ্টতা দেখালেন কিন্তু আপনার ফুফু নাফিসা কবির জাতির পিতার কাছ থেকে আপনার বাবা-চাচা'র কি উপাধি শুনেছিলেন তা ভূলে গেলেন? তাছাড়া গয়েস্বর দা'র আগে কাদের সিদ্দিকীও বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে একই মন্তব্য করেছিলেন কই তখন তো আপনাদের আজকের এই আস্ফালন পরিলক্ষিত হয়নি?



১৯৭২ সালের ১৮ মার্চ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবকে স্মারকপত্র নিয়ে নাফিসা কবিরের নেতৃত্বে শহীদ মিনার থেকে মিছিল করে শহীদ পরিবারের সদস্যরা বঙ্গভবনে যান। সেদিন ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা। স্বাধীন বাংলাদেশে ওটাই ছিল ইন্দিরা গান্ধীর প্রথম সফর। পুরো বঙ্গভবন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। ফলে মূল ফটকেই আটকে দেয়া হলো নাফিসা কবিরদের। বলা হলো, প্রধানমন্ত্রী আজ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে ব্যস্ত, দেখা হবে না। স্মারকপত্র দিয়ে চলে যান। কিন্তু নাফিসা কবির তা মানার পাত্র নন।

নাফিসা কবির তখন বললেন, ‘আমাদের যদি ভেতরে যেতে না দেন, তাহলে বঙ্গবন্ধুকেই বাইরে আসতে হবে। এই স্মারকপত্র তার হাতেই দেয়া হবে, অন্য কাউকে নয়।’ তারা সবাই গেটের সামনে বসে পড়লেন। শহীদ পরিবারের ভেতর তখন পুলিশের ডিআইজি শহীদ মামুন মাহমুদের স্ত্রীও ছিলেন সেখানে।

খবরটা ভেতর পর্যন্ত নেয়ার লোকের কমতি ছিল না। বেরিয়ে এলেন তোফায়েল আহমেদ। বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু ব্যস্ত থাকায় তার পক্ষ থেকে আমি স্মারকপত্র গ্রহণ করতে এসেছি।’ কিন্তু নাফিসা কবির তাতে রাজী হলেন না। তিনি ও লিলি চৌধুরী (শহীদ মুনীর চৌধুরীর স্ত্রী লিলি চৌধুরী) তোফায়েল আহমেদকে অনেক কড়া কথা বললেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষকরা শহীদ হয়েছিলেন, তোফায়েল আহমেদ তাদের ছাত্র ছিলেন। তবু তিনি গললেন না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসার কথা, তার প্রথম সফর। স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিকদের ভিড় জমে গেল। শহীদ পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে কাঁদছেন। একজনকে দেখে আরেকজন কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। এরকম সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বেরিয়ে এলেন। তিনি বললেন, ‘আপনারা আর সময় পেলেন না, এসব করার। আজ আমাদের এত আনন্দের দিন।’ লিলি চৌধুরী এগিয়ে এসে বললেন, ‘আনন্দ আপনার হতে পারে। আমাদের কোনো আনন্দ নেই। আমাদের কথা আপনাকে শুনতে হবে।’

শেখ মুজিব তখন লিলি চৌধুরীর কথার জবাব না দিয়ে নাফিসা কবিরকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘আপনি কোথায় ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময়? সেদিন অনেকে দালালির জন্য মরেছে,এখন এসে এদের নিয়ে রাজনীতি করছেন? রাজনীতি করতে হলে সরাসরি রাজনীতি করুন, এদের ব্যবহার করবেন না।’ নাফিসা কবির এর কড়া জবাব দিলেন। তিনি বললেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনি পাকিস্তানের জেলে ছিলেন। আর আমরা আমেরিকায় আপনার মুক্তির জন্য জাতিসংঘের সামনে ধর্ণা দিয়েছি।’ ফরিদা হাসান পেছন থেকে বললেন, ‘নাফিসা, ওঁকে এসব বলে কী লাভ হবে! ওঁকে বলো, উনি ফিরে না আসলে ওঁর স্ত্রীর কেমন লাগত! উনি আমাদের কষ্ট বুঝবেন না’ বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়লেন!

শমী কায়সার এখন আপনিই বলেন বড় কুলাঙ্গার টা কে? যদি বলতে না পারেন তবে ধরে নেব আপনি বা আপনারাই আসল কুলাঙ্গার!!!

ইতিহাসের এই অজানা অধ্যায় সামনে নিয়ে আসবার জন্য ধন্যবাদ Zubair Ahmed ভাইকে।

বিষয়: বিবিধ

২১৩৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

355635
২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:০৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
355640
২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সব কিছু এখন চেতনার ফিল্টারে আটকা!
355641
২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:০৫
ইয়াফি লিখেছেন : বঙ্গবন্ধু কি‘অনেকে ত দালালী করে মরেছে’বলতে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের বুঝিয়েছেন? কারণ বুদ্ধিজীবিরা নাকি পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময়জুড়ে পাকিস্তান সরকারের আনুগত্যে ছিলেন। তাঁরা আরো দুইদিন বেঁচে থাকলে হয়তো পাকিস্তানের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হতেন। তাহলে তো বঙ্গবন্ধু নিহত বুদ্ধিজীবিদের পরিচয় ও তাদের কারা মেরেছে তা বলে দিয়ে গেছেন!
355655
২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৮
শেখের পোলা লিখেছেন : অনেক কিছুই অন্ধকারে রয়ে গেছে৷ তা বার করার লোক ও সুযোগ দরকার৷ ধন্যবাদ৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File