আপনার শায়খ গোগল (google) হতে সাবধান!!!!
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ২৭ জুন, ২০১৪, ০৪:৪২:২০ বিকাল
আজকাল আমরা ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেটের উপর অনেকখানি নির্ভর করি। যখনি ইসলামের কোনো নিয়মকানুন, কোনো অনুষ্ঠান, কোনো বিতর্কিত ব্যাপার সম্পর্কে মনে প্রশ্ন জাগে, হয় আমরা ইন্টারনেটে সার্চ করি, না হয় ফেইসবুকে বন্ধু-বান্ধবকে জিজ্ঞাসা করি।
শেখ্ Google যেহেতু আমাদেরকে বিজ্ঞান, গণিত, দর্শন ইত্যাদির উপর যাবতীয় প্রশ্নের সঠিক সমাধান দেয়, আমরা ধরে নেই ইসলাম সম্পর্কেও সে নিশ্চয়ই সঠিক সমাধান দেয়। আর ফেইসবুকে যেই ফ্রেন্ডের মুখে ঘন দাঁড়ি এবং মাথায় টুপি দেখা যায় এবং অনেক ইসলামিক আর্টিকেল শেয়ার করতে দেখা যায়, আমরা ধরে নেই ইসলামের ব্যাপারে তার মতামত নিশ্চয়ই সঠিক। আমাদের এই ধারণাগুলো কি ঠিক?
ভুয়া মুসলিম নাম নিয়ে লেখা বই, আর্টিকেল
ইন্টারনেট ভর্তি হাজার রকমের গুজব এবং ভুয়া গবেষণায় ভরা শত শত মতবাদ পাবেন, যা আপনার কাছে পড়লে মনে হবে বিরাট আলেমরা লিখেছে। কিন্তু ভালো করে খোঁজ নিলে দেখবেন আসলে সব ভুয়া। কু’রআনকে নিয়ে ইন্টারনেটে গবেষণা ধর্মী আর্টিকেলের কোনো অভাব নেই।
বেশিরভাগই হয় বিধর্মীরা ভুয়া মুসলিম নাম দিয়ে (যেমনঃ ডঃ আব্দুল মাসিহ, যা একটি আরব খ্রিস্টান নাম, এর অর্থ ‘যীশুর দাস’) মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে লিখেছে, না হয় কোনো অর্ধ শিক্ষিত মুসলিম, যার ইসলামের উপরে কোনো ডিগ্রি নেই, প্রাচীন কু’রআনের আরবি নিয়ে কোনোই জ্ঞান নেই, এমন সব মানুষ শুধুমাত্র নিজের যুক্তি এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে, শুধুই কু’রআনের ইংরেজি অনুবাদের উপর ভিত্তি করে, আর্টিকেলের পর আর্টিকেল লিখেছে।
এধরনের আর্টিকেল পড়তে যতই পাঠ মধুর হোক না কেন, এগুলো লেখার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলমানদের ভেতরে খুব সাবধানে মতপার্থক্য ঢুকিয়ে দেওয়া, যাতে করে মুসলমানরা একে অন্যের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক, বিভেদে জড়িয়ে পড়ে এবং একসময় মুসলিম জাতি বিভিন্ন দলে আলাদা হয়ে পড়ে।
এধরনের আর্টিকেল পড়লে দেখবেন আপনার মনের ভিতরে ইসলামের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন এবং রীতিনীতি নিয়ে প্রশ্ন, দ্বন্দ্ব এবং আল্লাহ্র সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা ধরণের ‘কিন্তু…’ বাড়তেই থাকবে। “কেন আল্লাহ এটা বলল? কেন আল্লাহ এরকম না করে ওরকম করলো না? কেন আল্লাহ শুধুই মেয়েদের জন্য এরকম, কিন্তু ছেলেদের জন্য ওরকম নিয়ম দিলো? …” এই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। আমরা মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে যত কামড়াকামড়িতে ব্যস্ত থাকবো, একে অন্যকে ভুল প্রমাণ করতে যত বেশি সময় খরচ করবো, বিধর্মীদেরকে ঠিক তত কম খাটতে হবে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য।
ভুয়া রেফারেন্স দিয়ে লেখা আর্টিকেল
অনেক সময় দেখবেন আর্টিকেলে কোনো এক মুসলিম ওয়েব সাইটের আর্টিকেলের রেফারেন্স দেওয়া আছে, যেটা কোনো এক প্রসিদ্ধ মাওলানা/শেখ/ডঃ লিখেছেন। কিন্তু আসলে সেই ওয়েবসাইটটিও ওই প্রতারকদেরই বানানো এবং রেফারেন্স দেওয়া সেই আর্টিকেলটিও আসলে ওই প্রতারকদেরই লেখা, প্রসিদ্ধ কারো নাম নকল করে। বিখ্যাত লোকদের নাম ব্যবহার করে ডোমেইন কিনে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে সেই বিখ্যাত মানুষদের নাম ব্যবহার করে নকল আর্টিকেল লেখাটা এক পুরনো কৌশল।
এছাড়াও অনেক আর্টিকেলে আপনি বানানো বা সন্দেহজনক রেফারেন্স পাবেন, যেই রেফারেন্সগুলো কোনো একাডেমিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়ে পরীক্ষিত, পরিমার্জিত এবং অনুমোদিত হয়নি, অথবা কোনো যোগ্য আলেমের স্বীকৃতি পায়নি। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশ করা জার্নাল, প্রসিদ্ধ আলেমের লেখা বই এবং বিখ্যাত আলেমদের দ্বারা পরিচালিত ব্লগ বা ওয়েব সাইটগুলোর রেফারেন্সের সত্যতা যাচাই করে, তবেই সেই আর্টিকেল বা ব্লগগুলো বিশ্বাস করবেন এবং অন্যের কাছে সেগুলো প্রচার করবেন।
চলবে.....
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৪ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শেষে তার লিংক দিব ইনশাআল্লাহ।
"ইসলাম বিদ্বেষী" আর অমুসলমানদের "ইসলামিক জ্ঞান" দিয়ে সৎ মুসলমানদের ইসলাম চর্চায় সতর্কতা অবলম্বন জরুরী।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
আমাদের দেশের শিক্ষিত নামের গাধারা বলে থাকেন, বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। আসলে কথাটা হবে, ভাল বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। মন্দ বই পড়লে ভাল-এর চাইতে মন্দ হবার সম্ভাবনাই বেশী। যেমনটি আজ স্কুল-কলেজের পাঠ্য বইগুলোতে সুকৌশলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
সেলিম জাহাঙ্গীর, সত্যবাদী ব্লগার, মারুফ রুসাফী, রাইহান রহমান ইত্যাদি নিকগুলো থেকে পোস্টকৃত লেখাগুলো মোর কাছে কেমন যেন একডু সন্দেহ সন্দেহ লাগে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন