আপনার শায়খ গোগল (google) হতে সাবধান!!!! (৩)
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ২৯ জুন, ২০১৪, ১১:৩৬:১৮ সকাল
আপনার শায়খ গোগল (google) হতে সাবধান!!!!
আপনার শায়খ গোগল (google) হতে সাবধান!!!! (২)
কু’রআনের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অনুবাদ
অনেক সময় কু’রআনের অনুবাদ নিয়েও ব্যাপক প্রতারণা দেখা যায়। যেমন নিচে সূরা আসর এর এই অনুবাদটি দেখুনঃ
By the fleeting time, surely mankind is in continuous loss, except for those who believe, who does righteous deeds, who invite each other to reform and who invite each other to tolerance.
উপরের আয়াতটি যতই সুন্দর মনে হোক না কেন, এটি একটি নকল অনুবাদ। কু’রআনের আয়াতে এমন কোনো শব্দ নেই যা reform, tolerance নির্দেশ করে।
এই ধরণের উদ্দেশ্য প্রণোদিত অনুবাদ করে কিছু বিশেষ গোত্র প্রচার করার চেষ্টা করছে যে, ইসলামের অনেক আইনকানুন মধ্যযুগীয়, বর্বর। যেমন, আজকের যুগে হিজাবের কোনো প্রয়োজন নেই; দাঁড়ি রাখাটা ১৪০০ বছর আগের সংস্কৃতি অনুসারে হয়তো প্রয়োজন ছিল, কিন্তু এখন আর নেই; আমাদেরকে সুদের নিয়মগুলো আজকের যুগের অর্থনীতি অনুসারে নতুন করে বিবেচনা করতে হবে; ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড আজকের আধুনিক যুগের আইনি অবকাঠামোর সাথে বেমানান ইত্যাদি। এরকম ইসলামের আইনের মধ্যে নানা ধরণের ‘যুগোপযোগী পরিবর্ধন’ এবং ‘অন্যায়ের প্রতি আরও বেশি সহনীয়’ হওয়ার জন্য তারা নানা মতবাদ প্রচার করে যাচ্ছে, এবং তাদের মতবাদের ভিত্তি হিসেবে কু’রআনের বিশেষ কিছু আয়াতকে তারা নতুন ভাবে অনুবাদ করে তা সমর্থন করার চেষ্টা করছে।
আরেক ধরণের প্রতারণা হচ্ছে কু’রআনের আয়াতের অংশ বিশেষ ব্যবহার করে নানা ধরণের মত সমর্থন করার চেষ্টা করা। যেমন, অনেকে দাবি করে ছেলেদের মুসলমানি করে মহান আল্লাহ প্রদত্ত স্বাভাবিক শারীরিক কাঠামোর বিকৃতি করা হয় এবং এর স্বপক্ষে তারা এই আয়াতটি দেখাবেঃ
لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ ٱللَّهِ
আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। [৩০:৩০]
তাদের দাবি হচ্ছে, মহান আল্লাহ মানুষকে যেভাবে সৃষ্টি করেছেন, তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। আপাতত দৃষ্টিতে তাদের যুক্তি সঠিক মনে হলেও, আপনি আসলে এখানে একটি আয়াতের অংশ বিশেষ দেখতে পাচ্ছেন। পুরো আয়াতটি হচ্ছেঃ
তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।[৩০:৩০]
এখানে মহান আল্লাহ মানুষের ভেতরে এক সৃষ্টিকর্তার প্রতি প্রকৃতিগত আনুগত্য [দেখুন সুরা ইখলাস], ইসলামে যে ব্যাপারগুলোকে ভালো বলা হয়েছে, সেগুলোকে ভালো এবং যে ব্যাপারগুলোকে খারাপ বলা হয়েছে, সেগুলোকে খারাপ মনে করা ইত্যাদি যেসব প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য দিয়ে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, সেটার যে কোনো পরিবর্তন হয় না, সেটাই তিনি এখানে নির্দেশ করেছেন। আল্লাহ মানুষকে এমন ভাবে প্রোগ্রাম করে সৃষ্টি করেন যে, তার সত্যের প্রতি স্বভাবগত আকর্ষণ সবসময় থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার বাবা-মা, সমাজ এবং সংস্কৃতি তার মগজ ধোলাই করে না ফেলে। এই হচ্ছে এই আয়াতের প্রকৃত অর্থ। এখানে শারীরিক গঠনের কোনো ইংগিত নেই। [তাফসিরঃ মারিফুল কু’রআন পৃষ্ঠা ৭৪০, তাফহিমুল কু’রআন ৩০:৩০, তাফসিরঃ আল-জালালাইন ৩০:৩০]
বিশেষ গোত্রের ওয়েবসাইট
আরেক ধরণের প্রতারণা হল, আপনি মাঝে মাঝে কিছু ইসলামিক ওয়েবসাইট পাবেন,যাতে চমৎকার কিছু ইসলামিক আর্টিকেল দেখতে পাবেন যেগুলো আপনার কাছে মনে হবে ‘ভালোই তো’, কিন্তু এরই মধ্যে এমন কিছু আর্টিকেল পাবেন, যেগুলো বিতর্কিত এবং এক বিশেষ গোত্রের মতবাদ প্রচার করে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম আলেমরা মেনে নেননি। এধরণের ওয়েবসাইটগুলো দেখে আপনি কোনোভাবেই বুঝতে পারবেন না যে, সেই সাইটগুলো আসলে কোনো বিশেষ গোত্রের ওয়েবসাইট, যাদেরকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম উম্মাহ বর্জন করেছে। তাদের সব আর্টিকেলই দেখে মনে হবে যে, তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জাতির প্রতিনিধি, কিন্তু ভালো করে খোঁজ নিলে দেখবেন আসলে তারা হয়তো আহমেদিয়া বা কাদিয়ানী বা কুরানিস্ট।
চলবে............
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৯ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এই রখম মানুষের শায়খ গোগল আর এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।
আপনার পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন